Spread the love

গল্প

আগ্রহী

✍️অগ্নিমিত্র✍️

*******

সুদূর আফ্রিকায় থাকে তারা। হিন্দি ভাষা তেমন বুঝতে পারে না। তবে ভালোবাসে ভারত দেশটাকে, ভালোবাসে তার ভাষাকে। হিন্দিতে গান শুনতে ভাই বোনের দুজনেরই খুব ভালো লাগে। বিশেষ করে ভাইয়ের, মানে বড়ো দাদার।
ছোটবেলা থেকেই কিছু হিন্দি ছবি দেখে দেখে সে হিন্দি গানের ভক্ত হয়ে গিয়েছে!..
তাই সে ঠিক করে, ফোনে হিন্দি গানের গলায় গলা মিলিয়ে ভিডিও তৈরী করবে আর সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করবে!..
কিন্তু কী করে? গ্রামে থাকে তারা। জঙ্গল ঘেরা গ্রাম তাদের। বিজলী নেই গ্রামে। ফোন আছে একটা তবে । গরু ছাগল মুরগি প্রতিপালন করে দিন চলে যায়। এর বেশি এই গ্রামে কেউ কিছু ভাবে নি কোনোদিন।
কুছ পরোয়া নেই। কিলির জেদ অনেক। পুরনো বাইকে চড়ে দশ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মূল গ্রামে গিয়ে ফোনে চার্জ দিয়ে আসে। তারপর হিন্দি গানে গলা মিলিয়ে, কখনো বা নেচে সে ভিডিও বানায়।
একা একা ভিডিও বানাতে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই ছোট বোন নিমা এগিয়ে আসে। মাঝে মাঝে ভিডিওতে সেও দেখা দিলো। দাদা কিলি তাকে বলে -‘ আমার ইন্সটাগ্রামে যেদিন এক মিলিয়ন ফলোয়ার হবে, সেদিন তোরও অ্যাকাউন্ট খুলে দেবো।’
গানের ভিডিও তৈরী হলো আফ্রিকার ভাষায়, ইংরেজিতে, হিন্দিতে। প্রথম দিকে কেউ দেখতো না। তারপর সময়ের চাকা ঘুরতে লাগলো। ‘ লুট্ গয়ে’ ও ‘ রাতা লম্বিয়াঁ’ গেয়ে বা গলা মিলিয়ে কিলি ও নিমা সামাজিক মাধ্যমে বিশ্ববিখ্যাত হয়ে উঠলো!.. কিছু টাকা পেলো কিলি। তাই দিয়ে ভালো ফোন কিনলো।
দেখতে দেখতে এক মিলিয়ন ফলোয়ার হয়ে গেল কিলির। তাই নিমার অ্যাকাউন্ট খোলা হলো। নিমাকে দেখে গ্রামের অন্য মেয়েরাও এখন গান বা অভিনয়ে উৎসাহী হয়ে পড়েছে।
মাসাইদের এই ছোট্ট গ্রামের ছেলেমেয়েদুটি এখন সুবিখ্যাত। ।সবাই তাদের চেনে। তবে তারা এখনো মাটির মানুষই আছে। অন্তর্জালের সুবাদে এখন তারা সবার কাছের মানুষ। প্রিয় গায়ক জুবিন নৌটিয়ালের সাথে ভিডিওতে কথা বলাও হয়ে গিয়েছে।
তাঞ্জানিয়ার ঘাসে ঢাকা, নীল আকাশের নীচে সিংহ ও হাতির সাথে সহাবস্থানরত রাখাল বালক মাসাই কিলি পল এখনো স্বপ্ন দেখে, সে সব গানে গলা মেলাবে। বিশেষ করে হিন্দি গানে। গ্রামের সাধারণ বালিকা নিমার চোখও এখন স্বপ্নে রঙীন !!..

??????

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *