আলোর আলো:-
সময় টা ছিল ১৯৯৮ সাল হঠাৎ একদিন আমার পাড়ারই এক বন্ধু আমাকে দেখা করার জন্য একপ্রকার অনুরোধই করে বসলো, আমি দখা করলাম ওর একটা ছোট্ট ওফিসে। বিভিন্ন রকম কথাবার্তার পর একটি নতুন কিছু উদ্যোগ নেয়ার প্রস্তাব রাখলে আমি সহমত প্রকাশ করলাম। নতুন কিছু উদ্যোগের কথা বলতে অনেক গুলো প্রস্তাব ছিল যেমন- গানের সংগঠন,ইউ টিউব চ্যানেল,ক্যাসেট, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ,ক্যাটারিন, যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন চাষবাস, সাহিত্য পত্রিকা গঠন। আমি সবগুলোই সমর্থন দিলাম। তার পর দু এক বার দেখা বা বসা হলেও সেরকম ভাবে কথাবার্তা এগোয় নি।২০০৩ সালে আমার বাসস্থান পরিবর্তন হলে দীর্ঘ দশ বছর তার সাথে দেখা হয় নাই বা দেখা হলেও সেরকম ভাবে কথাবার্তা হয় নি।২০১৩সালে গ্রামের বাড়ি তে ফিরে এলাম। এবং আবার আহ্বান পেয়ে বসে আলোচনা হলো। তখনই সর্বপ্রথম একটি সাহিত্য পত্রিকা করার উদ্যোগ নেয়া হয়। আমি প্রস্তাব দিলাম গ্রামের শিক্ষিত যুবকদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার। বন্ধু টি আমার প্রস্তাব গ্রহন করে গঠন করল চার পাঁচ জনের একটি কমিটি। কমিটির একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে আমার উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। লেখা সংগ্রহ, প্রচ্ছদ, নামকরণ, কমিটির গঠন,সব দিক আমার মতামত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। পত্রিকার প্রতি স্নেহ ভালোবাসা সঞ্চয় হতে লাগলো। পত্রিকা টি ছাপার আকারে নিতে আরো বছর তিনেক সময় লেগে যায়। অতঃপর বাংলা ১৪২২ ইং ২০১৫ গনেশ পুজো মন্ডপ থেকে প্রথম প্রকাশ করা হলো #আমন্ত্রণ পত্রিকা।
প্রকাশ করার পর আমি আরও বেশি বেশি উৎসাহিত হলাম এবং ভবিষ্যতে গ্রামের গন্ডি ছাড়িয়ে বৃহত্তর আকারে প্রকাশ করার জন্য সম্পাদক মহাশয়ের কাছে আগ্রহ প্রকাশ করলাম, সম্মতিও পেলাম। আমি আমার কয়েকজন বন্ধু র কাছে আলোচনা করে অনেক আইডিয়া, সাহায্য পেলাম। বিশেষ করে আমার কলেজ বন্ধু মান্না দাস অনেক সাহায্য করেছিলো। কোলকাতা র লেখক কবি সাহিত্যিকদের সাহিত্য চর্চা ও ফেসবুক ব্যাপারে অনেক জানলাম। পত্রিকা কমিটির কাছে পত্রিকার নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ করার অনুমতি চাইলাম এবং পত্রিকা টি বিশ্বদরবারে তুলে ধরার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম।গুরুত্ব সহকারে সবাই শুনলো বুঝলো এবং সম্মতি দিলো।
এরপর শুরু হলো জয়যাত্রা।
একের পর এক শুভ সূচনা হলো প্রতিযোগিতা এবং বিজেতা দের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হলো পুরস্কার। এভাবে পত্রিকার গ্রুপ টি গ্রাম থেকে ছাড়িয়ে বিশ্ববন্দিত হলো। পত্রিকার নাম দিন দিন প্রচারের আলোয় এসে গেল।
এমন সময় সম্পাদক মহাশয়ের কাছে গিয়ে কিছু মানুষ চক্রান্ত করতে লাগলো। আমি যেহেতু প্রতিযোগিতা, ফেসবুক গ্রুপ সব কিছুর কেন্দ্রে ছিলাম তাই আমার সাথে সম্পাদক মহাশয়ের বিবাদ লাগিয়ে দিল। পত্রিকা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটির থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো। পাওনা স্বরূপ পেলাম নানান অপমান, অকবি,অসাহিত্যিক বিশেষণ। আমার কাছে একটা জীদ চ্যালেঞ্জ তৈরি হলো। কিছু করে দেখানোর চ্যালেঞ্জ নিলাম।সেই চ্যালেঞ্জ, উঠতি কবি বন্ধুদের আশা ও ভালোবাসায় জন্মনিল আমার —#আলো। ২০১৭খ্রী: ফেব্রুয়ারি মাসে সরস্বতী পূজার দিন প্রথম প্রকাশিত হলো আলো।
একটি দীপ যেমন জ্বলার সময় আলোকিত করে চারিদিক , চারিদিকে অন্ধকার কেটে যায় শুধু তাই নয় সেই আলোর শিখার স্পর্শে আরও অসংখ্য দীপ দৃপ্ত হয়ে ওঠে।সেই রকম আলো পত্রিকার পরিবারের থেকে বা অনুপ্রেরণায় জন্ম নেয় বিভিন্ন ছোট ছোট পত্রিকা। দীপের একটি দিক থাকে অন্ধকারে সেখানে আলো পৌঁছাতে পারেনা কখনো। সেইরকম অন্ধকার দিকের কুচক্রান্তে বারবার দীপের শিখাকে নেভানোর চেষ্টা হয়েছে।প্রতিবারই সেই ঝড় প্রতিহত করতে পেরেছে আলো, এবং জয়যাত্রা অব্যাহত রাখতে পেরেছে….
প্রান পুরুষ স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও আদর্শকে সঙ্গে নিয়ে। বিশ্ববাসীকে আত্মবিশ্বাস, দেশপ্রেম, মানবপ্রেম,ত্যাগ ও সেবার প্রেরণার আগুন যেভাবে স্বামীজি জ্বেলে গেছেন আলোও সেই ভাবেই বিশ্ববাসীর মনে জ্বেলে যাবে।
স্বামীজীর কয়েকটি বানী মনে পড়ে– #চালাকির দ্বারা জগতে কোন মহৎ কার্য হয় না–
খুব ভালো লাগলো পত্রিকা।
এগিয়ে চলুন সঙ্গে আছি…. সুজিত মাজি (সম্পাদক,আলো পত্রিকা)