Spread the love

১. বেগুনী

এখন তুমি আসো শুধুই স্মরণে।

বেগুনী শাড়ি ছিল তোমার পরণে।

তখন কলেজে পড়তে।

রোজ বেলা দশটায় বাস ধরতে।

বিকাল সাড়ে পাঁচটায় ফিরে আসতে।

বাস থেকে নামতে আস্তে আস্তে আস্তে।

এরপরে দুজনে যেতাম গঙ্গার ধারে।

বসতাম সেই নদীর পাড়ে।

তখন আমি আর তুমি।

আমি বলতাম তোমার হাত চুমি,

“ভালোবাসি! ভালোবাসি! ভালোবাসি!

সারাটি জীবন থাকব এমনই পাশাপাশি।”

এখন তো তা মিথ্যে হয়ে গেছে।

দুজনেই একাকী আছি বেঁচে।

সে বেগুনী প্রেম এখন শুধুই স্মৃতি।

ভালোবাসার পত্রে দুজনেই ইতি।

বুঝলে ওগো আমার প্রিয়া প্রীতি!

আজও আমি শুনি তোমার গাওয়া সে গীতি।

যেটি তুমি প্রথম রেকর্ড করেছিলে।

মনে পড়ে সেদিন তুমি কণ্ঠে পরেছিলে,

আমার দেওয়া সে প্রথম উপহার,

বেগুনী বর্ণের সে সস্তার পুঁতির হার।

জানি না আজও তোমার কাছে

সেই সে কমদামী হারটি কি আছে?

২. রজনী

ওগো সজনী!

যায় যে বয়ে রজনী।

দেখো চাঁদ যে হয়েছে দিশাহারা।

বাকহারা যত তারা।

মন যে পাগলপারা।

দাও গো এবার সারা!

মিলন পিয়াসে ব্যাকুল অঙ্গ।

দাও গো তুমি আমায় সঙ্গ!

আকুল আকুতি ব্যর্থ কোরো না!

শূণ্য প্রেম-পেয়ালা মুখে ধোরো না!

তোমার ঐ মুখের মধু

দাও গো ঢেলে আমার মুখে, ও বধূ!

তোমার লাজ ভেঙে এসো কাছে।

অন্তর যে অধীর অপেক্ষায় আছে।

হৃদয় আমার তোমার পরশ যাচে।

স্পন্দন নব ছন্দে নাচে।

ফুলশয্যার রজনী আশার অতি।

এ রজনীতে সম্পূর্ণতা পায় কাম-রতি।

৩. রূপসী

ও রূপসী! হংসী-গতি! দীর্ঘকেশী!

চাইছি কি আমি খুব বেশি?

যদিও আমি বিদেশি,

তবুও করি নি আমি অবৈধ মেশামেশি।

তোমায় বানাবো আমার ঘরণী।

ওগো শ্যামলা বরণী!

দুজনে বাইব জীবন-তরুণী।

সুখের করব এ ধরণী।

ওগো আমার নিদ্রা-হরণী!

শ্রীকৃষ্ণ হয়ে পূজব তোমার শ্রীচরণই।

আমার আর রেখো না প্রেমে উপসী!

ওগো ও সুন্দরী, অপরূপা, রূপসী!

৪. শকুন্তলা

শকুন্তলা চলে কলস কাঁখে।

কোকিল ডাকে আর ডাকে।

কৃষ্ণচূড়ার শাখে শাখে শাখে।

সবিতা আড়চোখে চায় নদী বাঁকে।

দুষ্মন্ত আঁখিতে স্বপ্ন আঁকে।

হৃদাসনে বসায় তাকে।

অপলক দেখতেই থাকে।

মৌমাছি লাখে লাখে লাখে

মধু ভরে মৌচাকে।

তপবনে গোধূলী নামে।

শকুন্তলা জল ভরা কলস হেথা থামে।

মাটির পথে চলকে ছলকে ও এসেছে।

ওর জলে শকুন্তলার কাঁখ ভেসেছে।

৫. চিঠি

তোমাকে দেওয়া আমার চিঠি যত।

যেগুলি আমি লিখেছিলাম পাগলের মত।

সেগুলি এখন তুমি বই করেছ।

প্রেমিকার, প্রেমিকের মন ভরেছ।

শত শত শত 

কত কত কত

প্রেমী সে বই পড়ে।

আশার আলোয় জীবন ভরে।

ইতিহাস গড়ে।

একে অপরকে আঁকড়ে ধরে।

প্রমাণ করে,

তারা একে অন্যের তরে।

চিঠিগুলি লিখেছিলাম যখন

ভাবিনি আমি তখন

আমার প্রেমের সে সব চিঠি যত

আগামীতে হবে অমরত্বের পথ ও।

৬. শাঁখা

তোমার হাতের সাদা শাঁখা।

আমার প্রেমের ছবি সেথায় আঁকা।

তোমার হাতে আমার বেঁচে থাকা।

শাঁখা, পৃথিবীতে ধরে রাখা।

জীবনের বন্ধনের জোর

এই শাঁখা-জোড়;

তুমি আগলে রাখো যতনে কত।

শাঁখা যেন তোমার শ্বাসের মত।

যেন হৃদ স্পন্দন যত।

যেন তোমার কালের বাঁচার পথ ও।

শাঁখা চুমি

বল তুমি,

‘শাঁখা আমার ভালোবাসা।

এ-ই আমার জীবনের হাসা।’

কবির নাম

অঞ্জলি দেনন্দী, মম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *