কোনো এক অজানা শাঘন তিমির রাতে হিয়ার কোষগুলো নৃত্যে মাতে মহানন্দে, কারণ জিজ্ঞাসিলে উৎফুল্লিত স্বরে কহে মোদের পরম গর্ব, ধরাধামের বিপুল প্রাণের ভিড়ে মোদের প্রাণ উৎকৃষ্ট, মানুষ জনমে স্থান পেয়েছি যে!
যখন মনোরাজ্যে শ্রেষ্ঠ জীব হওয়ার উৎসব পালনে ব্রতী হই ,তখন একরাশ বাস্তবতার ধুলোঝড় আসিয়া দিবাস্বপ্ন ভাঙিয়া চুরমার করিয়া দেয়। সেই বাস্তবতা, মোর চোখে চোখ রাখিয়া অট্টহাস্য করিয়া কহে – নর কেবল নর নয়, তাহারা নরাধম, তাহারা নরকের কিট । স্তম্ভিত হই তাহার এহেন তাচ্ছিল্য শুনিয়া, তাহার এহেন ব্যঙ্গের ব্যাখ্যা জিজ্ঞাসিলে বলে – মানুষ যেমন সেরা জীব তেমনি মানুষ’ই পৃথিবীর শ্রেষ্ট হিংস্র প্রাণী । একটা নরখাদক বাঘ কেবলমাত্র তাহার ক্ষুধা নিবৃত্তির হেতু নিরীহ প্রাণী শিকার করে ,কিন্তু একজন মানুষ কেবল কিঞ্চিৎ রাগের হেতু অপর একটা মানুষকে কাটিয়া খন্ড খন্ড করিতে দ্বিধা বোধ করবে না। একটা কুকুর কেবল বৎসরের নির্দিষ্ট সময় এলে পরে কামগ্রস্ত হয় ,কিন্তু মানুষ কেবল কিঞ্চিৎ কামের বসবর্তী হয়ে একটা ছোট্ট শিশুকন্যার শ্রীলতাহানি করে। একটা বিষধর কোবরা কেবল আত্মরক্ষার হেতু ছোবল হানে কিন্তু একজন মনুষ্য অন্য মনুষ্যের কিঞ্চিৎ সুখের সন্ধান পাইলে কোবরার থেকেও শতগুণ তীব্র বিষময় ছোবল হানে। লোভ- লালসা, বর্বরতা, বোধ-জ্ঞান হীনতা মনুষ্যের হিংস্রতার ই রূপভেদ মাত্র।
পশু-পোষ্য-অবলা তাহাদের হুশ-বোধ কিছু না রইলেও তাহাদের হিস্রতা যথচিত। কিন্তু মনুষ্য তাহার অমানুষিকতার দরুন প্রবল ভয়ানক এক প্রাণী। আমি তাহাকে ভয় পাই ।
Show quoted text