Spread the love

পনেরশ সাল 😌
——————— 
 ঋদেনদিক মিত্রো  ( কলকাতা,  ভারত )

[ কবিতাটি পড়ার আগে রবি ঠাকুর এর কবিতা ” 1400 (চোদ্দশ) সাল ” পড়ে নিলে আরো টেস্ট পাবেন, ও 2 টি কবিতার দৃষ্টিকোন উপলব্ধি করবেন নিশ্চয় ]
              
                       ✍️

আজ,  তোমাদের এই পৃথিবী-গ্রহে 
      এই ধরো পনেরশ সাল,  
বদলেছে কতো হালচাল,  
বদলেছে পৃথিবীর কতো কিছু 
     রূপ আর রং,  
কতো না মানুষ আজ ভিনগ্রহ-বাসি,  
    বদলেছে মানুষের জীবন যাপন,  
তবু হাতে আছে বই,  
আছে কথা হৈচৈ,  
হয়তো রূপটা আজ অন্যরকম,  
     বদলেছে মানুষের জীবন যাপন! 

কিন্তু যতই হোক বিজ্ঞান উঁচু,  
বই মানে কাগজেতে ছাপা পৃষ্ঠা,  
যত্নে বাঁধাই  করা  কতো সুন্দর,  
হাতে ধরে তুলে নিলে আসে নিষ্ঠা! 
হোক বই, হোক পত্রিকা, 

বইয়ের গন্ধ আহা কী গভীর ভালো,  
বই মানে কতো সুখ যায় না বলা,  
কোথাও রয়েছে পড়ে যদি কোনো বই,  
চোখ যায় সেই দিকে,  চুপি পায়ে চলা! 

এখন তো তোমাদের পনেরশ সাল,  
ইলেকট্রনিক বই থাকুক যত,  
কাগজের ছাপা বই আলমারিতে, 
গৃহের কী যেন শোভা  বাড়ে অবিরত! 

ঘটনাটা যদি ঠিক এইভাবে মানি, 
তখন হয়তো আমি থাকবো না জানি —  
জীবন্ত মানুষের রূপে,  
মানুষ কীর্তি দিয়ে থাকে যুগযুগ,  
কোনো এক অনুভব-সুখে! 

সেই অনুভবে আজ লিখছি কবিতা এই,  
দুরন্ত আয়োজন নিয়ে,  
আজ এখন চোদ্দশ সাতাশ সালটা এই, 
পনেরশ সাল হবে কতো দূর গিয়ে! 

যত দূরে গিয়ে হোক পনেরশ সাল,  
আমি আছি, থাকছি ও থাকবো,  
আরো-আরো দূরে যাক নিখিল সময়,
প্রতিটি রাতের পরে     
তোমাদের ঘরে-ঘরে…  
ভোরের সূর্য হয়ে আমি আসবো! 

রাত-ঘন অমাবস্যায় 
      কিংবা জোৎস্না-ভরা আকাশে,   
আমার-ই  তো স্বাদ নেবে তোমরা 
     হালকা হাওয়ার আভাসে,

যদিও পৃথিবী-গ্রহে থাকবে না যারা —   
হয়ে যাবে ভিনগ্রহ-বাসি,  
তাদেরও  কথার মাঝে আমি চলে আসি! 
 
আসলে কী জানো! 
গ্রহ ও গ্রহান্তরে যেখানে সূর্য্যআলো 
খেলবে না পৃথিবীর মতো,  
সেখানে থাকবো মুগ্ধ-নীরবতা হয়ে, 
   পৃথিবীর রাতের পাখির মতো খুব সংহত! 

পরপর সকলেই হয়ে যাবে মহাজাগতিক,  
শিক্ষা ও চেতনায়  সব কসমিক,  
তবুও জানালা পাশে আসবে পাখি,  
নারী ও পুরুষ হবে দুজনে সাথী,  
দিগন্ত কেড়ে নেবে ভাবুক-এর চোখ,  
পাকপাখি নীড়ে ফেরে গোধূলি আলোক! 

এসব তো থাকবেই  পৃথিবীগ্রহে,  
সেই সাথে বদলাবে অনেক কিছু,  
জানালার ধারে বসে চোখ দিয়ে বইয়ে,  
গভীর কী ভাবনায় কারো মুখ নিচু!

আছে হাওয়া, গাছপালা নদনদী গাঙ, 
আছে মানুষের মাঝে মান অপমান, 
আছে আজকের মতো লেখা,  নাচ-গান, 
আছে খেলা, হাসি আর কান্না — এ দুই,   
তবে তা বদলে গেছে
      মহাজাগতিক ঢঙে
আমদানি হয়ে গেছে অনেক কিছুই, 

  দাওয়ায় রয়েছে হাওয়া, 
   মাদুরে  আরাম পাওয়া… 
                            শুয়ে,
  নাকি এরা হবে স্মৃতি, 
  ভালোবাসা প্রেম প্রীতি, 
  অভিমানে কাঁদবে না কেউ আর 
           গড়িয়ে ভুঁয়ে!

থাকবে কি মাকড়সা জাল ও ইঁদুর, 
   টিকটিকি, আরশোলা, উই, ছারপোকা, 
থাকবে কি সংস্কার — ধর্ম কিছুর, 
     ধূর্ত কি খুঁজবে — কোথায়   বোকা!

থাকবে কি শিশুদের ঝুঁকে- দুলে পড়া, 
   থাকবে কি শিক্ষকে নত হয়ে নমো, 
এটা যদি নাই থাকে — সভ্যতা শেষ,  
   থাকলো না কিছু আর শেষ অনুপমো!  

  ঢের কিছু বদলাবে সময় ধারায়, 
   সভ্যতা কিন্তু মননে দাঁড়ায়!

অনেক কিছুই হবে দূর হাওয়া স্মৃতি, 
    পৃথিবী ও ভিনগ্রহে
        আমি ঠিক থেকে যাব
            দুরন্ত কৃতি! 

তাই আজ পনেরোশ’ সালটা  হলেও, 
   আমি আছি,  থাকবো
        তকমা টা নিয়ে ঠিক 
                    কসমিক কবি, 

এইটাই ছবি…

চোদ্দোশ সাতাশেতে 
      যারা করে বিদ্রুপ, 
তারা যদি বেঁচে থাকে কেউ,
      পনেরোশ সালে তারা 
         হয়ে যাবে লজ্জায় চুপ!

  তাদের বংশধর পনেরশ সালে, 
ভাববে কতো কী যে আমায় নিয়ে,   
   কী যেন ভাববে তারা 
       আমার ছবির দিকে
            ধীর তাকিয়ে!

হয়তো তুমিই সেই জন দাঁড়িয়ে, 

ভাবছো অনেক কিছু
  আমার ছবির দিকে স্থির তাকিয়ে!

আছে কি খেয়াল, 
কবিতাটা চোদ্দশ সাতাশে লেখা, 
তুমি পড়ে ভাবছো পনেরোশ সাল!
আছে কি খেয়াল!

                    *******

বি-দ্রঃ 👩‍🎓
A Bengali poem like “Panerosho sal” i.e. ” 1500 Bengali Calendar” by Ridendick Mitro. Here it has been exposed what would be the situation of the poet in 1500 Bengali Calendar”. Rabindranath Tagore wrote a Bengali poem like  “1400 Sal” that he exposed what would be the Situation in 1400 Bonggabdo. Mainly it’s separate poets’ seperate trend of view.

   — Editor: kabyapot.com

     [কবিতাটি রচনা, 14 এপ্রিল,  2020  রাত্রি. 1427 সন,  একলা বৈশাখ]

                    😍
আমার “পনেরোশ সাল ” কবিতা নিয়ে কৈফিয়ত. 
———————————–
     কেউ বলবেন,  রবি ঠাকুর লিখেছেন “1400 (চৌদ্দশ) সাল ” কবিতা.  সেখানে তিনি লিখেছেন,  তাঁর লেখা তাঁর জীবিত থাকার প্রায় একশো বছর পরেও  কী ঘটবে,  কী ভাবে তাঁর কবিতা কতটা কোথায় প্রভাব বিস্তার করবে,  সেই নিয়ে লেখা.

     তাহলে এমন ভাবনা রবি ঠাকুর লিখতে পারেন,  ঋদেনদিক মিত্রো কেন লিখবে? 
    
     ওই কথাটা রবি ঠাকুরকেও তখন অনেকে বলতো. মূলত  নোবেল পাবার আগে রবি ঠাকুরের লেখাকে  তখন এতোটাই লোকে নিতে পারতো না যে তিনি অতিষ্ট হয়ে  মনে-মনে একঘরে হয়ে থাকতেন. ভাষাটার অর্থ নিশ্চয় বুঝে গেছেন.

     তিনি নোবেল পাবার পর যখন
শান্তিনিকেতনে  যখন তাঁকে সম্মান জানানোর সভা করা হয়,  তখন তিনি মঞ্চে উঠেই
বলেন, — আপনাদের দেওয়া এই পান পাত্র ওষ্ঠে ছোঁয়াইলাম,  কিন্তু পিইতে পারিলাম না,  কারণ ইহাতে বিষ রহিয়াছে, — এই জাতীয় কথা.

     আমি বলতে চাই এখানে,    কেউ কারো মতো নয়. আমাদের অনেক রকম অন্ধ স্বভাব সরিয়ে কবিতাকে কবিতা হিসেবে দেখেই মৌলিকতা থাকলে কোথায় কী ভাবে আছে,  কে কোথায় তার সময়-কালীন নিয়মে  কতটা মৌলিক হতে পেরেছে ,   সেটা সঠিক বুঝতে পারা প্রকৃত পাঠক চরিত্র. যারা রবি ঠাকুরকে নিয়ে ধরে থেকে অন্যদেরকে দয়ার চোখে দেখেন,  তাঁরা  রবি ঠাকুরের  নোবেল দেখে বিচার করেন, সাহিত্য তাঁরা  বোঝেন না.  কারণ,  তাঁদের সাহিত্যের কোষ নিয়ে কোনো স্পর্শ-বোধ নেই.  এই বোকা গোরু বুদ্ধির পাঠক ও সমালোচরের  পরিসর দ্বারা  আমাদের দেশের বেশির ভাগ সাহিত্য সমালোচনা চলছে. এঁরা  কোনও  রাজনৈতিক চাপ বা প্রতিষ্ঠানের  খাপ  দ্বারা প্রভাবিত,  কেউ বা কোনো লেখকের পুরস্কারের  তকমা দ্বারা প্রভাবিত. কেউ বা কোনো লেখক-কবির নামের সাথে জড়িয়ে থাকা কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠানের লেবেল দ্বারা প্রভাবিত, কেউ বা কিছু পাবার আশায় চালাকি করার অভ্যেস দ্বারা প্রভাবিত,  কেউ বা নিজস্ব অন্যরকম ভ্রম দ্বারা প্রভাবিত.  ফলে এদেশে অনেক দুরন্ত কবি লেখক আছেন,  কিন্তু তাঁরা  ঠিক প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ায় আসতে  পারছেন না. অনেকে আবার জেলাসি নিয়ে চলেন,  ফলে তাঁদের মনের বিকৃতি খুব.  তাঁরা  না হতে পারেন উৎকৃষ্ট কবি লেখক,  যোগ্যতা থেকেও  তাই পিছিয়ে যেতে থাকেন. এঁরা আবার কেউ না হতে পারেন যথার্থ পাঠক.  তবে এরা অনেক দাদা দিদিদের নামের সংগ্রাহক. আড়ালে আসল কথাটা এই,   ফ্রি মাইন্ড কঠোর সমালোচক অনেক চাই আমাদের দেশে.  একজন বুদ্ধদেব বসু বাংলা ভাষার সেরা পাঁচ জন কবির 4 জন — জীবনানন্দ,  সমর সেন, সুধীন দত্ত,  প্রেমেন মিত্র কে আবিষ্কার করে  জন সমুদ্রে এনে ছিলেন.  পুরো বাংলা ভাষার  আধুনিক সভ্যতাকে তিনি  তৈরী করিয়ে নিয়েছিলেন — আর সেই মানুষটি মাত্র একজন মুক্ত মনের কবি ও সমালোচক.   কী marit এবং  নিরপেক্ষ চিন্তা ও সাহস ছিল তাঁর,  সুধীন দত্তের কবিতায় চেতনা ও সাহসী ধরণ  দেখেই তিনি বি এ পাস সুধীনকে  যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যালেন্ট কোটার প্রসেসে  comparetive লিটারেচার পড়াতে প্রফেসর করে দিয়েছিলেন, যদিও তখন সুধীনের লেখার পরিমান তেমন নয়.  সারা জীবনে তাঁর মাত্র দুটি গ্রন্থ বেরোয়. মোট লেখা 110 ( একশ দশ ) টি কবিতা মাত্র. তাও প্রথম কবিতা বই বেরুনোর পর পরেরটি বেরোয় দশ বছর পরে.  তিনি কাটাকুটি করে মার্জিত করতে এতটাই সময় নিয়েছিলেন.

     শুধুই এদের নয়,  সুনীল গাঙ্গুলী, শক্তি চট্টোপাধ্যায় সহ এক শতক মতো কবি লেখক,  যাঁরা  রবীন্দ্র পরবর্তী সময়ে বাংলা সাহিত্যের ধারক বাহক,  তাঁদেরকে তিনি অসম্ভব দক্ষতায় বাছাই করে ” আধুনিক বাংলা কবিতা ”  সংকলন বের করেন.  এর পরিবর্ধিত সংকলনও উনি বের করেন.
প্রতিভা চেনবার ক্ষমতা ও চেনানোর দক্ষতা ও উদারতা তাঁর এতটাই ছিল.
পরবর্তী কালে এই দায়িত্ব পালন করে ছিলেন “দেশ ” পত্রিকার সম্পাদক সাগরময় ঘোষ

আন্তর্জাতিক নিয়মে যে কোনো মানুষকে ট্যালেন্ট কোটা-র আইনে যে কোনো পোস্টে বসানো যায়,  নির্দিষ্ট  বিভাগে ধরাবাঁধা নিয়মের ডিগ্ৰী না থেকেও. এগুলি আমরা অনেকেই জানিনা.  জানানো হয়ও না সহজ ভাবে. জানলেও বা কী বয়ে যায় কার ! কারণ,  এই দেশে এখন রাজনৈতিক ট্যালেন্ট থাকলে তিনিই এদেশের যে কোনো পোস্টে বসতে পারেন.  কারণ জনগণের অভিশাপ কুড়ানোই এঁদের কাছে মর্যাদা প্রাপ্তি বলে গণ্য হয়.  কিন্তু,  তবুও হতাশ হবেন না কেউ,  কারণ রাজনীতির ট্যালেন্ট বা দক্ষতা দিয়েই শুধু যাঁরা কোনো অরাজনৈতিক মহৎ  পদ দখল করেন,  সেখানে তাঁরা প্রতিষ্ঠা পান না.  পরিচিতি পান,  রাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে.  এটাই হলো ” যোগ্যতা ” শব্দটির শেষ কথা. তাঁদের যে যোগ্যতা আছে সে জন্য-ই তাঁরা কদর বা গোবর,  একটা কিছু পান.  গোবরকে কেউ মূল্যহীন ভাববেন না যেন.  গোবর হিন্দুদের পূজায় লাগে.  সব ধর্মের লোকেরা সার ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে.  কাঁচা অবস্থাতে পুজোতে, আবার  জীবাণু নাসক লিকুইড বানিয়েও আমরা গৃহে ব্যবহার করিয়া থাকি.  শুকনো অবস্থাতে ঘুঁটে  জ্বালানি.  কিছু-কিছু লোক আবার গোবরকে মাথায় ঢুকিয়ে নেন,  কেতাদুরন্ত  তথা কথিত ” বুদ্ধিজীবী ” হিসেবে প্রতিষ্ঠা নিতে.   আর নাই বা কথা বাড়ালাম এখানে.  ভালো থাকুন. কিন্তু একটা কথা শেষে বলি,  গরুর গোবরের মূল্য বহু,  কিন্ত মানুষের বুদ্ধির গোবর মূল্যহীন,  এবং জীবানু বিনাশ তো করেই না,  বরং  সেটা পৃথিবীর সব বিষের চেয়ে  বেশি বিষাক্ত.  পটাসিয়াম সায়ানাইডের চেয়েও, এবং পচা আলুর চেয়েও অসহ্য গন্ধ.  এই যা.   :– ঋদেনদিক মিত্রো.
                  
                     🙏
     যদি আমার “পনেরশ সাল” কবিতাটি আগে কোথাও পাঠিয়েছি, ও সেটা প্রকাশিত হয়েছে, এবং সেটা আমার খেয়াল নেই,  তবে যদি সেই খোঁজ পাওয়া যায়, সেটা আমার ক্ষেত্রে লজ্জার, সেটা কোনোও সম্পাদকের দোষ নয়,  আমার হিসেব না রাখার দোষ. কারণ,  একাধিক পত্রিকায়  একটি লেখা প্রকাশ করা যায় না! প্রকাশ করা যায়, যদি একাধিক পত্রিকা-সম্পাদক সকলেই পুনঃ মুদ্রণ হিসেবে বা সমসময়ে একত্রে তাঁরা প্রকাশ করবেন — এটা জেনে থাকেন আগে থেকে!

As much as possible my Bengali Poem ‘Panerosho Sal” was not given ago to other Magazine, and so, 
If it is found anywhere else,  it is my shame.

             😉🍉🍏
###
Ridendick Mitro 
পেশা:– কবি- উপন্যাসিক- গীতিকার- নিবন্ধকার,   ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় পৃথক ভাবে.

বিশ্ব জাতীয় সংগীত
” world anthem— we are the citizen of the earth ” ও ” Corona anthem 2020 official bengali song” (আগ্রাসনের নেশার সাথে হিংসা সীমাছাড়া) প্রভৃতি বিশেষ ধরণের গীতিকার. 2020 সাল পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে প্রকাশের গ্রন্থ সংখ্যা প্রায় 20 (কুড়ি ) টি!

কলকাতা,  ভারত.

            😳

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *