প্রবন্ধ : মাতৃভাষার নিরিখে বাংলা ভাষা কলমে : শৈলেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়
হাসি -কান্না ,নাওয়া-খাওয়া , ঘুমোনো – বেড়ানো ঠিক এদের মত মনের ভাব প্রকাশ করা প্রতিটি জীবের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। সৃষ্টির ঊষালগ্নে মানুষ ভাব প্রকাশ করার জন্য কিছু চিহ্ন বা ইঙ্গিত বা আওয়াজ কে ব্যবহার করতো কিন্তু সেগুলো সম্পূর্ণভাবে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারতো না ।সে সময় মানুষের আওয়াজ এত অর্থবহ ও বৈচিত্র্যময় ছিলনা । ধীরে ধীরে সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে ভাষার ব্যবহারে বৈচিত্র্যতা- জটিলতা ও গুরুত্ব বাড়তে থাকে ।মানুষ ভাষার মাধ্যমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অন্যের আয়নায় নিজেকে দেখতে লাগলো।ফলে ভাষার ব্যবহার ও গুরুত্ব চরম মাত্রায় পৌঁছালো। তাহলে ভাষা জিনিসটা ঠিক কি ? “এটি মনের ভাব প্রকাশের একটি অর্থবোধক আওয়াজ- অর্থাৎ “সহজেই উচ্চারিত , অর্থবোধক ও বহুজনবোধ্য ধ্বনি সমষ্টির সম্পূর্ণ আওয়াজকে ভাষা বলে।” জন্মের পর থেকে একটি প্রাণী যেভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে পারে সেটাই ভাষা । সে টি সবাক, নির্বাক বা ইশারা- ইঙ্গিত ও হতে পারে।ভাষার মাধ্যমে একটি প্রাণী তার সুখ-দুঃখ ,হাসি-কান্না ,প্রেম-ভালোবাসা, আকুতি-মিনতি ,আবেগ -উচ্ছ্বাস সবকিছু অন্যের কাছে অতি সহজেই পৌঁছে দিতে পারে । তাই বলা যায় যে ভাষায় হচ্ছে, “ভাবের প্রকৃত বাহক।”শুধুমাত্র মানুষের ক্ষেত্রেই ভাষার বৈচিত্রতা ও জটিলতা লক্ষ্য করা যায় কিন্তু প্রাণীদের ভাষা মূলতঃ স্থান ভেদেও একই রকম থাকে ; যেমন আফ্রিকার সিংহের ভাষা ভারতের সিংহের বুঝতে কোন রকম অসুবিধা হয় না ;আবার ভাষার মাধ্যমেই কর্নাটকের হাতি আসামের হাতির সাথে অতি সহজেই বন্ধুত্ব করতে পারে কিংবা বাংলার একটি টিয়া পাখি বিহারের একটি টিয়া পাখির সাথে সখ্যভাব গড়ে তুলতে কোনরকম অসুবিধা বোধ করে না অর্থাৎ পশু-পাখিদের ভাষার স্বরলিপি ও বোধগম্যতা মোটামুটিভাবে একরকম থাকলেও মানুষের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার অত্যন্ত জটিল ।ফরাসিদের ভাষার সাথে ভারতীয়দের ভাষার কোন মিল নাই আবার ভারতেরই দক্ষিণ ভারতের দ্রাবিড় ভাষার সাথে উত্তর ভারতের সংস্কৃত বা হিন্দি ভাষার কোন মিল নাই । আবার উচ্চারণের সুবিধার জন্যই বাংলা ভাষা বাংলার বিভিন্ন জেলাতে বিভিন্নভাবে উচ্চারিত হয়।সুতরাং দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন স্থানের ভাষা বিভিন্ন রকমের অর্থাৎ স্থান ভেদে ভাষার বিভেদ লক্ষণীয়। জন্মের পর থেকে মানুষ যে ভাষায় কথা বলতে শেখে সেটাই তার মাতৃভাষা ।মাতৃভাষা যেন প্রত্যেকের কাছে এক অনাবিল, সরল ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক আওয়াজ ।জলের মাছকে ডাঙায় তুললে সে যেমন প্রাণের আকুতি নিয়ে বাঁচার জন্য ছটফট করে তেমনি মাতৃভাষায় কথা বলতে না পারলে মানুষের ভেতরের আবেগটা ছটফট করে, অবরুদ্ধ হয় অর্থাৎ যখন একজন মানুষ তার মাতৃভাষা অঞ্চলের সীমানা পার হয়ে অন্য ভাষার স্থানে পৌঁছায় সেখানেই বুঝতে পারে মাতৃভাষার প্রকৃত জোর টা ঠিক কোথায় ?ভাষায় আমাদেরকে সাবলীলভাবে মানুষের সাথে মানুষের মহামিলনের সেতু গড়ে তোলে , এমনকি রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে।জননীর সাথে সন্তান যেমন নাড়ীর সম্পর্কে আবদ্ধ থাকে , স্নেহ -ভালবাসার গভীর আস্তরণে যেমন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে থাকে, মাতৃভাষা ও তেমনি মানুষের জীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নিবিড়ভাবে ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকে । মাতৃভাষা মানে মায়ের বুকের তরল দুধ- যেন গোবরছরা দিয়ে নিকোনো একটা ঝকঝকে উঠোন, যেন রজনীগন্ধার সৌরভ যুক্ত একটি মনোরম অনুষ্ঠান বাড়ি ,যেন উষ্ণ সাহারার বুকে এক ঝলক বৃষ্টি । যে যাই বলুক -মাতৃভাষা আজও মায়ের মতোই অবিকল্প ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
আমরা বাঙালি । বাংলা আমাদের মাতৃভাষা ।সারা বিশ্বের জনসংখ্যার নিরিখে বাংলা ভাষা বলা মানুষের স্থান পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠ অর্থাৎ বিশ্বে প্রায় 27 কোটি লোক বাংলাকে মাতৃভাষা রূপে ব্যবহার করে।( চীনা ভাষা ব্যবহার করে প্রায় 128 কোটি লোক ,স্পেনীয় ভাষা ব্যবহার করে প্রায় 43 কোটি লোক , ইংরেজি ব্যবহার করে 37 কোটি লোক, আরবি চতুর্থ স্থানে প্রায় 30 কোটি লোক ব্যবহার করে, কিন্তু পঞ্চম স্থান নিয়ে বাংলার লড়াই মূলতঃ হিন্দির সাথে বাংলার । হিন্দিভাষী লোকের সংখ্যা প্রায় 26 কোটি কিন্তু ভারত-বাংলাদেশ মিলিয়ে বাংলা ভাষাভাষীর সংখ্যা প্রায় 26 কোটি 50 লক্ষ মানুষ)। (উৎস :-আনন্দবাজার পত্রিকা 22/ 02 /2020)।
1999 সালের 17 সেপ্টেম্বর তারিখে ইউনেস্কো 21ফেব্রুয়ারি তারিখটিকে সারাবিশ্বে ভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।ইউনেস্কো বাংলা ভাষাকে পৃথিবীর মিষ্টিতম ভাষা বলে স্বীকার করেছে ।সত্যিই কবি আবেগ ভরা কন্ঠে সেদিন বলেছেন ” আ মরি বাংলা ভাষা , মোদের গর্ব মোদের আশা “-বাস্তবে এটি একটি অত্যন্ত মিষ্টি ভাষা। এই ভাষা মাগধি অপভ্রংশ অবহটঠ থেকে সৃষ্ট। সহজ ভাবে বোঝার জন্য এই ভাষার চলিত রূপ যেমন আছে তেমনি দপ্তর খানায় ব্যবহারের জন্য সাধুরূপ ও আছে।
বাংলা ভাষা অত্যন্ত গতিশীল -তাই বাংলার সীমারেখা ছাড়িয়ে ত্রিপুরা ,আসাম ,ঝাড়খন্ড ,ছত্রিশগড় ,আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে এই ভাষার বহুল প্রচলন আছে। ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ -এই ভাষাকে রাজকীয়ভাবে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে। তাছাড়াও জাপান ,আমেরিকা ,সিঙ্গাপুর , মালয়েশিয়া ,অস্ট্রেলিয়া ,কানাডা ,ইংল্যান্ড প্রভৃতি দেশে অসংখ্য বাংলা ভাষাভাষীর মানুষ বাস করে।বাংলাদেশে, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেবার জন্য এক জ্বলন্ত রক্তক্ষয়ী ইতিহাস রয়েছে । আমরা জানি স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মানুষ শহীদ হয়, মা-বোনের ইজ্জত রক্ষা করবার জন্য মানুষ শহীদ হয় কিন্তু ভাষা আন্দোলনের জন্য মানুষ শহীদ হয় -এ যেন কবির কল্পনা তে ও কখনো ধরা পড়ে না । অবাক লাগলেও এটি একশো শতাংশ সত্যি ঘটনা। ব্রিটিশ শাসিত অখন্ড ভারতবর্ষকে ইংরেজরা ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি পৃথক রাষ্ট্রে দু টুকরো করে ভাগ করে দেয় । পাকিস্তান আবার দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে যায় অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশ তখন পূর্ব পাকিস্তান নামে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত ছিল আর তার শাসনতন্ত্রের মূল চাবিকাঠি ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের সিন্ধুকে।