জীবনের পথে
-সেঅতি
সুচরিতা আর ঘুম আসে না, সংসারের টানাপোড়েন আর সহ্য হয় না তার…
নয় নয় করে গত পরশু তার বয়স চল্লিশ ছুঁয়েছে, তার জন্মদিন পালন করার মতো নেই কেউ, সব থেকেও সর্বহারা এই নারী
এই রাতের আকাশে সে সম্পূর্ণতা খুঁজে পায়,সকল নিঃসঙ্গতার নিরাময় খুঁজে পায়… সকল জ্বালা যন্ত্রণার পরিত্রাতা হয়ে ওঠে এই মন কেমনের রাত….
মেঘমুক্ত আকাশের ওই উজ্জ্বল তারার দিকে নিষ্পলোক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে সে
ওর মনে পরে ছোটবেলায় বই তে পড়েছিল ওই তারা গুলোর 20/25 বছর আগের পাঠানো আলো আজ আমরা দেখতে পাই…
ওর মাঝে মাঝে মনে হয় ওই আলোর পথ ধরে ছুট্টে চলে যায় 20/25 বছর আগে….
সদ্য যৌবনের কাঠগোড়ায়….
যখন তার সব ছিল, পরিবারের জোড় ছিল সৌভাগ্যের নির্দেশিকা ছিল, জীবনটাকে অন্যভাবে গড়ে তুলতো তবে নতুন করে
ভাবতে ভাবতে আনমনা সুচরিতার চুল এলোমেলো হয়ে যায় বাতাসের ঝাপটায়… সাদা শাড়ির আঁচল উড়তে থাকে হাওয়ায়….
এই মধ্যরাত্রে ছাদে উন্মুক্ত আকাশের নিচে দাঁড়ানো সাদা শাড়ি পরা এই রমণী কে দূর থেকে দেখে যে কেউ ভয় পেতে পারে…কিন্তু সেটা সত্যি নয়, বরং সুচরিতার জীবনে বেঁচে থাকাটাই ভয়ের, বড়ো আতঙ্কের
নিচের দিকে তাকালে ওর মনে হও ছাদ থেকে এই চার তলা বাড়ির একতলার দূরত্ব টা মাত্র কয়েক সেকেন্ডের… যাবে একবার??? ঘুরে আসবে? কেউ যেন টানছে ওকে… ডাকছে বারবার…
এক পা বাড়িয়ে দিয়েছিলো ও
“মা, মা ওমা কোথায় তুমি “?
ছ বছর বয়সী ছেলেটার ডাকে সম্বিৎ ফিরে পেলো সুচরিতা ….
এই একটা ডাক যেটা আবার ওকে ফিরিয়ে আনলো
ফিরিয়ে আনলো মৃত্যু থেকে জীবনের পথে….
একটা মন কেমনের রাতে…..
দূরে একটা কালো ছায়া আসতে আসতে বিলীন হয়ে গেল…. চাদের আলো উঁকি দিলো আবার, উঁকি দিলো 20/25 বছরের পুরোনো তারার আলোর সাথে…
একটা মন কেমনের রাতে…