লেখকের বক্তব্য :
আমি গল্প লেখক নই ,তবু আবার গল্প লেখায় হাত দিলাম। এ গল্পের গতিপ্রকৃতি একটু অন্য রকম; এ যেন সব স্বপ্ন সম্ভব গল্প; গুচ্ছ আকারে চলবে। সামগ্রিকভাবে গুচ্ছের নাম হবে ‘স্বপ্নপ্রয়াণ গল্পগুচ্ছ’।
গল্পগুলি স্বপ্নপ্রয়াণ-১/—2–3 এভাবে চলবে। আর উপশিরোনামে গল্পের আসল নামটি থাকবে।
ছোটোগল্প অণুগল্প মিলমিশে থাকবে।
সর্বোপরি গল্পগুলি বহুকৌণিক অর্থব্যঞ্জনায় সমৃদ্ধ হবে এবং অতীত সৌন্দর্য অনুসন্ধান এগুলিলির প্রধান বৈশিষ্ট্য হবে; অতীতের নিরিখে হবে বর্তমানের মূল্যায়ন।পাঠক মনোভঙ্গী অনুযায়ী অর্থব্যঞ্জনা খুঁজে পাবেন।সামগ্রিকভাবে গল্প যেমন কথা বলবে গল্পের শব্দচয়নকেও কথা বলাতে চেষ্টা করব। দেশ মহৎ আদর্শ ইত্যাদি অনেক কিছুই ধরা দেবে।
এবার আমার কলমের যোগ্যতা আপনাদেরকে কতদূর নিয়ে যাবে সেই অপেক্ষা।
আজ নিদর্শন হিসেবে একটি মাত্র গল্প উপস্থাপিত করলাম।
স্বপ্নপ্রয়াণ গল্পগুচ্ছ
—————————–
স্বপ্নপ্রয়াণ-২
——————
এ কেমন চুরি?
কলকাতায় পার্টির বিরাট মিটিং; এতবড়ো সাধারণ মানুষের সমাবেশ কোলকাতায় আগে কখনো হয়নি হয়ত; গ্রামগঞ্জের লোক দলে দলে যাচ্ছে। শ্যামলও যাবে বিনা পয়সায় কলকাতা দেখতে। মা বলেছে সকাল সকাল শাকভাত করে দেবে। শ্যামল পুঁইমাঁচায় শাক কাটতে গিয়ে দেখল, মোটা কচি দুটো লতা চোরে নিয়েছে।। কী আর করা, শ্যামল অন্য একটি কচি ডাঁটা খুঁজে কাস্তের পোচ লাগাল। ছিরিক করে একটু রস এসে শ্যামলের গালে লাগল।গ্রামগঞ্জের চুরিটুরিতে সে কিছু মনে করে না কিন্তু পুঁইলতা কাটতে গিয়ে রস লাগা? সে বিস্মিত হয়ে হাত দিয়ে গাল মুছে দেখে এর রঙ যে বড়ো লাল। শ্যামল ভালো করে লতার দিকে তাকিয়ে আতঙ্কে বাপরে বলে লাফিয়ে উঠে পুঁইলতা কাস্তে সব ছেড়ে দিল।একটা আস্ত লাউডগা সাপ সে লতার সঙ্গে কাস্তের পোচে কেটে ফেলেছে।
অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক শ্যামলবাবুর সাপের ভয়ে ঘুম ভেঙে গেল। খাওয়াদাওয়ার পর পেপারে জনৈক মন্ত্রীর পাঁচকোটি টাকা তছরুপের খবর পড়তে পড়তে সে পেপার বুকে রেখেই ঘুমিয়ে পড়েছিল। সাপের আতঙ্কে ঘুম থেকে জেগে মন্ত্রীর পাঁচকোটি টাকা তছরুপের হেডলাইনের দিকে তাকিয়ে শ্যামল এই স্বপ্ন প্রয়াণের তাৎপর্য উদ্ধারের চেষ্টা করে ভাবল–“বাব্বাঃ! এ কেমন চুরি? কোথায় পুঁইচুরি আর কোথায় কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ। দেশে লাউডগা সাপ আর দেখা যায় না; চোরছ্যাঁচরও কমেছে কিন্তু বাবুচোরদের আজ রমরমা হয়েছে; রক্ষকই এখন ভক্ষক।
।।।।।।।।।।।।।।।।