আশ্চর্য বৃক্ষ
-সোনালী মীর
দাঁড়ালে এই বৃক্ষের নীচে এসে দাঁড়াও
আশি বছর পেরিয়ে এসেছে অনেক আগে
তবু কেমন থমকে থেমে আছে আশিতেই
পুরনো হয় না;
সব রকম ঋতুর খেলা সাঙ্গ করে বসন্তে দুদন্ড জিরিয়ে
আবার বৈশাখে নতুন করে পল্লবিত হয় যে বৃক্ষ
দাঁড়ালে আশ্চর্য সেই বৃক্ষের নীচে এসে দাঁড়াও
যে বৃক্ষের ফল কখনো পচে না
যে বৃক্ষের ছায়ায় কখনো খরা নামে না
যে বৃক্ষের দেহে কখনো ঘুন লাগে না
দাঁড়ালে সেই চিরনবীন বৃদ্ধের নীচে নতজানু হও
সে তোমাকে শেখাবে কেমন চরম রৌদ্রেও
দখিন হাওয়ার সুরে গুনগুনাতে হয়
কেমন করে ভাটির স্রোতে উজানে বইতে হয়।
একটু সময় পেলে তার শাখা প্রশাখায় বিচরণ করে দেখে নিতে পারো
এক এক ডালের এক এক রকম রং
পাতায় পাতায় সারা পৃথিবীর গল্প লেখা।
দেখবে কেমন নেশা তার বাতাসে
তুমি ক্রমে ক্রমে মাতাল হতে হতে ছুটতে শুরু করবে
ডালে ডালে পাতায় পাতায়
ছুটতে ছুটতে
শৈশব থেকে কবে কবে যৌবন পেরিয়ে
তুমিও আশিতে এসে ঠেকবে যখন
দেখবে ক্রমশ লীন হয়ে যাচ্ছ তার বোধে।
তোমার আশি ফুরিয়ে গিয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে ধুলোয়,
বৃক্ষটা তখনো তেমনি ডালপালা মেলে দাঁড়িয়ে ছাতার মত
তোমার সন্ততির মাথার উপরে
চলে গেলে চলে যেতেই পারো ঊষর কোন প্রান্তরের দিকে
আর যদি দাঁড়াতেই হয় তো এসে দাঁড়াও আশ্চর্য এই বৃক্ষের নীচে।
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্রীচরণে অর্পিত)