Ridendick Mitro
Spread the love

কবিতা : সূর্য বাংলাদেশ বাংলাভাষা  

  ——————————-

    ঋদেনদিক মিত্রো ( ভারত। )

 

 || A Bengali poem like “Surya Bangladesh Banglavasa” i.e Bangladesh Bengali language, the sun”, by Ridendick Mitro, India. Bharat. ||

 

 

  [ উৎসর্গ ]  

 

এই কবিতাটি উৎসর্গ করলাম “দুহাজার বছরের সর্ববৃহৎ কাব্যগ্রন্থ”কে। এই বিষয়ে সব তথ্য পেয়ে রোমাঞ্চিত হবেন, footnote – 2 দেখুন, কবিতার নিচে। ]

 

|| এই গদ্যের নিচে কবিতা।||

 

|| আগে নিচে নেমে কবিতাটি পড়েও পরে এই গদ্যগুলি পড়তে পারেন। অনেক কিছু পাবেন, প্রিয় পাঠক-পাঠিকা। তবে, লেখার ভিতর মাঝে-মাঝে বিজ্ঞাপন দেখতে পারেন, সেগুলি বারবার পেরিয়ে পুরো লেখা পড়বেন। সবার সব লেখার ক্ষেত্রে এটা সত্য সব রকম ইন্টারনেট মাধ্যমে। এইটা খেয়াল রাখবেন।||

 

[ বেশ কিছু অনিবার্য কথা]

 

বাংলাদেশ ও ভারত, দুটি দেশ নানা দিক থেকে পারস্পরিক চিন্তা ও মননের দেওয়া নেওয়া করে মানসিক পূর্ণতার সাথে। আমি একজন ভারতীয় হয়ে বাংলাদেশের প্রতি সামান্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি মাত্র।

 

২০১০ সালের দিকে পশ্চিমবঙ্গের একটি স্বল্প পুঁজির পত্রিকায় পড়েছিলাম মাহবুব-উল-আলম-চৌধুরির লেখা “কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি” কবিতাটি। পূর্বপাকিস্তানে ১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারীতে ভাষা আন্দোলনে কয়েকজন শহীদ হবার পরে এটা লেখা।২০১০ সালে একদিন রাতে লেখাটা পড়ে থরথর করে কেঁপেছি আর কেঁদেছি। কবিতাটির এক এক জায়গা মনে এতো আলোড়ন তুলেছিল। কবিতাটি সেই সময়ের পাকিস্থান সরকার নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছিল। সেই রাত্রে কী করে কেটেছিল জানিনা।

 

এই ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশ নিয়ে ও বাংলাভাষা নিয়ে অনেক কাজ করার ইচ্ছে আসে। বাংলাদেশ ও বাংলাভাষা নিয়ে অনেক কাজ করার ইচ্ছের পিছনে এটাই আসল কাহিনী। তবে, বাংলাভাষা নিয়ে তার আগে কাজ করলেও, খুব দায়িত্বের সাথে অনেক কাজ করার ইচ্ছে ঐ কাহিনীর পর থেকে। তারপর কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলায় বাংলাদেশের প্যাভিলিয়নে টিভিতে বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা ও মুক্তিযুদ্ধে নিহত লাসের ঢিপি দেখে আমার মাঝে বাংলাদেশ নিয়ে আরো প্রভাব ফেলে। এরপর ধীরে-ধীরে বাংলাদেশের উপরে কাজে মনযোগ দিয়েছি।

 

কবিতাটি কয়েক মাস আগে লেখাছিল। ইচ্ছে হয়েছিল এবার প্রকাশ করব এটা। সেটা বের করে edit করছিলাম বারবার। তারপর কত বদলের পর এই রূপ নিল সেটা বলেছি। পরপর দেখুন। পেয়ে যাবেন।

 

এটি কাহিনী ভিত্তিক গণকবিতা। চিত্রকল্প দেবার পথ নেই। তবুও বিশেষ এক শ্রেনীর পাঠকের কাছে চিত্রকল্প ও নানা ভাঁজ না থাকলে কবিতা পড়ে তাঁরা তৃপ্তি পাবেন না। তাই, ১০ ম স্তবক করেছি চিত্রকল্প দিয়ে। এর বেশি কিছু করা গেলো না এই কবিতায়।

 

কবিতাটি অন্য রকম করে লিখেছিলান। পত্রিকায় দেবো বলে ফাইন্যাল করেছিলাম। প্রায় ৪০ বার অনেক রকম করে edit করে সাজিয়েছিলাম। সম্পাদক বলেছিলেন কয়েকদিন পরে জমা নেবেন।

 

আমি তখন আবার কবিতাটি পড়তে গিয়ে মনে হল, ঠিক হয়নি, আবার বদলাতে হবে, এবং পুরোটাই। তারপর পুরো কবিতাটায় লেখার স্টাইল বদলে ফেলি, তথ্য ঠিক রেখে, বদলে গেল আগের লেখার রূপ, নিজেও চমকে উঠি।

 

সেটাকে আবার ১০–১৫ বার Edit করি। প্রায় ৫০ থেকে ৭০ বার মত মোট পরিবর্তন করার জন্য এই কবিতার উপরে প্রায় ১০ দিন খেটেছি। তারপরে কবিতাটা উপযুক্ত রূপ পেলো মনে হল।

 

সম্পাদক তখন আমার এই কবিতাটি তাঁর ব্যাস্ততার জন্য দেরিতে নেবেন বলতেই এই কবিতা ঘুরেফিরে এই রূপ নিল। কে জানে, প্রকৃতি হয় তো সেই জন্যই তাঁকে দিয়ে এই ঘোষনা করেছিল।

 

——————————–

 

সূর্য বাংলাদেশ বাংলাভাষা

   ( ১২৩ পংক্তি)

 

  ঋদেনদিক মিত্রো  ( ভারত)  

 

সূর্যের মত, তবু সূর্য না হোক,

বিশ্বের মানুষের খুলেছিল চোখ,

সাবেক পূর্বপাকিস্তান মাটি,

বুঝিয়েছে, বাংলাভাষীরা কী জাতি,

সেই ইতিহাস দিল নতুন আলোক,

সূর্যের মতো, তবু সূর্য না হোক।

 

উনিশশো বাহান্ন, ২১শে ফেব্রুয়ারী,

আছে সেই ইতিহাস, ভুলতে কি পারি?

কজনকে জানি, যাঁরা হয়েছেন স্থিত,

অজান্তে কত নাম আহত ও মৃত,

কত বিপ্লবী নিয়ে শহীদের শোক,

সূর্যের মত, তবু সূর্য না হোক।

 

রফিক, জব্বার, সফিউর ও সালাম,

সাথে বরকত, আরো ছিল কতো নাম,

কারো নাম আছে, আর কারো নাম নেই,

তাঁরা নির্ভিক ছিলেন তো সকলেই।

শেখালেন, কাকে বলে সত্যি মহৎ,

সূর্যের মত, তবু সূর্য না হোক।।

 

সেই কবিতাটি, তুলনা নেই তারই,

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১শে ফেব্রুয়ারী।

 

আন্দোলনে তরতাজা খুন দেখে,

সতেরোর ছেলে তখনি হঠাৎ লেখে,

কয়েক পংক্তি, তুলনা কি আছে তারই,

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১শে ফেব্রুয়ারী,

সে ছেলে, আব্দুল গফফার চৌধুরী।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন মাত্র,

সেই ছেলেটি “আই-এ” পাঠের ছাত্র,

২১শে ফেব্রুয়ারীতে প্রথম যে লাস

চোখে পড়তে বেরোলো দীর্ঘশ্বাস,

সাথে-সাথে মুখে যে-লেখা বেরুলো তখন—

কী জানি কী লেখা, খেয়াল করেনি মন,

পরদিন হয়ে আহত বাইশ তারিখে,

হাসপাতালে এসে বাকিটাই লিখে —

খাড়া করা হলো দুর্লভ এক লেখা,

পরপর পড়েছিল ছড়িয়েই সেটা।

 

১৭ বছরি ছাত্রের হাতে এ কী চমৎকারি,

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১শে ফেব্রুয়ারী।

 

বাংলাদেশ মানে কতটা মানসিক পরিনত,

এইরকম আরো, জানিনা সংখ্যা কত!

 

সেই দিন সেই ২১শের সন্ধ্যায়,

স্বসম্পাদিত “সীমান্ত” পত্রিকায় —

কবি মাহবুব-উল-আলম-চৌধুরি,

হাতে জ্বালিয়ে হাজারটা ফুলঝুরি —

যে কবিতাটা লেখেন আলোর চ্ছটায়,

সেই লেখা পড়ে সকলেই কেঁদে যায়,

“কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির — দাবী নিয়ে এসেছি,”

আমরা কজন সেই কবিতাটি দেখেছি?

 

 

জ্যোৎস্না গঙ্গাফড়িং এর মজা মতো

দিলখোলা হাওয়া মেখেই অসংযত —

ঘাসে মিশে গিয়ে স্মৃতি মন্থন করে —

গল্পগুলিকে আঁকড়ে-আঁকড়ে ধরে —

যেভাবে স্থিতধী নিঃস্বতা সুমধুর,

তেমনি আমার বাংলাভাষা, মুগ্ধতা ভরপুর।

 

 

উনিশশো একাত্তর, পৃথিবীটা মুগ্ধ,

সে-কাহিনী জানো, সেই যে মুক্তিযুদ্ধ।

বাবা মা ছেলেমেয়ে, দাদু দিদা, সকলে,

ঘরোয়া অস্ত্র নিয়ে রেখেছিল দখলে —

বাংলাভাষার বিশ্ব আলোর মাটি,

হতে পেরেছি কি আমরা তাদের সাথি?

লাখ-লাখ শহীদের রক্ত ও লাসে,

এসেছিল স্বাধীনতা কত কী যে ত্রাসে,

সেসব কাহিনী ভেবে ভিজে যায় চোখ,

সূর্যের মত, তবু সূর্য না হোক।

 

স্বাধীনতা পেতে তখন যুদ্ধ চলছে,

পূর্বপাকিস্তান তো পুরোটা জ্বলছে,

পশ্চিম পাক সৈনিকেরাই এসে,

নির্মমভাবে ধরেছিল তারা ঠেসে,

ঘর-ঘর থেকে খুঁজে বের করে আনে,

দানব কখোনো যুক্তিতে কি থামে —

 

শিক্ষক আর বুদ্ধিজীবীকে খুঁজে,

নির্মমভাবে মারা হয়েছিল যে।

 

তবুও জ্ঞানীরা মাথাটা না নুইয়ে

পুরস্কারের জন্য লোভে না গিয়ে,

সকলে হলেন নির্মমভাবে খুন,

ভাঙিয়ে দিলেন সারা পৃথিবীর ঘুম।

 

দুঃসাহসের মৃত্যুকে ভালোবাসি,

আমরা না ভাই, সাহসী বাংলাভাষী?

 

পূর্বপাকিস্তান হয় বাংলাদেশ,

এই পৃথিবীতে এলো নব উন্মেষ,

চিন্তায়, জাগরণে, মননের কাজে —

নতুন স্বপ্ন দিল মানুষের মাঝে,

কত বাধা ঠেলে যে-মাটি মহতে ঝোঁক,

সূর্যের মত, তবু সূর্য না হোক।

 

 

উনিশ শত একষট্টি সালে,

১৯শে মে, কাহিনী আরেক সকালে।

ইতিহাস হল আরো এক ঘটনায়,

ভারতে আসামে, বরাক উপত্যকায়।

 

পূর্বপাকিস্তান থেকে যাঁঁরা এসে —

উদ্বাস্তু শিবিরে গায়ে গা ঘেঁসে —

ভারতে আসামে ছিলেন অনেকে তাঁরা,

১৯শে মে কঠিন আইনি ধারা —

অমান্য করে ভীড় হয় সকালবেলায়,

শিলচরেরই বরাক উপত্যকায় —

বাংলাভাষাকে রাখার আন্দোলন–

জমায়েত হল হাজার মানুষজন,

 

কমলা ভট্টাচার্য, ষোড়শী নাম,

ভাষার হয়ে প্রথম নারী শহীদের সম্মান।

 

এইভাবে মোট বারো জন পরপর

হারিয়েছিলেন ঝড়ের কণ্ঠস্বর,

 

বারোতম নাম বিপ্লব বিশ্বাস,

পুলিসের হাতে তাঁর কী সর্বনাস,

কোথাও দেখোনি তাঁর জীবনী বা ছবি,

তাঁকে নিয়ে কি লিখেছেন কোনো কবি?

 

শরীরে বুলেটে বাকি চৌত্রিশ বছর,

আড়ালেই থেকে ঘুমিয়ে গেলেন তারপর।

একটি বুলেট ঢুকে ছিল দেহে, তাঁর,

এইভাবে এত বছর করেন পার।

 

এ-বীর ধারায় সারা বিশ্বের চোখ,

সূর্যের মত, তবু সূর্য না হোক।

 

আত্মত্যাগিরা পরোয়া নেন না নাম,

আমরাই করি তাঁদেরকে সন্ধান।

 

বাংলাভাষাকে নিয়ে রাজার তিলক,

যারা নেয়, তারা হয় কি সাহসে সৎ!

অতুলনীয় এর রস আর রেশ,

বিশ্বে প্রথম এর রাজদূত, রাজ বাংলাদেশ।

 

রাষ্ট্রসংঘ রাখেন আরেক অবদান,

২১শে ফেব্রুয়ারীকে দিয়েই সম্মান,

“বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস”-এর ঘোষনা,

এ অবদানের কি হয় গো তুলনা?

বছরে এ-দিনে পৃথিবীটা আবেগে —

যে যার ভাষাকে নিয়ে সম্মান দেবে,

পৃথিবীকে করে বাংলাভাষাই এক জোট,

আবেগেতে ভেজে সারা পৃথিবীর চোখ।

 

—————————————

************************

☺️♥️☺️

—————————————-

 

  [ Footnote -1 ]

 

“সূর্য বাংলাদেশ বাংলাভাষা ” কবিতায় একটা কথা বলে রাখি। ১৯৬১, ১৯ মে বরাক উপত্যকায় ভাষা আন্দোলনে, সবাই জানেন ১১ জন প্রান দিয়েছেন। এইসব ক্ষেত্রে কত জন কিভাবে শহীদ হন বা হারিয়ে যান সেটা কেউ জানেনা। সব দেশে সব রকম বিপ্লব বা বিদ্রোহের ক্ষেত্রে এটা সত্য। শহীদদের সঠিক সংখ্যা পাওয়া যায় না। যেমন ১৯৫২, একুশে ফেব্রুয়ারী ভাষা আন্দোলনে মারা গিয়েছিলেন চার বা পাঁচ জন, এটা আমরা জানি, কিন্তু, ঐ মুহুর্তে আরো কতজনকে বেপাত্তা করা হয় কেউ জানেনা। এমনকি সেই আন্দোলনের পরেও কয়েকদিন চলেছিল এই আন্দোলনের ধারা, বারো বছরের শিশুও সেই আন্দোলনে এসেছিল মিছিলে সাহস নিয়ে। আর তখন কয়েকদিন ধরে চলে বাংলাভাষা প্রেমিদেরকে গনহত্যা। অন্যদিকে আবার ভারতে আসাম অঙ্গ রাজ্যে অসমিয় ভাষাকে একমাত্র সরকারি ভাষা রাখতে চেয়ে যে আইন হয়েছিল আসাম সরকার থেকে, সেটার বিরুদ্ধে হয়েছিল বাংলাভাষাকে সরকারিভাবে রাখার জন্য দাবী নিয়ে আন্দোলন। এবং সেই ভাষা আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিল ওখানে থাকা বাংলাদেশী উদবাস্তু। যাঁরা দুমুঠো খাবার জন্য কঠিন জীবন যুদ্ধ করে জীবন যাপন করতেন, তাঁরাই জীবনের সব রকম প্রতিষ্ঠা ও সংসার জীবনের মায়া ত্যাগ করে জীবন বাজী রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এই আন্দোলনে। শিলচরে বরাক উপত্যকায় রেল স্টেশনে সেই আন্দোলন হয়। পুলিশের গুলিতে প্রথম ১৬ বছরের কমলা ভট্টাচার্য মারা গেলেও পরপর অনেকে হতাহত হন। তাঁদের মধ্যে সেই সময় সঠিক সংখ্যা পাওয়া নাও যেতে পারে। তবে আমাদের সবার কাছে সাধারণ জ্ঞাত সংখ্যা ছিল এগারো জন। যাঁরা কেউ-কেউ আন্দোলনের জায়গায় মারা গিয়েছিলেন কমলা ভট্টাচার্য পুলিশের গুলিতে মারা যাবার পরে, কেউ বা হাসপাতালে মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু অনেক পরে একটি সংবাদ পাওয়া গিয়েছিল ১২ নং বিপ্লবি বেঁচে ছিলেন বিপ্লব বিশ্বাস। শরীরে বুলেট এমন জায়গায় ঢুকেছিল যে সেটা বের করার জন্য কোনো আর্থিক সহায়তা তিনি পাননি, এবং এইভাবেই তিনি বেঁচেছিলেন চৌঁত্রিশ বছর। কারণ সেই বুলেট বের করা ছিল খুব ঝুঁকি বহুল। আপনারা অনেক সময় অনেক পুরানো সংবাদপত্র পত্রিকায় অনেক সংবাদ পান, সেইভাবে আমিও অনেক পুরানো পত্রপত্রিকা পড়ি। বা কম মূল্যেও কিনি। বাড়িতেও কেনে। দুর্লভ কিছু তথ্য জানতে। মোটামুটি কোনো একটি নামি সংবাদপত্রে এই সংবাদ পড়েছিলাম, সেটা সংবাদপত্র বা সাময়িকি, সেটা মনে নেই। মনে হয় একজনের বাড়িতে পড়েছিলাম এটা। তাঁদের বাড়িতে বই পত্রপত্রিকার চর্চা ছিল খুব। কিন্তু, আমার পাঠের স্মৃতি থেকে বিপ্লব বিশ্বাস নিয়ে সংবাদ দিয়ে এই কবিতার তথ্য আরো পরিপাটি করলাম।

 

এবার যদি কোনো গবেষক বা শিক্ষা দপ্তরের মনে হয় যে, এই তথ্য ভুল না হলেও তাঁদের কাছে এই তথ্য না থাকায় এই কবিতা কোনো পাঠসূচিতে চালাতে হলে এই তথ্য বাদ দিতে হবে তাঁদের কাছে অফিসিয়াল প্রমান না পাওয়া পর্যন্ত, তাহলে কী করবেন বলে দিচ্ছি।

 

“এইভাবে মোট বারো জন পরপর

হারিয়েছিলেন ঝড়ের কণ্ঠস্বর,” —

 

এটা বদলে করবেন

“এভাবে এগারো জন তো পরপর

হারিয়েছিলেন ঝড়ের কণ্ঠস্বর।”

 

তাহলে ছন্দের গতি, মানে বাক্যের ভিতরের গতির মাত্রা ঠিক থাকলো।

 

তারপর বাদ দেবেন —

 

“বারোতম নাম বিপ্লব বিশ্বাস,,

……………………..

……………………..

এইভাবে এত বছর করেন পার। ”

 

এই এতোটাই বাদ দেবেন। ব্যাস।

 

আশা করি, বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

 

অনেক বুঝে তথ্য দিয়ে লিখেছি। যদি তথ্যে কোথাও ভুল থাকে, সেই প্রমাণ কেউ দিলে, তাহলে সেটা জানালে আমি ঠিক করে দেব পরের প্রয়োজনীয় মুদ্রনে বা কোনো গবেষকের জন্য।

 

ঋদেনদিক মিত্রো

————————————

 

  [ Footnote -2 ] 

 

“সূর্য বাংলাদেশ বাংলাভাষা” উৎসর্গ :

————

 

“সূর্য বাংলাদেশ বাংলাভাষা” কবিতাটি উৎসর্গ করলাম “দু’হাজার বছরের সর্ববৃহৎ কাব্যগ্রন্থ”র মাঝে ২০০৫ জন কবি, এই মহাগ্রন্থের সম্পাদক প্রবীর কুমার বিশ্বাসকে, রঙ মিলান্তি প্রকাশনীকে, এই কাজের সাথে সংযুক্ত সব শুভার্থীদেরকে, যারা কোনোভাবে এই কাজের সাথে যুক্ত না থেকেও দূরে থেকে এই কাজের সফলতা চান, তাঁদের সবাইকে।

 

এই মহাগ্রন্থটি ২০৩২ পৃষ্ঠা, ২০০৫ কবির সংক্ষিপ্ত জীবনী, কবিতা ও ছবি সহ। রামায়ন, মহাভারতের মত মহাকাব্যের আকারে দৈর্ঘ ও প্রস্থ। উচ্চতায় প্রায় দ্বিগুণ। কারণ, ২০৩২ পৃষ্ঠা। উন্নত রকমের কাগজ ও বাঁধাই সহ। সবাই জীবিত কবি।

 

একই সাথে এঁরা করেছিলেন “বাংলাভাষার সেরা কবিতা” শিরনামে কবিতা প্রতিযোগীতা। প্রতি পংক্তি হবে ১৮ অক্ষর, প্রতি দুই লাইনে অন্তমিল ও তিরিশ পংক্তি কবিতা। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস সহ বর্তমান কিছু বিষয়ের মিশ্রনে হতে হবে কবিতা। প্রথম হয়েছেন কবি অন্তরা দত্ত। কবি ও শিক্ষিকা।

 

দেড় মাস ধরে কবিতা গ্রহণ করা হয়, ও তারপরে প্রায় এক মাস পরে এর ফলাফল বের হয়। প্রথম হওয়া কবিতাটি এই মহা গ্রন্থের প্রথমে আলাদা একক পৃষ্ঠায় থাকবে এককভাবে। বাকি যে সব কবি প্রকাশ যোগ্য কবিতা লিখেছেন এই বিষয়ে, ১ম হওয়া কবি অন্তরা দত্ত সহ নির্বাচিত তাঁদেরকে নিয়ে মোট একশত দশজনকে নিয়ে আলাদা বই হচ্ছে “বাংলাভাষার সেরা কবিতা” শিরোনামে।

 

অন্যদিকে, বিভিন্ন কবিদের লেখা এই সব বিষয় নিয়ে সম্পাদককে কবিতায় বা গদ্যে পত্রগুলিকে নিয়ে “বিশ্বসাহিত্যের ঐতিহাসিক পত্র” শিরনামে বই বেরুবে। এক্ষেত্রে অনেকে একাধিক পত্র লিখেছেন। হয় তো, এক জনের একাধিক লেখা নাও যেতে পারে, কারোর ক্ষেত্রে যেতেও পারে, সেটা পুস্তকের ভাবনার প্রকরণ ও পরিসরের উপরে নির্ভর করবে। বা বেশ কিছু ক্ষেত্রে বাছাই হতেও পারে। সেটা জানিনা। যেটা ভালো হবে, সম্পাদক মন্ডলি সেটাই করবেন। একটু বিস্তারে আলোচনা করলাম, পুরো বিষয়টি বুঝতে সুবিধে হলে পাঠক তৃপ্তি পাবেন।

 

বিভিন্ন বিষয়ে তর্কবিতর্ক যাই থাক, বাংলাভাষাকে প্রথম বিশ্বের কাছে কোনো রাষ্ট্রের স্বাধীন ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ।

 

২১শে ফেব্রুয়ারী বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস হিসেবে আমরা পেয়েছি পূর্বপাকিস্তানে ১৯৫২, ২১ ফেব্রুয়ারী ভাষা আন্দোলনের জন্য রাষ্ট্রসংঘ থেকে “বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস”। সর্বপরি বাংলাভাষার অস্তিত্ব রক্ষা।অন্যদিকে অনেক দিক থেকে বিশ্বের বাংলাভাষার মানুষেরা ও অন্যভাষার মানুষেরাও অনেক দিক থেকে উপকৃত হয়েছেন।

 

একটি কাহিনী বলি, আফ্রিকার সিয়েরা লিয়ন দেশে বাংলাভাষাকে প্রবেশ করানো ও এর শিক্ষা সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেবার পিছনে আছে রাষ্ট্রসংঘ থেকে পাঠানো বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর চেষ্টা ও মেহনতি। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০২ সাল অবধি এখানে হয়েছিল ভয়ংকর গৃহযুদ্ধ, রাষ্ট্রিয় নানা সমস্যার কারণে। ষাট লাখ জনসংখ্যার ঐ দেশে গৃহযুদ্ধ ঠেকাতে রাষ্ট্রসংঘ পাঠিয়েছিলেন প্রায় আটত্রিশ দেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী। সব দেশের বাহিনী নিজেদের সাহস ও বিশ্বাস দিয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

 

পাশাপাশি, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া শান্তিরক্ষী বাহিনী এই দায়িত্ব পেয়ে পুরো পরিস্থিতি বুঝে নিজেদের মত ভেবে কিছু পথ নিয়েছিলেন। ওখানে গিয়েছিল মাত্র পাঁচ হাজার সেনা, শান্তিরক্ষী বাহিনী হিসেবে। বাংলাভাষী সেনা বাহিনীরা বুঝেছিলেন দারিদ্রের কারণে ও বেশিটাই অল্প শিক্ষার জন্য ও অনেক দিক থেকে ভারসাম্যহীনতার জন্য হচ্ছে ভয়ংকর গৃহযুদ্ধ।

 

তখন তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে বন্দুক নামিয়ে রেখে শুরু করলেন পুস্তক পড়িয়ে শিক্ষা দেওয়া, খাদ্য ও অসুধ দেওয়া, সুস্থ থাকার পদ্ধতি শিখানো এবং বাংলাভাষা শিক্ষা সহ এই ভাষার কবিতা ও সঙ্গীত শেখানো। এর ফলে ওখানকার মানুষেরা সঠিক ভালোবাসা পেয়ে জীবন যাপন সাবলিল করতে থাকে। এবং পরে এই প্রচেষ্টায় খুশি হয়ে ২০০২ সালে সেই রাষ্ট্রের মাননীয় রাষ্ট্রপতি দ্বারা বাংলাভাষা সম্মানীত হয়েছিল। সে দেশে এখন বাংলাভাষা শেখানো হয়। সিয়েরা লিয়নে থাকা বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর এই কাজে রাষ্ট্রসংঘ আপ্লুত হন এবং পরে এই বাহিনীকে মানবিক উপায়ে শান্তি স্থাপনের জন্য ঘানায় পাঠানো হয় ও আরো নানা সমস্যাবহুল দেশে পাঠানোর জন্য বিষয়টি বিবেচনাধীন রাখেন। হয় তো পাঠনো হয়েও গেছে আরো কয়েকটি দেশে, কে জানে।

 

তাই, কলকাতা, ভারত থেকে “দু’হাজার বছরের সর্ববৃহৎ কাব্যগ্রন্থ” বেরুচ্ছে, এই কাজ সেইসব ভাষা শহীদ, বাংলাভাষা প্রেমি ও বিশ্বের সব ভাষার কবিতা প্রেমিদেরকে মর্যাদা দেওয়ায় বৃহত্তর পথ।

 

এই কাজ করার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের কবি ও আইনজীবি, বুদ্ধিজীবীদের অনেকের সহায়তা অনস্বীকার্য। সারা বিশ্বের নানা দেশের নানা শিক্ষাবিদ কবি সহ আরো অনেক কবি এখানে সমবেত হয়েছেন তাঁদের কাজের মাধ্যমে। আমরা ভারতের কবিরাও আত্মবিশ্বাস পেয়েছি তাঁদের সহানুভূতিশীলতায়। এবং এই কাজ তাই যুক্তিগ্রাহ্যভাবেই বিশ্বের বাংলাভাষা তথা সব ভাষার কবিতা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্যতাকে নতুন করে মর্যাদা দিতে নির্মিত। তাই এই কবিতাটিকে আমি এই কাজের ক্ষেত্রে যুক্ত সবাইকে উৎসর্গ করলাম।

 

প্রসংগত বলে রাখি, বাংলাদেশের উপরে নানা বিষয়ে আমার ইংরেজি ও বাংলা কবিতার পূর্ণ আয়তনের বই পান্ডুলিপি আকারে রয়েছে। তার মধ্যে কিছু লেখা ইন্টারনেটে ও মুদ্রনে বেরিয়েছে পত্রপত্রিকায়। বিবিধ বিষয়ের উপরে কবিতা ও গদ্যের অনেক বই প্রকাশিত হলেও বাংলাদেশের উপরে একক বই আমার বেরোয়নি। আসলে অনেক বইয়ের পান্ডুলিপি প্রস্তুত হয়ে আছে। প্রকাশকের কাছে জমা আছে। কোনো এক সময় বেরুবে। বেরুবে তো বটেই। কাজটা ঝাড়পোছ করে প্রস্তুত আছে। এটাই আসল ব্যাপার। রেখে থুয়ে বই বের করলে বই অনেক সাবলিল ও নির্ভুল হয়। থেকে-থেকে যত ঝাড়পোছ হবে তত খাঁটি হবে।তাই এসব ক্ষেত্রে কবি ও পাঠকের ধৈর্য ধরা দরকার। তাতে উভয়ের স্বস্থি হবে।

—————————-

 

  [ Footnote -3 ]

কবি পরিচিতি :  ঋদেনদিক মিত্রো ( Ridendick Mitro), পেশায় আলাদা করে দুটি ভাষায় বাংলা ও ইংরেজিভাষায় কবি-উপন্যাসিক-গীতিকার-কলামিস্ট। অনেক দিন স্প্যানিস ভাষার শিক্ষনে থেকে এই ভাষাতেও সাহিত্য লেখার জন্য প্রস্তুতি চলছে।  বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে কবির লিখিত ইংরেজি ও বাংলা গান থিম সঙ হিসেবে গ্রিহীত হয়ে নিয়মিত ব্যাবহার করা হয়। অনেক বছর আগে থেকেই বাংলাদেশের মুদ্রিত ও ওয়েবসাইটে লেখা বেরিয়েছে বিভিন্ন সময়ে। বাংলাদেশের উপরে ও বাংলাভাষার উপরে আছে অনেক কবিতা ও সঙ্গীত। সেগুলি অনেক প্রকাশিত, অনেক অপ্রকাশিত। সেগুলি নিয়ে একক গ্রন্থ হিসেবেও প্রকাশিত হবে।

২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় গ্রন্থ সংখ্যা ২১-২২টি।  রাষ্ট্রসংঘ নিয়ে অনেক ইংরেজি বই লিখেছেন। (১) Anthem-poem on all the independent nations,  (2):Anthem-poem on all the independent days. (3) All poems on the life of the Secretary-Generals of the United Nations. (4) A book of poems on Russia.(5) Anthems and poems on all the United Nations Organizations. (6) Costa Rica, My Darling, (7) Asgardians poems, story & Laika.  Etc. এগুলি অবস্যই সরকারি রেজিস্ট্রিকৃত।

 

আরো অন্যান্য বইগুলিও আছে।আরো অনেক গ্রন্থ পান্ডুলিপি প্রস্তুত। পরপর বেরুবে একইভাবে বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে।

 

ভারতে মুর্শিদাবাদে নবাব সিরাজউদ্দৌলা সহ তাঁর ইতিহাস রক্ষার আন্দোলন ও অনেক রকম প্রকল্প,  হীরাঝিল বাঁচাও আন্দোলন, খোসবাগ যত্ন করার আন্দোলন, “নবাব সিরাজউদ্দৌলা মুক্ত বিদ্যালয় খোসবাগ” সহ অনেক মুখি প্রকল্প, এই সমগ্র বিষয়ের উপরে দশ হাজার পংক্তির মহাকাব্যের প্রুফ দেখা চলছে। দীর্ঘ কাজ বলে অনেকবার দেখা, কিছু অদলবদল করা ও প্রুফ দেখার জন্য সময় যাচ্ছে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে নবাব সিরাজউদ্দৌলার ইতিহাস রক্ষার আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হয়ে এই ইতিহাসের উপরে কাজ করা শুরু বাংলা ও ইংরেজি ভাষায়। “নবাব সিরাজউদ্দৌলা মুক্ত বিদ্যালয় খোসবাগ” নামের সব বয়সের জন্য বহু রকম শিক্ষার শিক্ষাকেন্দ্রতে ২০২১ সালে কবির লেখা “নবাব সিরাজউদ্দৌলা মুক্ত বিদ্যালয় খোসবাগ / আমাদের তুমি গর্ব, বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব…”, এই বারো পংক্তির সঙ্গীতটি এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা-প্রধান সমর্পিতার সুরে গীত ও স্কুলে ব্যাবহৃত হয়, প্রার্থনা সঙ্গীত হিসেবে। এই সঙ্গীত উদবোধন হয়েছিল ২০২১ সালে মুর্শিদাবাদ, খোসবাগে নবাবের কবরে স্নান করিয়ে ফুল দিয়ে সাজিয়ে তারপর ঐ স্কুলের ছাত্রছাত্রী ( নাইটস্, Knights বলা হয়।) ও তাঁদের অভিভাবকদের নিয়ে গানটি গাওয়া হয়েছিল।

 

এই ইতিহাস রক্ষার আন্দোলন নিয়ে অনেক সফল লেখা লিখবার জন্য এখান থেকে ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক “সবুজ সম্মান – ২০২৩” প্রাপ্তি। সৌজন্যে : নবাব সিরাজউদ্দৌলা স্মৃতি সুরক্ষা ট্রাস্ট। এই পুরস্কার এই বছর প্রাপকদের মধ্যে ছিলেন, বাংলাদেশের বিখ্যাত ইউটুবার সালাহুদ্দিন সুমন, ভারতের এক সমাজসেবি মল্লিকা খাতুন, হীরাঝিলে থাকা নবাব সিরাজের প্রাসাদের জমি যে পরিবারগুলির নামে রেকর্ড ছিল — তাঁদের মধ্যে একটি পরিবারের সদস্য উজ্জ্বল সরকার। এই পরিবার নিজেদের নামে থাকা নবাবের প্রাসাদের অংশে বিরাট জমির অংশ এই ট্রাস্টকে আইদান করে এই আন্দোলনকে সুস্থিরতায় চলতে সহায়তা করে। উজ্জ্বল একই সাথে দিনরাত এই আন্দোলনকে নানাভাবে সহায়তাও করেছিলেন ও করেন।  ২০২২ সালে হীরাঝিলে নবাব প্রাসাদের স্থানে শহীদবেদী উদ্বোধন হয়, ২৩ জুন পলাশীর  যুদ্ধ দিবসে।

 

তখন এসেছিলেন বাংলাদেশ থেকে নবাব সিরাজের নবম বংশধর সৈয়দা মেহমুদা, ভারত সরকার দ্বারা “নবাব অব মুর্শিদাবাদ” উপাধীতে সম্মানিত থাকা নবাব মিরজাফরের পরিবারের ছোটে নবাব রেজা আলী মির্জা। সমর্পিতা তাঁর বন্ধুদের নিয়ে ঐ সঙ্গীতটি ওখানে গাইবার সময়ে দুই নবাব পরিবারের ঐ দুই প্রতিনিধি নিজেদের আগ্রহে এসে সকলের সাথে দাঁড়িয়ে ঐ সংগীত গেয়েছিলেন। ইতিহাস নিয়ে কাজ করা এই সমর্পিতা কলকাতা থেকে আসা একজন অভিনেত্রী, কলকাতা দূরদর্শন এর একজন সংবাদ পাঠিকা, লেখিকা, গীতিকার, সুরকার, ডাইরেক্টর, শিক্ষাবীদ, গবেষক। এই সমর্পিতা “নবাব সিরাজউদ্দৌলা স্মৃতি সুরক্ষা ট্রাস্টের সভাপতি। অবস্য কবির এই সব  কাজের ইচ্ছের সাথে ২০২১ সালে ঘটনাক্রমে প্রথম সংযোগ ঘটিয়েছিলেন ও নানা ভাবে উৎসাহিত করেছিলেন সাংবাদিক ইউটুবার “Manas Bangla” এর মানস সিনহা। এরপর কবি এই আন্দোলনে সহায়তা করা আরো বিভিন্ন সাংবাদিকদের সহায়তা লাভ করেন। এই বিষয়ের উপরে প্রায় হাজার বা দেড় হাজার পৃষ্টার মত কবিতা, মহাকাব্য, নিবন্ধ, উপন্যাস লিখেছেন এই কবি।

 

নবাবের হীরাঝিলে এই ট্রাস্ট্রির তরফে ও অনেকের আর্থিক সহায়তায় হয়েছে “সিরাজ উদ্যান”। এই হীরাঝিলে হচ্ছে প্রায় আড়াই কোটি টাকার প্রকল্পের শহীদ মিনার সহ সংযুক্ত কাজগুলি। খোসবাগেও নানা প্রকল্প রূপায়নের চেষ্টা চলছে। এঁরা সমাজের আরো কিছু দিকে সম্ভাব্য মতো কাজ করেন। এইভাবে রয়েছে আরো অনেক প্রকল্প, আর্থিক সহায়তা অনুযায়ী সেগুলি চলবে পরপর। ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসের সাথে সংযুক্ত প্রথম ইতিহাসের সাথে যুক্ত এই আন্দোলন ও প্রকল্পের অবস্থানে, দুই নবাব পরিবারের সমর্থনের অবস্থানে, এখান থেকেই এই কবি “আন্দোলন কবি” হিসেবে নির্বাচিত হয়ে “সবুজ সেনা সম্মান-২০২৩” লাভ করেন।

 

এই ইতিহাস রক্ষার অবস্থানে হয় এই ইতিহাস কেন্দ্রিক অনেক সাহিত্য সৃষ্টি, চিত্রকলা ও ভাস্কর্য। রাজ্য সরকার, ভারত সরকার, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, সকলের সম্মতিতে এই ইতিহাস রক্ষার দাবী ও প্রকল্প সমর্থিত। এঁরা বছরে তিনটি দিবস পালন করেন। যে কোনো এক দিন নির্ধারণ করে আন্তর্জাতিক সবুজ সেনা সম্মান দেওয়া হয় ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে নবাবের প্রাসাদ স্মৃতি স্থান হীরাঝিল উদ্যানে অনুষ্ঠানে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভাগীরথীর পশ্চিমপাড়ে হাজার দুয়ারি নবাব সিরাজের প্রাসাদ নয়। এটা অনেকে জানতেন না। ২৩শে জুন পালিত হয় একই স্থানে পলাশীর যুদ্ধ দিবস। ৩রা জুলাই পালিত হয় নবাবের মৃত্যু দিবস প্রাসাদ স্থান হীরাঝিলে বা কবর স্থান খোসবাগে, পরিস্থিতি অনুযায়ী একটা জায়গা বেছে নেওয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন গুণী, ব্যাবসায়ী, আইনজীবি, সাংবাদিক ও আরো নানা পেশার মানুষ এই আন্দোলনে ও প্রকল্পে সহায়তা করেন ও যোগদান করেন।

 

অন্যদিকে, কবি পেয়েছেন “Gem of the Earth Award” – ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক “Art Mother Earth Foundation ” থেকে, ১৫ জানুয়ারীতে। এই ফাউন্ডেশনের ফাউন্ডার-ডিরেক্টার নিউজিল্যান্ড নাগরিক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মাইকেল তরুন। শান্তির উপরে সময়ানুযায়ী নতুন ধরনের কাজ করার জন্য এই   ফাউন্ডেশন পেয়েছেন অস্ট্রিলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা সরকার থেকে লিখিত সমর্থন। অনেক সংস্থা, গুণীজন, শিক্ষাবীদ, কলকাতা মেয়র, নোবেল পুরস্কার জয়ী His Holiness দলাই লামা, এবং রাষ্ট্রসংঘ থেকেও পেয়েছেন লিখিত সমর্থন ও আশির্বাদ। এই কোম্পানি এই কবির লেখা একটি বিশ্ব জাতীয় সঙ্গীত “An world anthem — We are the citizen of the Earth” গ্রহণ করে সেটি সঙ্গীতে রূপান্তরিত করে সারা বিশ্বে ছড়িয়েছেন ও সেটি একটি জনপ্রিয় সংগীত। বিভিন্ন টিভি মাধ্যমেও প্রচারিত হয়েছে। এদের থেকে হয় প্রতি বছর ১৫ই জানুয়ারীতে আনুষ্ঠানিকভাবে পৃথিবীর জন্মদিন উপলক্ষে “পৃথিবী ও কলাবিপ্লব দিবস” বা “Earth & Art Revolution Day”। স্থায়ী বিশ্বশান্তির উপরে এদের হয় নানা গবেষণা, সাহিত্য, শিল্প ও নানা দিক উদঘাটন। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদিক সংস্থাও এই দিবস পালন করেন।

 

মৌ আচার্য, শর্মী চক্রবর্তী সহ অনেকের পাশাপাশি ফিল্ম গায়িকা শুভলক্ষী দেও কবির বিভিন্ন ইংরেজি গান গেয়েছেন। এছাড়া অনেক সংস্থা তাঁদের সংস্থার নামে কবির লেখা থিম সঙ নিয়ে ব্যবহার করেন বিভিন্ন সভায়।

 

এছাড়াও পেয়েছেন কলকাতা থেকে “সুর-অঙ্গন” সম্মান, এই বছর সহযোগী প্রাপক ছিলেন নাট্য ব্যাক্তিত্ব বিভাষ চক্রবর্তী, সাহিত্যিক সুকুমার রুজ, কবি কৃষ্ণা বসু। ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২০। কয়েক বছর আগে হয়েছে মুর্শিদাবাদ থেকে “সৈয়দ আহসান আলী পুরস্কার” প্রাপ্তি, নদীয়ার “প্রশান্ত চন্দ্র ঘোষ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন” থেকে সম্মান। রয়েছে অনেক সম্মাননা। এই লেখকের বিভিন্ন গ্রন্থ উদ্বোধন করেছেন গুয়েতামালার রাষ্ট্রদূত, কোষ্টারিকার প্রধান প্রতিনিধি,  এই রকম অনেকেই। সারা বিশ্বের লাখ-লাখ নেটিজেন ও সিটিজেন, এই সব বিষয়ে অনুভূতির সংবেদনশীলতায় রয়েছেন।

———————————-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *