বৌঠান তুমিও
✍️অশোক কুমার আচার্য্য✍️
রবিবার বিকেলে তন্ময়ের বাড়ি গিয়েছি। অনেক দিন যাওয়া হয়নি।সময় করে উঠতে পারিনি। সংসারের নানা কাজের চাপ আর তার সঙ্গে বাবার ফাইফরমাশ লেগেই থাকে। একজনের চোখের পাওয়ার দেখাতে হবে তো আর একজনের প্রেশারটা বেড়েছে। সবদিক সামলে বাড়ি থেকে আর বের হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হয় না। বিয়ের আগে তবুও একটু সময় পাওয়া যেত।একজনের আব্দার বা হুকুম কম ছিল। এরপর ছেলে মেয়ে হলে আর বাড়ি থেকে বেরুনো যাবে বলে মনে হয় না। তন্ময়ের বাড়িতে এসে দেখি ব্যাটা ওভারটাইমের জন্য আটকে গেছে। রাত্রি দশটার পর আসবে। আজ ওর রিলিভার আসে নি।তাই ওকে পরের শিফটের চাকরি করে আসতে হবে। তন্ময় না থাকলে ও আমার কোন অসুবিধা নেই। বৌঠান আছে আর আছে ওদের ছেলে টুটুল। অনেক দিন পর কারোর বাড়ি গেলে একটা এক্সট্রা খাতির পাওয়া যায়। তখন আপ্যায়ন শুধু চা-বিস্কুট দিয়ে করা যায়না। বৌঠান ও আমার জন্য নিয়ে এলো মিষ্টি আর নিমকি বিস্কুট। কারোর বাড়ি গেলে খাওয়ার ব্যাপারে না বললে আরো বেশি জোর করে। সেজন্য আজকাল আর না বলিনা। যা দেয় আস্তে আস্তে খেয়ে নিই।না বললে যখন শুনবে না তখন বলে কি লাভ। যতক্ষণ না না করবে ততক্ষণে খাওয়া হয়ে যাবে। মানুষকে বোঝানো শক্ত এটা পেট ডাস্টবিন নয়। বৌঠানের সঙ্গে কথা বলতে বলতে সন্ধ্যা নেমেছে। সারা বিকেল টুটুল পাশের বাড়ির ছেলেমেয়েদের সঙ্গে খেলেছে।মায়ের কাছে এসে হরলিকস খেয়ে এখন টিভিতে কার্টুন দেখছে। আমি বসেছি ওদের শোয়ার ঘরে। এই একটি রুমে এসি লাগানো আছে। সেই জন্য তন্ময়ের কাছে এলেই ওদের শোয়ার ঘরে বসি।ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে পড়াশোনা আর চাকরি ও করছি।লোকে তাই আমাদের রসায়ন বুঝতে পারে না। বন্ধুরা ও হিংসা করে। বৌঠান চা নিয়ে এলো।লাল চা।বললাম- এবার চা খেয়ে চলে যাব।তন্ময়ের আসতে তো সেই সাড়ে দশটা এগারোটা বাজবে। পরে একদিন এসে হাতে সময় নিয়ে অনেক সময় আড্ডা মেরে যাব।দূপুরে তোমার হাতের রান্না ও পরখ হবে। ভারি মজা হবে।বৌঠান পেছন থেকে জড়িয়েধরে বলল – কেন আজ পরখ করলে ক্ষতি কি।বলে, আমার কোলে বসেে মুখটা নিয়ে এসে আমার চিবুকে আসতে করে ঠোঁট টা লাগিয়ে হাসতে লাগলো। — আরে, একি পাগলামি করছো। — কেন আমাকে তোমার ভালো লাগছে না। আজ সারা সন্ধ্যা আমি তোমার সঙ্গে আনন্দে মাতবো।শুধু বন্ধু বন্ধু করে পাগলামি করলে চলবে না। তুমি আমার বন্ধু নও।আমিও তোমার সাথে আনন্দে ভাসবো।আমাকেও সময় দিতে হবে। — আমি চায়ের কাপ টা রেখে দিয়ে বৌঠান কে টেনে নিলাম বুকের মধ্যে। চোখে কামনার আগুনের ঝিলিক ।শরীরে তাপমাত্রা বাড়ছে। ততক্ষণে আমার ঠোঁটে জ্বালা জ্বালা ভাব।বৌঠান অশান্ত হয়ে উঠেছে। কতদূর এগুনো যাবে আর কোথায় শেষ।এমন সময় টুটুল কিছু নেওয়ার জন্য দরজা ঠেলে ঢুকে এলো। বৌঠান আমার কোল থেকে নেমে শাড়ি ঠিক করতে করতে টুটুল এর হাত ধরে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। মুখে মিষ্টি হাসির টান। আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। ———————————————————————–