শ্রীচরণেষু মা,
(করোনায় আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রীএকমাত্র
সন্তানের মায়ের কাছে শেষ মনচিঠি–সত্য ঘটনার
উপর আধারিত)
কৃষ্ণকলি বেরা
—————
মা, এখনো আমার শ্বাস চলছে,
যদিও খুব ঢিমেতালে,
তবে আমি সজ্ঞানেই আছি,
হয়তো আর বেশীক্ষন থাকবোনা,
মনের কলমে লিখছি তাই,
জানি তুমি শুনতে পাবে,
বুঝতে পারবে,
যেমন বুঝতে ছোটবেলায়, কখন আমার ক্ষিধে পেয়েছে, কখন ঘুম পেয়েছে,
মা, তুমি কাঁদছো? কেঁদোনা,
চল্লিশটা বছর রইলামতো তোমার কাছে,
কথা দিলাম আসছে জন্মে অনেক অনেক
বছর থাকব তোমার ছায়ায়।
আমার কারোর প্রতি কোনো অভিযোগ নেই,
অভিমান নেই,
যতটুকু ভালোবাসার ঘাটতি ছিল
হাসপাতালের সেবিকা বোনেরা
আর ডাক্তারবাবুরা যত্নে, স্নেহ মমতা
দিয়ে তা পূর্ন করে দিয়েছে,
মনে পড়ছে অফিস থেকে বাড়ি আসলে মুখ দেখেই বলে দিতে —“বাবু আজ খুব খাটুনি গেছে নারে?
এই সরবতটুকু খেয়ে নে”,
মা সরবতটা এখন থেকে বাবাকে দিও,
বাবারওতো বয়স হলো,
একটু খেয়াল রেখো,
আমার স্ত্রী, সন্তানকে দেখে রেখো,।
তুমি আর কেঁদোনা মা
তোমার চোখের জলে আমার অন্তিম যাত্রার পথটা যে পিচ্ছিল হয়ে যাচ্ছে,
এবার আমি ঘুমাব মা,
নিশ্চিন্তে ,নির্ভাবনায়,
আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দেবে মা,
যেমন দিতে তোমার কোলে মাথা রেখে ঘুমানোর সময়,
আঃ কি শান্তি,
ঘুম আসছে, আসছে
মহাপ্রস্থানের পথ ধরে ।
ইতি
মায়ের সঞ্জু