গড়পাড়ে গন্ডগোল
লেখক : সৌভিক রায়
অজিত ভাই তুমি কোথায় এখন ?একবার ব্যোমকেশ বাবু কে নিয়ে আমার বাড়ি আসতে পারবে ?
অজিত : না লালু দা; আমি কলেজস্ট্রিট -এ আছি এখন, বাড়ি ফিরে তোমায় ফোন করছি l কিন্তু কি হয়েছে ?
জটায়ু: আর বলো কেন আমার নতুন বইটার পাণ্ডুলিপি হাওয়া ,
অজিত :সেকি কী করে ?
জটায়ু : সে বলবো,তোমরা আগে এসো,ফেলুবাবু তো world detective conference এর জন্য লন্ডন গেছেন আর তপেস ভাইও নেই, ওরও এই সময় তেই যাবার ছিল l এখন কি যে করি ?উনি তো আবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না l
অজিত :আচ্ছা, দাঁড়ান আমি বাড়ি ফিরে দেখি , ব্যোমকেশ থাকলে ওকে নিয়ে যাচ্ছি lআপনি বাড়িতেই থাকুন,
(ব্যোমকেশ সব শুনে ,চলো অজিত যাই একবার ঘুরেই আসি,দেখি কি হলো লোকটার)
গড়পার রোডে এসে গাড়ি থেকে নামতে নামতে ব্যোমকেশ …….কী হলো লালু দা ?
জটায়ু : আর কি হলো !আসুন l
ব্যোমকেশ:বলুন এবার ….
জটায়ু :আমি তো পুজোর সময় একটা বই প্রকাশ করি জানো তো অজিত ভায়া,মহালয়ার দিন, তা প্রকাশক আমায় প্রুফ দেখার জন্য ফাইনাল পাণ্ডুলিপিরকপি টা দিয়েগেছে,তা আজ দুপুর থেকে দেখছি ওটা নেই, gone
সেকি খোঁজেন নি আর?
জটায়ু :কি যে বলো তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি !
অজিত :পেলেন না বাড়ি তে ,
না,
অজিত :শেষ কখন দেখলেন?ওই সকালে পড়ছিলাম তখন ই তো অক্রুর নন্দী এলো l
কে লেখক ?
জটায়ু: হুম
আজ ওর সাথে একজন এসেছিলো, কি যেন নামটা বললো ,ও মনে পড়েছে ; বটেশ্বর দত্ত ,একটা সিরিয়াল নাকি বানাবে আমার একটা গল্প নেবে l
অজিত: তা আপনি কি বললেন?
ব্যোমকেশ :কি আবার বলবেন,আল্লাদে আটখানা হয়ে পড়লেন যেমনটা গোপীনাথ গোরে মানে সান্যাল কে দেখে হয়েছিলেন,সেযাত্রায় ফেলু ছিল নয়তো একে বারে শ্রীঘর l
অজিত :আপনি কি বললেন বলুন ?
জটায়ু: (তার আপন ভঙ্গিমায়)
বললাম যে, নতুন টা অলরেডি সোল্ড, পুলকখুঁড়োর ছেলে ছবি করছে এটা নিয়ে
ও ,
ব্যোমকেশ : উত্তরে ওনারা কি বললেন ?খুশি হন নি নিশ্চয়ই?
জটায়ু :Certainly,আমি বললাম অক্রুর তুমি না হয় কিছু একটা লিখে দাও,আমি এই অল্প সময়ে কি আর লিখে দেব ,Highly Suspicious দত্ত তখন বললে না দাদা আপনার লেখাই আমার চাই l
আমি অগত্যা আমার কয়েকটা বই দিলাম ;যে এগুলো পরে দেখুন তারপর পছন্দ হলে কথা হবে l
তারপর, লালুদা?
কী বলবো অজিতভায়া, এখানেই বসে পড়তে শুরু করল,অ্রুর বললো একটু চা হলে মন্দ হতো না লালু দা , তা ভরদ্বাজ আজ আসে নি,আমি হরিপদ কে খাইখাই তে পাঠলাম l আর বললাম আমার চাকর টি আজ আসে নি ওই হরিপদ আমার চালক,ও এসে চা করে দিচ্ছে l
ব্যোমকেশ :খাই খাই ?
আমার পাড়ার খাবারের দোকান l শুধু চা দেওয়া যায় বলো অজিত ভায়া?
ও তা তো বটেই ইনভেস্ট না করলে কী চলে ?কী বলো অজিত সিরিয়াল বলে কথা ,তা আপনি হরিপদ বাবু কে বলতে গেলেন, তখন ঘরফাঁকা তো?তারপর ??
এসে দেখি পড়ছেন ওরা,অক্রুর বললো ওর একবার বইপাড়া যেতে হবে ও চলে গেলো,মিঃ দত্ত বললেন আপনার এখানে একটা অ্যাশ ট্রে হবে ? বলে চুরুট ধরালেন আর আমি গেলাম অ্যাশ ট্রে আন্তে রান্না ঘরে l
(ব্যোমকেশ মনে মনে দ্বিতীয় বার ঘর খালি )
তখন পাণ্ডুলিপি টি কোথায়?
এই আমার স্মার্টফোনটা চাপা দেওয়া টেবিলের উপর
তারপর ঘরে এলেন যখন ?
দেখলাম উঠে পড়েছেন মিঃ দত্তের ,কী কাজ আছে তাই ফোন এসেছিলো,
সে কি না খেয়েই?
জটায়ু : হ্যা,
গাড়ি তে করে চলে গেলো ,
আপনি গাড়ির নম্বর দেখেনি নিশ্চয়ই?কী গাড়ি জানেনও না?
না, আমি বলতে পারবো না
তারপর আমি ঘরে এলাম ফোন নিয়ে zoomato তে খাবার অর্ডার দিলাম,দুপুরে খেতে হবে তো রান্না কে করবে ভরদ্বাজ তো আসে নি l
আর পাণ্ডুলিপি টা?
