Spread the love

রামপ্রসাদ the Detective OC

*******************”**”*”*
গ্রাম স্বর্ণপুড়ম যা সোনার গ্রাম নামেও পরিচিত। এই সুশীল গ্রামে যতদূর পর্যন্ত চোখ যায় তাতে প্রত্যেক ঘরের মানুষের অবস্থা আমাদের মতো মধ্যবিত্ত মানুষদের তুলনায় ভালো। গ্রামটির চারপাশে ঘন জঙ্গল দিয়ে ঘেরা যার মধ্যে দিয়ে তৃষ্ণা নদী বয়ে গেছে। গ্রামটির সম্পর্কে জানা যায় যে প্রচুর রহস্যজনক বস্তু সমূহের এখানে অবস্থান। গ্রামের প্রবেশের পথেই একটি বাজার। এর থেকে আরও মিনিট দশেক হেটে গেলে শুরু হয় স্থানীয় মানুষদের বাসস্থান। কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছে গ্রামের শেষ মাথায় একটি দোতলা বাড়ি আছে যার মালিকানাধীন হলেন Advocate প্রতাপাদিত্য , এখানে নাকি চুরি হয়ে গেছে বেশ কিছু ঘরোয়া রত্ন।কিন্তু দু-একদিনের মধ্যেই সেই খবর পান তিনি।সবার কাছে একই প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে গত তিন মাস যাবত যে সমস্ত রত্নগুলি চুরি হয়েছে তার মূল্য সোনার তুলনায় অনেক কম। তবে সেই জিনিসগুলিকেই কেন সেই চোরেরা বেছে নিল?এদিক থেকে দেখতে গেলে তার পরিমাণ অনেকটা বেশি। বিভিন্ন পুলিশ Investigation করলো তবু কোনো clue পেলনা।প্রতিবেশীদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়লো খবর চারিদিকে। ঠিক সেই সময় Police Station-এর New OC রামপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় -এর কানে সেই কথা গেল। থানায় পুলিশ বলতে একমাত্র তিনিই প্রত্যেকটি তদন্তের গভীরে ঢুকে সেই সমস্যার সমাধান করতে চান।বিষয়টি ভালো ভাবে বোঝার পর তিনি তার মতামতের দ্বারা Case টির কথা বড় দারোগা বাবুকে জানান।কিন্তু কোন প্রতিক্রিয়া না দেখায় থানার সেই OC, Undercover cop এর মতো নিজের দায়িত্বে এক মাসের leave of absence এর একটি চিঠি বড় দারোগা বাবুর হাতে ধরিয়ে দিয়ে underground হয়ে যান।

ঠিক একমাস পর New ACP, join করে সেই থানায়। হতভম্ব হয়ে তার দিকে তাকিয়ে এ থাকে সমস্ত O.C , A.S.I , H.C.-রা। চারিদিক থেকে বলে ওঠে “এতো O.C রামপ্রসাদ।” নতুন রূপে নতুন post-এ দেখে সবাই জিজ্ঞাসা করল “Sir আপনি leave নেওয়া দিনগুলিতে কি করেছিলেন? “তখন রামপ্রসাদ বলে, মনে আছে এক মাস আগে যে রত্ন চুরির Case আমাদের হাতে এসেছিল। তাতে কোন পদক্ষেপ যদি না নেওয়া হতো তবে ফলস্বরূপ একটি বিরাট দল হাতছাড়া হয়ে যেত। তাহলে শোনো সেই গল্প। leave নেওয়ার একদিন পর আমি যাযাবরের ছদ্মবেশে সেই Advocate এর বাড়ি গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়েই আমার প্রথম সন্দেহ হয় সেই বাড়ির পিছনের জঙ্গল ও অতিভরসা যোগ্য সেই চাকরের দিকে। Advocate লোকটা একটু খিটখিটে হলেও মনের দিক থেকে ভালো। তার পরিবারের মাত্র চারজন সদস্য। তিনি ও তার বউ, ৬ বছরের মেয়ে এবং তাঁর বাবা। বিপুল অর্থের মালিক হলেও দরিদ্রদের প্রতি তিনি তার মন উজার করে দেখেন।ঠিক আমাকেও বাজারে আনাজ বিক্রি করতে দেখে তিনি আমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলেন। তদন্তের জন্য মিথ্যে পরিচয় দিতে হয় তাকে । করুন অবস্থার বিবরণ দেওয়ার জন্য তিনি আমাকে তার মহলে থাকার আশ্রয় দেন। এ বিষয়ে আমার কোন অভিযোগ ছিল না যে তিনি আমাকে তার বাড়ির সদস্যের মতো মনে করতেন । দুইতিন দিনে তো আমি ভুলেই গেছিলাম যে আমারও একটা পরিবার আছে।সামনেই ছিল দীপাবলি । মনটা যেন খটোমটো লাগছিল। তিন দিন ধরে খেয়াল করছি বেশ কিছু নারকেল কেনার দল এই বাড়ির বড় নারকেল গাছটির দিকে নজর রেখেছে। গা ছমছমে আমাবস্যার রাত্রিতে পেছনের জঙ্গল থেকে কোন লোহার বাক্স আছেরে নিয়ে যাওয়া শব্দ হচ্ছে। আর চাকরটিকেও দেখছি কেন যেন একটু Misbehave করছে। Advocate এর কথায় খারাপ প্রতিক্রিয়া দিচ্ছে । পঞ্চম দিন আমি একটু জঙ্গলের দিকে বেরিয়ে পড়ি তথ্যাদি সংগ্রহ করার জন্য। Forest Officer বিক্রম আমাকে খবর দেয় এখানে কয়েকটা কাঠুরিয়ার দল আছে যারা কিছু কাঠের খোঁজে এখানে দল বেধেছে। পরের দিন এক ভিখারী এখানে ভিক্ষা নেওয়ার সময় বলতে আরম্ভ করল “চোর পাবি যেখানে /বিপদ পাবি সেখানে?” তারপর আমি সমস্ত তথ্য ,প্রমাণ ও স্থানীয় মানুষদের কথার ধাঁধা মিলিয়ে বুঝলাম পরের চুরিটি একটি বিশেষ দিনে হবে । সামনে দিপাবলীর উৎসব থাকায় ,আমি সেই দিনটিকে বেছে নেই। সমস্ত আনন্দ উৎসব এর ক্রিয়া শেষের পর রাত্রি তিনটার দিকে পায়ের শব্দ শুনতে পায়। নিঃশব্দে ছাদে উঠে আমি পিছনের জঙ্গলের দিকে নজর রাখতে থাকি । তখনই জোরালো পায়ের শব্দ যেন আমার কানে এসে পৌঁছাতে লাগলো। আমি ছাদ থেকে লাফ দেই এবং নারকেল গাছটিতে চড়তে থাকি। ওখান থেকে জঙ্গলে উকি মারার পর। কিছু টর্চের আলো দেখতে পাই । তৎক্ষণাৎ Forest Officer বিক্রমকে ফোন করতে থাকি। ফোন না ধরার ফলে আমি তাকে একটি এমার্জেন্সি মেসেজের দ্বারা সবকিছু জানায়। এবং জঙ্গলের দিকে জোরালো দৌড় দেই। গিয়েই দেখি সুপারি বিক্রির সেই লোকগুলি , Advocate -এর প্রিয় সেই চাকর, এবং কাঠের খোজে জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়া লোকগুলি একসাথে কি যেন বিড়বিড় করছে। ওদের মনকে দিকহীন করার জন্য। আমি জঙ্গলের বিপরীত দিকে থাকা তৃষ্ণা নদীতে একটি বড় পাথর ছুড়ে মারি।জলের আওয়াজে তারা সেই আওয়াজের দিকে ছুটে যায়। আমি সেই আশ্রয় নেওয়া স্থানে দেখতে পাই। বাইরের Advocate -এর কিছু গয়না ছাড়াও বেশ কিছু রত্ন তাদের কাছে একটি বাক্সের মধ্যে পড়ে আছে। কিন্তু Advocate -এর কথামতোই আমি লক্ষ্য করি, সমস্ত রত্নগুলির মূল্য সোনার মূল্যের থেকে অনেক কম। তখনই একটি কাগজ আমি কুড়িয়ে পাই। কাগজে লেখা ছিল “Golder the wanted Gang”।তখন আমার ধারণা হয়ে যায় এরা হয়তো সোনার মত দেখতে রত্নগুলির মূল্য,সোনার দামে বিক্রি করে। সেই দলটি আমায় দেখতে পেয়ে চারিপাশ থেকে ঘিরে ফেলে।তখনই জঙ্গলের চারিদিক থেকে তীক্ষ্ণ আলোয় আমার যেন চোখ ফ্যাকাসে হয়ে ওঠে। Forest Officer বিক্রম, তৃষ্ণা police station ও আশেপাশের বিভিন্ন Police squad নিয়ে হাজির। Golder gang, ভয়ে Surrender করে এবং Police Squad যাবতীয় সমস্ত রত্ন তাদের মালিক কে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এইভাবে আমি A.C.P এর খেতাবে সম্মানিত হই।গল্প শুনে সমস্ত পুলিশ Constable হাততালিতে ফেটে পড়ে।

যদিও O.C রামপ্রসাদ, A.C.P রামপ্রসাদের খেতাবে সম্মানিত হয়।কিন্তু তার প্রধানতম বৈশিষ্ট্য ছিল তার দায়িত্ব পালনকারী ক্ষমতা। বর্তমানে এরম পুলিশ হয়তো অনেক কম দেখা যায়। তবুও এরকম ভাবনা সঞ্চিত পুলিশ এখনো বেঁচে আছে। গল্প ভেবে কোন কাহিনী কে যদি উপভোগ হিসেবে ব্যবহার করার পর বঞ্চিত করা হয়। তবে এই পৃথিবীতে হয়তো মানসিকতার অভাব নাহলে বুদ্ধির। তাই কোন কাহিনীকে উপভোগ হিসেবে বঞ্চিত না করে। তার সঠিক অর্থ বুঝে জীবনে এগিয়ে যাওয়া প্রবণতা থাকা উচিত।

ধন্যবাদান্তে
সৌমজিৎ চন্দ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *