দুইটি কবিতা
১)
তিনদিনে শুধু কবিতার তিন লাইন
চন্দ্রকান্ত চক্রবর্তী
এই তিন দিনে
তিনটে লাইন লিখেছি শুধু
অথচ শুধু তিনবার কেন,
তিনশোবার ভেবেছি তোমাকে
তবু একটা তিন দশ তিরিশ লাইনের কবিতা লিখতে পারিনি তোমাকে নিয়ে ,
লিখিনি বললে ভুল হবে
লিখেছি আর কেটেছি
শব্দের সাথে শব্দ জুড়তে গিয়ে দেখেছি
বিচ্ছেদের কোনো শব্দ হয় না।
যদি এতোই ভালোবেসেছিলে
আমগাছে নতুন আসা বউলের মতো
রঙ লেপেছিলে আমার মনে
যদি আমিও এতোটাই ভালোবেসেছিলাম
তাহলে বলতে পারো
দুজনের মাঝে এই তিনশো বছরের ব্যবধান নিয়ে
বিচ্ছেদ কেন এলো !
তিনটে লাইন লিখেছি শুধু কবিতার ,
তোমাকে নিয়ে কবিতায় লিখিনি তার বেশি কিছু বললে বরং ভুল বলা হবে ,
লিখেছি আর কেটেছি শুধু
লিখেছি অনেক কিছু ,
কিন্তু শব্দের সাথে শব্দ জুড়ে
লেখা হয়ে কোরক হয়ে ফুটে ওঠার আগে
আমিই ছেঁটে ফেলেছি তাদের ।
বলতে পারো ,
কোনো বিস্ফোরণ ছাড়াই পাহাড়ের বুক চিরে
কেন ফাটল বেরিয়ে এল যেন তিনশো বছরের,
যার এপার ওপার দেখা যায় না
মাঝে শুধু নিকষ কালো অন্ধকার।
এই তিন দিনে তিনটে আলাদা লাইন লিখেছি শুধু ফাটলের এপারে দাঁড়িয়ে।
আর ওপারে তুমি। মাঝখানে শুধু তিনশো বছরের ঘুটঘুটে অন্ধকার।
আর ওপারে তুমি। মাঝখানে শুধু তিনশো বছরের ঘুটঘুটে অন্ধকার।
২)
হিসেব মেলানোর পর
– চন্দ্রকান্ত চক্রবর্তী
হিসেব মেলানো হয়ে গেলে
আজ বন্ধ হল সিন্দুক ।
দরকার নেই গিয়ে আর তাই চুলচেরা বিশ্লেষণে
তবু অতীত প্রশ্নের আকারে কারণ জানতে চায়–
‘কেন’ জিজ্ঞাসা করার সঙ্গত অধিকার
তার তো আছে !
এখন সন্ধ্যাকাল
হাহাকার বুকে গেঁথে দাঁড়িয়েছি জনহীন নদীতীরে
পিছনে ফেলে আসা সদ্য বছর অনেকগুলো
সেখানে আমি ভিড় ঠেলেছি অনেক
তাও এ হাহাকার কেন
অব্যাখ্যাত আমার কাছে !
সব হিসেব মেলানো হয়ে গেলে
আজ চুক্তির বৈধতা অতিক্রান্ত হল ।
কিছু না থেকেও
তবু থেকে গেছে হয়তো কিছু সেখানে ,
জনহীন নদীতীরে একবুক অব্যাখ্যাত হাহাকার
আমার ফুসফুসীয় পথ আটকালে দেখি,
দেওয়ার আর নেওয়ার জন্য
অবশিষ্ট রয়ে গেছে শুধু ভালোবাসা ।
এতো সব হিসেবের পরও । মুঠোমুঠো ।
এবং অমলিন ভাবে ।
অদরকারি বলে কোনো হাত তাকে না ছোঁয়ায় এখনও সে অমলিন ।
———-+++++++++++———
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});