ভারতের নদিয়ার লেখিকা শিখা চক্রবর্তী ও বাংলাদেশের তসলিমা নাসরিনের গ্রন্থ বিতর্ক
———————————————-
কাব্যপট সংবাদদাতা, 23 জানুয়ারি 2021 : আজ থেকে প্রায় 26-27 বছরেরও আগে বাংলাদেশে MBBS ডাক্তারি ছেড়ে অখ্যাত তসলিমা নাসরিন যখন মুসলমানদের বিরুদ্ধে বা ইসলাম মৌলবাদী ( লেখিকার বিশ্বাস অনুযায়ী ) ভাবধারার বিরুদ্ধে “লজ্জা” উপন্যাস লিখে, সেই সাথে ওই জাতীয় আরো নানা উপন্যাস ও প্রবন্ধ ও কবিতা গ্রন্থ লিখে পরপর বিশ্ব খ্যাতি পেয়ে কোটি-কোটি টাকা পেয়েছিলেন, ও বিশ্বপরিচিত বিতর্কিত লেখিকা হন ও দেশে বিদেশে অনেক পুরস্কার পান ও এখনো কোটি-কোটি টাকা পাচ্ছেন, তখনি কাছাকাছি সময়ে ” লজ্জা ” বেরুনোর কিছু পরে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার অখ্যাত গৃহিনী অপরিচিত লেখিকা শিখা চক্রবর্তী ” তসলিমা নাসরিন — লজ্জা ও কোরানের আমূল সংশোধন সম্পর্কে কিছু কথা ” — নামের তসলিমার ওপর সমালোচনা গ্রন্থ লিখে অনেক মানুষের মধ্যে পৌঁছে গেলেও, প্রকৃত অর্থে প্রচার পান নি, এবং সেই বই তখন প্রচার পেলে শিখা চক্রবর্তীও হতেন সমান মাপের লেখিকা, আপাতত এই বিষয়ে ! এবং তসলিমার মুখোমুখি ধরা হতো শিখাকেও ! যদিও শিখার উপন্যাস আছে ও গদ্যে উনি এখন একজন পরিচিত লেখিকা ! অনেক গ্রন্থ রয়েছে ! তবে ওনার কবিতা ওনার নিজের পছন্দ নয়, শুধু সভাসমিতিতে উপস্থিত হবার জন্য কবিতার মত কিছু লিখে উনি পাঠ করেন, বক্তৃতা দিতে সরাসরি এখন আর ভালো লাগেনা বলে ! তবে, কবিতা না লিখতে পেরেও কোনো -কোনো অকবিতা কবিতা হয়ে ওঠে তাঁর হাতে !
আসলে উনি মূলত গদ্য লেখিকা ! সবার সব গ্রন্থ দাঁড়ায় না, যদিও শিখা চক্রবর্তীর লেখা সমালোচনা ও উপন্যাস সহ কয়েকটি বইয়ের মধ্যে কোনো-কোনো বই গুরুত্ব পাবার দাবী রাখে ! সংসারের চঞ্চলতার মধ্যে, নানা ব্যাস্ততার মধ্যে তাঁর নিয়মিত সাহিত্য কর্ম ও বিপন্নতার মধ্যে হেঁটে চলা, সত্যিই সমীহ আদায় করার মত !
এখন উনিও একজন পরিচিত গদ্যকার, কিন্তু প্রকৃত প্রচার তাঁর দিকে আসেনি ! কারণ, ওনার পেছনে কোনো লবি ছিলোনা !
হিন্দি এলাকায় লোকের বাড়িতে কাজ-করা বাঙালি মেয়ে বেবি হালদার নিজের জীবনী গ্রন্থ লিখেই বিশ্বখ্যাতি পান ও লিখে কোটিপতি হন, বহু ভাষায় তাঁর গ্রন্থ অনূদিত হবার জন্য !
সেটা যত যোগ্য লেখাই হোক ঘটনাক্রমে বেবি পেয়েছিলেন কোনো বিশেষ সূত্র — নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে !
মুক্ত চিন্তা ফোটাতে তাসলিমা, বেবি হালদার প্রমুখের যা জুটেছিল ঘটনাক্রমে, শিখার তা জোটেনি ! বাঙালির উচিত শিখার এই প্রতিবাদী সমালোচনা গ্রন্থের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া !
আমাদের বাংলার প্রকাশকগন কি বাংলা ভাষার প্রতি সত্যিই দায়িত্বশীল ! ভাবনাটা আবার উঠে আসে যখন শিখা চক্রবর্তীর ওই দুঃসাহসিক গ্রন্থ আড়ালে চলে যায় ! এ ক্ষতি কি বাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতির নয়?
তসলিমার ওপর শিখা চক্রবর্তী ওই সমালোচনা গ্রন্থ বের করার পর, প্রথম সংস্করণ ছিল পাতলা একটি বই ! সেটা তখনকার জনপ্রিয় পত্রিকা ” ওভারল্যান্ড ” এ প্রশংসিত হয় ! তাতে উৎসাহিত হয়ে শিখা গ্রন্থটিকে আরো ব্যাপ্ত করে লেখেন !
দ্বিতীয় সংস্করণের আকার আরো মোটা ও যুৎসই হয় ! সেটার ছবি দেওয়া হয়েছে এখানে !
শিখা চক্রবর্তীর ওই বিতর্কিত গ্রন্থটি বেরিয়েছিল:–
আবার বলি সেই গ্রন্থের নাম :
“তসলিমা নাসরিন — লজ্জা ও কোরানের আমূল সংশোধন সম্পর্কে কিছু কথা “
প্রথম সংস্করণ আগস্ট 1994,
দ্বিতীয় সংস্করণ : সেপ্টেম্বর 1998
নাদিয়ার সেই অখ্যাত তরুণী গৃহিণী অপরিচিত লেখিকা শিখা চক্রবর্তীর মেধা ও মনের আলো কতটা ছিল — তবেই এই গ্রন্থ লেখা সম্ভব হয়েছিল, সেই মূল্য বাঙালি আজো তাঁকে দেয় নি ! এমোনি বাংলার কত জায়গায় কত শিখার শিখা যোগ্য প্রকাশক ও মনযোগী পাঠকের অভাবে আবছা হয়ে যায়, সে খবর আমরা কজন রাখি !
আমরাই আবার দাবী করি বাংলায় ভালো গ্রন্থ চাই ! ভাবুন তো , শিখার ওই গ্রন্থ তখন উপযুক্ত পরিচিতির আলো পেলে ও ইংরেজি সহ নানা ভাষায় অনুবাদ হলে এই শিখা কোন শিখায় দৃশ্য হতেন আমাদের কাছে, বাংলা ও বিশ্বের কাছে !
————–