Spread the love

প্রিয়
নেতাজী
আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি।পড়ার বইতে তোমার ছবির সঙ্গে পরিচয় যতটুকু হয়েছে,তার থেকে অনেক অনেক বেশী বাবার মুখে তোমার অনেক গল্প শুনেছি।বাবা বলেন তুমি সব্যসাচী,তুমিই মেঘনাদ।বাবা আরো বলেছেন তুমি না থাকলে হয়তো আমাদের উৎসব, আনন্দ,দিনে খেলা,স্কুল যাওয়া,খাওয়া,খেলা ধুলা কিছুই হত না।তুমি অনেক রাত জেগেছো বলেই আমি বাবাকে জড়িয়ে ধরে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি। অথচ তুমি শেষ জীবনে নিজের ঘর টুকুও পাওনি। বাবা তোমার কথা বলতে বলতে অনেক দুঃখ প্রকাশ করেন। কখনো দেখেছি চোখের জল মুছতে। বাবা গত বছর ২৩ শে জানুয়ারি কোদালিয়াতে নিয়ে গিয়েছিল।সেখানে গিয়ে দেখি প্রত্যেকটা জিনিসে হাত দিয়ে ছুঁয়ে প্রণাম করছে।আমিও বাবার মত সবকিছু ছুঁয়ে প্রণাম করলাম। বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম আমরা সবকিছুর ছুঁয়ে প্রণাম কেন করছি? বাবা বলল মন্দিরে গেলে প্রণাম করিস না? আমি বললাম হ্যাঁ।বাবা উত্তর দিলেন এটা ভগবানের ঘর তাই প্রণাম করলাম।শেষে তোমার মূর্তি র সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। তোমার চোখে চোখ রাখতেই প্রথম ইশারায় আমি ভাষা হারিয়ে ফেললাম। পাশে বাবা দাঁড়িয়ে দুচোখ দিয়ে জল পড়ছে। শুধু বলল ভগবান আমাদের তুমি ক্ষমা করো। আমি জিজ্ঞেস করলাম বাবা উনি কেন ফেরেনি?
বাবা পড়লেন তুমি বড় হও ভগবান সম্পর্কে পড়াশোনা করলেই সব বুঝতে পারবে। আর বললেন উনি মেঘের আড়ালে আছেন।মেঘনাদ হয়ে সব দেখছেন। তুমি অন্তর দিয়ে ভগবানকে চিঠি লেখ তাহলে হয়তো ঠিক ফিরবেন। তাই আমি আমার জীবনের প্রথম চিঠি তোমাকে লিখলাম।তুমি ফিরে এসো। তোমার জন্য আমার বাবার চোখের জল দেখতে পারি না।খুব কষ্ট হয় আমার। তুমি ফিরে এলে বাবা আর কাঁদবে না।
ইতি
মেঘলা
সেন্ট অ্যান্ড্রুস পাবলিক স্কুল
ক্লাস ফাইভ

মেঘলা হালদার, বয়স ১০ বছর


 

One thought on “চিঠি: প্রিয় নেতাজী : মেঘলা হালদার, বয়স ১০ বছর”
  1. লেখিকা মেঘলা হালদার, আপনার গদ্য পড়িলাম, নেতাজীকে লইয়া।। সুন্দর করিয়া গুছিয়া লিখিয়াছেন। আপনার হইতে আরো লিখা চাহি। নানা রকম কর‍্যা লিখিয়া যান। পাঠক আছি।।
    শুভেচ্ছা সহ,
    ঋদেনদিক মিত্রো
    ( Ridendick Mitro )

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *