ভাষার অন্বেষণ
কলমে-চিত্রা মুখার্জী
যে শিশু ভুমিষ্ট হলো আজ
সে জানে না, তার ভাষা কি,
কিন্তু অজান্তেই তার শরীরের
প্রতিটি রক্তবিন্দুতে বপন হয়েছে
মাতৃভাষার বীজ ভ্রূণ থেকেই,
সেই সুপ্ত বীজ প্রতিমুহূর্তে
তিলে তিলে প্রকাশ ঘটে
অ-অ- শব্দের মধ্য দিয়ে,
সেটাই হলো তার নাড়ীর ভাষা
সেটাই হলো তার মাতৃভাষা।
এই ভাষাতেই সে খুঁজে পায়
নিজের অস্তিত্ব,
এই ভাষাতেই সে নিবেদন করে
তার সমস্ত ভালোলাগার,
ভালোবাসার নক্ষত্রপুঞ্জ কে।
কিন্তু আজ আমরা হারিয়ে যাচ্ছি
কালের স্রোতে,
অবলুপ্তি ঘটেছে বাংলা ভাষার,
অবলুপ্তি ঘটেছে বাংলা সংস্কৃতির।
বাংলায় কথা বলা নাকি
নেটিভ কালচার,
বাংলায় লেখা পড়া হলে নাকি
মানুষ পড়বে পিছিয়ে,
এই ধারণাই পোষণ করছে
বেশিরভাগ বাঙালি জাতি।
হায়! আজ যদি থাকতো বেঁচে
সালাম, বরকত, রফিক, জব্বর
লজ্জায়, অপমানে হত আত্মঘাতী।
যাদের রক্তপাত ঘটেছে
বাংলা ভাষার দাবিতে,
সেই বাংলা আজ তাদের
করে না সম্মান,
বাঙালি আজ ভুলতে বসেছে
তাদের দিতে কদর।
ব্রিটিশ ভাষাকে দিয়েছে মান
শিক্ষার উচ্চশিরে,
বাংলা তাই মুখ থুবড়ে
পড়েছে ঘরের কোণে।
খুঁজে বেড়াই কোথায় আছে
বাংলা ভাষার প্রাণ,
কোথায় গেলে পাবো তাকে
করি অন্বেষণ।
২১শে ফেব্রুয়ারি এলে
সবার পড়ে মনে—-
” মোদের গরব, মোদের আশা, আ-মরি বাংলা ভাষা,
তোমার কোলে, তোমার বোলে,
কতই শান্তি, ভালবাসা।””