Spread the love

রেহানা চৌধুরী 
*************
শরতের আকাশ
**************

শরতের স্নিগ্ধ সকাল, নীল আকাশে-
সাদা মেঘের অবাধ আনাগোনা,
বিমানের জানালা দিয়ে দেখা যায়,
মেঘের হরেক রঙের খেলা,
কি অপরূপ রূপের বাহার! কখনো মনে হয়;
ভেসে বেড়ায় মেঘের ভেলা,
কখনো মনে হয়, প্রেমিক-
বুঝি প্রেমিকাকে চুমু খায়,
কখনো মনে হয় মা সন্তানকে আদর-
করে, চাঁদকে ডাকে হাতের ইশারায়।
কখনো মনে হয় পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চেপে, 
রাজপুত্র হাতে তরবারী নিয়ে উড়ে যায়।
কখনো মনে হয় বট বৃক্ষের নীচে,
দাদুর গল্পের আসর জমেছে।
আবার কখনো মনে হয় পাহাড়ের,
উঁচু-নিচু আর ঝর্না ধারা!
আবার কখনো মনে হয়, কাশ- ফুলের ঝোপের দ্বারে, কৃষ্ণ বাঁশী- বাজিয়ে রাঁধাকে কাছে ডাকে।
আবার কখনো মনে হয় রাখাল ছেলে,
গরু নিয়ে মাঠে যায়।
কখনো মনে হয় গ্রাম্য মেয়ে সরলা,
হাসছে হৃদয় উজাড় করা হাসি।
কখনো মনে হয় শাহাজানের-
আগ্রার তাজমহল ভেসে বেড়ায়।
আবার কখনো মনে হয় জায়নামাজে,
বসে তবজি হাতে দোয়া করছেন মায়।
মেঘের খেলার সাথে যেন,
এবার ভাসছে আমার ভেলা!
অসাধারণ এক অনুভূতি, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পৌছানোর মধ্যে, আকাশে প্রচণ্ড ঝড় উঠেছিলো।
মেঘের সাথে বিমানে ঢেউ তরঙ্গ,
বিমান আর মেঘে কিরিং কিরিং শব্দ,
যাত্রীদের হুঁশিয়ারি নির্দেশনা
বলে দিলেন বিমানবালা,
ঝড়ের জন্য বিমান কিছুতেই অবতরণ
করতে পারছেন না পাইলট,
ভয় আর ভয়ে গা ছমছমে টানটান,
উত্তেজনা আল্লাহকে ডাকছেন সবাই।
ঝড় থেমে গেলো অবশেষে, বিমান
নেমে এসেছে ঢাকা বিমান বন্দরে।
শরৎ কালের আকাশকে অতি নিকট থেকে দেখার এক ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা!
ঝড়ের আগে বিমানের জানালা দিয়ে ইচ্ছে হলো হাতটা বের করে মেঘটাকে একটু ছুঁয়ে দেখতে।
জীবনের অনেক বেশী ভালো লাগা আর প্রচণ্ড ভয় পাওয়া একই আকাশে এক সাথে।
এখনও রোজ সকালে যখন হাঁটতে বের হই, ইচ্ছে করে, সকালে আকাশটাকে একটু হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখি।
ভোরে পাখিগুলো যখন সামনে দিয়ে উড়ে যায়, তখন কাশ ফুলের গুচ্ছ দিয়ে ওদেরকে ছুঁয়ে দেই।
শরতের ভোরে প্রকৃতির অপরূপে,
মনটা কানায় কানায় ভরে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *