লেখিকার জীবনী ও পরিচিতি
লেখিকার নাম ডঃ রমলা মুখার্জী
লেখিকা ডঃ রমলা মুখার্জীর জন্ম 23.01.1955 সালে; তাঁর জন্মস্হান হুগলী জেলার বৈঁচীগ্রামে; পিতার নাম ঁনির্মলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতার নাম ঁপ্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুলেখিকা ডঃ রমলা মুখার্জী বটানিতে এম এস সি ও পি এইচ ডি। তিনি বাংলায়ও এম এ করেছেন, কারণ তিনি বিজ্ঞানের শিক্ষিকা হলেও সাহিত্যচর্চা করতে খুবই ভালোবাসেন। তিনি বি. এড করেছেন ও সংগীত প্রভাকরও পাশ করেছেন। তিনি একাধারে শিক্ষিকা, কবি, ছড়াকার, গল্পকার, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক। বহু পত্র-পত্রিকায় লেখিকা নিয়মিত লেখেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই লেখিকা গান, আবৃত্তি, নাটকও করেন। 2003 সালে ছড়া, কবিতা, গান, নৃত্য, নাটক, গল্প ইত্যাদির মাধ্যমে বিজ্ঞান পাঠদান ও গবেষণা, ভেষজ উদ্ভিদের উদ্যান নির্মান, প্রদর্শণী পরিচালনা ও গবেষণা, পরিবেশ সচেতনতা ও অন্যান্য অনেক সমাজ সচেতনমূলক কাজের জন্য লেখিকা 2003 সালে তদানিন্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম মহাশয়ের কাছ থেকে পুরষ্কার লাভ করেন ও জাতীয় শিক্ষিকার মর্যাদা পান।
লেখিকা ডঃ রমলা মুখার্জী প্রায় সারা জীবনটা ধরেই পড়াশোনা, পরীক্ষা, সংগীত, আবৃত্তি শিক্ষা, সাহিত্যচর্চা এমনকি ছাত্রীদের শেখানোর জন্য নৃত্যশিক্ষাও গ্রহণ করেছেন।
ডঃ রমলা মুখার্জীর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বাঁটিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বৈঁচীতে। পাশাপাশি বাবার কাছে আবৃত্তি ও গুরুর নিকট সংগীত শিক্ষাও চলতে থাকে। তারপর বাঁটিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে হায়ার সেকেন্ডারী পাশ করার পর বোটানীতে অনার্স নিয়ে 1971 সালে হুগলী মহসীন কলেজে লেখিকা ভর্তি হন এবং এই কলেজ ম্যাগাজিনেই প্রথম কোষকে নিয়ে ইংরাজীতে কবিতা লেখিকা লেখেন। কিন্তু বি. এস.সি. অনার্স ভালো ভাবে পাশ করার পর পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে গহমী শিখর বাসিনী বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পদে লেখিকাকে 1975 সালে যোগদান করতে হয়। স্কুলে যোগদান করেও পড়াশোনার ইচ্ছেটা লেখিকার থেকেই যায়। তাই তিন বছর পর ছুটি নিয়ে এম এস সি পড়তে যান বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর বিবাহ হয় 1981 সালে বীরভূম নিবাসী সরকারি অফিসার শ্রী অপূর্ব মুখার্জীর সাথে। কিন্তু পড়ার অদ্যম ইচ্ছে লেখিকার পিছু ছাড়ে না। এম এস সি পাশ করার বারো বছর পরে লেখিকা প্রাইভেটে বাংলায় এম এ করেন। তার আগে অবশ্য বাংলায় বি এ পাশ করতে হয়েছে। সাহিত্যকর্মও চলতে থাকে আবার বিজ্ঞানের অন্বেষণও চলে, স্কুলের ছাত্রীদের নিয়ে নানান সাংস্কৃতিক ও বিজ্ঞানের অনুষ্ঠানও সমান তালে এগিয়ে চলে। 2002 সালে এস এস সি দিয়ে লেখিকা প্রধান শিক্ষিকার পদে বাঁটিকা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে যোগদান করলেন। পূর্বের স্কুলে ছাত্রীদের নিয়ে বিগত সাতাশ বছরের সমস্ত ক্রিয়াকর্ম উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শিপ্রা বানার্জী মহাশয়া ডি আই অফিসে জমা দেন ও সেগুলি নির্বাচিত হয়ে দিল্লীতে পৌঁছনোর পর লেখিকা রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারের জন্য মনোনীতা হন এবং 2003 সালের পুরষ্কারটি 2004 সালের 5ই সেপ্টেম্বর বিজ্ঞানী রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালামের হাত থেকে লেখিকা গ্রহণ করেন।
লেখিকার নতুন কর্মস্হল বাঁটিকা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়টি প্রাত:কালে হওয়ার জন্য লেখিকার রিসার্চ করার খুবই সুবিধা হয়ে গেল। অনেক দিনের সুপ্ত বাসনা লেখিকার পুরণ হল। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখিকা বোটানী বিষয়ে গবেষণা শুরু করলেন এবং 2009 সালে ডক্টরেট সম্পূর্ণ করলেন। লেখিকার দুটি পুত্র, শুভদীপ ও দীপ্তদীপ। বড় ছেলে বেসরকারী ও ছোট ছেলে সরকারি কর্মচারী।
কিন্তু বতর্মানে লেখিকা শারীরিক কিছু সমস্যায় ভুগছেন। তবুও তিনি সব প্রতিকুলতা অগ্রাহ্য করে এগিয়ে চলেছেন। বিজ্ঞানের পাঠকে খুব সহজ করে ছাত্রছাত্রীদের বুঝিয়ে দিতে তিনি অনেক বিজ্ঞানের কবিতা লিখে, আবৃত্তি করে, ছবি দিয়ে ভিডিও করে অবিরত ছাত্রছাত্রীদের জন্য বতর্মানেও কাজ করে চলেছেন। অনেক মহাপুরুষের জীবনীও তিনি ঐরূপ লিখে ভিডিও করেছেন যাতে এই ছাত্রছাত্রীরা মানসিক চাপ ছাড়াই আনন্দের সাথে পড়াশোনা করতে পারে। পরিবেশ নিয়ে ও রোগব্যধি নিয়ে নৃত্যনাট্য ও নাটক লিখে পরিবেশন করে জনসাধারণকে পরিবেশ ও রোগ সম্বন্ধে সচেতন করার চেষ্টা লেখিকা করেন ও এই নিয়ে অনেক পেপারও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পাঠ করেছেন।
তিনি বেশ কিছু বইও লিখেছেন। স্বরচিত ছড়া, কবিতা, শ্রুতি নাটক, গান ইত্যাদি তিনি নিয়মিত মঞ্চস্থ করে থাকেন। “ইচ্ছেপাখি” নামে একটি মুদ্রিত শিশু-কিশোর সাহিত্য পত্রিকা তিনি বিগত দশ বছর ধরে সম্পাদনা করছেন। অনেক সাহিত্য সংস্হা থেকে অনেক পুরষ্কার ও সম্বর্ধণা পেয়েছেন ডঃ রমলা মুখার্জী।
বতর্মানে লেখিকা বাঁটিকা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের (বৈঁচী, হুগলী ) প্রধান শিক্ষিকার পদ থেকে অবসর গ্রহণ করে পুরোপুরি সাহিত্য, আবৃত্তি, সংগীত সাধনায় নিমগ্ন ও এইগুলির মাধ্যমে শিক্ষাদানের প্রচেষ্টা ও প্রবন্ধ, গল্প,কবিতার একক বই প্রকাশের প্রচেষ্টায় রত আছেন, তার সাথে তো বিভিন্ন পত্রিকায় লেখলেখি ও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ আছেই।
আমরা লেখিকার সুস্থ জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
।। হুগলি, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।।