Spread the love
সুস্থ সাহিত্য সমাজের দর্পণ ‘

          ✍️মুরারি মোহন চক্রবর্তী✍️

সম্যক হিত সাধনই মূল ভাবনা।
বিশেষ একটা অর্থে হিত সাধনার অনুভুতি সুন্দর রূপে প্রকাশ করাই
সাহিত্য। মেধা শক্তির ব্যবহার করে
সমাজের  জগতের কল্যাণকর ভাবনা ও উপলব্ধির চিত্তাকর্ষক রচনার প্রকাশকে সাহিত্য বলা যায়।
মানুষ সহ জীব জগতের অতীত বর্তমান ও  ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত বিভিন্ন অবস্থানে অবস্থার দিকগুলি
গঠনমূলক ভাবে তুলে ধরার ক্ষেত্রে
সাহিত্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন
কারে।এক কথায় চিন্তা হলো দর্শন,
আর অনুভুতি হলো সাহিত্য। কাছে
গিয়ে চোখে না দেখেও দূরে বসে না
জানাকে জানতে – বুঝতে সাহায্য করে।জামা কাপড় প’রে আয়নার
সামনে দাঁড়ালে আমরা যেমন আমাদের রূপ দেখতে পারি,একই
ভাবে সাহিত্যও আমাদের আর্থসামাজিক রূপটি দেখাতে পারে।এই অর্থে সাহিত্যকে দর্পণ
বলা হয়ে থাকে।
৷ এখানে কয়েকটি কথা বলা প্রয়োজন। সকল মানুষের অবস্থানগত অবস্থা সমান হয়না। যেখানে,মানুষে মানুষে বৈসম্য,বড়ো
মাপের দূরত্বের চিত্র চোখে ভেসে ওঠে,অল্পসংখ্যকের বিপরীতে বহূসংখ্যকের অসহনীয় যন্ত্রণা কাতর জীবন,এক কথায় শ্রেণি
বিভক্ত সমাজ।সেখানে সাহিত্য ভাবনা অবিভক্ত বা একই প্রকার
দৃষ্টিভঙ্গিতে হতে পারেনা। এ ক্ষেত্রে
সুস্থ কথাটি যুক্ত করা সঠিক নয়।
এই প্রকার আরও একটি শব্দ কেউ
কেউ ব্যবহার করে থাকেন।যথা-অপসংস্কৃতি। সুস্থ থাকলে অসুস্থও থাকবে। সুস্থ অসুস্থ অপ
শব্দগুলি অনেক সময় না বুঝেই
হয়তো ব্যবহার করে থাকেন অনেকে।এর ফলে আসল বিষয়টি
আড়ালে চলে যায়,সঠিকটা লুকিয়ে
থাকে। ভোগবাদী বিশ্বায়নের মতে
অবৈজ্ঞানিক  মধ্যযুগের ধারণা,কুসংস্কার মূলক ভাবনা নির্ভর,সাহিত্যের নামে মগজ ধোলাই করা হয় ও  মনের বিকাশ দরে রেখে
বহিরাঙ্গ রূপের প্রাধান্য দিয়ে বিনোদনের নামেএকাধিক চ্যানেলে
প্রচার ধারা অবিরত ভাবে চলছে। মুক্ত যৌনাঞ্চল,বিকৃত যৌনাচার,খুন,নারীকে পণ্য রূপে তুলে ধরা,জমিদার সুলভ মানসিকতার মধ্যে বাহবা প্রকাশ করা(সামন্ত যুগ থেকে চলে আসছে)
ইত্যাদি ধরণের বিষয় নগ্ন ভাবে
প্রকাশ করাকে কী বলা যাবে,অসুস্থ
সাহিত্য?  না, তা সঠিক নয়। ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার সমাজে এর গ্রহণ যোগ্যতা আছে।তাদের রুচিতে
বাধা দেয়না।এই ধারা অস্ত্র হিসাবে
প্রয়োগ করছে,যারা সঠিক মনে করেনা,তাদের মধ্যে। এটা একটা
শ্রেণির বিষয়,অসুস্থ বা সুস্থ নামের
বিষয় নয়। এসবের বিরুদ্ধে যাদের
কলম কথা বলছে,অবক্ষয়ের বিরুদ্ধ যারা মুখ খুলছে,তাঁদের নাম
গুণে বলা যাবে। সমাজ- দর্পণের
ঘষা কাচে তাদের ছবি ধরা পড়েনা।
চলমান স্রোতের জোয়ারে ভেসে চলছে যে কলম,তাদের ছবি দর্পণে
ধরা পড়ে। কিন্ত গোপন বোঝাপড়ার
ছবি আড়ালেই থাকে।
যাঁদের কলম জনস্বার্থে অর্থাৎ সকল প্রকার ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে,
আর্থিক-সামাজিক পীড়নের বিরুদ্ধে
মানবতা ও সাম্যের পক্ষে, চেতনার
মান উন্নত করে তুলতে অবিরত কথা বলে যাচ্ছে, সমাজের দর্পণে
তাঁদের ছবি ধরা পড়েনা। ক্ষমতাবানদের নিয়ন্ত্রণে  দর্পণের
অনেকটা অংশ আজ আটকা আছে। সমাজের বাস্তব ছবি সাহিত্য নামক প্রচারে দেখা যায়না।প্রকৃত অর্থে সাহিত্যকে সমাজের দর্পণ
বলতে বাধা নেই। সাহিত্যের যে ধারা
সমাজের দর্পণের ভূমিকা পালন করতে পারে সেই ধারাই কাম্য।তার জন্য ঐক্যবদ্ধ ভাবে আমাদেরই
সক্রিয় হতে হবে।
*কয়েকদিন খুবই চাপের মধ্যে ছিলাম।আজ কিছুটা সময় বের করে লিখলাম,যদি একটু আগে বলতেন,তা হলে একটু বিষদে
লিখতে পারতাম।
*যদি সঠিক মনে হয় ও সময় থাকে
তার হলে প্রকাশ করবেন।
আপনার সাহিত্য সভার সাফল্য
কামনা করি।শুভেচ্ছা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *