Spread the love

সন্দেশ খালি যেনো আর একটা নন্দীগ্রাম না হয়ে ওঠে 

 

বটু কৃষ্ণ হালদার 

 

২০১০ সালের আগে বাংলার জনগন সিপিআইএম এর অরাজকতা, অপশাসন দুর্নীতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল।চুরি,ডাকাতি খুন, নারী নির্যাতন,তোলাবাজি দখলদারি হয়ে উঠেছিল কমিউনিস্টদের মত আদর্শবাদী দলের দলের প্রধান সম্পদ।তপন,শুকুর,শংকর,কানা বাপি,মসজিদ মাস্টার,লক্ষণ শেঠ,হাত কাটা দীপকদের হাতে বাংলার আইন ব্যবস্থা উঠেছিল।তাদের মুখের কথায় আইন তৈরি হত।রাজনৈতিক ক্ষমতাকে ব্যবহার করে যেমন খুশি তেমন অপরাধ করেও সমাজের বুকে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াত।তারা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে হার্মাদ,হিংস্র পশু, নরখাদক হয়ে উঠেছিল।

 

কেউ প্রতিবাদ করলেই ক্লাবে নিয়ে গিয়ে তার জুটত উত্তম মাধ্যম মার।থানায় নালিশ জানালে খুনের হুমকি দিত সেই সঙ্গে বাড়ির মেয়ে বউদের তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলত।বিরোধী দল করলে রাস্তায় ফেলে পেটানো হত।জমি জবর দখল,ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া,খুন,হুমকি ছিল জলভাত।এই সিপিআইএমের আমলে হয়েছিল মরিচ ঝাঁপি, আনন্দমর্গ সাধু হত্যা, কেশপুর ,নানুর, গড়বেতা ,বেতাই,সাঁইবাড়ির মত বেশ কয়েকটা হাড়হিম করা নৃশংস গণহত্যা বানতলা, ধানতলা, জামতলার মত বহু জায়গায় ঘটেছিল নৃশংস গণধর্ষণ। বিবেক দংশন ঘটনা গুলো নরখাদক পিশাচ ,হায়নাদের কাছে ছিল আনন্দ ফুর্তি আর উল্লাস।এখন প্রশ্ন রাজনৈতিক দলের কোন নেতা বা মন্ত্রীদের চরিত্র কি এমন হওয়া উচিত?রাজনীতি কর্মসংস্থান ,শিক্ষা, স্বাস্থ্য,নিরাপত্তার প্রধান ভরসা। লক্ষ লক্ষ কল কারখানা বন্ধ করে যুব সমাজের ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছে।সাধারণ জনগণের প্রকল্পের টাকা সুযোগ সুবিধার সবকিছু আত্মসাৎ করে নিয়েছে রাতারাতি জল্লাদ নেতা  তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তার নামে আতঙ্ক সৃষ্টি করে সাধারণ জনগণকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। সে সময়ও পার্টির ঝান্ডাধারী, খুনি দাগি ক্রিমিনাল,অশিক্ষিত,বর্বর ক্যাডার চাকরি পেয়েছে। এক কথায় পশ্চিমবাংলা চরম অরাজ কতা ও অশান্তির রাজ্য হয়ে উঠেছিল।

 

সাধারণ জনগণ এই অরাজকতা,অশান্ত পরিবেশ থেকে মুক্তির পথ খুঁজে বেড়াচ্ছিল। নিজের সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। সাধারণ জনগণের এই শূন্যতা ও দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের লাগাম হাতে তুলে নেয়।তাতে বেছে নিয়েছিল নন্দীগ্রাম,সিঙ্গুরকে।যে আন্দোলনকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছিল তা ছিল কল কারখানা বন্ধ করার।তাতে দেখেছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কর্মীদের সঙ্গে তৎকালীন সমাজের বুদ্ধিজীবী ও জমির মালিকদের নিয়ে দিনের পর দিন অনশন, আন্দোলন,লড়াই চালিয়ে গেছেন।সেদিন এই বাংলার বুকে কল কারখানা বন্ধের শেষ পেরেক পোতা হয়েছিল কফিনে তা  ঘুনাক্ষরে বুঝতে পারেনি।সেদিন বাংলার যুব সমাজের কপালে বেকারত্বের লেবেল পড়ে যায়।সেদিন থেকে বহু সন্তান কর্মহারা হবে তা বহু বাবা মা বুঝতে পারে নি।আজ নিজের স্বামী,সন্তানরা পরিযায়ী শ্রমিক যাওয়াতে অন্যা কাউকে দোষ দেওয়ার আগে আঙুল টা নিজের দিকে আগে তুলুন। পশ্চিমবাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর পরিসংখ্যানটা একটু চোখ বুলিয়ে রাখবেন।যাদের পরিবারের লোকজন পরিযায়ী শ্রমিক হয়েছেন তারা প্রতিনিয়ত দিনরাত আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

 

বাংলার মানুষ মূর্খদের মত যোগ্য সঙ্গ দিয়েছিল। সেদিন সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলনের চিত্রটা পরিষ্কার করার জন্য বেশ কয়েক বছর পিছনে ফিরে যেতে হবে। কারখানা বন্ধ করে জমি ফিরিয়ে দেওয়ার লড়াই শুরু হয়েছিল মহিলাদের সামনে রেখে।ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বাদ যায়নি।শেষে  ছিল পুরুষরা। মহিলাদের হাতে ছিল দা,কুড়ুল,ঝাঁটা,জুতো লাঠি,রাস্তা অবরোধ করা হয়েছিল গাছের গুঁড়ি ফেলে।সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের কারখানা বন্ধের আইন গণ আন্দোলনের চেহারা নিয়েছিল। অতি অল্প সময়ে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল।

 

সেই আন্দোলন মারাত্মকভাবে হিংসাত্মক হয়ে ওঠে।আন্দোলনের গতি সীমিত করতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গুলির লড়াই শুরু হয়। সাধারণ নিরীহ জনগণের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ কারা দিয়েছিল বা কারা গুলি চালিয়েছিল সে বিষয়ে ধোঁয়াশা থেকে গেলেও কিছু তাজা তাজা প্রাণ গিয়েছিল। অনেকগুলো চিতা একসঙ্গে জ্বলে উঠেছিল।প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে কিছু লাশের অন্তিম ঠিকানা হয়েছিল হলদি নদীর জল। অগণিত লাশের ভিড়,রক্ত মাখা দেহ,স্বজন হারানোর চিৎকারে র মধ্যে শেষ হাসি হেসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের লাগাম হাতে পেয়ে বর্তমানে বহু নেতা মন্ত্রীদের বাড়িতে বৈদ্যুতিক সিড়ি চালু হলেও অন্ধকারে রয়ে গেছে সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের শহীদ পরিবারগুলো।না, তাদের খোজ খবর আজ আর কেউ নেয় না। কেউ কেউ সন্তান স্বামী পিতা-মাতা হারানোর যন্ত্রণা গুলো বুকে পাথর দিয়ে চেপে নিয়েছে।সাধারণ জনগণের অনাকাঙ্ক্ষিত পদদলিত চোখের তারার স্বপ্নগুলো বাস্তবে রূপায়ণের শপথ নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে কি  পশ্চিমবাংলার সাধারণ জনগণের?

 

২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সময়টা নেহাত কম নয়।দীর্ঘ বারো ১৩ বছর তৃণমূল কংগ্রেসের শাসনে পশ্চিমবাংলার সাধারণ জনগণ যা পেল তার পরিসংখ্যানটা একটু মিলিয়ে নেওয়া যাক। আজও একটা শিল্প আসেনি।শিক্ষিত প্রতিভাবান যোগ্য ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হয়ে গেছে।নিজেদের প্রাপ্য অধিকার ফিরে পেতে

 

তাদের ঠিকানা কলকাতার ফুট পথ,মনুমেন্টের পাদদেশ,নয়তো ময়দান। ভাগ্যে  জুটছে পুলিশের মার। বহিরাগত ও অনুপ্রবেশকারীদের এই বাংলায় কর্মসংস্থান জুটলেও প্রকৃত পশ্চিমবাংলার শিক্ষিত যুব সম্প্রদায় পরিযায়ী শ্রমিককে পরিণত হয়েছে।তারা চায়ের কেটলি, পান,বিড়ি,সিগারেট,ঘুগনি,মুড়ি,চপ সিঙ্গাড়ার পাকা ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছে।এমনটি  হওয়ার কথা ছিল না। হাজার হাজার বাবা মায়ের চোখের সামনে সন্তানদের স্বপ্নগুলো একে একে ঝরে পড়েছে, মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে,পদদলিত করা হয়েছে।

 

বলতে গেলে ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছে বাংলার শিক্ষিত যুবক সমাজ। পশ্চিমবাংলায় বাংলা মাধ্যম শিক্ষা ব্যবস্থা মিড ডে মিলের কাঁধে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে। চাষির ছেলে চাষা হবে এই উক্তির কোন পরিবর্তন হয়নি। কারণ শিক্ষিত শান্তিপ্রিয় মানুষরা আজ মুখ লুকায়।কোন কাজের জন্য পার্টি অফিসে অশিক্ষিত,মূর্খদের কাছে যেতে হয়।প্রকৃত পড়াশোনা করলে এই বাংলায় তাকে সন্মান দেওয়ার মানুষ খুব কম।চাকরির কথা তো দূর অস্ত। সুপার স্পেশালিটি মডেল সরকারি হাসপাতাল  গিয়ে একবার দেখুন।মনে হবে জঙ্গলের পশুরা সাধারণ নিরীহ জনগণের থেকে অনেক বেশি সুখী। টিকিট কাটার লাইন থেকে শুরু করে ডাক্তার দেখানো এমনকি ফ্রিতে ঔষধ নেওয়া পর্যন্ত যেতে যেতেই সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে।তার উপর বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পরিষেবা নিতে গেলে তো আর কোন কথাই নেই। তারিখ পে তারিখ করতে করতে হতাশার গ্লানিতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে রোগীর পরিবারের লোকজন।

 

আর অসুস্থ রোগী  হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে বেড না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে থাকেন।সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু না হওয়াতে ওই মেঝেতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অনেকে। তার উপরে দালাল চক্রের কুপ্রভাব হাসপাতালের সম্পূর্ণ সিস্টেমটা গ্রাস করে বসে আছে। পরিচিত কেউ থাকলে বা দালাল চক্রের হাত ধরলে চিকিৎসা পরিষেবা, ঠিকঠাকভাবে মেলে তা না হলে নির্ঘাত মৃত্যু হাসপাতাল চত্বরে  চোখের সামনে কড়া নাড়বে। সব থেকে মজার বিষয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে জনগণ ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়ে নেতা মন্ত্রী বানায় তারা ও তাদের পরিবারের লোকজন এমনকি আত্মীয়-স্বজনরা বেসরকারি হাসপাতালে দিব্যি পরিষেবা পেয়ে যান। ভোট দাতারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। আইনি নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও পক্ষপাতিত্ব।শাসক দলের হলে যতই অন্যায় করুন না কেন আপনার কোন শাস্তি নেই।আর সাধারণ নিরীহ জনগণের কাছে আইন ব্যবস্থা মাকড়সার জাল। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা গেছে পুলিশকে ছেড়ে দিয়ে নির্দোষদের জেলে ভরে পেটাচ্ছেন। এ বিষয়টা তো নতুন কিছু নয়। বাদ যায়নি ছোট ছোট শিশুদের মুখের খাবার অর্থাৎ  রেশন পরিষেবায়। ছোট ছোট শিশুদের মুখের খাবার চুরি করা মানুষজনও এই রাজ্যের নেতা মন্ত্রী। শিশুদের ভবিষ্যৎ চুরির সঙ্গে সঙ্গে রক্ত চুষে খাওয়া রেশন মন্ত্রী সহ বহু মন্ত্রী ও পদাধিকারী রা ইতিমধ্যেই জেলের ঘানি টানছেন। গরিব মানুষের প্রাপ্য ত্রিপল চুরি হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে বহুবার।

 

কয়লা চুরি,গরু চুরি,শিক্ষা চুরি, স্বাস্থ্য চুরি,রেশন চুরির বিষয়টা একেবারে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় কি? বলা ভালো, বর্তমান শাসকদলের প্রধান আদর্শ হল চুরি, ডাকাতি,খুন,ধর্ষণ দুর্নীতি ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে এ যাবত পশ্চিমবাংলায় যা যা ঘটেছে সে সব সন্দেশ খালির কাছে একেবারেই তুচ্ছ। শুধু পশ্চিম বাংলা নয় সমগ্র বিশ্বে যত দুর্নীতি,ভয়ংকর ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে তাদের মধ্যে পহেলা নম্বর হলো পশ্চিমবাংলার সন্দেশখালি।স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে সন্দেশখালীর জনগণ এই যুগে দাঁড়িয়ে চরম অন্ধকারের মধ্য বসবাস করছে।জবরদখল,জমি দখল,উচ্ছেদ খুন চুরি ডাকাতি নিত্যনৈমিতিক পূজা পাঠের মত হয়ে উঠেছে।

 

এমনকি নদীর চর বেঁচে দিয়ে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছে। সেই সন্দেশখালিতে ঘরের লক্ষ্মীদের ইজ্জত হাটে বাজারে জিনিসপত্রের মত কেনাবেচা হয়েছে পার্টি অফিস। অথচ সমগ্র বিশ্বের মানুষ জানে এই পশ্চিমবাংলায় কুমারী নারীদের দেবী উপর পূজা করা হয়। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন নারী সেই রাজ্যের কুমারী নারীরা সব থেকে বেশি ধর্ষিত।আর  তাদের লজ্জা ঢাকতে জীবনের দাম ৫০০ থেকে ১০০০,১০০০ _১২০০  করা হয়েছে। রক্ত পিপাসু,নরখাদ ,হায়নাদের থেকে বাঁচতে সন্দেশখালীর বহু জনগণ স্ত্রী,কন্যা,বোনকে পশ্চিমবাংলার বাইরে রেখে এসেছে।

 

বিষয়টা বেশ চমৎকার তাই না।থানায় গিয়ে অভিযোগ জানানো মানে মৃত্যু অনিবার্য।স্বাধীনতার আগে দেশের মানুষ ব্রিটিশদের গোলাম ছিল আর স্বাধীনতার পরে এদেশের আইনি ব্যবস্থা নেতা-মন্ত্রীদের গোলাম তার জীবন্ত উদাহরণ হল সন্দেশখালি।আরো ভয়ংকর হলো সন্দেশখালীর মেয়েরা যারা ধর্ষিতা হয়েছেন তাদের কাছে প্রমাণ পত্র চাওয়া হচ্ছে। এ ধরনের অমানবিক, নিষ্ঠুর বিবেকহীন কাজ করা মানুষদের নিরাপত্তা দিতে ব্যস্ত রাজ্য সরকার।যাদের ফাঁসিতে ঝুলবার কথা তারা বুক ফুলিয়ে হায়নার হাসি হাসছে। সন্দেশখালি জ্বলন্ত আগুনের উপরে দাঁড়িয়ে। অত্যাচারের বিরুদ্ধে পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। সন্দেশখালি কে আগুনের ঝলকানির সামনে যারা দাঁড় করিয়েছে তারা সন্ত্রাসবাদীদের থেকেও ভয়ংকর। কারণ সন্ত্রাসবাদীরা একবার বা দুইবার বোম ব্লাস্ট করে ক্ষান্ত হয়ে যান। তারা নারীদেরকে এভাবে ভোগ্যপন্য বস্তুরূপে গণ্য করতেন না।তাদেরও একটা নীতি-আদর্শ থাকে। সন্ত্রাসবাদীদের অনেক ক্ষেত্রে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে নয়তো যাবজ্জীবন জেল। অথচ শাহজাহান শেখরা আজও আমাদের সমাজে নেতা বলে গণ্য করা হচ্ছে।

 

তাদের নিরাপত্তার দায়ভার গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার ও পুলিশ বাহিনী।

 

হ্যাঁ এটাই আমাদের পশ্চিমবাংলা।বর্তমানে এই বাংলায় নেতা মন্ত্রী হতে গেলে কোন যোগ্যতা লাগে না পঁচা খালপাড়ের নেড়ি কুত্তারাও নেতা-মন্ত্রী হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আরো বলে রাখা ভালো স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় বিপ্লবীরা ছিলেন ব্রিটিশদের চরম শত্রু। দেশ স্বাধীন করতে গিয়ে নৃশংসভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন বহু বিপ্লবীরা। শুধু দেশের মানুষ ভালো থাকবে বলে নিজেদের শেষ সম্বল জীবন টুকুও আত্ম বলিদান দিয়ে গেছে। অথচ আমাদের দেশের এই বাংলার শান্তি আত্ম সম্মান ধ্বংস করা বেহায়ারা সম্পূর্ণরূপে আইনের নিরাপত্তায় দিন কাটিয়ে যাচ্ছে।সন্দেশখালীর মাস্টারমাইন্ড শাজাহান শেখ আজও অধরা। শাহাজান শেখরা চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে যাচ্ছে অর্থ আর রাজনৈতিক ক্ষমতা থাকলে এ দেশের আইন ব্যবস্থা পকেট ভরে রাখা যায়। আর সেই জন্যই সন্দেশখালি জনগণ আইন ব্যবস্থা নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। কারণ আইন ব্যবস্থা উপর সাধারণ জনগণের আস্থা ভরসা সব উবে গেছে।

 

সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ে মমতা ব্যানার্জির পরিবর্তনের ডাকে সাড়া দিয়ে বহু বুদ্ধিজীবীরা রাস্তায় নেমেছিলেন। অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালীর ঘটনায় পশ্চিমবাংলার তথাকথিত বুদ্ধিজীবী মহল কুনো ব্যাঙের মতো শীতঘুমে ব্যস্ত।যদিও বা শীত একেবারে শেষের পথে। বলতে গেলে তারা অন্ধকারেও কালো চশমা পরে নিয়েছে।বুদ্ধিজীবীদের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য একেবারে বাঁধিয়ে রাখার মত। সমগ্র ভারতবর্ষের মধ্যে পশ্চিমবাংলায় একমাত্র জায়গা যেখানে বুদ্ধিজীবীদের বিবেক  অর্থ ও কুশিক্ষার কাছে বিক্রি হয়ে যায়।কিছু

 

বুদ্ধিজীবীদের গায়ের চামড়া গন্ডারের থেকে মোটা আর চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য হলো গিরগিটির থেকেও ভয়ংকর। তবে গন্ডার ও গিরগিটি এই দুই প্রাণী বুদ্ধিজীবীদের নাম শুনলেই আঁতকে ওঠে। তবে তাদেরই বা দোষ দেয়া যায় কি করে বলুন। বেশিরভাগ বুদ্ধিজীবীদের অর্থ আয়ের উৎস হলো পশ্চিমবাংলার সাংস্কৃতিক বিনোদন জগত। বর্তমান রাজ্য সরকার সাংস্কৃতিক জগতের যবনিকার শেষ পর্দা টেনে দিয়েছে।তাই একাংশ বুদ্ধিজীবীদের কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেছে । আর তার কারণে অর্থের লোভে নিজেদেরকে গোলাম বানিয়েছে ফেলেছেন। ২৪ ঘন্টা রাজ্য সরকারের পদলেহন করে চলেছে।সন্দেশখালিতে সাধারণ মানুষ ও নারীদের হাহাকার,চিৎকার,সমগ্র বিশ্বের মানুষটের পেলেও কালো চশমা পরে থাকা বুদ্ধিজীবীদের কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না।মজার

 

প্রায় এক মাস যাবৎ সন্দেশখালি উত্তাল।সাধারণ জনগন,নারী শিশু,বৃদ্ধ সবাই রাস্তায় নেমে এসেছে।তাদের একটাই দাবি সন্দেশ খালিতে শান্তি চাই।নন্দীগ্রামে জমি ফেরত চাই আন্দোলনে মহিলারা,লাঠি ঝাঁটা,জুতো নিয়ে প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে ছিল, সন্দেশখালিতে ঠিক একই প্রতিচ্ছবি। সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলন ছিল রাজ্য সরকার বিরোধী আন্দোলন। ঠিক তেমন সন্দেশখালি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন।এক আশ্চর্য মহাসমী পতনের সামনে দাঁড়িয়ে পশ্চিমবাংলার মানুষ। সমাজে একাংশ শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীরা এটা ভেবেই আতঙ্কিত সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের মত সন্দেশখালিতে নিরীহ জনগণের হাহাকার শূন্যতা রক্তাক্ত লাশের মধ্যে দিয়ে যেন নতুন সরকার গঠন না হয়। সাধারণ জনগণ অবশ্যই পরিবর্তন চাইছে।পতন অবশ্যম্ভাবী।কারণ ইতিহাস বলছে উত্থান যার আছে পতন নিশ্চিত।সৃষ্টি যেমন সত্য তেমন ধ্বংস নিশ্চিত।চরম সত্যকে উপেক্ষা করার সাহস আজ পর্যন্ত কারো হয়নি।আর তার জন্য হিটলারের পতন, বাস্তিল দুর্গের পতন,রাশিয়া জারের পতন,শিরশ্ছেদ মেশিন অর্থাৎ গিলোটিন যন্ত্রের অবক্ষয়,ওসামা বিন লাদেন এর মৃত্যু পর্যন্ত সবকিছুতে নতুন ভাবে ইতিহাস লেখা হয়েছে। সন্দেশখালি তার ব্যতিক্রম নয়।ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। শুরু হয়েছে জমি  মাপের খেলা। কেউ এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়তে রাজি নয়। ভবিষ্যতে নিজেদের জায়গা পাকা করতে সন্দেশখালি এই মুহূর্তে তুরুপে তাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।তাই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে আমাদের কাঙ্ক্ষিত জনগণের একটাই আশা সন্দেশ খালিতে সাধারণ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন পূরণ করতে যেন স্বার্থবাদী রাজনীতি যেন না করা হয়।অসহায় মানুষগুলোকে যেন রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহার না করা হয়।

 

নিজেদের আখের গোছাতে আর যেন কোনো মাকে তার সন্তান হারাতে না হয়, কোন স্ত্রীকে তার স্বামীকে  হারাতে না হয় ছোট ছোট সন্তানদের যেন পিতা মাতা হারাতে না হয়। সন্দেশখালিতে শান্তি ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের। আমরা সবাই চাই সন্দেশখালীর মানুষ আবার শান্তিতে নির্ভয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠুক।ছোট ছোট শিশুরা স্কুলে যাক। ২০১০ সালে পরিবর্তনের ডাকে সাড়া দিয়ে সাধারণ জনগণ তপন শুকুর কানা বিশু হাত কাটা দিলীপ মসজিদ মাস্টারদের হাত থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিল। পরিবর্তন এসেছিল তাতে একশ্রেণীর রাজনৈতিক নেতারা কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। সাধারণ জনগণের জীবনের দাম পাঁচশ হাজার টাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভয়,আতঙ্ক যুগ যুগের সঙ্গী হয়ে উঠেছে।এখন আতঙ্কের নাম শাহজাহান শেখ,ভোলা বিশু,অনুব্রত মণ্ডলরা। তাই আগামীতে সাধারন জনগণ পরিবর্তনের সাথে সাথে সমাজের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা রক্তচোষা ড্রাকুলা ও হায়নাদের থাবা থেকে মুক্তি পেতে চায়।সেই নিশ্চয়তা কোন রাজনৈতিক দল দেবে তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্নরা কিন্তু আতঙ্কে রয়েছে।

 

কথায় আছে জনতার মার দুনিয়ার বার।সন্দেশ খালি উত্তাল।তা নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা।অনেকের চোখে সব মিথ্যা সাজানো বিরোধীদের রাজনৈতিক ইস্যু।অনেকে বলছেন রাজ্য সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা,বিরোধীদের ভোট ব্যাংক ইত্যাদি ইত্যাদি।যারা এমন ভাবছেন তাদের কাছে প্রশ্ন সব সাজানো মিথ্যা হলে উত্তম, শিবুরা কেন জেলে?শাহজাহান শেখ বা কেন লুকিয়ে আত্মগোপন করে আছে?আরো বলব যারা দুর্নীতির দায়ে যারা জেল খাটছে তারা কি নির্দোষ?আরো বলব একবার সন্দেশ খালিতে গিয়ে দেখুন যদি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে একবার নির্যাতিতদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। হাজার হাজার মায়ের সন্তান হারানো চোখের সামনে নিজের সন্তানের  নির্যাতনের বুকফাটা আর্তনাদ শুনতে পাবেন। কন্যা সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আতঙ্কিত।

 

মহিলাদের কি চোখে দেখা হচ্ছে তা উপলব্ধি করতে পারবেন।যারা প্রতিবাদ করছেন না,তাদের সন্দেশ খালি নিয়ে কোন কথা বলার অধিকার নেই।যাদের সন্তান হারিয়ে গেছে,নির্যাতিত হয়েছে তারা একমাত্র সেই কষ্ট প্রতিনিয়ত অনুভব করেছে।আজ ভাবছেন সন্দেশ খালি তে হচ্ছে তাতে আমার কি?মনে রাখবেন আগে সিঙ্গুর,নন্দীগ্রাম,গড়বেতা,নানুর, কেশপুরের নাম শুনেছিলাম এবার সেই তালিকায় সংযোজন হয়েছে সন্দেশখালি। তাই আগামী ভবিষ্যতে আপনার গ্রাম বা পাড়া তালিকা ভুক্ত হবে না,আপনার বাড়ির মা বোনেদের তুলে নিয়ে যাবেন, সন্তানকে পেটাবে না সেই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে কি?

 

মাত্র কয়েক মাস আগে মণিপুরে এক নারী নির্যাতনের ঘটনায় সমগ্র দেশের মানুষ নেট দুনিয়াতে ঝড় তুলেছিল।ছি ছি আওয়াজ তুলেছিল।

 

আর সমগ্র সন্দেশ খালির মানুষ নির্যাতিত হচ্ছে,নারীরা প্রতি রাতে পার্টি অফিসে নির্যাতিত হচ্ছে এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়তে সুদূর আমেরিকার বাঙালি সমাজ প্রতিবাদ করলেও বাংলার এক শ্রেণীর জনগন এখনও নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ।

 

বটু কৃষ্ণ হালদার,কলকাতা_১০৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *