কবি পরিচিতি : সুনীতা জন্মসূত্রে উদ্বাস্তু নন, তবে জন্ম উদ্বাস্তু কলোনিতে। ছোট থেকে ঠাকুমার কাছে রূপকথার গল্পের পরিবর্তে ‘আমাগো গ্রাম সোনারগাও, গাবতলি’, ‘আমাগো দ্যাশ’, অদেখা ভিটেমাটির গল্প শুনে বড় হওয়া। শিশুমনে প্রশ্ন উঠত, ‘আমাগো আসল দ্যাশ তাহইলে কোনটা, আম্মা?’ – দেশ মানে তো আসলে সীমানা। মানুষই টানে, মানুষেরা মানে; কারা যেন সেই সীমানা পেরোতে চায় – সীমানা আর সীমানা পেরোনোর প্রচেষ্টার অন্তর্ভেদ হল কবিতা – যা কবির মানসিক যাপনের অবলম্বন। কবিতা তার কাছে বিচ্ছিন্ন সময়ের সাঁকো। লিখেছেন ‘সংশপ্তক’ কবিতা সংকলনে, বিভিন্ন ই-পত্রিকা ও মুদ্রিত পত্রিকায়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ডিলিরিয়াম পদ্য’ (সনেট পাবলিকেশন) প্রকাশিতব্য।
কবিতা – প্রসাদ
কলমে- সুনীতা
তোরা হাসছিস! হাসবি নাই বা কেন
যারাই দেখেছে পূর্ণিমা গলাধঃকরণ দৃশ্য
ফুলে ফুলে হেসেছে।
চর্বিত-চর্বণ থেকে কিভাবে স্থানীয় মেঘ বজ্রগর্ভ হয়ে ওঠে
রোদ-বৃষ্টির খেলা চলে পার্থিব ঋতু পরিবর্তনকে বাঁ’য়ে রেখে
সেইসব গর্হিত, আত্মঘাতী কর্মের ছায়াপাত থেকে অনেক দূরে
রেখে দিতে হবে শৈশবকে
আমাদের শিশুরা যেন তা কখনো না দেখে;
নইলে একদিন কালো মুখ করে, মাথা নীচু করে
ওরাও এগিয়ে এসে বলবে, কেন ইচ্ছে করে
নামিয়ে আনা হয়েছিল কন্ঠরোধী পাথরের ভার; শিশুর বুকে
সেদিন চাইলেও রুগ্ন ফুসফুস উপশমে শাপলা ফুলের দীঘিঘেরা
সবুজ গ্রাম, ছায়াশীল বসতির অবশিষ্টাংশও হাতে পাবে না
ততক্ষণে সবটুকু আকাশ, মুক্ত বায়ু, বিশুদ্ধ জল
আর একান্ত সূর্যরশ্মি – বেচা হয়ে যাবে
পৃথিবীর বুক ভেঙে উঠবে কঠিন কালো শ্বাসবায়ু
নাহ্! তখন তোরা পারবি না
আর আজকের মত হাসতে পারবি না :
বড় ভয় হয়, সেদিন কোন পূর্ণিমা অবশিষ্ট থাকবে না
সন্ততির প্রসারিত হাতে দেওয়ার জন্য
*********************************