ধামাধরার উপাখ্যান >>- অগ্নিমিত্র
ধামাধরার উপাখ্যান
– অগ্নিমিত্র
ধামাধরা কথার মানে যে ধামা ধরে থাকে। চলিত বাংলা ভাষায় এই জাতীয় লোকেদের ‘চামচে’ বা ‘ স্তাবকও বলে।
প্রমিতকে এই ধামাধরাদের দলে ফেললে ভুল হবে না। প্রতুলবাবুর ব্যাগ ধরা থেকে শুরু করে তার বাড়ির কাজ করে দেওয়া, সবই করে দেয় সে।
চয়ন আবার একটু স্বাধীনচেতা। নারাণপুর স্কুলে এই তিনজন শিক্ষকই আছে। এর মধ্যে প্রতুল নিয়মকানুন ও আপিসের ক্জ নিয়েই আছে। ক্লাস নেয় না ও পড়াশোনার ছায়াও মাড়ায় না। প্রমিতও মিটিং মিছিল ও প্রমিতের ধামাধরাগিরি করতে ব্যস্ত। তাই চয়নকেই প্রায় সব ক্লাস নিতে হয়।
ছাত্রছাত্রীরা তাই চয়নকে খুব ভালোবাসে। এটাও ধামাধরার পছন্দ নয়। তার ধামাধরাগিরির অনেক নমুনা সে পেশ করে মাঝে মাঝেই। যেমন, প্রতুল যদি বলে যে মোগল সম্রাট আকবরের বাবার নাম শাজাহান ছিল, তবে প্রমিতও সেটাই বলবে। প্রতুল যদি বলে যে হিমালয় পর্বত রাজস্থানে অবস্থিত, প্রমিত সেটাই বলবে। আসলে একই complex- এ থাকে দুজনায়। পালা করে পরস্পরের গাড়িতে যাওয়া-আসা।…তাই প্রমিত উপায়ান্তর না দেখে ধামাধরা হয়েছে। যেমন অভাবে অনটনে পড়লে লোকে ছেলেধরা হয়।
আবার অধঃস্তন কর্মচারীদের কথায় ওঠা বসা প্রতুল ও ধামাধরা প্রমিতের স্বভাব। এই কর্মচারীদের দিয়ে চয়ন কাজ করায়। তাই চয়ন সবার চক্ষুশূল হয়ে উঠেছে।
ধামাধরার তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই। সে নিজের ধামাধরাগিরিই চালিয়ে চলেছে ।
এদেরকে এখন বেশি পাত্তা দেয় না চয়নও। সে নিজের কাজ করে চলেছে।।
******************