Spread the love

কবিতা : হে বাংলাদেশ তুমি আরো একবার গর্জে ওঠো

কবি : কাছেন রাখাইন
*******************

সুনীল গাঙ্গোপাধ্যায়ের তেত্রিশ বছর কেটেছে।
আমিও তোমাদের অনাদরে-অবহেলায়
সাতচল্লিশ বছর কাটিয়েছি।
কেউ কথা রাখেনি।
আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছো,
এই আমার পরম পাওয়া?
আমি এখনো শোষন,বঞ্চনার
নির্মমতা থেকে মুক্তি পাইনি।
বাংলাদেশ নামে আত্ম প্রকাশ করে
ভেবেছিলাম এবার অন্ততঃ শান্তিতে
ঘুমোতে পারবো।জেগে দেখি,
“পশু আর প্রিয়তমা এক হয়ে গেছে
মহত্বের স্নায়ু ছিঁড়ে নিতে!”
তুমি কে,আমি কে
বাঙ্গালী-বাঙ্গালী
স্লোগানের যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলে
তারা পরস্পরের দাঙ্গাফাসাদের লিপ্ত।
পঁচাত্তরের পনেরোই আগষ্ট বুলেটে
ক্ষত-বিক্ষত করে দিলে,
তোমাদের জনকের বুক!
আমি তোমাদের নির্মমতা দেখে
শিউরে উঠেছিলাম।
শুরু হলো ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড।
গুটিকতক ব্যক্তির স্বার্থে তোমাদের গৌরবময়
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে করলে বিকৃত!
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তানেরা আমায়
প্রশ্নের সন্মুখীন করেছে-

তেত্রিশ বছর কাটলো,কেউ কথা রাখেনি।

“তোমাদের যা বলার ছিল,
বলেছে কি তা বাংলাদেশ!”
তোমরা বলো, আমি কি জবাব দেবো তাদের।
বুদ্ধিজীবিদের হত্যা বিচার তোমরা করতে পারোনি।
বঙ্গবন্ধু খুনিরা এখনো নানান ষড়যন্ত্রের লিপ্ত।
পাকিস্তান পেয়ারি আলবদর,জামাতিরা
নানান কূটকৌশলে নবসজ্জিত
নৌকাতে উঠে গেছে,নৌকাকে ফুতো করতে।
ঘাতক রাজাকারেরা হয়ে গেছো বীর মুক্তিযোদ্ধা!
নবপ্রজন্ম তরুণেরা আমায় প্রশ্ন করে,
বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলাদেশের এসব কেনো?
বলে দাও,ও আমার জন্মভুমি বাংলাদেশ।
আমি কি ক্ষুদিরাম, সূর্যসেনের বাংলাদেশ!
মওলানা ভাসানীর,শেখ মুজিবের বাংলাদেশ!!
আমি কি নূর হোসেন,ডাঃ মিলনের
বাংলাদেশ!!!
দোহাই তোমাদের!
আমাকে আর বিব্রত করো না।
মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের যা বলার ছিল
আমাকে তা বলতে দাও।
বিশ্বের দরবারে ভিক্ষুকের দেশ হিসেবে নয়
রবী ঠাকুরের,শেখ মুজিবের সোনার বাংলাদেশ,
মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লক্ষ শহীদের দেশ হিসেবে
আমাকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দাও।
তোমাদের অপরাজনীতি বন্ধ করো,
রক্তের হোলি খেলা বন্ধ করো,
নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থার করো,
শিশুদের শারিরীক, মানসিক শাস্তি বন্ধ করো,
আদিবাসীদের নিরাপত্তা দাও।
অন্যথায়,
হে বাংলাদেশ তুমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়
আরো একবার গর্জে ওঠো।।
———————————
★★সংক্ষেপে কবি পরিচিতিঃ
******************************
★★পরিচিতিঃ
*Kyaw Shen Rakhine (কাছেন রাখাইন) ১৯৭৩ সালের ১১ অক্টোবর কক্সবাজার জেলাধীন চকরিয়া উপজেলা, হারবাং রাখাইন পাড়ার এক সম্ভ্রান্ত রাখাইন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁরা পাঁচ ভাই, দুই বোনের মধ্য তিনি ৪র্থ সন্তান।
★পিতা মাতাঃতাঁর পিতার নাম সুইচিং রাখাইন।তিনি একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। মাতার নাম অংবচিন রাখাইন।তিনি গত ১আগস্ট,২০১৫ সালের মারা যান।
★★শিক্ষা ও কর্মজীবনঃ
তিনি তাঁর নিজ গ্রামের হারবাং বার্মিজ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা জীবন সূচনা করেন।প্রাইমারী শিক্ষা শেষ করে রাংগামাটি পার্বত্য জেলা,বরকল উপজেলা,বরকল মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন।৭ম শ্রেণিতে অধ্যয়ন কালে তাঁর সাহিত্যের জীবন সূচনা ঘটে।তিনি ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়ন কালে ‘মহান স্বাধীনতা দিবসে’ ‘বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নাটকের অভিনয় করে সকলে নজর করেন।এবং তাঁর লেখা কবিতা গুলো স্থানীয় বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও পত্রিকাতে প্রকাশিত হতে থাকে।তাঁর প্রতিভা দেখে স্কুলের শিক্ষকরা মুগ্ধ হন।নানান মহল থেকে প্রশংসা পেতে থাকেন।তিনি ১৯৯১ সালের এস এস সি পাস করে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি কলেজে ভর্তি হন।কলেজে অধ্যয়ন কালের ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এবং নানান সামাজিক ও সাহিত্য সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হন।সমাজে বিভিন্ন অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় “বাকের ভাই” হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।১৯৯২সালের তাঁর রচিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক “ওরা তিন জন” নাটক কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ছাত্র-ছাত্রীর ঐক্য পরিষদের প্রযোজনায় কলেজ প্রাঙ্গণে নাটকটি মঞ্চায়িত হন।উক্ত নাটকের তিনি নিজেও অভিনয় করেছিলেন।পরিচালনায় ছিলেন, জনাব আলমগীর হোসেন।এতে তাঁর সুনাম দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে।অতঃপর তিনি ১৯৯৪ এইচ এস সি ও ১৯৯৬ সালের কৃতিত্বে সাথে বি এস এস পাস করেন।
★অদ্যাবধি দেশ বিদেশের বিভিন্ন অনলাইন সাহিত্য গ্রুপ থেকে “ শান্তি রত্ন, কাব্য শ্রী, কাব্য রত্ন, নজরুল সাহিত্য সন্মাননা, রবীন্দ্র সাহিত্য সন্মাননা, সেরা সাহিত্য কথক সন্মাননা, Showpnodhipnews24 এর সময়ের সাহসিক সৈনিক সন্মাননা “ সহ তিনি প্রায় ৮(আট) শতাধিক সন্মাননা সনদপত্র লাভ করেছেন। তিনি “কাব্য পরিবার” থেকে তিন তিনবার “দৈনিক কাব্য সৈনিক” নির্বাচিত হন এবং “জাতীয় কবি পরিষদ” থেকেও সনদপত্র লাভ করেন। বিগত ২৪.০২.২০১৮ খ্রিঃ তারিখে চট্রগ্রাম মুসলিম হলে অনুষ্ঠিত “আন্তর্জাতিক কবি পরিষদ” কর্তৃক আয়োজিত “আন্তর্জাতিক সাহিত্য সন্মেলন-২০১৮খ্রিঃ থেকে “কাব্য জ্যোতি” পদক লাভ করেন এবং বিগত ১৪.০২.২০১৯ইং তারিখে ঢাকায় জাতীয় যাদুঘর, বেগম সুফিয়া কামাল হলে অনুষ্ঠিত “বাংলা কাব্য পরিবার” কর্তৃক আয়োজিত “আন্তর্জাতিক সাহিত্য সন্মেলন-২০১৯ খ্রিঃ” থেকে বাংলা সাহিত্যের অবদানের জন্য  “কাব্যপথিক” পদক লাভ করেন।বিগত ১২.০৭.২০১৯ইং তারিখে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের অনুষ্ঠিত “বিশ্ববাংলা সাহিত্য নিকেতন” কর্তৃক আয়োজিত “আন্তর্জাতিক সাহিত্য সন্মেলন-২০১৯খ্রিঃ” থেকে “সেরা কবি” পদক লাভ করেন।বিগত ১৩.০৭.২০১৯খ্রিঃ তারিখে “ঢাকায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে” অনুষ্ঠিত “স্বপ্ননীল সাহিত্যচর্চা পরিষদ” কর্তৃক আয়োজিত “আন্তর্জাতিক গুণীজন সংবর্ধনা-২০১৯খ্রিঃ” থেকে “সেরা কবি” পদক লাভ করেন।তাঁর প্রকাশিত যৌথ কাব্যগ্রন্থ গুলো হলোঃ
১।হৃদয়ের কাব্য ভেলা
২।কাব্যের পাঁচফোড়ন
৩।নীলপদ্ম
৪।শংকর শব্দমালা
৫।ঝিঙেফুল
৬।আলোকিত জাগরণ
৭।স্বপ্নের কাব্য।
৮।শোকাঞ্জলী।
★তিনি এখন রাংগামাটি পার্বত্য জেলা,বরকল উপজেলাধীন ধনুবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষাদানের মহান পেশায় নিয়োজিত আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *