Spread the love

সীমান্ত##
বাবলী রায় দেব#

“আমাকে দশটা সাদা গোলাপ দাও!” ছোট্ট ছেলেটার প্রশ্ন শুনে প্রবাল বললো,”কি অবস্থা দেখ,এইটুকু পিত্তিরও গার্লফ্রেন্ড আছে।
তা ব্রো গার্লফ্রেন্ডকে সাদা গোলাপ দিবি কেনো? ঝগড়া হয়েছে?”
প্রবালদের কথা শুনে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে থাকে দশ বছরের বাচ্চা ছেলেটি।
“কি রে ব্রো,কথার জবাব দিলি না যে? ভ‍্যালেনটাইন ডে তে সাদা গোলাপ দিলে গার্লফ্রেন্ড পালাবে।কাকু, ওকে লাল গোলাপ দাও।নতুন নতুন রিলেশনশিপে গেছে।
কি রে এবার তোর প্রথম ভ‍্যালেন্টাইন ডে তো?” যার উদ্দেশ্যে অনিক কথাগুলো বললো,সে এক ঝলক ওদের দিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো।
অনিক,প্রবালদের হাসাহাসির মধ্যে দশটা সাদা গোলাপের সুন্দর একটা বুকি তৈরী করে খুদে খদ্দেরের হাতে দিয়ে চিত্ত বললো,”জয়হিন্দ!”
“জয়হিন্দ।” বলে টাকা দিয়ে ছেলেটি চলে গেলে নির্বাক হয়ে তাকিয়ে থাকে উনিশ-কুড়ির ছেলেদের দল।
“রাত পোয়ালে তোমরা ভ‍্যালেন্টাইন ডে পালন করবে। আর ও পালন করবে বাবার শহীদ দিবস।যেদিন ওর জন্ম সেদিনই ওর বাবা পাকিস্তান বর্ডারে শহীদ হন।
গত পাঁচ বছর হলো নিজের জন্মদিনটা বাবার নামেই পালন করে আসছে।
দিনটাও যে চোদ্দই ফেব্রুয়ারি ছিলো।” চিত্তর কথা শুনে চোখের জল সামলে অনিক বললো,”কাকু,ওর বাড়ির অ‍্যাড্রেসটা দেবে?”
“দশটা গোলাপ নিলো কেন?” সৌগতর প্রশ্নের জবাবে চিত্ত বললো,” মানে দশ বছর পূর্ণ হলো,ওর জন্মই বলো আর ওর বাবার শহীদ হওয়াই বলো..কি কপাল!”
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চিত্ত জিজ্ঞেস করলো,”তোমাদের কাকে কি দেবো বলো?”
“যত সাদা গোলাপ আছে সব দাও!” সৌগতের কথা শেষ হতেই যে যার পকেটে হাত ঢুকিয়ে টাকা জড়ো করে ফুলের দাম মিটিয়ে জিজ্ঞেস,”ওর নাম কি?”
প্রবালের প্রশ্নের উত্তরে চিত্ত জবাব দিলো,” সীমান্ত!”
তিনবন্ধু চোখাচোখি করে ফুল নিয়ে রওনা দিলো সীমান্তর বাড়ির উদ্দেশ্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *