কবি ও প্রুফ রিডার বিদ্যুৎ বাগানীকে🖊️কবিতাটি
—————————————
— ঋদেনদিক মিত্রো
( সোনারপুর, এখন অসুস্থ হয়ে শয্যাসায়ী, অনেক শুভার্থী তাঁর জন্য সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেছেন! )
——————————-
🤷♂
শব্দের সাথে খেলতে -খেলতে
তুমি আজ শয্যাশায়ী,
কত কবি লেখকের
অপরিচ্ছন্ন ধূসর বাক্যগুলি
তোমারই হাতে পেয়েছে
দন্ত মাঞ্জন,
আর তোমার নিজের কবিতা গুলি
নির্লোভ ঋষির মতো
চলে গেছে দূরে অরণ্যের ভিতরে,
কোনো-কোনো কবি — রাজা মন্ত্রীর সাথে
জলে জল হস্তির মত
লুটিয়ে গড়ান,
তাঁরা উঠে যান কেউ খ্যাতি ও টাকার শীর্ষে,
ক্রিকেট মাঠে কোল্ড ড্রিঙ্কস এর
বিজ্ঞাপনের মত,
অমৃতের ভঙ্গিমায় বিষের ছায়াপথে,
আর, কোনো -কোনো কবি
নির্জন তপস্চারী ঋষির মতো
মুদিত চোখে আসনে বসে
চলে যান সময়-জারণে,
তুমি এভাবেই আপদ মস্তক
সময়-জারণে ঢুকে পড়া
নিরন্তর ব্রত,
কিন্তু, তোমার মতন যারা,
তারা তো সহজ চোখের সামনে
মাছরাঙা পাখির দুস্টুমির মত নয়,
দারিদ্র তোমার কাছে, মানে, তোমাদের মত
সংলাপহীন রোদ্দুরের কাছে
একচ্ছত্র অহংকার,
শেখোনি আগ্রাসন কোনো প্রাপ্তির জন্য,
তাই যদি হতো — এভাবে থাকতে না পড়ে
এসময়ে কঠিন অসুস্থ শয্যায়,
সঙ্গীহীন হয়ে নিরেট স্টিলের মত
হয়ে গেছে তোমার নভশ্চারী সকল কল্পনা,
প্রেম কী — কে বা জানে?
তুমিই তো ঠিক জেনেছ —
প্রেম মানে দুটি অক্ষরের
সম্মেলনে ইতরিয়তার
চমৎপ্রদ কাহিনী,
আমরা বুঝিনা বলে আজও এই সত্যতা —
দুটি বিবসনা পুরুষ ও নারী মিলে
খেলি বিদেহী খেলা,
তুমি জানো এইসব নির্বিচারে চৌর্যবৃত্তি
আরসির সামনে অকপট,
আসলে জীবনকে জেনেছ তুমি
নদীর পাড়ের বালির শীতল স্থিরতা,
এর বাইরে আর সব ভুল আর ভ্রম,
ভুল নিয়ে বাঁচোনি তুমি,
তাই, নির্লজ্জ্ব একাকিত্বকে বলেছ ::–
তুই আমার আসল জরিপ,
বলো আজ,
কখনো কি তুমি কেঁদেছিলে ঠিক
আমাদের মতো কখনো কোনো কারণে?
কোনোদিন ই নয়,
তুমি জানতে — কান্না মানে তেপান্তর,
হাসি মানে আকন্ঠ মিথ্যা,
বিশ্বাস মানে ব্যয়ামের একটি ভঙ্গিমা,
চলা মানে প্রাচীন পরিব্রাজক হয়ে
হিমালয় জঙ্গল পেরিয়ে
পিঁপড়ের নিয়মানুবর্তিতায়
হাজার-হাজার মাইল পেরুনো,
তুমি জানো, জানতে,
জীবনকাহিনী মানে
গাছের কোটরে থাকা
একাকী কোনো কাঠ ঠোকরার দিনলিপি,
স্নান মানে দূরে -দূরে ছড়িয়ে থাকা
শুভার্থীদের কান্নায়
নিজেকে ভিজিয়ে দিয়ে
“আঃ কী শান্তি” বলে ঠোঁটে রোদফালি আঁকা,
তুমি কি শয্যা থেকে উঠে ব’সে
আবার বলবে আমাদের :–
তোমরা আমার সব শুকনো পাতা জমিয়ে রেখেছো
সবুজ করবে বলে?
কখনো কি তাই হয়?
এর উত্তরে বলি — আমাদের আশাহত কোরনা তুমি,
শুকনো পাতা না হোক সবুজ,
কিন্তু, সবুজের ইতিহাস নিয়ে
তার পরিচয়, তার খড়খড়ে আওয়াজ ও বিশ্রাম,
শুধু তুমি নও,
প্রতিটি মানুষ দেখি
শুকনো পাতা হয়ে থাকে চুপচাপ,
কিন্তু, মানুষ তো শুকনো নয়,
সে জলে ভরা বিরাট স্বাধীনতা,
না হলে তোমারই রোগ শয্যায়
আমরা কেন গিয়ে বলি —
উঠে পড়ো দাদা শয্যা থেকে!
মানি, তোমার যে যন্ত্রনা — কে বোঝে সে সব?
তারও উর্ধে আমরা জানি —
তুমি আমাদের এক নির্ভর যোগ্য নিরবতা,
কাঁদবে, কাঁদো,
সে-কান্না ধুয়ে দিক অক্ষরের সাম্রাজ্য,
আমরা দেখবো, অক্ষরের পুন্য স্নান !
—————————————-