1952 সালে পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল খাজা নাজিমুদ্দিন স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘোষণা করেন যে বাংলাদেশের সরকারী ভাষা বাংলার পরিবর্তে উর্দু করতে হবে কারণ বাংলা ভাষার সাথে সংস্কৃত ও হিন্দি ভাষার ছোঁয়াচ রয়েছে। তাই বাংলাদেশের মানুষের সংস্কৃতি ও রুচির পরিবর্তন করতে গেলে উর্দুকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। সে সময় বাংলাদেশ ও ভারতের শত শত যুবক এই অমানবিক ঘোষণার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন ।তাদের মধ্যে রফিক,পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর থানার বাবলা গ্রামের আবুল বরকত অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এবং ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে বাংলা ভাষার মর্যাদা ও ইজ্জত রক্ষার জন্য আবুল বরকত প্রাণ বলিদান দিয়ে শহীদ হয়েছিলেন । পাকিস্তানি প্রস্তাবকে সমগ্র বাংলাদেশবাসী এবং ভারতীয়রা যেমন ঘৃণার চোখে দেখে ছিল তেমনি শহীদ আবুল বরকত কে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়ে আজও সম্মান ও শ্রদ্ধা জানায় ।এছাড়াও কোন্নগরের শফিউর রহমানের নাম গর্বের সাথে উল্লেখ করা যেতে পারে।সে সময় নারায়ণগঞ্জের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগম ।ভাষা আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন বলেই কারাবন্দি হয়েছিলেন । স্থানীয় প্রশাসনের দাবি ছিল যে যদি তিনি ভাষা আন্দোলনের বিরুদ্ধে মুচলেকা দেন তাহলে তাকে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে কিন্তু মমতাজ বেগম কোন মুচলেকা দেন নি ফলে তাকে শাস্তি পেতে হয়েছিল এমন কি তিন তালাকের শিকার ও হতে হয়েছিল ।এছাড়াও বেগম সুফিয়া কামাল , বেগম রোকেয়া ভাষা আন্দোলনের সাথে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত হয়েছিলেন।আসামের কাছাড় জেলার সদর শহর ছিল শিলচর । বাংলা ভাষা আন্দোলন সেখানেও তীব্রতর হয়ে ছিলো। আসামের সরকার ঘোষণা করেছিলো যে সমগ্র আসামের মাতৃভাষা হবে আসামি । সে সময় শিলচরে থাকা সংখ্যালঘু বাংলা ভাষাভাষীরা বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা করার জন্য ভাষা আন্দোলনের সাথে নিজেদেরকে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধভাবে জড়িয়ে নিয়েছিলেন এবং সাত মিনিটে সতেরো রাউন্ড গুলিতে শহীদ হয়েছিলেন ষোলো বছরের কমলা ভট্টাচার্য, উনিশ বছরের শচীন্দ্র পাল, কাঠমিস্ত্রি চণ্ডীচরণ সূত্রধর ,বীরেন্দ্র সূত্রধর , সত্যেন্দ্র দেব, সুনীল সরকার প্রভৃতি ভাষা দরদী নিরীহ মহাপ্রাণ ব্যক্তিরা। 1961 সালের 19 মে, মাতৃভাষার দাবিতে অসমের শিলচর স্টেশন এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় যে আন্দোলন হয়েছিল সেখানে অসম পুলিশের গুলিতে এগারো জন ভাষা আন্দোলন কারী প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন ।মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের প্রতীক রূপে বর্তমানে শিলচর স্টেশনের নাম হয়েছে ‘শহীদ স্টেশন”।ভারতবর্ষের অন্যতম একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী পট্টি শ্রীরামালু ভাষা আন্দোলনের নিরিখে রাজ্য বিভাজনের জন্য অনশন করে প্রাণ ত্যাগ করেছেন ।তার কথা আমরা কজন জানি?
বাংলা ভাষার রূপ -রস -গন্ধ -বর্ণ -লাবণ্য ও সৌন্দর্য আহরিত করে বাংলা ভাষার অসংখ্য কবি- সাহিত্যিক- লেখক -দার্শনিক বাংলা সাহিত্য ভান্ডার কে উজার করে দিয়ে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন এবং সমর্থ হয়েছেন ।বাংলা সাহিত্যে নোবেল জয়ী বিশ্বকবি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষার নির্যাস দিয়ে অসংখ্য কবিতা গান, গল্প উপন্যাস ,নাটক সৃষ্টি করেছেন যার রস আস্বাদন করার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশেও তাঁদের মাতৃভাষায় রবীন্দ্রনাথের অমর সৃষ্টি ভাষান্তরিত হচ্ছে।
বর্তমানে কলকাতা সহ বাংলার বিভিন্ন স্থানে বাংলা ভাষা বিপন্নতার পথে ।ট্রেনে -বাসে – অফিসে ,আভিজাত্যের কারণে হিন্দি ও ইংরেজি ভাষা অবিরত ,অনর্গলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মানুষ মাতৃভাষাকে অবহেলা করে হিন্দি বা ইংরেজিতে কথা বলে পান্ডিত্যের পরিচয় দিতে বিন্দুমাত্র কসুর করে না বা আভিজাত্যের প্রকাশ ঘটায়। বিশুদ্ধ বাংলায় লিখিত “নাম তার মতিবিল বহুদুর জল । হাঁসগুলি ভেসে ভেসে করে কোলাহল ” এমন সাবলীল ভাষা ছেড়ে কচিকাঁচারা শিখছে “টুইংকেল টুইংকেল লিটল স্টার ,হাউ আই ওয়ান্ডার হোয়াট ইউ আর “অথবা অ আ এর পরিবর্তে এ ফর আপেল বি ফর বল।
বেশিরভাগ বাংলা চলচ্চিত্রে এবং টিভি সিরিয়ালে এখন নিয়মিতভাবে একটি হিন্দিভাষী চরিত্র সৃষ্টি করা হচ্ছে যাতে বাংলা ভাষার সাথে হিন্দি ভাষাকে সহজেই মিশিয়ে একটা মিশ্র ভাষা তৈরি করা হচ্ছে ।এতে বাংলা ভাষা যেমন ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে, জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে তেমনি হিন্দি ভাষা আমাদের সদর দরজা দিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে পড়ছে ।বিদেশী ভাষা মানে কবি মধুসূদনের খেদোক্তি-“পরধন লোভে মত্ত করিনু ভ্রমণ- পরদেশে ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি ” -এমনটা হবে না তো ?মাতৃভাষার নিরিখে বাংলা ভাষা যেন ডাবল টোনড তরল দুধ। এই মাতৃভাষায় স্বাচ্ছন্দ্যে কথা বলে আমরা অফুরন্ত আনন্দ পাই ।এই ভাষাকে নানা দূষণ ও অবক্ষয় এর হাত থেকে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক কর্তব্য ।এই ভাষার বিশুদ্ধতা রক্ষা করতে পারলে তবেই বাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতিও মর্যাদা রক্ষা করা সম্ভব- অন্যথায় আগামী দিনে এটি একটি হাইব্রিড ল্যাঙ্গুয়েজ এর আওতায় পঙ্গু হয়ে যাবেও অন্যান্য অবলুপ্ত ভাষার সাথে রুগ্ন হয়ে হাত মেলাবে। গানের সাথে হারমোনিয়ামের যেমন মধুর সম্পর্ক -মাতৃভাষার সাথে আমাদের সম্পর্ক তেমনটি হওয়াই বাঞ্ছনীয় ।আমাদের প্রত্যেককেই মাতৃভাষার ইজ্জত রক্ষার জন্য শপথ নিতে হবে ও মাতৃভাষা ব্যবহারের প্রতি অনীহা ত্যাগ করতে হবে।ভাষা শহীদদের উদ্দেশ্যে আমি কুর্নিশ জানিয়ে বলি “একুশ শুধু তারিখ নয় ,একুশ মানে রক্তে ভাসা ।একুশ শুধু আওয়াজ নয় -একুশ দিয়েছে মাতৃভাষা।” সবশেষে বলি যে ,”যে ভাষায় আমি আমার মাকে চিনেছি, যে ভাষায় আমি ক্ষেতে-খামারে বড় হয়েছি ,যে ভাষায় আমি বন্ধুদের সাথে ভাব বিনিময় করেছি -সে ভাষা আমার কাছে স্বর্গের সমান ,স্বর্গের দেবতাদের চেয়ে ও দামী। আমি কুর্নিশ জানাই আমার মাতৃভাষাকে, আমি কুর্নিশ জানাই আমার প্রাণের বাংলা ভাষাকে, আমি কুর্নিশ জানাই বাংলা ভাষা আন্দোলনকারী বীর শহীদদের পবিত্র আত্মাকে।”
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:-১) গুগল ইন্টারনেট।২) আনন্দবাজার পত্রিকা।৩) বিভিন্ন পত্রপত্রিকা।