Spread the love
লাভ জেহাদ বর্তমান সমাজে কখনোই সমর্থন যোগ্য নয় বটু কৃষ্ণ হালদার ভালোবাসা হল পৃথিবীর সব থেকে মধুর ও পবিত্রতম সম্পর্ক। যে সম্পর্কের কোন তুলনা হয় না।তবে অনেকেই বলেন ভালোবাসার কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই।এটা অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ। ভালোবাসা হতে পারে প্রেমিকার, প্রকৃতির স্রষ্টার, মা বাবা ভাই বোন আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে। তবে ভালোবাসা দিবসটি যেহেতু প্রেমিক-প্রেমিকাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে।ভালোবাসা হৃদয়ের একটি অনুভূতি। ভালোবাসা মানে দূরে থেকেও কাছে থাকার অনুভব করা। সব রকম ভালোবাসায় থাকতে হয় বিশ্বাস ও সম্মান।তবে ভালোবাসা একদিনের জন্য নয়,বছরের প্রতিটি দিনের জন্য ভালোবাসা থাকা দরকার। ভালোবাসা মানে কমিটমেন্ট। একজনের কাছে আরেকজনের দায়বদ্ধতা। কখনও প্রিয় মানুষটির প্রতি অশুভ আচরণ না করা। ক্ষতি না চাওয়া। সুখে-দুঃখে সব সময় পাশে থাকা। সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার নামই ভালোবাসা। এ ভালোবাসা ঋতুর মতো পরিবর্তনশীল নয়। সব সময় একই থাকবে।সুখে-দুঃখে সব সময় ভালোবাসা।মায়া দেখানো। কখনও বা আদর দেখানো আবার শাসনও করা। ভালোবাসা মনের একটি অনুভূতি। এ অনুভূতিটাও কেউ দেখতে পায় না, অনুভব করে বুঝে নিতে হয়। এ ভালোবাসা শুধু মানুষে মানুষে নয়। সব জীব ও জড়ের প্রতিও হতে পারে। ভালোবাসা হবে নিখুঁত। যেখানে থাকবে সম্মানবোধ। কোনো প্রতারণা থাকবে না। আমি মনে করি, ভালোবাসা একদিনের জন্য নয়। একদিনে দেখানোর মতো ভালোবাসা বলতে কিছু নেই। প্রতিনিয়ত ভালোবাসতে হয়। ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসা জয় করতে হয়।আবার এই পবিত্র বিশ্বাস ও মায়ার বন্ধনে ভালোবেসে অনেকেই প্রিয় মানুষটিকে না পাওয়ার যন্ত্রণায় সহ্য করতে না পেরে এ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পাড়ি দিয়েছেন অন্য জগতে। এমন জ্বলন্ত উদাহরণ আমাদের সমাজে বহু আছে। কিন্তু কাউকে ভালবেসে ধর্মান্তরিতকরণ করার বাসনায় ভালোবাসার মানুষটিকে খুন করে ৩৫ টুকরো করে ফ্রিজে রেখে দেওয়ার নাম কি ভালোবাসা? মানুষ স্বাধীন স্বত্তা নিয়ে এই পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করেন।তাই এই পরিবেশের প্রতি কিছু সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে।একটি পরিবেশ কে সুস্থ ও বসবাসের যোগ্য করে তোলা সেই দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।শান্তি পূর্ন পরিবেশ গড়ে তুলতে গেলে দরকার একে অপরের প্রতি আন্তরিকতা, হৃদ্যতা ,ভালোবাসা। আপদে বিপদে একে অপরের পাশে থাকা। স্বাধীন তার পরে ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে ভারত বর্ষ।জাত, পাত ধর্ম নির্বিশেষে পাশা পাশি বসবাস করেন এই দেশের মানুষ।সেই আন্তরিকতার বহু নিদর্শন পাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমান এই সংস্কৃতি কে পদানত করে একে অপরের প্রতি হিংসায় মেতে উঠছে।এর মাঝে যে বিষয়টি প্রকট হয়ে উঠেছে তা হলো ল ভ জিহাদ।ভালোবাসায় জেরে কেড়ে নিচ্ছে প্রাণ।যে ভালোবাসা একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তোলে গড়ে তোলে সেই সেই ভালোবাসা প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে,ভাবতে কেমন অবাক লাগে তাই না। এই মুহূর্তে লাভ জিহাদের নিকৃষ্ট উদাহরণ হলো নিকিতা, শ্রদ্ধা ওয়াকার সব বহু ঘটনা। তবে এমন জঘন্য ঘটনা সমাজের বুকে প্রতি নিয়ত ঘটে চলেছে।কিন্তু এই ভারত বর্ষে ভিন্ন ধর্মের বিবাহ প্রথা আজ থেকে চালু হয় নি,উনিশ শতকে ও এই হৃদ্যতার ছোঁয়া পাওয়া যায়। তৎকালীন সমাজে বহু কুসংস্কার প্রচলিত ছিল।ছিল জাত,পাত,ধর্মের বেড়াজাল।সেই গণ্ডিকে উপেক্ষা করে জনম জনমের জন্য বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম ও প্রমীলাদেবী। বৈবাহিক জীবনে কম চড়াই উতরাই পার হতে হয়নি। তবুও জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একে অপরের প্রতি কর্তব্যের প্রতি অনড় ছিলেন।বর্তমান সমাজে শাহরুখ খান,গৌরী খান,মনসুর আলী পতৌদি,শর্মিলা ঠাকুর,সাইফ আলী খান,কারিনা কাপুর, সহ বহু বিবাহের নজির এই ভারতে আছে।যুগ যুগ ধরে তারা সংসার করে আসছেন।এদের ক্ষেত্রে কোন হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেনি। আমাদের সমাজের বেশ কিছু ধর্মীয় গোষ্ঠী ধর্মর নামে ভালবাসার মত পবিত্র সম্পর্ককে কলঙ্কিত করে তুলেছে।এতে ভিন্ন ভাষা,ধর্মীয় অনুভূতিতে কঠোর ভাবে আঘাত হানছে।একে অপরের প্রতি বিশ্বাস হারাচ্ছে।ভালোবাসার নামে ধর্মকে টেনে নামাচ্ছে নোংরা অভিসন্ধির খেলায়। শুধু ভারত বর্ষ নয়, বাংলাদেশ,পাকিস্তান সহ বহু দেশে এই লাভ জিহাদের ফলে প্রাণ হারাচ্ছেন নিষ্পাপ নারীরা।জোর করে বিধর্মী নারীদের ধর্ষণ,ধর্মান্তরিত করার ঘটনা তো আছেই।প্রতি নিয়ত বিশ্বাসের অপমৃত্যু ঘটছে।কিন্তু একটা কথা মনে রাখা দরকার প্রকৃত ভালোবাসার কখনো মৃত্যু হয় না।তাই তো কাল জয়ী মহা পুরুষ স্বামী বিবেকানন্দ বলে গেছেন”মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ”।সমাজ থেকে বিশ্বাস আর ভালোবাসার মৃত্যু ঘটলে সমাজ অন্ধকারে ঢেকে যাবে।চলবে রক্তের হোলি খেলা।চোখের জল একমাত্র সম্বল হয়ে দাঁড়াবে। এক্ষেত্রে আরো জেনে রাখা দরকার হিন্দু ধর্মের সব টুকু যেমন ভালো নয়,তেমনি মুসলিম ধর্মের সব কিন্তু খারাপ নয়। এই নিয়মের বাইরে বেরিয়ে এসে কিছু বিবেক হীন মানুষ ধর্মকে কলুষিত করে তুলেছে।ধর্মের নামে জেহাদী আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।এই জেহাদিরা নাকি রক্তের গন্ধ খুঁজে বেড়ায়। জেহাদি আতঙ্ক আজ বিশ্বের মাথা যন্ত্রণার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।সরকার এই সব বেকার সমস্যার পিছনে সময় নস্ট করে চলেছে,তাতে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।আমাদের নিজেদের সতর্ক থাকতে হবে। যারা ধর্মের নামে সমাজকে কলুষিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যারা এমন জঘণ্য ঘটনা ঘটাচ্ছ তাদের মনে রাখা উচিত এতে সেই ধর্মের প্রতি মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। মানুষ একে অপরের প্রতি ধর্মীয় বিশ্বাস হারাচ্ছেন। কৃষক যেমন শস্য বাঁচাতে আগাছা নির্মূল করে, ঠিক তেমনি ধর্মের আগাছা গুলোকে ধ্বংস করে ধর্মকে শুদ্ধ ও জনমুখী করে তোলা দরকার।ধর্মকে সর্বজন মত গ্রাহ্য করে তোলা উচিত। ধর্ম সর্বদা পবিত্র তাকে কলুষিত করে ছড়িয়ে দিতে এক শ্রেণীর শিক্ষিত জনগণকে এই কাজে ব্যবহৃত করছে,তাদের সুন্দর ভবিষ্যতকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ধর্মকে নিয়ে যারা ব্যবসা শুরু করছে সেই সমস্ত ভন্ড ধর্মব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, সে যে ধর্মেরই হোক না কেন।আর এই দায়িত্ব কিন্তু সরকারকে নিতে হবে। সরকার এই লাভ জিহাদ এর বিরুদ্ধে যত দ্রুত পদক্ষেপ নেবে তাতে সমাজের পক্ষে মঙ্গলজনক। আর তাতেই ফিরবে ধর্ম,ধর্মের মেলবন্ধন। বটু কৃষ্ণ হালদার, কবর ডাঙ্গা,কল_১০৪

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *