কবিতা -দুই কবি
কলমে -আজহারুল হক
তোমাদের যুগলবন্দি অনেকটা ঠিক দুইয়ে দুইয়ে চার
একজন দিবসের দহন জ্বালার সুতীব্র প্রকাশ,
তো অন্যজন রজনীর সুস্নিগ্ধ শীতলতা।
দারিদ্র্যের কষাঘাতে দীর্ণ বিদীর্ণ বুকে বিষের বাঁশিতে
ফুঁ দিয়ে তোলো ধ্রুপদী রাগিনী নজরুল।
মায়াবী সন্ধ্যায় ধুপের সম্মোহনী আঘ্রানে
বিরহ দীর্ণ হৃদয়ে ঢেলে দেয় শ্যামলিমার মাধুর্য্য, রবীন্দ্রনাথ তোমার একলা চলোর ধ্বনিতে
জেগে ওঠে হতাশায় ন্যূব্জ যৌবন, উচ্চকিত শিরে
গেয়ে ওঠো সবাই রাজা হয়ে জীবনের জয়গান।
রবির আশীর্বাণী নিয়ে জাতির জীবনে
এনেছিলে বসন্তের সঞ্জীবনী তুমি নজরুল,
পরাধীনতার নাগপাশে ছিন্ন করার অভিপ্রায়ে
যখন তুমি লিখছিলে একের পর এক
আগুন ঝরানো সংগীত, যার জন্য তোমাকে
কারার লৌহ শলাকার খাঁচায় আবদ্ধ হতে হয়,
42 দিনের উপবাস নাড়িয়ে দিয়েছিল
ঔপনিবেশিক শক্তির ভিত ।
গুরুদেবও পিছিয়ে নেই ; তুমি ঘৃণাভরে
প্রত্যাখ্যান করেছো ব্রিটিশের নাইট উপাধি,
তোমার প্রতিবাদ জালিয়ানওয়ালাবাগের
বর্বর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে।
হে কবিদ্বয়, তোমাদের উচ্ছাস সিক্ত বাংলার মাটি
উর্বর হয়ে আছে আজও – এখনো এখানে
প্রয়োজনে বাজে প্রতিবাদের গম্ভীর রাগিনী
তোমাদের দুজনের দ্বৈত সুরে,
তোমরা রয়েছো মননে কৃষ্টিতে আর চেতনায়,
তোমরা রয়েছো ছাতার মত দুই বটবৃক্ষ।
………. ………. ………. …….