কবি-পরিচিতি
——————-
বদরুদ্দোজা শেখু-র জন্ম ১৯৫৫ সালে ফেব্রুয়ারীতে মুর্শিদাবাদ জেলার ঠাকুরপাড়া গ্রামে ।ক্ষুদ্রচাষী সাইফুদ্দীন সেখ ও গৃহবধূ ফজরেতুন্নেশা বিবির সন্তান। দারিদ্র্যের মধ্যেই গণিতশাস্ত্রে স্নাতকোত্তর । পেশায় অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক। নেশায় কবিতা লেখালেখি। শোভা গোস্বামীকে বিবাহ করেছেন।
এযাবৎ প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ অলৌকিক আত্মঘাত, দুঃস্বপ্নের নগরে নিভৃত নগ্ন,শব্দ ভেঙে সংলাপ,আরো থোড়া দূর,এবং পরী ও পেয়ালা । তাঁর কবিতা অদলবদল , সপ্তাহ, দৌড় , কবিতীর্থ ,শব্দনগর, ঋতুযান প্রভৃতি পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত । বিভিন্ন পত্রিকাগোষ্ঠী থেকে একাধিক সম্মাননা পেয়েছেন।।
তিনি কিছু কিছু ছোটগল্প ও অণুগল্পও লিখেন।
প্রবাস // বদরুদ্দোজা শেখু
———————————
হেঁটে হেঁটে যতোদূর যাওয়া যায় গিয়ে ফিরে আসি
বিষণ্ণ উদাস । এও এক প্রবাসী জীবন।আত্মীয়-স্বজন
ভাইবোন ঘরবাড়ি ভিটেমাটি ছেড়ে শহরে এলাম
সুখের সন্ধানে; সুখ বড়ো অধরা বিষয় ।
এখানে বস্তুতঃ কেউ কাউকে চেনে না, বলতে গেলে
পাশের বাড়িও নিরাপদ দূরত্বে থাকে, দূরত্বে রাখে,
মৌখিক লৌকিকতায় সীমাবদ্ধ সদাচার , মন কাঁদে
মনের কথা বলার মতো সখ্যের অভাবে,
কালি কলম খাতা তুলে নিই, ভিড় ক’রে আসে
গাঁয়ের ছোট ছোট ঘর উঠান চাতাল খালবিল
জলজঙ্গলে মুখের দঙ্গল। লোলচর্ম চেয়ে থাকি ,
কেউ এসে হয়তো ডাকবে, ‘ চাচা , তোমরা সব কেমন আছো গো ?’
আবার চাগিয়ে উঠবে সরল সৌহার্দ্য আর প্রাণের প্রসাদ।
সাধ বড়ো শৌখীন উদ্বায়ী, বড়ো পরিযায়ী
কায়মনোবাক জুড়ে উড়ে আসে উড়ে চ’লে যায়
তীর্থভূমির আদলে, ফলে আর কোনোদিন
হয়না হাঁটার শেষ যাওয়া আসার শেষ
কিন্তু অধরাই থেকে যায় গাঁয়ের জীবন-চর্যা —
বেঁচে থাকে শহুরে প্রবাস
( ১৯ লাইন )
————————————————-