Spread the love

××××× অনুগল্প ×××××××
××××××ভিখাড়ী রাজা××××××
মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ
☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆☆
বছর তিনেক আগে যে ছেলেটা হাফপ‍্যান্ট পরে এ পাড়ায় ও পাড়ায় ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়াতে, সেই ছেলেটাকে দেখি বুট,র্শাট-র্কোট পড়ে বাইক নিয়ে ঘোরে। হঠাৎ কি এমন কাজ পেল সে এত রাজার বেশে ঘরে। এই প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। অবশেষে দেখতে পাই হঠাৎ তার দরজায় লাঠি মারে পুলিশ মামা। গ্রামের দূর্ভীক্ষ পীড়িত মানুষেরা ভিড় জমিয়ে দিল তার দরজার সামনে। তাদের সবার মনে একটাই প্রশ্ন মামা এল কেন? ••••কিছু সময় অপেক্ষার পর সবাই জানতে পারে ওর রাজার বেশে ঘোরার কাহিনী। ওর বাবা ঘর থেকে বের হতেই এক পুলিশ মামা বলতে লাগলো যে আপনার ছেলে কথাই?••••ছেলেটির বাবা ভয়ে ভয়ে বলল ছেলেতো বাড়িতে নেই বিদেশ গিয়েছে কাজের জন‍্য। তার পর ছেলেটির বাবা বলল কি হয়েছে স‍‍্যাযার, আমার ছেলেকে খুজছেন কেনো?••••মামা বলতে লাগল আপনার ছেলে নারী পাচারকারী সে এই পযর্ন্ত পাঁচটা মেয়েকে পাচার করেছে।শুধু তাই নয় সে রাজনীতির দূর্নীতিদের সাথে মিশে একজনকে টাকার বিনিময়ে খুন করেছে। আপনার ছেলেকে বাড়ি আসতে বলুন তা না হলে আপনাকে ধরে নিয়ে যাব,এবং যাবর জীবন জেল হতে পারে, অথবা ফাঁসি হতে পারে। এই কথা শোনার পর ছেলেটির বাবা মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে গেলো। তাড়াতাড়ি মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ করে বাড়িতে থাকতে বললেন এবং ছেলেকে খুব দ্রুত বাড়িতে আনতে বলে গেলেন।।

          এরপর দুদিন পরে ছেলেকে কল দিলো বাবা তুই কোথায় তাড়াতাড়ি বাড়িতে আয় আমার শরীর খুব অসুস্থ। ছেলেটি তার বাবাকে খুব ভালো বাসতো তাই সে দেরি না করে তাড়াতাড়ি বাড়িতে চলে এলো।যেদিন বাড়িতে এলো সেদিন রাতে তাকে মামা ধরে নিয়ে গেলো।এদিকে ছেলেটির বাবা গ্রামের মেম্বারের কাছে যায় তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসার জন‍্য।মেম্বার বলেন ঠিক আছে আমি উকিলের সাথে কথা বলে দেখছি কি করা যায়। উকিলের সাথে মেম্বারের কথা হলো উকিল বললেন এক লক্ষ টাকা দিলে আমি ওকে জামীন করে দেবো।এবার মেম্বার ছেলেটির বাবার কাছে বললেন উকিলের সাথে কথা হয়েছে  দেড় লক্ষ টাকা দিলে জমীন করিয়ে দেবো।কিন্তু উকিল একলক্ষ বলেছে মেম্বার টাকা খাবার জন‍্য দেড়লক্ষ বলেছে। কিন্তু ছেলেটির বাবা যে অতি গরিব সে এত টাকা কোথায় পাবে দেবে। অবশেষে তিনি ভাবলেন যে জমি বিক্রি করে দেবে।এবং জমি বিক্রি করলেন বাড়ি সহ তিনলক্ষ টাকায়।ফুটপাত হলো তার বসবাসের ঠিকানা। দেড়লক্ষ টাকা  উকিলের দিলেন তারপর উকিল ছেলেটির হয়ে কেশ লড়লেন। কিন্তু জর্জ যদিনা জামীন দেয় উকিলের কিছু করার থাকে না••••••ঠিক তেমনি ঘটলো জর্জ জামীন দিলো না উকিলের কথায়। এদিকে দেড়লক্ষ টাকা আর ফেরত পেলো না। 

তার পর আবার অন‍্য উকিল ধরলো কিন্তু তাতেও ওর জামিন হলো না। এই ভাবে চার পাঁচটা উকিল ধরলেন কিন্তু তার জামিন হলো না। এদিকে দেখতে দেখতে দু -বছর হয়ে গেলো,এবং ছেলেটির বাবার সব টাকা শেষ।তারপর ভাবলেন যে ছেলে বাড়িতে আসুক বা না আসুক আমার আর কিছুই করার নেই। ছেলের আসা ছেড়ে দিলেন এবং ছেলেটির বাবা বলতে লাগলেন যে ওর যেন ফাঁসি হয়ে যায়,তাতে আমি শান্তি পাবো। কিন্তু বাপ যতই অভিশাপ দিকনা কেন তবুও ছেলের জন‍্য মন কাঁদে।

      এরপর বেশ কিছু দিন কাটার পর হঠাৎ একদিন এক ভদ্রলোকের সাথে ছেলেটির বাবার বেশ পরিচিত ভাব জমে উঠলো।একদিন ছেলেটির বাবা ঐ ভদ্রলোকের কাছে সব বললেন তার ছেলের অপকর্মের কথা।ভদ্রলোকটি যে উকিল ছিল সেটা ছেলেটার বাবা জানতো না। ভদ্রলোকটি কথা গুলো সব শুনলেন এবং শোনার পর খুব দয়া হলো।ঐ ভদ্রলোকটা বললেন আপনার ছেলেকে আমি জামিন করিয়ে দেবো।ছেলেটির বাবা বলেন আমি অনেক উকিল ধরেছি সবাই এই একই কথা বলেছে কিন্তু কেউ পারেনি। আর আপনি কি করে পারবেন?আপনি তো কোনো উকিল না, তাহলে কি করে পারবেন?ভদ্রলোকটি বললেন বলছিতো আমি আপনার ছেলেকে জামিন করে দেবো।আমাকে একটু বিশ্বাস করুন••••••তা কত টাকা লাগবে ছেলেটির বাবা বললেন। ভদ্রলোকটি বললেন বেশিনা এই ধরুন কুড়ি হাজার টাকা লাগবে।কিন্তু ছেলেটির বাবার টাকা সব শেষ সে এতো টাকা দিতে পারবেনা বলে জানিয়ে দিলো।ঐ ভদ্রলোকটি বললেন যেমন করে পারেন দীন।যখন এই কথা বারবার বললেন ••••তখন ছেলেটির বাবা বললো দেখছি চেষ্টা করে। বাড়িতে ছিল দুটো গরু,তিনটে ছাগল সে সেগুলোকে বিক্রি করে টাকা দিল। তার পর ছেলেটির হয়ে কেশ লড়লেন ঐ ভদ্রলোকটি অর্থাৎ উকিলটি। এবার আর জর্জ জমিন না দিয়ে থাকতে পারল না, ফলে তার জামিন হয়ে গেলো।।

            এবার ছেলেটির বাবা ঐ ভদ্রলোক তথা উকিলকে জড়িয়ে ধরে বললেন যে আপনার এই উপকারের  ঋণ আমাকে চিরঝৃণী করে দিলো। আপনার জন‍্য আমি সবসময় দোয়া করবো।উকিলটি বললেন সবই উপর আল্লার ইচ্ছা আমি কিছুই করিনি •••••••আপনি তার থেকে বরং ঐ  উপর আল্লাহকে খুসি করুন নামাজ পড়ুন। এবং লোভ লালসা সব ভূলে গিয়ে যা আছে তাই নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করুন।আর আপনার ছেলেকে একটু বোঝাবেন যাতে এই ধরনের অপকর্মের কাজ সে আর কখনো না করে।।।

∆◆◆◆◆◆◆◆▪সমাপ্ত▪◆◆◆◆◆◆◆∆

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *