Spread the love


অন্য ভুবন
* অরিন্দম মুখোপাধ্যায়
*

রগড়া, বালিগেড়িয়া, খরিকা মাথানি
কতটুকুই বা পথ।
আমি, কালুয়াষাড়ের জঙ্গলে দাঁড়িয়ে।
সরোজকে দেখতে পাচ্ছি সেপারের জঙ্গল দেখাচ্ছে হাত তুলে।
একটা জলাশয় স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি
এখানেই ন্যাংটা ভুতুম সাধের কুটুমেরা ব্যাং বাজি খেলে।
সরোজ কে বলতেই বলে স্যার, এই লাইনটা আপনি চুরি করেছেন নলিনী বেরার থেকে।
আমি তো শুধুই লাইন চুরি করেছি, সরোজ যে
দেখানেপনা জালি গামছা পরে গেরোস্থের ঘরে ঢুকে পড়ে, সেখানে ব্যাটাছেলে মরদরা না থাকলে
তাদের বৌয়ের হাত ধরে টানে সেটা চুরি নয়?
আগে হলে বলতাম হয়তো,এখন কে বোঝায়?
পরিমল আমায় ভেস্টিং শিখিয়েছিলো
ধারা পাল্টে বিগ রায়তদের সুবিধা করে দিত
কলাটা মুলোটা যেমন নিত, পয়সাও নিত
এখন গুন্ডি পানের আমেজে খ্যা খ্যা করে হাসছে।
আমি যদি হাসতাম তখন ভেস্টিং শেখাতো কী আমায়?

সে কথা কারে কয়,কে কারে কয়।
লাইন চুরি থেকে পয়সা চুরি তাই সমান অপরাধ।
চিতি সাপের কামড়ে ক্যাশিয়ায় বদনের ছেলেটা
মারা গেছিল। চিতি সাপের কামড় যায় না বোঝা
ছেলেটা ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো
সকালে হোল কিন্তু উঠল না।
এটা মস্ত চুরি একটা বিরাট ফাঁকি।
ছেলেটা ন্যাংটা ভুতুমের দলের পান্ডা হয়েছে এখন।
এমনি আরও কত চুরি আছে। এক গরিব বর্গাদার
রেশনের চিনি বাঁচিয়ে অনেকটা করে এনেছিল
বড়বাবু নিয়েছিল,যেদিন তার কেস জমা পড়েছিল আর আই অফিসে।
প্রতিদিন এমন চুরি দেখেছি, আমি মানছি, আমি লাইন চুরি করেছি,সুবর্ণরেখা দেখে ফেলেছে
সরোজ কে বলেও দিয়েছে।
সরোজ নলিনী বেরা পড়েনি কখনো
দলীয় ইসতাহার পড়েছে কখনো কখনো
যখন তার পার্টি অফিস চুরি হয়ে যায়নি।
জানেন,আমি না মরে গেছি আজ সকালে
এখানে সবাই মৃত।
কিন্তু দৃষ্টির আড়ালে অনেক স্তরভেদে এখানে

এসেছি।
এখানে আমার মত অবিকল আরও একজন আছে। তার আর আমার অনুভূতিগুলো সব একরকম।
আমার কোনো অন্য মৃত্যু অন্য জীবনের মৃত্যু
তাকে এখানেই বেঁধে রেখেছে।
বলতে পারেন তার খোঁজেই এখানে আসা
এক হতে আসা, মিলে যেতে আসা।
তার সব চুরি, তার সব ফাঁকি আর আমার লাইন চুরি এক করতেই এই অন্য ভুবনে কম্পিত পদচারণ।


2 thoughts on “কবিতা : অন্য ভুবন – অরিন্দম মুখোপাধ্যায়”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *