Spread the love
নেশা
✍️শচীদুলাল পাল✍️ 
কোলকাতার মতিঝিল এলাকায় ভদ্রপরিবেশে শিক্ষিত আভিজাত্যপূর্ণ বসবাসকারীদের পাড়ায় দুবিঘা জমির মালিক প্রকাশ দাস। 
একদিকে বাসস্থান অন্যপ্রান্তে সুতোর কারখানা। ভালোই চলে।অনেক টাকার মালিক।দুই ছেলে প্রবীর ও সুদীপ।পড়াশোনা ওই মাধ্যমিক ।দুজনেই মদ্যপ। চরিত্রহীন। বাপের টাকায় ফূর্তি। মদ আর মেয়েমানুষ। 
একদিন হটাৎ হার্ট স্ট্রোকে মারা গেলেন প্রকাশ দাস।
দুভাই আরও উশৃংখল হলো। বাপের টাকা উড়িয়ে ফূর্তির মাত্রা বাড়িয়ে দিল।দুজনেই মেয়ে নিয়ে ঘরে আসত।প্রতিমাসে আলাদা আলাদা মেয়ে।
এলাকার নাগরিক সমাজের চাপে 
একদিন দুজনেই বিয়ে করতে বাধ্য হলো। বড়ো প্রবীর এক ভদ্রঘরের মেয়েকে বিয়ে করল।
বউটা বেশ সহজ সরল।
 আর ছোটো ভাই সুদীপ  পাড়ার এক স্বর্ণালি নামে সুন্দরী বি এ পাশ মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে ঢুকালো। 
মদ আর বিলাসিতায় ডুবে গেলো। 
হু হু করে বাপের  জমানো টাকা খরচ হতে লাগলো। কারখানাও আর তেমন চলে না।
   হটাৎ একদিন এক প্রমোটার টোপ দিল  “তোমরা যদি তোমাদের জমিটা আমাকে বিক্রি করো আমি তোমাদের প্রচুর টাকা দেব আর দেব দুজনকে দু দুটো ফ্ল্যাট। “
অকর্মন্য প্রবীর আর সুদীপ রাজি হয়ে গেলো। 
প্রমোটার ফ্ল্যাট দিল ৪৫০ স্কোয়ার ফিটের দুটো। একই সাইজের ফ্ল্যাট পাশাপাশি । দুটো ছোটো ছোটো  বেডরুম। একটা ডাইনিং স্পেস সেখানেই রান্না বান্না । আর ল্যাট্রিন বাথরুম। 
কিছুদিনের মধ্যে ছোট ভাই সুদীপের ছেলে হলো।বছর চারেক পর বড়ো ভাই প্রবীরেরও এক ছেলে হলো। খুশিতে জোয়ার বইয়ে গেলো। 
বছর দশেক পর  মাতাল সুদীপ তার সুন্দরী বউ থাকতে  ছেড়ে অন্য মেয়ে আর মদ  জুয়া বোমা পিস্তল নিয়ে  সমাজবিরোধী কর্মে লিপ্ত হলো।  মেয়েদের পিছনে ও দামি দামি বোতলে হু হু করে টাকা খরচ হতে লাগলো।ফ্ল্যাট বিক্রির টাকা ধীরে ধীরে তলানিতে ঠেকলো।
জমানো টাকায় টান পড়লো।
 স্বর্ণালির সামনে গভীর সমস্যা। স্বামী ঘর সংসার কিছুই দেখতোনা। রোজ দু’বেলা দুমুঠো খাবারও জুটাতে অক্ষম স্বামী। 
আয় উপার্জন নাই।
 অনেকদিন বাড়িতেই আসতো না। বছর দশেকের ছেলেকে নিয়ে অর্ধাহারে দিন কাটাতে লাগালো। 
খুব ফর্সা সুন্দর স্লিম আকর্ষণীয় চেহারা ছিল ছোট বউ স্বর্ণালির। 
অপারগ হয়ে সে বাজারে  এক বুড়ো দোকানদারকে দেহ দান শুরু করলো।কথাটা সুদীপের কানে এলো।  একদিন মাতাল স্বামী ঘরে এসে স্বর্নালীকে সারারাত পিটালো।
— হারামজাদি বেশ্যামাগী।দোকানদারকে দিয়ে  —-
— বেশ করেছি।ভাত দেবার নাম নাই কিল মারবার গোঁসাই! 
—- আজ তোর গরম আমি বের করছি।
 কাপড় খুলে উলঙ্গ করে খাটের তলায় ঢুকিয়ে রাখলো সারারাত।মশার কামড়ে প্রাণ ওষ্টাগত।বেরিয়ে আসলেও মার।সারারাত এইভাবে  নির্যাতন করে সকালবেলা বেরিয়ে গেলো।
এরকম ঘটনা নিত্য ঘটতে লাগলো। ভাই ও ভাইপোর অনুপস্থিতিতে কিছু  খাবার হাতে একদিন  ভাসুর খোঁজ নিতে এলে স্বর্ণালি  ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলো। 
— আমি আর অত্যাচার দারিদ্র্যতা সহ্য করতে পারছি না। আমি একদিন  গলায় দড়ি দিয়ে  আত্মহত্যা করব। বিধবা মা কাকার বাড়িতে কৃতদাসের মতো থাকে। মায়ের কাছে গিয়ে থাকব তারও কোনো উপায় নেই।
 আপনি আমার ছেলেকে দেখবেন।  ঘরে চাল  আটা নেই। সাধারণ পোশাকে থাকি। এক তারকারি ডাল আর ভাত। তাও একবেলা। রাতে ত কোনোদিন শুধু জল খেয়েই শুয়ে পড়ি।
ভাসুর ছোট বউ স্বর্ণালির চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলল
— আমি শুনেছি তুমি  হাজরা দোকানদারকে টাকার জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছো?
— হা।কি করব বলুন। খেয়ে পরে বাঁচতে ত হবে।ছেলেটাকে দুটো খাবার দিতে হবে। দশ বছরের ছেলে অপুষ্টিতে ভুগছে। 
দুই বাড়িতে খুব যাওয়া আসা ছিল। খুব ভাব। বড় বউএর মনটা সরল ছিল।
প্রবীর মদ খেত কিন্তু সংযত ছিল।মাতলামি করতো না।খুব হিসাবি ছিল।
বলল – – দেখো স্বর্ণালি এই আবাসনে অনেক শিক্ষিত, উচ্চ আয়ের ক্ষমতা বান অফিসারা ফ্ল্যাট কিনে বাস করে। তোমার বিপরীতেই থাকেন  আই এস অফিসার । তার নিজস্ব সিকিউরিটি গার্ড  আছে।  এরকম মারপিট কান্নাকাটির আওয়াজ বাইরে যাচ্ছে তাতে আমারও সম্মান নষ্ট হচ্ছে। 
—- সেটা আপনার ভাইকে বললেই ত পারেন। 
— বলেছি। কোনো ফল হয়নি।উল্টো এখন আমার কাছ থেকেই টাকা নেয় মদ কেনার জন্য।
— আপনি মদ কেনার জন্য টাকা দিচ্ছেন। আমাকে কী দিচ্ছেন?
শুনেছি আপনি  মাতাল ভাইকে ঠকিয়েছেন। টাকার ভাগ বাটোয়ারায় বেইমানি করেছেন।  কম টাকা পাইয়ে দিয়ে নিজে বেশি টাকা নিয়েছেন। আমি এবার সবাইকে বলে দেব। 
—-  চুপ!  চুপ! চুপ করো। তুমি শিক্ষিতা বুদ্ধিমতী।এ কথা তুমি অন্তত বলোনা।
— কেন বলবো না।বঞ্চনার ইতিহাস সবাই জানুক।
স্বর্ণালি কে জড়িয়ে ধরে প্রবীর বললো 
—- আমি তোমাকে ভালবাসি। আমি তোমাকে দেখবো।যখন যা চাইবে তাই পাবে।তোমাকে মরতে আমি দেবনা। কিন্তু তার বিনিময়ে তোমাকে চাই। তোমাকে টাকার জন্য  এখন থেকে অন্য কোথাও যেতে হবেনা। রাজি?
     স্বর্ণালি ভাসুরের আরো ঘনিষ্ট হলো। ভাসুরের কন্ঠলগ্ন হয়ে একবার আড়চোখে তাকিয়ে বুকে মাথা রেখে নিশ্চিত আশ্রয়ে সমর্পণ করলো।   ৷   বছর ত্রিশেকের স্বর্ণালি  ইশারায় ভাসুরকে বেড রুমে নিয়ে গেলো।
দেখুন আপনার  ভাই মেরে আমার সর্বাঙ্গে ব্যথা ধরিয়ে দিয়েছে গতকাল।কাপড় সরিয়ে  এক এক অঙ্গ দেখাতে লাগলো। 
প্রবীর বললো দাঁড়াও  তেল নিয়ে আসি।
প্রবীর তেল আনতে গেলে বুদ্ধিমতী স্বর্ণালি মনে মনে ভেবে নিল এইত জঠর জ্বালা নিবারনের ও সুস্থ ভাবে বেঁচে থেকে সহজ উপায়। বড়জার কাছে জেনেছে প্রবীরও লম্পট,,, দামী দামী মদ খায় বেশ্যা সক্ত। ।যেভাবে হোক ভাসুরকে বশ করতে হবে।
বাইরে ঘন মেঘ। বৃষ্টি পড়ছে।সে  দক্ষিণের একমাত্র জানালাটা বন্ধ করে  হালকা আলোটা জেলে  একে একে সব কাপড় খুলে নগ্ন হয়ে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে রইল। 
প্রবীর কিচেনে বাথরুমে তেল না পেয়ে নিজের ঘর থেকে চুপিসারে অলিভ অয়েল নিয়ে এলো।
স্বর্ণালী টের পেল ভাসুর এসেছে। মুখ দিয়ে আহ্ উ শব্দ করতে লাগলো। বলল ” আপনি এসেছেন। আমি ভাবলাম আপনি আর আসবেন না। আমি আর যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছি না।আপনি একটু ম্যাসেজ করে দিন। “ভাসুর ধীরে ধীরে ম্যাসেজ শুরু করলো। অপরূপা সুন্দরী স্বর্ণালি। বিয়ের পর একবার এরকম নগ্ন দেখেছিল  লুকিয়ে বাথরুমে। আজও সে তেমনি আছে। লালাভ ফর্সাদেহ।গুরু নিতম্ব।খোলা লম্বা চুল পিঠে এসে পড়েছে। অলিভ অয়েল দিয়ে দুপা আরপর জাং নিতম্ব কোমর পিঠ ঘাড় ধীরে ধীরে ম্যসেজ করতেই স্বর্ণালির শরীরে শিহরণ খেলে গেল। সে চিৎ হলো 
সুডৌল স্তন। অর্ধচন্দ্রাকারের মতো কপাল উন্নত নাসিকা গাল দিয়ে আনদাশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। বিম্বফুলের মতো ওষ্টো।প্রবীর ঠোঁটে চুমু দিতেই সে প্রবীরকে বুকে জাপটে ধরল।
ধীরে ধীরে  নিম্নাঙ্গ স্পর্শ করতেই স্বর্ণালি মিলনের জন্য উৎসাহিত করলো।মিলনে 
অপূর্ব সুখানুভূতি। অনাস্বাদিত আনন্দ। এই আনন্দ সে কোনোদিন পায়নি।তার মাতাল স্বামী কোনো দিন দিতে পারেনি।এখন ত সে ইম্পোটেন্সিতে ভুগছে । দীর্ঘদিনের ক্ষুধার্ত
স্বর্ণালি   মনে ভাবলো আজই তার দীর্ঘ জীবনের কুমারিত্ব বিনষ্ট হলো প্রকৃত পুরুষের স্পর্শ পেয়ে।  ক্লাইমেক্স কি আজ অনুভব করলো। মনে মনে ভাবল প্রবীরই আমার জীবনের প্রথম পুরুষ। জঠর জ্বালা, দেহের জ্বালা, আর্থিক সামাজিক সব সমস্যার সমাধান করবে।সে প্রদীপকে অসংখ্য চুম্বনে ভরে দিল। বলল ” আপনিই আমার জীবনের প্রথম পুরুষ। আপনিই আমার স্বামী। এঘর এই দেহ আপনার। আপনি যেদিন খুশি যখন খুশি আসবেন। আপনার জন্য আমি ঘরের  মনের দেহের দ্বার উন্মুক্ত করে দিলাম। 
প্রবীর অনেক খাবার এক বান্ডিল টাকা  এনেছিলো।
 প্রবীর চলে যেতে গোগ্রাসে
সব গিলে সাবাড় করলো তার জঠর জ্বালাও নিবারন করলো।  
সে ঈশ্বর কে ধন্যবাদ জানালো। 
  
প্রবীরের স্বর্ণালির উপর  আকর্ষণ বেড়ে গেলো।
ভাই সুদীপ যখন মদের ঠেকে আড্ডা দিত দুইবাড়ির ছেলে দুটি স্কুলে তখন চুপিসারে স্বর্ণালির কাছে আসতো। তৈরি করা খাবার নিয়ে আসত ।অজান্তে একদিন স্বর্নালী ও ভাসুর প্রবীর নিয়মিত  আবদ্ধ হলো দেহ মিলনে।
   প্রবীরের কথায় স্বর্ণালি আর স্বর্ণালির কথায় প্রবীর ওঠবোস করত।ঘরে একটা শান্তির বাতাবরণ তৈরি হলো। 
আবার স্বর্ণালি একদিন গর্ভবতী হলো। সুদীপ আর ঘরে মাতলামি করেনা। তার খাওয়া দাওয়া স্টাইল বেড়ে গেলো। মদের মাত্রা ও কোয়ালিটি বেড়ে গিয়ে আনন্দিত হলো।মাতাল সুদীপ জানলো দাদার সাহায্যের টাকায় সংসার চলছে।  সেওত জানে ভাগ বাটোয়ারায়  দাদা বেইমানি করেছে সুতরাং দাদা যদি দিয়েই
থাকে সেতো জমিবিক্রির আমারই টাকা।  শুধু জানতোনা  দাদার  সাথে স্বর্ণালির অবৈধ সম্পর্কের কথা।
সে নিশ্চুপ থাকলো।বুদ্ধিমতী স্বর্ণালি মাঝে মধ্যে মাতাল স্বামির বিছানায় শুতে যেত।
একদিন স্বর্ণালি প্রবীরের  ঔরসজাত এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিল।
অর্থাৎ বড়ো ভাই প্রবীরের এক ছেলে নাম মন্টে আর সুদীপের এক ছেলে নাম কালটু আর মেয়ে বুল্টি একসাথে আবাসনে বড়ো হতে লাগলো। 
                 (২)
চৌদ্দ বছর পরে। ৪৫০ স্কোয়ের ফুটের  ফ্ল্যাটে স্বর্ণালি বড়ো ঘরে বিয়েতে পাওয়া বড়ো খাটে ছেলে মেয়েকে নিয়ে একসাথে শোয়।আর ছোট রুমটাতে মাতাল স্বামী ঘুমায়।
কাল্টুর বয়স ২৪। গ্র‍্যায়ুয়েশন করেছে। কোনো চাকরি বাকরি নেই।অনেক চেষ্টা করেছে। পাইনি। এখানে তার বয়সী সব ছেলেরা চাকরি করে নাহলেও কিছু না কিছু উপার্জন করে।কিন্তু সে  সম্পুর্ন বেকার। লজ্জায় ঘরেই থাকে। কারোর সাথে মিশতো না।
বাপের দেখে সেও মদ ধরলো। 
অন্যদিকে ভাসুরের ছেলে পড়াশুনায় মাধ্যমিক পাশ  করে হায়ার সেকেন্ডারি তে তিনবার ফেল করে  আর পড়েনি মন্টে।
বাইরে দিনরাত আজে বাজে ছেলেদের সাথে ওঠাবসা। দুই ছেলেই বাবা কাকার দেখাদেখি মদ ধরলো।   ধীরে ধীরে  মদ ছেড়ে ড্রাগসের নেশায় আসক্ত হলো। হঠাৎ একদিন মন্টের হাতে এক ইনকামের রাস্তা খুলে গেলো। সে ড্রাগস পাচার চক্রের সাথে জড়িয়ে গেল।ড্রাগস সাপ্লাই এর কাজে যুক্ত হয়ে গেলো। বেশ মোটা টাকা ইনকাম তার সাথে নেশা। মন্টে কাকার ছেলে কালটুকেও ড্রাগস ধরিয়ে দিল। 
ড্রাগসের আসক্তি বড়ো ভয়ানক।
কালটু  মায়ের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করতো। চুরি চামারি করতে লাগলো। কখনো আবাসনে কারো মোবাইল কারো  সাইকেল মোটরবাইক ইত্যাদি গায়েব করে বেচে  দিত।
নেশায় আসক্ত হয়ে জঘন্য কাজ করতে ঘৃণা করতো না।
একদিন  মা
বিছানায় মা মাখখানে শুতো। একদিন বললো 
— এবার তুমি একপাশে শোবে।তোমার রোগ যন্ত্রণার এবং নাক ডাকার আওয়াজে আমার ঘুম আসে না। 
মা ছেলের কাছে তাই মেনে নিল।
বুল্টির বয়স চোদ্দো পনেরো। ঘুমের এবং নেশার ঘোরে এক ঝড়ের রাতে বুল্টির শরীরে হাত দিয়ে ফেললো। উত্তেজিত হলো। বুল্টি তীব্র প্রতিবাদ করলেও বলিষ্ঠ দাদার কাছে আত্মসমর্পণ করলো। প্রতি রাতে তারা মিলিত হতো।
একদিন রাতে স্বর্ণালি তীব্র প্রতিবাদ করে বললো- “তোর সব সহ্য  করেছি এটাকে কিছুতেই মেনে নেব না 
তোর বাবাকে বলে দেব। ”
— তুমি কী বলবে? তুমি যদি বলো তাহলে আমিও ছেড়ে দেবনা। জ্যেঠুর সাথে তোমার ঘনিষ্ঠতা আমি সব দেখেছি। তুমি কোন সতী!
স্বর্ণালি কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল ফেলতে লাগলো। 
বুল্টি বললো “জানোয়ারের বাচ্চা জানোয়ারই হয় মা। আমি ছোট হলে কিহবে এই পরিবারে সবকিছুই আমি জানি।এই স্রোতের গতিরোধ করা যায় না মা।আমি নেশাচ্ছন্ন দাদার কাছে অপারগ।এই আবাসনে অনেক সভ্রান্তশালী চরিত্রবান লোক থাকে। বেশি চীৎকার করলে লোক জানাজানি হবে। আমাদেরই বদনাম হবে। সবাই আমাদের ঘৃণা করবে। “
ছোট্ট মেয়ের যুক্তির কাছে হার মানলো। এই সমস্যার সমাধানের জন্য ঈশ্বরকে ডাকতে লাগলো। 
        এদিকে প্রবীরের ছেলে মন্টের প্রচুর উপার্জন। ঘরের ভোল পাল্টে গেলো। ছেলের টাকায় দামিদামি মদ সিগারেট খেতে লাগলো। ভাইকেও  মদ দিত।দুই পরিবারে সচ্ছল অবস্থা। কিন্তু পাপ কখনো বাপকেও ছাড়েনা। একদিন গভীর রাতে বিশাল বাহিনী নিয়ে পুলিশ এসে ধরে নিয়ে কয়েদ করলো। বাপ প্রবীর প্রচুর টাকা পয়সা দিয়ে ছেলে মন্টেকে জামিনে ছাড়িয়ে ঘরে  আনলো।কেস জোরালো।      
                       
         দিন কয়েক বাদে এক রাতে এক অপরিচিত ছেলে এসে ঘর থেকে মন্টেকে  ডেকে নিয়ে গেলো। 
পরদিন থেকে আর পাত্তায় নাই ছেলের।মোবাইল সুইচ অফ। ফোন করলে অপর প্রান্ত থেকে আওয়াজ  ভেসে আসতো “এই নম্বরের কোনো অস্তিত্ত্ব নেই। “
কিংকর্তব্যবিমুঢ় প্রবীর কি করবে ভেবে পেলোনা। 
হটাৎ এক রাতে ফোন এলো “আপনার ছেলে আর নেই।আপনি খোঁজ নেবার চেষ্টা করবেন না।পুলিশে ইনফর্ম করলে আপনি ও আপনার পুরো পরিবার কে গুলি করে মেরে শেষ করে  দেব। “
প্রবীর জড়ভরত হয়ে গেলো। সে আর ঘর থেকে বের হয়না।
দিনরাত সে  দরজা জানলা বন্ধ করে শুধু  টিভির দিকে চেয়ে থাকে।শোকে আচ্ছন্ন হলো।মনের কথা কাউকে ব্যক্ত করতে পারেনা।সে কারোর কাছে ব্যক্ত করতে পারে না। ভয়ে আতঙ্গে ভয়ভীত হয়ে দিন কাটায়।বছর খানেক বাদে শরীরে স্কিন ডিজিজ হলো। ডাক্তারের পরামর্শ মতো নানান টেষ্ট করালো। অবশেষে দেখা গেলো  দুটো কিডনিই ড্যামেজ। ওষুধ ডায়ালিসিস চললো কিছুদিন। দীর্ঘদিন রোগভোগ শেষে একদিন সারারাত ছটফট করতে করতে মরে গেলো। 
        এবার ছোট ভাই সুদীপ আবার পড়লো সংকটে।অত্যধিক মদ্যপানের কারনে তার লিভার ক্যান্সার হলো।ঘরে খাবার জোটেনা।বিভিন্ন ঠেকে সে ভিক্ষা করতে লাগলো। যে যায় দেয় তাই খায়।যেটুকু টাকা ছিল তাই দিয়ে ওষুধ ও মদ গিলত।
   ঘুমও আসতো না।সারারাত একদম জেগেই কাটাতো।এর ফলে ছেলে মেয়ের অপকীর্তি ধরা পড়লো। ছেলে কে শাসন করতে গিয়ে তীব্র বাদানুবাদ হতো দিনরাত।পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা অনেকেই ব্যপারটা আন্দাজ করতে লাগলো। ছেলে মেয়ে মা তিনজনে মিলে যুক্তি করলো। ছেলে কাল্টু বলল”এভাবে চললে একদিকে আমরা মুখ দেখাতে পারবো না। অন্যদিকে  মা স্বর্ণালি বললো ” টাকা পয়সাও ত প্রায় শুণ্য। যেটুকু আছে সেটাও যদি চিকিৎসায় ব্যয় হয় তাহলে আমরা না খেয়ে মরব”
কালটু বললো ” বাবাকে বাঁচিয়ে রাখার কোনো মানে হয়না”
ওকে মেরে ফেলি গলা টিপে। “
বুলটি বললো ” বাবাকে মেরোনা”।
স্বর্ণালি বললো ” কে তোর বাপ! তুই ত ভালো করেই জানিস ওই মাতালটা তোর বাপ নয়।
তোর জ্যেঠুর ঔরসে তোর জন্ম হয়েছে। “
বুলটি বললো ” হা জানি “। 
কাল্টু বললো ” বাপটা তোমাকে সারাজীবন খেতে দেয়নি নির্যাতন করেছে। বেদম মেরেছে। ন্যাংটো করে সারারাত খাটের তলায় ঢুকিয়ে মশার কামড় খাইয়েছে।”
ওটা মানুষ নয় জানোয়ার। “
তারপর কালটু একবোতল মদ আনলো। মা বোন সবাইকে দিল 
খেয়ে নে।মনের জোর পাবি
দুজনে তাই করলো। 
তারপর সুদীপের ঘরে এলো।কালটু বললো ” একটু খাবে ” সে জোর করে বাপের মুখে ঢুকিয়ে দিল। 
স্বর্ণালি পা দুটো চেপে ধরলো। কালটু বললো ” আজ তোমার ভবলীলা শেষ। ” 
সুদীপ বলল ” না আমাকে তোরা মারিস না। বুলটি তুই এদের বাধা দে। আমি তোর বাপ।”
বুলটি বললো ” মরবার আগে জেনে যাও আমি তোমার ঔরসে জন্মাইনি।জ্যেঠু আমাকে জন্ম দিয়েছে। “
 হাত দুটো মাথার উপর দিয়ে নিয়ে চেপে ধরলো।
স্বর্ণালি পা দুটো চেপে ধরলো। আর কালটু গলাটা জোরে চেপে ধরে ভবলীলা সাঙ্গ করে দিল।
তারপর তারা মৃতদেহের সামনে বসে তিনজনেই মদ খেল।
রাত শেষে ভোর হলো। সকালবেলা  ডাক্তারের কাছে গেলো। তারা কেউ ডেথ সার্টিফিকেট দিতে চাইলোনা। অনেক ডাক্তার এলো ও সন্দেহ হলো। তারা কেউ সার্টিফিকেট দিলনা।অবশেষে মধ্য রাত্রিতে প্রচুর টাকার বিনিময়ে এক নকল  ডাক্তার লিখল” নরম্যাল ডেথ”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *