আচার্য দেবেশ চক্রবর্তীর
উননব্বইতম জন্মদিনে
কবিতায় শ্রদ্ধা
(জন্ম 8 নভেম্বর 1932)
——————————————————-
— ঋদেনদিক মিত্রো
[ মুক্ত ঘূর্ণন ছন্দে মিশ্র পংক্তির অন্তমিলে লেখা ]
অভিনেতা, পরিচালক,
নাট্যকার, নাট্যপ্রশিক্ষক,
আচার্য দেবেশ চক্রবর্তী,
দুহাজার কুড়িতে
উননব্বইতম জন্মদিনে
আমরা তাকিয়ে আছি —
শতায়ু স্পর্শ হোক সত্যি,
আচার্য দেবেশ চক্রবর্তী !
বাংলায় নাট্যশিল্প গেছে হারিয়ে,
নেই সেই রঙ্গালয়গুলি,
নেই সেই কলকাতা,
রঙ্গালয়ে টিকিটকাটা,
লাইন দিয়ে ভিড়ে দাঁড়িয়ে !
কী করে সেই সন্ধ্যে সেই রাত ভুলি !
রাশিয়ার লেবেদেফের বাংলা নাটকের চর্চা
কবে যেন হয়েছিল এ কলকাতায়,
তারপর কত পথ পেরিয়ে গিয়েছে কাল
ধীরে-ধীরে নাটকের চর্চা বাংলায় !
সতেরশ পঁচানব্বই সালে
বাংলায় প্রথম প্রসেনিয়াম বাংলা থিয়েটার
তাঁর হাতে সৃষ্টি হয়েছে,
সাহেবদের কূটচালে তিনি দেউলিয়া হয়ে
ফিরে যেতে বাধ্য হন স্বদেশে !
লেবেদেফেরও আগে বাংলায় এখান সেখান
হতো শখের নাট্যচর্চা,
লেবেদেফ ই সর্বপ্রথম
বাংলা নাটকের রঙ্গালয় করে
শুরু করেন টিকিটকাটা !
এসব ভাবতে গিয়ে
পুরানো কলকাতার ছবি এসে যায় !
সেইসব দিন ছিল কেমন এ বাংলায় !
বলতে-বলতে কবে যেন এলো স্বর্ণযুগ,
শহরে নগরে গ্রামে-গঞ্জে,
নাটকের চর্চা বাড়ে আভিজাত্য প্রমাণে,
সে এক সময় গিয়েছে !
ষাট সত্তর দশক থেকে স্বর্ণযুগ শুরু,
সাহিত্য শিল্পকলা সঙ্গীত,
সব দিকে রমরমা অবিশ্বাস্য সৃষ্টি
চিন্তা, মনন, বিজ্ঞান,
ক্রীড়া, সব দিক !
চলতে -চলতে পরপর
কমতে শুরু করে দেয়,
থিয়েটার ও সিনেমার ব্যবসা,
মানুষের জীবন হতে থাকে যত যান্ত্রিক,
বাড়ে তার তত দুর্দশা !
এভাবেই একসময় নতুন সহস্রাব্দ
শুরু হয়ে যায় নিমেষে,
ফেলে আসে কত স্মৃতি,
সাহিত্য, সংস্কৃতি,
কত আন্দোলন ছিল সারা দেশে !
সে সময় আমরা তো কেউ -কেউ দেখেছি
পুরানো সহস্রাব্দের অন্তিমে,
আপনাদের শিল্প চর্চা, অপূর্ব বিদগ্ধতা,
আমাদের যৌবনের
তীব্র সন্ধিক্ষণে !
নতুন সহস্রাব্দ নতুন শতক
যার নাম একবিংশ,
বড়োই নিঃস্ব মনে হয়,
আপনারা হারিয়ে গেলে এক একজন,
অথবা বয়সের ভারে
শিল্পকর্মে হলে অক্ষম,
মনে হয় বাংলাটা হারাচ্ছে স্বর্ণ সময় !
কলকাতায় নাটক আর সিনেমাহল গুলি
আজ হয়ে গেছে মল মার্কেট,
কোনটা বা বহুতল সারি সারি ফ্ল্যাট বাড়ি,
চেতনার ধ্বংসের দেয় সংকেত !
সে সময় আপনার মত কোনো ইতিহাস
বেঁচে আছে জানলেই হই ধন্য,
তাকালে দেখতে পাই দূর অতীতের ছবি
ভাবতে-ভাবতে একা হই বিষণ্ণ !
—————————————————-
( 19:06 সন্ধ্যে 8 নভেম্বর 2020, Ridendick Mitro )
বিঃদ্রঃ :- ঋদেনদিক মিত্রো, পেশায় ইংরেজি ও বাংলা ভাষার কবি -ঔপন্যাসিক – গীতিকার -কলামনিস্ট, একটি বিশ্বজাতীয় সংগীত ” world anthem — we are the citizen of the earth, ” ” corona anthem 2020 official bengali song ” ( আগ্রাসনের নেশার সাথে হিংসা সীমাছাড়া ) প্রভৃতি বিশেষ ধরণের সংগীতের গীতিকার ! কলকাতা, ভারত !