না তখনও ও বিষয় খেয়াল করিনি,হরিপদ আসার পর মনে পড়লো ,গিয়ে দেখলাম নেই !শুধু ফোন টা টেবিলের উপর পরে আছে l
বাহ নির্লোভ বলতেই হচ্ছে , ফোন টার দাম তো নেহাত কম না,ফেলুু কে জানিয়য়েছেন?ও তো এখন লন্ডনে না?
না ,জানানো হয় নি ,আপনি খুঁজে দিন ব্যোমকেশ বাবু আজ কালের মধ্যে জমা না দিলে বই আর বেরোবে না মহালয়ায়,এত দিনের অভ্যাস !তা ছাড়া climax আর plot টাও চুরি হয়ে যেতে পারে l
দেখছি চিন্তা করবেন না তবে বই আপনার বেরোবেই আর এই মাহালয়ার দিনই,তারপর কিন্তু আর মোহন ময়রা বা খাই খাই না একেবারে ত্রিনকার্ডস!
আচ্ছা মিঃ দত্তের কোনো এড্রেস বা নম্বর আছে ?
না,
ওঁর ,একটা বর্ণনা দিনতো?
একটু লম্বা,একটু রোগা, হাতে লাঠি,পাঞ্জাবি আর ধুতি পরা, গলার আওয়াজ মোটা বাঁ পা খুঁড়িয়ে হাটে, মাথায় সাদা পাকা চুল আর হাতে একটা পেঁচার ট্যাটু আছে l
ওনার বয়স কি রকম ?
দেখে বয়স বোঝা যায় না,ওই ষাটের কাছাকাছি কিন্তু গলা শুনলে যুবক মনে হয় ,হয়তো গলার খুব যত্ন নেন l
Interesting ,আর কিছু?
না,,
যথেষ্ট , এই বর্ণনা এনাফ অজিত ,ফেলুর সাথে ঘর করার ফল, আগে যা আপনার বর্ণনা ছিল কব্জি সাড়ে আট ইঞ্চি ,হা হা ! যাক, সে কথা এখন থাক,একটু হরিপদ বাবুর সাথে কথা বলবো……….
এই…………হরিপদ এসো তো এসো তাড়াতাড়ি?
হরিপদ: বলুন স্যার
ব্যোমকেশ: আচ্ছা হরিপদ বাবু যারা এসেছিলেন আজ, তারা কী গাড়িতে এসেছিলেন ? আপনি দেখেছেন ?
হ্যা,OLA cab ছিলো স্যার,
নম্বর?
না স্যার ওটা দেখিনি l
ঠিক আছে আপনি যেতে পারেন l
লালু দা আমরাও চলি, দেখি কি হয়
অজিত ভাই, ফোন টা খোলা রেখো…..
লালুদা চিন্তা করবেন না,আমরা চলি
জটায়ু : একটু চা খেয়ে গেলে হতো না
না লালু আজ থাক আগে দেখি বই টা উদ্ধার করতে পারি কি না !
(বাড়ি থেকে বেরিয়ে অজিত OLA বা UBER বুক করো মিঃ নন্দী বাড়ির লোকেশন তুমি তো চেনোই )
অজিত : আর গিয়ে,কী বলবে ?আপনি চুরি করেছেন কি না?
পাগল অজিত একেই বলে চিরকুমার বুদ্ধি! চলো না গিয়েই দেখি কি হয়!
(বাড়ির সামনে গাড়ি থেকে নেমেই,দরজায় বেল টিপে তুমি ডাক অজিত )
নন্দীমশাই বাড়ি আছেন নাকি?;,
ও নন্দী মশাই!
কে ?
এই আমরা, আমি অজিত l
আরে অজিত বাবু যে কি ব্যাপার?
নমস্কার, অক্রুর বাবু আমি বক্সী ব্যোমকেশ বক্সী !আরে কী সৌভাগ্য আমার! বলুন কি করতে পারি আপনার জন্যে তার আগে একটু চা চলবে তো?
না,চা অন্য দিন হবে,
নন্দী: আরে বসুন না,বসতে তো আপত্তি নেই ….
অজিত :লালুদা পাঠালো বলল আপনার কে বন্ধু আছে সিরিয়াল বানাবে বলে গল্প খুঁজছে ? তাই আমরা এলাম l
আরে কীসের বন্ধু , বললো যে আমার আর জটায়ুর গল্প পড়েছে ,আমাদের গল্প খুব ভালো লেগেছে ,জটায়ুর সাথে আলাপ করবে তাই আমাকে নিয়ে যাবে ,কোন প্রকাশকের কাছ থেকে আমার ঠিকানা পেয়েছে l কি নাকি ধারাবাহিক বানাচ্ছে,তাই লালু দার গল্প নেবে , ওর আলাপ নেই আমি পরিচয় করিয়ে, খুব উপকার হয় তাই নিয়ে গিয়েছিলাম আজl আর কী বলবো কী মানুষ একটা ধন্যবাদ পর্যন্ত দেয় না,
আমি প্রথমে রাজি হই নি,কি না কি উটকো ঝামেলা!সে তো একে বারে নাছোড়বান্দা তাই কিছুটা না চাইতেও নিয়ে গেলাম আর কি,আমার আজ অনেক কাজ ছিল,প্রকাশক দের সাথে দেখা করা সেগুলোই আর হলো না l
ব্যোমকেশ : আমাদের গল্প নেবে ,সত্যর আবার আমাকে সিরিয়ালে দেখার ইচ্ছা,আপনি ওঁর ঠিকানাটা যদি দেন?
ধূর ধুর কী জানি কোথায় থাকে ?একটা ফোন নম্বর আছে ওই আমার নোটবুকে লিখে দিয়েছিলো সকালে যখন এলো ,আমি তো আগে থেকে চিনতুম না আজ সকালেই আলাপ l তা লালু দার গল্প কি পছন্দ হয়নি ?লালুদা কে ঠিকানা বা নম্বর দেয় নি ?
অজিত: লালুদার গল্প নিয়েছে কি না জানি না,আমরা গরপাড়ে গিয়েছিলাম তখন লালুদা বললো আজকের কথা,তবে লালু দার কাছে ঠিকানা বা ফোন নম্বর কিছুই নেই l
ব্যোমকেশ : তাই বলছি আপনি যদি আমাদের হয়ে একটা ফোন করে দেন আর যদি ঠিকানাটা জেনে দেন আর আমাদের কথাটা যদি রেকোমেন্ড করেন?আমাদের ফোনেই ধরি নোটবুক একটু দিন না?
নিন ধরুন,আমি দেখি কি বলে ?(কথা বলারথা বলার পর ) আপনাদের হয়ে রেকমেন্ড এর কি আছে অজিত আমার ভাইয়ের মতো আর আপনি আমাদের গর্ব ,আপনাদের গল্প সিরিয়াল হলে আমি খুবই খুশি হব তাও টিভি তে কিছু দেখা যাবে আর যা সব চলছে l
রিং হচ্ছে,দাঁড়ান!কথা বলে নি …..
(উনি কথা বলতে শুরু করলেন ,আমরা ওনার সোফায় বসে রইলাম,কিছু ক্ষণ পর ফোন রেখে দিয়ে এই নাও অজিত ধরো )
কী বললো? নন্দী বাবু ,কথা হলো কিছু?
ওই হলো আর কি ! অদ্ভুত লোক বললাম তোমাদের কথা ,ব্যোমকেশ বাবুর নাম শুনে কিছু বললো না আশ্চর্য্য এই প্রথম আমি এই রকম বাঙালি দেখলাম যে ওনার নাম শুনে আহা উহু ও করলো না সব শুনে বললো আমার বাড়ির কাছেই নাকি আছে?এখুনি,আসছে ব্যাস এইটুকুই বললো
এখানেই?
হুঁ( আমরা বসে আছি আধঘন্টা হলো ,হঠাৎ বাইরে গাড়ি থামার আওয়াজ হলো ,বুঝলাম উনি এসেছেন )
এলেন সোজা হেটে হেঁটে,ঘরে ঢুকে বসলেন!
আলাপ করিয়ে দি এই অজিত বাবু প্রসিদ্ধ লেখক আর ব্যোমকেশ বাবু
নমস্কার নমস্কার !
নমস্কার
শুনেছি,অপনার কথা, কিন্তু আমার প্রযোজনার কিছু সমস্যা চলছে আমি এখন করবো না কয়েক মাস পরে এই প্রজেক্ট শুরু করবো ,
(এর মধ্যে ব্যোমকেশ একটা সিগরেট এগিয়ে দিলেন, অক্রুর বাবু হাতের ইশারায় না করলেন )
মিঃ দত্ত বললেন No thanks I have my own brand,charminar.
আজ তবে উঠি আমি পরে কথা বলে নেবো,
আচ্ছা আপনার নম্বর আর এড্রেস টা যদি দেন?
আমি কাজের জন্য কখন কোথায় থাকি ঠিক আছে কী তার ,আপনি ওই নন্দী বাবুর থেকে নম্বর নিযে নেবেন,আমি চলি মিঃ নন্দী
ব্যোমকেশ :আমরাও উঠবো অজিত,চলো, আসি নন্দী মশাই l
(তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে দত্ত বাবু হাওয়া আমি আর ব্যোমকেশ টিকিও পেলাম না )
চলো অজিত আর ঘুরে লাভ নেই বাড়ি চলো l
(গাড়ি বুক করো অজিত,গাড়ি তে উঠে )
আচ্ছা,অজিত লালুদার শত্রু কে কে এই লেখক দের মধ্যে?
উনি যা লেখেন তাতে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, এক চাকলাদার আর নন্দী, তবুও কোনো তুলনা চলে না l চাকলাদারের তো তেমন লেখা আর বেরোয় না খুবই কম আর নন্দীবাবুর জটায়ুর মতো অতো জনপ্রিয়তা নেই,ওই একা কুম্ভ বলা যেতে পারে তবে জানো অজিত, এখন যে দত্ত এসেছিলো সে জটায়ুর দত্ত না,
কী? কী বলছো এসব ?
আরে শোনো না,দেখলে না এই দত্ত সোজা হেঁটে এলেন ,লাঠি ছাড়া আর খোঁড়ালেনও না, সিগার খান ,চুরুট না l
(বাড়ি তে ঢুকতে ঢুকতে ,)
সত্য চা………….
পুঁটিরাম: বৌদিমনি তো নেই
ও,তাহলে তুমি চা দাও এক কাপ
(চা খেতে খেতে সত্য ঢুকলো )
কী কোথায় গেছিলে বৌঠান ?
অজিত : না লালু দা; আমি কলেজস্ট্রিট -এ আছি এখন, বাড়ি ফিরে তোমায় ফোন করছি l কিন্তু কি হয়েছে ?
জটায়ু: আর বলো কেন আমার নতুন বইটার পাণ্ডুলিপি হাওয়া ,
অজিত :সেকি কী করে ?
জটায়ু : সে বলবো,তোমরা আগে এসো,ফেলুবাবু তো world detective conference এর জন্য লন্ডন গেছেন আর তপেস ভাইও নেই, ওরও এই সময় তেই যাবার ছিল l এখন কি যে করি ?উনি তো আবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না l
অজিত :আচ্ছা, দাঁড়ান আমি বাড়ি ফিরে দেখি , ব্যোমকেশ থাকলে ওকে নিয়ে যাচ্ছি lআপনি বাড়িতেই থাকুন,
(ব্যোমকেশ সব শুনে ,চলো অজিত যাই একবার ঘুরেই আসি,দেখি কি হলো লোকটার)
গড়পার রোডে এসে গাড়ি থেকে নামতে নামতে ব্যোমকেশ …….কী হলো লালু দা ?
জটায়ু : আর কি হলো !আসুন l
ব্যোমকেশ:বলুন এবার ….
জটায়ু :আমি তো পুজোর সময় একটা বই প্রকাশ করি জানো তো অজিত ভায়া,মহালয়ার দিন, তা প্রকাশক আমায় প্রুফ দেখার জন্য ফাইনাল পাণ্ডুলিপিরকপি টা দিয়েগেছে,তা আজ দুপুর থেকে দেখছি ওটা নেই, gone
সেকি খোঁজেন নি আর?
জটায়ু :কি যে বলো তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি !
অজিত :পেলেন না বাড়ি তে ,
না,
অজিত :শেষ কখন দেখলেন?ওই সকালে পড়ছিলাম তখন ই তো অক্রুর নন্দী এলো l
কে লেখক ?
জটায়ু: হুম
আজ ওর সাথে একজন এসেছিলো, কি যেন নামটা বললো ,ও মনে পড়েছে ; বটেশ্বর দত্ত ,একটা সিরিয়াল নাকি বানাবে আমার একটা গল্প নেবে l
অজিত: তা আপনি কি বললেন?
ব্যোমকেশ :কি আবার বলবেন,আল্লাদে আটখানা হয়ে পড়লেন যেমনটা গোপীনাথ গোরে মানে সান্যাল কে দেখে হয়েছিলেন,সেযাত্রায় ফেলু ছিল নয়তো একে বারে শ্রীঘর l
অজিত :আপনি কি বললেন বলুন ?
জটায়ু: (তার আপন ভঙ্গিমায়)
বললাম যে, নতুন টা অলরেডি সোল্ড, পুলকখুঁড়োর ছেলে ছবি করছে এটা নিয়ে
ও ,
ব্যোমকেশ : উত্তরে ওনারা কি বললেন ?খুশি হন নি নিশ্চয়ই?
জটায়ু :Certainly,আমি বললাম অক্রুর তুমি না হয় কিছু একটা লিখে দাও,আমি এই অল্প সময়ে কি আর লিখে দেব ,Highly Suspicious দত্ত তখন বললে না দাদা আপনার লেখাই আমার চাই l
আমি অগত্যা আমার কয়েকটা বই দিলাম ;যে এগুলো পরে দেখুন তারপর পছন্দ হলে কথা হবে l
তারপর, লালুদা?
কী বলবো অজিতভায়া, এখানেই বসে পড়তে শুরু করল,অ্রুর বললো একটু চা হলে মন্দ হতো না লালু দা , তা ভরদ্বাজ আজ আসে নি,আমি হরিপদ কে খাইখাই তে পাঠলাম l আর বললাম আমার চাকর টি আজ আসে নি ওই হরিপদ আমার চালক,ও এসে চা করে দিচ্ছে l
ব্যোমকেশ :খাই খাই ?
আমার পাড়ার খাবারের দোকান l শুধু চা দেওয়া যায় বলো অজিত ভায়া?
ও তা তো বটেই ইনভেস্ট না করলে কী চলে ?কী বলো অজিত সিরিয়াল বলে কথা ,তা আপনি হরিপদ বাবু কে বলতে গেলেন, তখন ঘরফাঁকা তো?তারপর ??
এসে দেখি পড়ছেন ওরা,অক্রুর বললো ওর একবার বইপাড়া যেতে হবে ও চলে গেলো,মিঃ দত্ত বললেন আপনার এখানে একটা অ্যাশ ট্রে হবে ? বলে চুরুট ধরালেন আর আমি গেলাম অ্যাশ ট্রে আন্তে রান্না ঘরে l
(ব্যোমকেশ মনে মনে দ্বিতীয় বার ঘর খালি )
তখন পাণ্ডুলিপি টি কোথায়?
এই আমার স্মার্টফোনটা চাপা দেওয়া টেবিলের উপর
তারপর ঘরে এলেন যখন ?
দেখলাম উঠে পড়েছেন মিঃ দত্তের ,কী কাজ আছে তাই ফোন এসেছিলো,
সে কি না খেয়েই?
জটায়ু : হ্যা,
গাড়ি তে করে চলে গেলো ,
আপনি গাড়ির নম্বর দেখেনি নিশ্চয়ই?কী গাড়ি জানেনও না?
না, আমি বলতে পারবো না
তারপর আমি ঘরে এলাম ফোন নিয়ে zoomato তে খাবার অর্ডার দিলাম,দুপুরে খেতে হবে তো রান্না কে করবে ভরদ্বাজ তো আসে নি l
আর পাণ্ডুলিপি টা?
না তখনও ও বিষয় খেয়াল করিনি,হরিপদ আসার পর মনে পড়লো ,গিয়ে দেখলাম নেই !শুধু ফোন টা টেবিলের উপর পরে আছে l
বাহ নির্লোভ বলতেই হচ্ছে , ফোন টার দাম তো নেহাত কম না,ফেলুু কে জানিয়য়েছেন?ও তো এখন লন্ডনে না?
না ,জানানো হয় নি ,আপনি খুঁজে দিন ব্যোমকেশ বাবু আজ কালের মধ্যে জমা না দিলে বই আর বেরোবে না মহালয়ায়,এত দিনের অভ্যাস !তা ছাড়া climax আর plot টাও চুরি হয়ে যেতে পারে l
দেখছি চিন্তা করবেন না তবে বই আপনার বেরোবেই আর এই মাহালয়ার দিনই,তারপর কিন্তু আর মোহন ময়রা বা খাই খাই না একেবারে ত্রিনকার্ডস!
আচ্ছা মিঃ দত্তের কোনো এড্রেস বা নম্বর আছে ?
না,
ওঁর ,একটা বর্ণনা দিনতো?
একটু লম্বা,একটু রোগা, হাতে লাঠি,পাঞ্জাবি আর ধুতি পরা, গলার আওয়াজ মোটা বাঁ পা খুঁড়িয়ে হাটে, মাথায় সাদা পাকা চুল আর হাতে একটা পেঁচার ট্যাটু আছে l
ওনার বয়স কি রকম ?
দেখে বয়স বোঝা যায় না,ওই ষাটের কাছাকাছি কিন্তু গলা শুনলে যুবক মনে হয় ,হয়তো গলার খুব যত্ন নেন l
Interesting ,আর কিছু?
না,,
যথেষ্ট , এই বর্ণনা এনাফ অজিত ,ফেলুর সাথে ঘর করার ফল, আগে যা আপনার বর্ণনা ছিল কব্জি সাড়ে আট ইঞ্চি ,হা হা ! যাক, সে কথা এখন থাক,একটু হরিপদ বাবুর সাথে কথা বলবো……….
এই…………হরিপদ এসো তো এসো তাড়াতাড়ি?
হরিপদ: বলুন স্যার
ব্যোমকেশ: আচ্ছা হরিপদ বাবু যারা এসেছিলেন আজ, তারা কী গাড়িতে এসেছিলেন ? আপনি দেখেছেন ?
হ্যা,OLA cab ছিলো স্যার,
নম্বর?
না স্যার ওটা দেখিনি l
ঠিক আছে আপনি যেতে পারেন l
লালু দা আমরাও চলি, দেখি কি হয়
অজিত ভাই, ফোন টা খোলা রেখো…..
লালুদা চিন্তা করবেন না,আমরা চলি
জটায়ু : একটু চা খেয়ে গেলে হতো না
না লালু আজ থাক আগে দেখি বই টা উদ্ধার করতে পারি কি না !
(বাড়ি থেকে বেরিয়ে অজিত OLA বা UBER বুক করো মিঃ নন্দী বাড়ির লোকেশন তুমি তো চেনোই )
অজিত : আর গিয়ে,কী বলবে ?আপনি চুরি করেছেন কি না?
পাগল অজিত একেই বলে চিরকুমার বুদ্ধি! চলো না গিয়েই দেখি কি হয়!
(বাড়ির সামনে গাড়ি থেকে নেমেই,দরজায় বেল টিপে তুমি ডাক অজিত )
নন্দীমশাই বাড়ি আছেন নাকি?;,
ও নন্দী মশাই!
কে ?
এই আমরা, আমি অজিত l
আরে অজিত বাবু যে কি ব্যাপার?
নমস্কার, অক্রুর বাবু আমি বক্সী ব্যোমকেশ বক্সী !আরে কী সৌভাগ্য আমার! বলুন কি করতে পারি আপনার জন্যে তার আগে একটু চা চলবে তো?
না,চা অন্য দিন হবে,
নন্দী: আরে বসুন না,বসতে তো আপত্তি নেই ….
অজিত :লালুদা পাঠালো বলল আপনার কে বন্ধু আছে সিরিয়াল বানাবে বলে গল্প খুঁজছে ? তাই আমরা এলাম l
আরে কীসের বন্ধু , বললো যে আমার আর জটায়ুর গল্প পড়েছে ,আমাদের গল্প খুব ভালো লেগেছে ,জটায়ুর সাথে আলাপ করবে তাই আমাকে নিয়ে যাবে ,কোন প্রকাশকের কাছ থেকে আমার ঠিকানা পেয়েছে l কি নাকি ধারাবাহিক বানাচ্ছে,তাই লালু দার গল্প নেবে , ওর আলাপ নেই আমি পরিচয় করিয়ে, খুব উপকার হয় তাই নিয়ে গিয়েছিলাম আজl আর কী বলবো কী মানুষ একটা ধন্যবাদ পর্যন্ত দেয় না,
আমি প্রথমে রাজি হই নি,কি না কি উটকো ঝামেলা!সে তো একে বারে নাছোড়বান্দা তাই কিছুটা না চাইতেও নিয়ে গেলাম আর কি,আমার আজ অনেক কাজ ছিল,প্রকাশক দের সাথে দেখা করা সেগুলোই আর হলো না l
ব্যোমকেশ : আমাদের গল্প নেবে ,সত্যর আবার আমাকে সিরিয়ালে দেখার ইচ্ছা,আপনি ওঁর ঠিকানাটা যদি দেন?
ধূর ধুর কী জানি কোথায় থাকে ?একটা ফোন নম্বর আছে ওই আমার নোটবুকে লিখে দিয়েছিলো সকালে যখন এলো ,আমি তো আগে থেকে চিনতুম না আজ সকালেই আলাপ l তা লালু দার গল্প কি পছন্দ হয়নি ?লালুদা কে ঠিকানা বা নম্বর দেয় নি ?
অজিত: লালুদার গল্প নিয়েছে কি না জানি না,আমরা গরপাড়ে গিয়েছিলাম তখন লালুদা বললো আজকের কথা,তবে লালু দার কাছে ঠিকানা বা ফোন নম্বর কিছুই নেই l
ব্যোমকেশ : তাই বলছি আপনি যদি আমাদের হয়ে একটা ফোন করে দেন আর যদি ঠিকানাটা জেনে দেন আর আমাদের কথাটা যদি রেকোমেন্ড করেন?আমাদের ফোনেই ধরি নোটবুক একটু দিন না?
নিন ধরুন,আমি দেখি কি বলে ?(কথা বলারথা বলার পর ) আপনাদের হয়ে রেকমেন্ড এর কি আছে অজিত আমার ভাইয়ের মতো আর আপনি আমাদের গর্ব ,আপনাদের গল্প সিরিয়াল হলে আমি খুবই খুশি হব তাও টিভি তে কিছু দেখা যাবে আর যা সব চলছে l
রিং হচ্ছে,দাঁড়ান!কথা বলে নি …..
(উনি কথা বলতে শুরু করলেন ,আমরা ওনার সোফায় বসে রইলাম,কিছু ক্ষণ পর ফোন রেখে দিয়ে এই নাও অজিত ধরো )
কী বললো? নন্দী বাবু ,কথা হলো কিছু?
ওই হলো আর কি ! অদ্ভুত লোক বললাম তোমাদের কথা ,ব্যোমকেশ বাবুর নাম শুনে কিছু বললো না আশ্চর্য্য এই প্রথম আমি এই রকম বাঙালি দেখলাম যে ওনার নাম শুনে আহা উহু ও করলো না সব শুনে বললো আমার বাড়ির কাছেই নাকি আছে?এখুনি,আসছে ব্যাস এইটুকুই বললো
এখানেই?
হুঁ( আমরা বসে আছি আধঘন্টা হলো ,হঠাৎ বাইরে গাড়ি থামার আওয়াজ হলো ,বুঝলাম উনি এসেছেন )
এলেন সোজা হেটে হেঁটে,ঘরে ঢুকে বসলেন!
আলাপ করিয়ে দি এই অজিত বাবু প্রসিদ্ধ লেখক আর ব্যোমকেশ বাবু
নমস্কার নমস্কার !
নমস্কার
শুনেছি,অপনার কথা, কিন্তু আমার প্রযোজনার কিছু সমস্যা চলছে আমি এখন করবো না কয়েক মাস পরে এই প্রজেক্ট শুরু করবো ,
(এর মধ্যে ব্যোমকেশ একটা সিগরেট এগিয়ে দিলেন, অক্রুর বাবু হাতের ইশারায় না করলেন )
মিঃ দত্ত বললেন No thanks I have my own brand,charminar.
আজ তবে উঠি আমি পরে কথা বলে নেবো,
আচ্ছা আপনার নম্বর আর এড্রেস টা যদি দেন?
আমি কাজের জন্য কখন কোথায় থাকি ঠিক আছে কী তার ,আপনি ওই নন্দী বাবুর থেকে নম্বর নিযে নেবেন,আমি চলি মিঃ নন্দী
ব্যোমকেশ :আমরাও উঠবো অজিত,চলো, আসি নন্দী মশাই l
(তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে দত্ত বাবু হাওয়া আমি আর ব্যোমকেশ টিকিও পেলাম না )
চলো অজিত আর ঘুরে লাভ নেই বাড়ি চলো l
(গাড়ি বুক করো অজিত,গাড়ি তে উঠে )
আচ্ছা,অজিত লালুদার শত্রু কে কে এই লেখক দের মধ্যে?
উনি যা লেখেন তাতে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, এক চাকলাদার আর নন্দী, তবুও কোনো তুলনা চলে না l চাকলাদারের তো তেমন লেখা আর বেরোয় না খুবই কম আর নন্দীবাবুর জটায়ুর মতো অতো জনপ্রিয়তা নেই,ওই একা কুম্ভ বলা যেতে পারে তবে জানো অজিত, এখন যে দত্ত এসেছিলো সে জটায়ুর দত্ত না,
কী? কী বলছো এসব ?
আরে শোনো না,দেখলে না এই দত্ত সোজা হেঁটে এলেন ,লাঠি ছাড়া আর খোঁড়ালেনও না, সিগার খান ,চুরুট না l
(বাড়ি তে ঢুকতে ঢুকতে ,)
সত্য চা………….
পুঁটিরাম: বৌদিমনি তো নেই
ও,তাহলে তুমি চা দাও এক কাপ
(চা খেতে খেতে সত্য ঢুকলো )
কী কোথায় গেছিলে বৌঠান ?
ওই খোকা নিয়ে কলেজ স্ট্রিট ছোটদের বই মেলাতে, আর কী হলো জানো ঠাকুরপো সেই ওই যে গো captain Spark যে লেখে তার সাথে দেখা দোকানে ছিল বই কিনলাম খোকা কে আবার অটোগ্রাফ দিলো l
আরে কী নাম? বলো না ,
কে ?ক্ষিতিস চাকলাদার!,
হুম,
ব্যোমকেশ :সত্য চা করো না,পুঁটিরামের হাতের চা আর ভালো লাগে না, খোকা দেখি বইটা…….পাতা উল্টাতে উল্টাতে এ কী অজিত নিশাাচর অটোগ্রাফ যে???
ও তোমাকে তো বলাই হয় নি এটাই ওঁর ছদ্মনাম l
এই দেখো বই টা…..
(বই টা হাতে নিয়ে ) এই তো নিশাচর লেখা l
নামটা দেখলে আর হাতের লেখাটা দেখলে না …..
হাতের লেখাটা চিনতে পারলে না ?,
কী কার ?
তুমি, নিশাচর বাবুর নম্বর জানো?তাহলে ফোন করে বলো যে আগামীকাল সকালে কফি হাউসে একটা সাহিত্যসভা আছে ঠিক 11টায় আপনাকে আমন্ত্রণ করা হচ্ছে বলবে, ব্যানার্জী বই প্রকাশনী থেকে বলছি আর নাম বলবে অন্য কিছু একটা ,কী বুঝলে ? করো ?
কিন্তু কেন?
সাহিত্য আলোচনা হবে ,আরও দুটো ফোন করতে হবে লালুদা আর নন্দী কে
ওদের কী? মিথ্যে!
কি যে হেয়ালি করো?
করো ফোন দুটো করো, ( তিন জন কেই ফোন করে আমন্ত্রণ জানানো হয়ে গেলো )
ব্যোমকেশ কাজ শেষ ,সবাই আসছে কাল কিন্তু ব্যাপারটা কি সেটা তো বলো
বলবো অজিত কাল বলবো তোমাদের মতো পোর খাওয়া লেখক দের মাঝে আমি ,বেশ চাপের বিষয় !
সত্য খেতে দাও,আমি যাই,কাল কথা হবে অজিত সাহিত্য নিয়ে একটু পড়ি দেখি তোমাদের সাথে পারি কি না?
(ব্যোমকেশ আর কিছু বললো না ওর এটাই স্বভাব, সকল সাড়ে10টায় আমরা পৌঁছে গেলাম কফি হাউসে ) প্রথমে লালু দা এলেন
আসুন লালু দা, কী ব্যাপার আপনি?বসুন সব বলছি
(এর মধ্যেই নন্দী বাবু চলে এলেন )
আসুন ,বসুন নন্দী বাবু আর একজন এলেই সাহিত্য সভা শুরু করবো,তার আগে কফি বলি !
জটায়ু :কে মশাই?
কে আবার এক বিশেষ বন্ধু,একটু অপেক্ষা করুন l
আরে এসো এসো ক্ষিতিস,কী ব্যাপার অজিত দা তোমাকেও ডেকেছে নাকি?
আরে না না নিশাচরবাবু অজিতেরই তো ওই ব্যানার্জী হাউস,আপনি বসুন না কথা আছে ,
লালুদা,আপনার নতুন পাণ্ডুলিপি রয়েছে ক্ষিতিস বাবুর কাছেই
নিশাচর : কী কী ?কি বলছেন ব্যোমকেশ বাবু ?এর মানে কি ডেকে এনে অজিত দা?
বাহ! আপনি আমায় চিনলেন কি করে আপনার সাথে তো আলাপ হয়নি এর আগে , নাকি হয়েছে মিঃ দত্ত!!!!!
মানে?
এই নিশাচর আপনার বাড়ি যায় কাল মিথ্যা পরিচয় নিয়ে,আর পাণ্ডুলিপি হরন করেন,ওনার হাতের প্যাচার ট্যাটু আর. হাতের লেখা অক্রুর বাবুর নোটবুকে আর আমার ছেলের বই তে অটোগ্রাফ হুবহু এক, আরও আছে খোঁড়া সাজা বা চুরুট খাওয়া ………ইত্যাদি ইত্যাদি
এবার মাল যে ফেরত দিতে হবে ,যার জিনিস তাকে ফেরত দিন দেখি মিঃ নিশাচর !
নিশাচর :
Sorry ,লালু দা আসলে আমার লেখাও এবার পুজো তে বেরোচ্ছে আর আমি ভাবলাম তোমার টা বেরহলে আমার টা আর বিক্রি হবে না ,কত দিন পর লেখার সুযোগ হলো বলো,তাই ভাবলাম কদিন লুকিয়ে রাখি তোমার পাণ্ডুলিপি টা তারপর কোনো এক সময় আবার ছদ্দবেশে রেখে আসবো l এই নাও এই যে তোমার লেখাটা ,আমার সঙ্গেই আছে l
ব্যোমকেশ: আর সন্দেহ গিয়ে পড়বে অক্রুর বাবুর উপর, প্ল্যান ভালোই ছিল শুধু আমার ছেলের ক্যাপ্টেন স্পার্ক পাড়াই হলো কাল! আবার আপনার বিচার জটায়ুর হাতে ,কি লালু দা পুলিশ ডাকবো না কি?
জটায়ু :না পুলিশ আর ডাকতে হবে না নিজেদের মধ্যেকার ব্যাপার আর যখন মিটেই গেলো ,যাক আমার বই তো মহালয়াতেই বেরোচ্ছে আর সমস্যা কোথায়?
নিশাচর সোজা লালু দার পায়ে দাদা ক্ষমা করে দাও ভুল হয়েছে আর কোনো দিন হবে না!!!!!
জটায়ু: না না ঠিক আছে উঠো উঠো ক্ষিতীশ ! তোমার প্ল্যান আমার খুব ভালো লেগেছে এই সব প্লট নিয়েই লেখো না এখন থেকে দেখবে ঠিক বিক্রি হবে নিজে সৎ পথে থাকো
ব্যোমকেশ : ব্যাস আর কি হয়েইতো গেলো এক পাণ্ডুলিপি চুরি মাফ,লিখুন আপনি মন লাগিয়ে লিখুনআর আজ যা হলো সেটা আমাদের পাঁচ জনের মধ্যেই না হয় থাক কি বলেন মিঃ জটায়ু বাড়িয়ে পাকশী জটায়ু !
জটায়ু :ব্যোমকেশ বাবু আপনি পারেনও বটে,ফ্যান্টাবুলাস ব্যাপার কি বলো অক্রুর ভায়া কী হরেনডাস প্ল্যান! কী বলে আপনাকে যে ধন্যবাদ দেব !
কেন ত্রিনকার্ডসে ……………..
চলুন,
আমি আমার বই মেলার লেখার প্লট. পেয়েগেছি, নামও ready পান্ডুলিপির প্যানডোমনিয়াম
অজিত :বলেন কী লালুদা! হা হা হা……….
ব্যোমকেশ:লালুদার. ভাষায় কাল্টিভেট করতে হচ্ছে কী বলো অজিত, Ends Well that all’s well.
আরে কী নাম? বলো না ,
কে ?ক্ষিতিস চাকলাদার!,
হুম,
ব্যোমকেশ :সত্য চা করো না,পুঁটিরামের হাতের চা আর ভালো লাগে না, খোকা দেখি বইটা…….পাতা উল্টাতে উল্টাতে এ কী অজিত নিশাাচর অটোগ্রাফ যে???
ও তোমাকে তো বলাই হয় নি এটাই ওঁর ছদ্মনাম l
এই দেখো বই টা…..
(বই টা হাতে নিয়ে ) এই তো নিশাচর লেখা l
নামটা দেখলে আর হাতের লেখাটা দেখলে না …..
হাতের লেখাটা চিনতে পারলে না ?,
কী কার ?
তুমি, নিশাচর বাবুর নম্বর জানো?তাহলে ফোন করে বলো যে আগামীকাল সকালে কফি হাউসে একটা সাহিত্যসভা আছে ঠিক 11টায় আপনাকে আমন্ত্রণ করা হচ্ছে বলবে, ব্যানার্জী বই প্রকাশনী থেকে বলছি আর নাম বলবে অন্য কিছু একটা ,কী বুঝলে ? করো ?
কিন্তু কেন?
সাহিত্য আলোচনা হবে ,আরও দুটো ফোন করতে হবে লালুদা আর নন্দী কে
ওদের কী? মিথ্যে!
কি যে হেয়ালি করো?
করো ফোন দুটো করো, ( তিন জন কেই ফোন করে আমন্ত্রণ জানানো হয়ে গেলো )
ব্যোমকেশ কাজ শেষ ,সবাই আসছে কাল কিন্তু ব্যাপারটা কি সেটা তো বলো
বলবো অজিত কাল বলবো তোমাদের মতো পোর খাওয়া লেখক দের মাঝে আমি ,বেশ চাপের বিষয় !
সত্য খেতে দাও,আমি যাই,কাল কথা হবে অজিত সাহিত্য নিয়ে একটু পড়ি দেখি তোমাদের সাথে পারি কি না?
(ব্যোমকেশ আর কিছু বললো না ওর এটাই স্বভাব, সকল সাড়ে10টায় আমরা পৌঁছে গেলাম কফি হাউসে ) প্রথমে লালু দা এলেন
আসুন লালু দা, কী ব্যাপার আপনি?বসুন সব বলছি
(এর মধ্যেই নন্দী বাবু চলে এলেন )
আসুন ,বসুন নন্দী বাবু আর একজন এলেই সাহিত্য সভা শুরু করবো,তার আগে কফি বলি !
জটায়ু :কে মশাই?
কে আবার এক বিশেষ বন্ধু,একটু অপেক্ষা করুন l
আরে এসো এসো ক্ষিতিস,কী ব্যাপার অজিত দা তোমাকেও ডেকেছে নাকি?
আরে না না নিশাচরবাবু অজিতেরই তো ওই ব্যানার্জী হাউস,আপনি বসুন না কথা আছে ,
লালুদা,আপনার নতুন পাণ্ডুলিপি রয়েছে ক্ষিতিস বাবুর কাছেই
নিশাচর : কী কী ?কি বলছেন ব্যোমকেশ বাবু ?এর মানে কি ডেকে এনে অজিত দা?
বাহ! আপনি আমায় চিনলেন কি করে আপনার সাথে তো আলাপ হয়নি এর আগে , নাকি হয়েছে মিঃ দত্ত!!!!!
মানে?
এই নিশাচর আপনার বাড়ি যায় কাল মিথ্যা পরিচয় নিয়ে,আর পাণ্ডুলিপি হরন করেন,ওনার হাতের প্যাচার ট্যাটু আর. হাতের লেখা অক্রুর বাবুর নোটবুকে আর আমার ছেলের বই তে অটোগ্রাফ হুবহু এক, আরও আছে খোঁড়া সাজা বা চুরুট খাওয়া ………ইত্যাদি ইত্যাদি
এবার মাল যে ফেরত দিতে হবে ,যার জিনিস তাকে ফেরত দিন দেখি মিঃ নিশাচর !
নিশাচর :
Sorry ,লালু দা আসলে আমার লেখাও এবার পুজো তে বেরোচ্ছে আর আমি ভাবলাম তোমার টা বেরহলে আমার টা আর বিক্রি হবে না ,কত দিন পর লেখার সুযোগ হলো বলো,তাই ভাবলাম কদিন লুকিয়ে রাখি তোমার পাণ্ডুলিপি টা তারপর কোনো এক সময় আবার ছদ্দবেশে রেখে আসবো l এই নাও এই যে তোমার লেখাটা ,আমার সঙ্গেই আছে l
ব্যোমকেশ: আর সন্দেহ গিয়ে পড়বে অক্রুর বাবুর উপর, প্ল্যান ভালোই ছিল শুধু আমার ছেলের ক্যাপ্টেন স্পার্ক পাড়াই হলো কাল! আবার আপনার বিচার জটায়ুর হাতে ,কি লালু দা পুলিশ ডাকবো না কি?
জটায়ু :না পুলিশ আর ডাকতে হবে না নিজেদের মধ্যেকার ব্যাপার আর যখন মিটেই গেলো ,যাক আমার বই তো মহালয়াতেই বেরোচ্ছে আর সমস্যা কোথায়?
নিশাচর সোজা লালু দার পায়ে দাদা ক্ষমা করে দাও ভুল হয়েছে আর কোনো দিন হবে না!!!!!
জটায়ু: না না ঠিক আছে উঠো উঠো ক্ষিতীশ ! তোমার প্ল্যান আমার খুব ভালো লেগেছে এই সব প্লট নিয়েই লেখো না এখন থেকে দেখবে ঠিক বিক্রি হবে নিজে সৎ পথে থাকো
ব্যোমকেশ : ব্যাস আর কি হয়েইতো গেলো এক পাণ্ডুলিপি চুরি মাফ,লিখুন আপনি মন লাগিয়ে লিখুনআর আজ যা হলো সেটা আমাদের পাঁচ জনের মধ্যেই না হয় থাক কি বলেন মিঃ জটায়ু বাড়িয়ে পাকশী জটায়ু !
জটায়ু :ব্যোমকেশ বাবু আপনি পারেনও বটে,ফ্যান্টাবুলাস ব্যাপার কি বলো অক্রুর ভায়া কী হরেনডাস প্ল্যান! কী বলে আপনাকে যে ধন্যবাদ দেব !
কেন ত্রিনকার্ডসে ……………..
চলুন,
আমি আমার বই মেলার লেখার প্লট. পেয়েগেছি, নামও ready পান্ডুলিপির প্যানডোমনিয়াম
অজিত :বলেন কী লালুদা! হা হা হা……….
ব্যোমকেশ:লালুদার. ভাষায় কাল্টিভেট করতে হচ্ছে কী বলো অজিত, Ends Well that all’s well.
************
রচনায় : সৌভিক রায়