Spread the love

গৌড়রাজ শশাঙ্ক প্রথম বাংলা নববর্ষ প্রচলন করেছিল

বটু কৃষ্ণ হালদার

ইতিহাস হল মানব সভ্যতার জীবন্ত দলিল। ইতিহাসের কাল গর্ভে সঞ্চিত থাকে সমাজের চলমান,ঘটমান, অতীত এবং বর্তমানের রসদ। যদি বলা হয় ইতিহাস ছাড়া আমরা এক পাও চলতে পারেনা তা নেহাতই মিথ্যা নয়। কিন্তু সেই ইতিহাস কতটা পক্ষপাতমুক্ত সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ উঠে আসছে বারবার।যুগ যুগ ধরে ঐতিহাসিকরা নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে গবেষণা করে সত্য ঘটনা ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ করবে সেটাই স্বাভাবিক।কিন্তু ইতিহাসের পাতায় আবার প্রকৃত ঘটনাগুলো লিপিবদ্ধ হয়নি তার প্রমাণ মিলছে। ইতিহাসের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশকে সঠিক ভাবে জানবো।আমাদের প্রজন্ম সেই পথ ধরে চলবে, কিন্তু আমাদের ইতিহাস বঞ্চনার ও উপেক্ষার নিদর্শন দিয়ে আসছে। যারা প্রকৃতপক্ষে দেশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে দিয়ে গেছে যেমন বহু অজানা কাহিনী ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ হয়নি। যদি বলা হয় তথাকথিত ক্ষমতাশীল ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অঙ্গুলিহেলনে ইতিহাসের পাতা থেকে বিচ্যুত করে রাখা হয়েছে, এ ধারণা একেবারে মিথ্যে বলা চলে না। ইতিহাসের পাতায় সঠিকভাবে মূল্যায়ন হয়নি তেমনি এক বঞ্চনা ও উপেক্ষিত রাজা হলেন শশাঙ্ক।কারণ তিনি সেই মহান রাজা বাংলার নববর্ষের সূচনা করেছিলেন অথচ আমরা যুগের পর যুগ সম্রাট আকবরকে নববর্ষের সূচনা কারী হিসাবে জেনে এসেছি।কিন্তু সম্রাট আকবর ও রাজা শশাঙ্কের মধ্যে সাল তারিখ ইত্যাদি নানান বৈসাদৃশ্য প্রমাণ করে আকবর নন নববর্ষের সূচনাকারী হলেন বাংলার অন্যতম স্বাধীন রাজা শশাঙ্ক।

এবার জেনে নেওয়া যাক পয়লা বৈশাখ সম্বন্ধে কিছু কথা।সত্যি সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ। ভারতবর্ষে প্রবেশ করার পর বিভিন্ন বৈচিত্র দেখে তার সেনাপতি সেলুকাসের উদ্দেশ্যেই এই উক্তি করেছিলেন সম্রাট আলেকজান্ডার। উক্তিটি তৎকালীন সময়ে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তবে এই উক্তির সত্যতা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন ওঠে।আসল সত্য হলো গ্রীক ভাষায় আলেকজান্ডারের সেনাপতি সেলুকাসকে কি বলেছিলেন সেটি পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি।সম্ভবত দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখা “চন্দ্রগুপ্ত” নামক নাটকে আলেকজান্ডারের আবেগঘন অনুভূতি র মুহূর্তটি  সম্পর্কে লিখেছিলেন, সত্যি সেলুকাস কি বিচিত্র দেশ এই উক্তিটি। ভিন্ন ভাষাভাষী সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র হল পবিত্র ভারত ভূমি। ভিন্ন ভাষা সংস্কৃতির দেশে প্রতি মাসে কোন না কোন উৎসবে মেতে ওঠেন দেশবাসী। সেই বৈচিত্র্যময় দেশে বাঙালি সমাজ হলো এক অতি প্রিয় জনজাতি। কথায় আছে”বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ”। সে সমস্ত পার্বণের মধ্যে এক অতি প্রিয় উৎসব হলো পহেলা বৈশাখ। একটি বাঙালির সার্বজনীন লোক উৎসব। চৈত্র মাসের শেষ ও বৈশাখ মাসের প্রথম দিনকে বাঙালিরা আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেয়। কল্যানা নতুন জীবনের প্রতীক হলো বাঙালির হৃদয়ের উৎসব নববর্ষ। বাংলা নববর্ষ পালনের সূচনা হয় মূলত সম্রাট আকবরের সময় থেকে। সে সময়ে নববর্ষ পালিত হতো অর্ত ব উৎসব বা ঋতু ধর্মী উৎস ব হিসেবে। কৃষিপ্রধান এই দেশে কৃষি কাজের সঙ্গে নববর্ষ উৎসবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। কৃষি কাজের সুবিধার্থে মুঘল সম্রাট আকবর ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে ১০/১২ মার্চ বাংলা সন প্রবর্তন করেন এবং তা কার্যকর হয় তার সিংহাসন আরোহণের সময় থেকে (৫ নভেম্বর ১৫৫৬)। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা  সৌরসন কে ভিত্তি করে বাংলা সন প্রবর্তিত হয়। নতুন সনটি প্রথমে “ফসলি সন” নামে পরিচিত ছিল, পরে তা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিত হয়।

তৎকালীন সময়ে নববর্ষ পালনের এক বিশেষ তাৎপর্য ছিল।সে সময় বাংলার কৃষকের চৈত্র মাসের শেষ দিন পর্যন্ত জমিদার তালুকদার এবং অন্যান্য ভূস্বামীর খাজনা পরিশোধ করতো। পরেরদিন নববর্ষ স্বামীরা তাদের মিষ্টিমুখ করাতেন। উপলক্ষে তখনকার সময় মেলা এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো।সেই থেকে পারিবারিক ও সমাজ জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে পহেলা বৈশাখ আনন্দময় ও উৎসবমুখর হয়ে ওঠে এবং বাংলা নববর্ষ শুভ দিন হিসেবে পালিত হয়ে থাকে বর্তমানে। অতীতের সেই চিরাচরিত ধারা বাংলা নববর্ষের উৎসব ছিল “হালখাতা”। এটি পুরোপুরি একটি অর্থনৈতিক ব্যাপার। গ্রামেগঞ্জে নগরের ব্যবসায়ী রা নববর্ষের প্রারম্ভের তাদের পুরোনো হিসেব-নিকাশ সম্পন্ন করে নতুন খাতা খুলতে ন।উপলক্ষে তারা নতুন-পুরাতন খদ্দেরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে মিষ্টি বিতরণ করতেন এবং নতুনভাবে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগসুত্র স্থাপন করতেন চিরাচরিত অনুষ্ঠানটি আজো পালিত হয় আন্তরিকতার সঙ্গে তবে আধুনিকতার ঠেলায় দিন দিন এসব উৎসবের জৌলুস অনেকটাই ম্লান হয়ে আসছে।

বাঙ্গালীর ইতিহাস বিমুখতা নিয়ে সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের বহুচর্চিত আক্ষেপের এক জ্বলন্ত উদাহরণ বঙ্গাধিপতি মহারাজা শশাঙ্ক। বাঙ্গলার প্রথম সার্বভৌম সম্রাট শশাঙ্কের ইতিহাস   ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।বাঙ্গলার ইতিহাসে যাঁর স্থান হতে পারত সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল ও সম্মানিত, তাঁকে বাঙালি প্রজন্ম কেউ জানলো না তেমনভাবে। বাঙ্গালীর ইতিহাসচর্চার পরনির্ভরশীলতা অন্যতম নজির। আরব সাম্রাজ্যবাদ ও বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের দুষ্টচক্রে মহারাজা শশাঙ্ক হারিয়ে গেছেন, ঐতিহাসিক কালের গর্ভ থেকে।মহারাজা শশাঙ্ক ছিলেন তৎকালীন সময়ের অন্যতম বাঙ্গালী হিন্দু নৃপতি। বাঙ্গালীকে হিন্দুত্বের থেকে দূরে রাখতে সদাপ্রয়াসী আরবমদতপুষ্ট ও ইংরেজ ঐতিহাসিকরা তাঁকে চরম বৌদ্ধবিদ্বেষী সাজিয়ে চিরকাল অত্যন্ত কুরুচিকর ভাবে উপস্থাপনা করেছেন।

তেমনভাবে এক মহান রাজার ইতিহাস আমরা জানতে পারিনা।কেউ তাঁকে গুপ্তবংশজাত মনে করেছেন। যদিও স্বপক্ষে তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রোটাসগড়ের পর্বতদূর্গে পাওয়া সীলের ছাঁচে খোদাই করা লিপিতে শ্রী মহাসামন্ত শশাঙ্কের নামের উল্লেখ দেখে অধিকাংশ ঐতিহাসিক মনে করেন যে, শশাঙ্ক প্রথম জীবনে কোন সার্বভৌম রাজার অধীনস্থ সামন্ত রাজা ছিলেন। কিন্তু কে সেই সার্বভৌম রাজা সেই নিয়ে ঐতিহাসিকদের মতপার্থক্য রয়েছে। ঐতিহাসিক শ্রী রমেশচন্দ্র মজুমদার মনে করেন, শশাঙ্ক গুপ্তবংশের শাসক মহাসেনগুপ্তের অধীনে সামন্তরাজা ছিলেন।ঐতিহাসিক ডি.সি.গাঙ্গুলী মনে করেন যে শশাঙ্ক মগধে মৌখরীরাজ অবন্তীবর্মনের অধীনে সামন্ত ছিলেন।বাংলা সম্বদের প্রাচীনতম প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ ও মহারাজ শশাঙ্কদেব।

তবে বর্তমান সময়ে গবেষণার ক্ষেত্র বহু বিস্তৃত হয়েছে। তার ফলে উঠে যাচ্ছে নানান অজানা কাহিনী। ইদানিং আবার রাজা শশাঙ্ক কে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গবেষণা শুরু হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম জায়গা হলো সুন্দরবন। সুন্দরবনের প্রত্নতত্ত্ববিদদের গবেষণা অনুযায়ী,শশাঙ্কদেবের বাংলার সিংহাসনে বিরাজিত থাকার পরবর্তী সময় এই লেখের সম্বৎ।শশাঙ্ক  শৈব। গবেষকদের লেখনীতে  উৎকীর্ণ সৈনিকও শৈব,এবং যেখান থেকে লেখটি পাওয়া গেছে ,সেই সংলগ্ন অঞ্চলে শশাঙ্কের মুদ্রা ও সমসময়ের বহু প্রত্নপ্রমাণ পাওয়া গেছে । নিম্ন বঙ্গের দুটি শিবমন্দিরের সঙ্গে শশাঙ্কের স্মৃতি বিজড়িত । আর কোন সংখ্যার সঙ্গে ৫৯৩ যুক্ত  করার পর খ্রিস্টাব্দ পাওয়া গেলে ,সেই সম্বদকে বাংলা সম্বদ বলতে অসুবিধা  হওয়ার কথা নয় । সুতরাং এটি বাংলা সম্বদ , তা আমাদের কাছে  নিশ্চিত ।শশাঙ্কের সময়কালে লিখিত সং , ষোড়শ  শতকে মুসলিম ঐতিহ্যে হয়ে গেলো সন । এটাই এখন বঙ্গাব্দ রূপে প্রচলিত ।

প্রাচীন গঞ্জাম থেকে পাওয়া গিয়েছিল একটি তাম্রশাসন । সেই তাম্রশাসন থেকে জানা যায় , শৈলোদ্ভববংশীয় দ্বিতীয় মাধববর্মা মহারাজ শশাঙ্কদেবের সামন্ত ছিলেন । এই তাম্রশাসন মাধবের দ্বারা ৬১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রদত্ত হয়েছিল ।সুতরাং ৬১৯ খ্রিস্টাব্দের পূর্বেই শশাঙ্ক পূর্ব ভারতের রাজ্যপাটে অভিষিক্ত । গঞ্জাম তাম্রশাসনের প্রচার থেকে আরো অন্তত দুই দশক  আগে   শশাঙ্ক বাংলার রাজা না হলে উড়িষ্যার অধিপতি হতে পারেন না । দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একদা প্রবাহিত আদিগঙ্গার পশ্চিম উপকূলভূমি  প্রাচীন দন্ডভুক্তির সংলগ্ন ।রাজত্বের আদিকাল থেকেই শশাঙ্ক এখানকার অধিপতি।উত্তরাপথের পরাক্রান্ত সম্রাট হর্ষবর্দ্ধনের সাথে চিরবৈরীতাকে সম্বল করেই শশাঙ্ককে কলঙ্কিত করা হয়েছে চিরকাল। বস্তুত শশাঙ্ক সম্পর্কে যেটুকু তথ্য পাওয়া যায় তার অনেকটাই হর্ষবর্দ্ধনের সভাকবি বাণভট্টের “হর্ষচরিত”, হর্ষবর্দ্ধনের কৃপাধন্য চৈনিক পরিব্রাজক হিউ-এন-সাঙের ভারত ভ্রমণবৃত্তান্ত “সি-ইউ-কি” ও বৌদ্ধ গ্রন্থ “আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প” থেকে। স্বভাবতই হর্ষবর্দ্ধনের বিরোধী শশাঙ্ককে যথেচ্ছ কালিমালিপ্ত করা হয়েছে ঐসব গ্রন্থে। বর্তমান যুগের আরবমদতপুষ্ট ও কমিউনিস্ট ঐতিহাসিকরাও ঐ সকল গ্রন্থকে তুলে ধরে তাদের বাঙ্গালী বিদ্বেষকে আরো প্রকাশিত করে।

সব জায়গায় ধরে নেওয়া হচ্ছে শশাঙ্ক হিন্দু সম্প্রদায়ের কাল অধিপতি ছিলেন।তিনি এই বঙ্গাব্দের সূচনা করেছিলেন। বাংলা নববর্ষের শুভ সূচনা তার রাজ্যভিষেকের ঘটনা কালক্রমে বঙ্গাব্দের সূচনা হিসেবে ধরা হচ্ছে। এই তথ্য উড়িয়ে দিয়ে অনেকে আবার সম্রাট আকবর কে বঙ্গাব্দের সূচনাকারী হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তবে অংকটা আমাদের একটু মিলিয়ে নেওয়া ভালো। ইতিহাসের নানান জায়গায় তথ্য অনুযায়ী,বঙ্গাধিপতি শশাঙ্কের রাজ্যাভিষেক হয়েছিল ৫৯৩ খ্রীষ্টাব্দে।সেই বছর থেকেই চালু হল বঙ্গ নববর্ষ ও বঙ্গাব্দ। হিসাব অনুযায়ী দাঁড়ায়,৫৯৩ + ১৪২৯ (বঙ্গাব্দ) = ২০২২ (খ্রীষ্টাব্দ),এটা কি বঙ্গাব্দ সূচনা হওয়ার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ নয়?ওদিকে আকবর মোগল সম্রাট হয়েছিল ১৫৫৬ খ্রীষ্টাব্দে। তাই যারা বঙ্গাব্দের সূচনাকারী আকবরকে ক্রেডিট দিতে চায় তাদের হিসাব অনুযায়ী,১৫৫৬ খ্রী: + ১৪২৯ বঙ্গাব্দ = ২৯৮৫ খ্রীষ্টাব্দ।অর্থাৎ আকবর যদি বাংলা নববর্ষ চালু করতো তাহলে ইংরেজি ক্যালেন্ডারে এই বছরটা দাঁড়াতো ২৯৮৫ খ্রীষ্টাব্দ। তাই বঙ্গের অধিপতি নরেন্দ্রাদিত্য শশাঙ্ক হলেন বাংলা নববর্ষের জনক। বাকুঁড়ার সোনাতপন গ্রামে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের প্রাচীন মন্দিরের গায়ে বঙ্গাব্দের উল্লেখ আছে যা আকবরের সিংহাসনে বসার ৩০০ বছরেরও আগের প্রামাণিক ঘটনা।ভাবা যায় কর্ণসুবর্ণ থেকে গৌড়েশ্বর শশাঙ্ক নিয়ন্ত্রণ করছেন তাঁর বিশাল হিন্দু সাম্রাজ্য! আদ্যন্ত বাঙালিয়ানায় মোড়া সে হিন্দু সাম্রাজ্যের ভিত। তিনি বঙ্গাব্দের সূত্রপাত করবেন না তো এক বিদেশি-বিধর্মী দিল্লির শাসক বাঙালির কালপঞ্জিকা শুরু করাবেন? তাহলে অন্য রাজ্যেই বা আঞ্চলিক ক্যালেণ্ডার কেন শুরু করলেন না তিনি, বেছে বেছে বাঙ্গলাতেই কেন করলেন? একটা সোজা অঙ্কের হিসেব বলুন, বঙ্গাব্দ যদি ১৪৩১ হয়, তবে মোঘল সম্রাট আকবর কি আজ থেকে ১৪৩১ বছরের আগেকার মানুষ? এত মিথ্যা সেইসব ইতিহাসবেত্তাদেরই শোভা পায়, যাদের হিন্দু বিরোধিতা অন্দরমহলের নীতি। তাদের বাতিল করে নববর্ষের শুরুতে শ্লোগান তুলুন, জয় বঙ্গ জয় শশাঙ্ক।”হঠাৎ খবর পাই মনে,আকবর বাদশার সঙ্গে হরিপদ কেরানির কোনো ভেদ নেই” (‘বাঁশি’ কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)। কারণ এরা কেউই বঙ্গাব্দের প্রবর্তক নন।বঙ্গাব্দের প্রবর্তক মহারাজ শশাঙ্ক। জানা যায়, রাজা শশাঙ্ক কালগণনার ক্ষেত্রে সূর্য সিদ্ধান্ত পদ্ধতি ‘বঙ্গাব্দ’ চালু করেন। ৫৯২/৫৯৩ খ্রীস্টাব্দে এই সৌরভিত্তিক কালগণনার শুরু। সম্ভবত এই বঙ্গাব্দ চালুর প্রথম বৈশাখের প্রথম দিনে তাঁর রাজ্যাভিষেক। আনুমানিক ৫৯০ থেকে ৬২৫ খ্রীস্টাব্দ ছিল তাঁর শাসনকাল। তাঁর রাজকার্যের প্রচলিত ভাষা ছিল বাংলা এবং রাজধর্ম ছিল হিন্দু। তিনিই প্রথম অপরাজিত এবং বিস্তৃত বঙ্গের একচ্ছত্র শাসক। ছিলেন ধর্মসংরক্ষক।করেএবং পরধর্মসহিষ্ণু। বাঙালি কৃতবিদ্যদের মধ্যে তিনি এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক, কিন্তু কালের গর্ভে তাঁর সমস্ত ইতিহাস হারিয়ে গেছে, যা আছে তাও পক্ষপাতদুষ্ট বলে ঐতিহাসিকদের মতামত।

———

বটু কৃষ্ণ হালদার,কবর ডাঙ্গা,কল_১০৪,

দীর্ঘদিন ধরে কাব্যপটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।

আপনিও আপনার লেখা ছড়া,কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, ভ্রমণ কাহিনী পাঠিয়ে দিন নিচের ঠিকানায়:

kabyapot@gmail.com

Wp. 8100481677

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *