Spread the love

তৈমুর খানের চারটি কবিতা

রাত
_____

রাত এলেই ভয় নামে, ভয়ংকর ডানায়
কাকে নেবে, কাকে রাখবে কেউ জানে না
বারুদ গন্ধে বাতাস ভারী হয় ।
আকাশ থমথম

দুর্ভেদ্য রাস্তায় কারা দাঁড়িয়ে থাকে ?
কেউ চেনে না তাদের
অস্ত্রের শব্দে জাগে পাড়া ।
পাড়ায় পাড়ায় আতঙ্ক ছড়ায়

এর মাঝেই বৃষ্টি আসে, মেঘ ডাকে
রক্ত ধোয় রাতের পড়শিরা ।
মৃত্যুগুলি রূপকথা হয় দুরু দুরু বুকে
মাটি খুঁড়ে, মাটি খুঁড়ে বেরিয়ে আসে হাড়
মরাচাঁদ ডুবে যায় মাঠে
কুয়াশায় ভাসতে থাকে মানব সংসার

খবর
_____
খবর আসছে , সব মৃত্যুর খবর
কসাইখানা হয়ে যাওয়া পৃথিবী এখন
মৃত্যুর দোকান

আমরা বিক্রি হয়ে যাচ্ছি
বাস ট্রেন রিকশায় ঘরে বাইরে —
যে কোনও মুহূর্তে মৃত্যুযন্ত্র গর্জে উঠবে
আর আমরা কতল হব
উট ও গোরুর মতো , ছাগল ও মুরগির মতো

প্রতিদিন মৃত্যুর জন্মদিন
অশ্রুফুল বেদনামন্ত্র আর উদাসীন ঘুম
আমরা সমর্পণ করে দিই
হে মনীষীলোকের বাতাস

হে প্রেমসুরভি পাখি
হে স্বপ্নমুকুলের মহীরুহ
তোমরা বসন্ত ঘোষণা করো
আর আলোছায়ায় মনভুলানিয়া গাও
আমরা ভালোবাসা খুঁজতে খুঁজতে রক্তে ভিজে যাই
সারারাত হিমের মতন রক্ত ঝরে….


গণপিটুনি
_________

আমার সমস্ত বোধ গণপিটুনির দিকে চলে যাচ্ছে
হে রাষ্ট্র, কী করে ফেরাব তাকে ?

রোজ সে মারা যায়
রোজ তার প্রাণ ভিক্ষা চাই
জনরোষ বাড়তে থাকে রোজ

কী করে বাঁচাব তাকে  ?
রাষ্ট্র কি ধর্মরাষ্ট্র হবে ?
বজ্রের কৌশলে আলোড়িত মেঘ
নীল হৃদয় ঢেকে ভয় নামায় আকাশ
করুণার নক্ষত্র নেই, মানবতন্ত্রের মৃত্যু ঘটে
বোধের হাহাকার শুনি আস্ফালনের ঘেরাটোপে

বিশ্রাম
______
অনেক বিপ্লবের দিন কেটে গেলে
আমরা নিরিবিলি খুঁজতে বেরিয়েছি
অনেক মৃত যুগ পার হয়ে
একটি ধূসর যুগে আজ

এখানে চিৎকারগুলি পড়ে আছে
হাওয়া আজও ক্রন্দনধ্বনি বয়ে আনে
রক্তঘ্রাণে মৃতদেহগুলি হাঁটে
আমরা ছায়া খুঁজি
অনেক নীরব ছায়ার কাছে
পাখিদের পাঠশালা, নদীর দোকানে
আর অরণ্যের সবুজের কাছে
আমরা কিনতে চেয়েছি বিশ্রাম

বিশ্রাম পাওয়া যায় ?

বিশ্বাসী নূপুর বেজে উঠুক তবে
কাছে এসে হাত ধরে বসুক
আমরা অপেক্ষায় আছি…
=======================

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *