নিঠুর পৃথিবীর ঠিকানা
____________________
লিলি সেন
সোনালী আকাশ ঝলমলে—
তারামন্ডলের সুখের সংসার।
নয়নাভিরাম দৃশ্যে মগ্ন রসিক জন।
হঠাৎই এক চিলতে মেঘ
দুরু দুরু বুকে ভেসে যায়,
যেন কোন অজানা আশঙ্কায়!
তবু আশায় আশায় দিন গুনেছো
তুমি ক্ষনিকের অতিথি—
হয়তো বা কোন সময়
একটা আনমনা দমকা বাতাস বইবে,
এক ঝটকায় কালো যবনীকায়
দড়াম দড়াম হানবে আঘাত
আর বর্বর যব্বর যমেরা
হবে কুপোকাত।
একটা মিষ্টি রোদ্দুর মুচকি হাসির মেখলা পড়বে।
সাত সমুদ্র তের নদীর পাড় থেকে
আবার নৌকা ভিড়বে
অতিপরিচিত খেয়া ঘাটে।
পাল তুলে দেবে
পক্ষীরাজের ইচ্ছে ডানা।
পুটুস পাটুস রঙিন স্বপ্নগুলো
দোল খাবে মনের বাগিচায়।
আর রঙতুলিতে দৃশ্যপট
বর্ণাঢ্য হয়ে উঠবে চোখের তারায়।
শ্যামসুন্দর তৃণগালিচায়
আধখানা শরীর এলিয়ে;
গল্প দাদুর আসর জমবে
কচিকাঁচাদের ভীড়ে।
পক্ষীকুল কিচির-মিচির কলতানে
মাতামাতি করবে তার নীড়ে।
কিন্তু একটা গুরুগম্ভীর সময়
আশাকে নিরাশার গন্ডিতে ছুঁড়ে দিল,
নিরবে শকুনীর দান দিল
ছক্কা পাঞ্জার মৃত্যু পরোয়ানা।
যা ছিল সাজানো গোছানো
সব হয়ে গেল এলোমেলো,
এক চিলতে মেঘ
টাইফুনের সাথে মিতালি পাতিয়ে
গতিবেগ বাড়াতে বাড়াতে
হৃদপিন্ডটাকে কুন্ডলী পাকিয়ে
আছাড়ি- বিছাড়ি করতে লাগলো।
নিঠুর পৃথিবীর ঠিকানা
রক্তাক্ত হয়ে মুছে গেল
রয়ে গেল তোমার চরণ চিহ্ন
হৃদয়ের অলিতে গলিতে।।
_______________________