বিদায় বন্ধু আবার দেখা হবে,
বটু কৃষ্ণ হালদার
ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই, চাইলে ও ক্ষণিকের জন্য ও তোমাকে আর পাবো না। তোমার বিদায়ী লগ্নে মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছে সবার। ঠিক যেমন উমা ফিরে যায় তার স্বামীর ঘরে। আরো একটা রঙিন বসন্তের ইচ্ছা মৃত্যু ঘটে গেলো। তবে বিধির বিধান কে উপেক্ষা করার সাহস আমাদের কারো নেই। কারণ সময় তার গতিতে চলবে, আর আমাদের সেই সময়ের তালে তালে নাচতে হবে। তাই বিদায় বন্ধু, আবার দেখা হবে। যদি কোনো দিন আমার কথা মনে পড়ে, তাহলে দেখা করে যেও ক্ষণিকের তরে, দেখবে আমি তখনও দাঁড়িয়ে থাকব হৃদয়ের দক্ষিণ দুয়ার খুলে, নয়ত জলঙ্গীর তীরে। লাল মাটির মেঠো পথ ধরে,শাল,পলাশ, শিমুলের,পাশ দিয়ে হেঁটে যাব যখন তুমি থাকবে হৃদয়ের সংগোপনে। হয়তো আমি দাঁড়িয়ে থাকব কৃষ্ণ চুড়ার তলে, নয়তো গোল দীঘির পাড়ে। রাখাল গরুর পালের সাথে আমিও তোমার মতো হেঁটে যাব মাইলের পর মাইল। তাই আবার বলছি বিদায় বন্ধু আবার দেখা হবে। তবে পুরনো স্মৃতি কে মনি কোঠায় রেখে কষ্ট পাওয়া নয়, নতুন কে বরণ করে নেবার পালা। তাই বন্ধু পিছনে ফিরে তাকিয়ে কষ্ট পাবার নয়, সামনে এগিয়ে চলো উদ্ধ শ্বাসে। কি পেয়েছো, আর কি হারিয়েছ তার হিসেব কষতে যেও না। আগামী তে তুমি কি দেবে তার চিন্তা করো। হিংসা,বিবাদ, ঘৃণা ত্যাগ করে আমরা একে অপরকে তরে মহীরূহ হয়ে ওঠার চেষ্টা করি। আমার দেশ কে বাঁচিয়ে রাখার শপথ গ্রহণ করি। আমরা একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠতে পারি তার চেষ্টা করব। সৎ, পবিত্র, নির্লোভ জীবন যাপন করব। যে কোনো সমস্যায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। শিশুদের উচিৎ শিক্ষা দিতে হবে।সমাজের যুব সমাজকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাবার প্রয়াস করতে হবে। কারণ তারাই দেশের একমাত্র সহায় সম্বল ভবিষ্যত। আসুন নতুন বছরের শুরুতে আমরা প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হই বাঁচব তো দেশের জন্য, মরব তো দেশের কোলে। আসুন শপথ গ্রহণ করি, অকারণে একটা মায়ের যেন কোল শূন্য যেন না হয়, আরো একটা নির্ভয়া, আসিফা, কামদুনি, প্রিয়াঙ্কা র মত ফুলের কুঁড়ি গুলি ঝরে না পড়ে।কারণ এই দেশ আমার আপনার সবার স্বপ্নের ভারত বর্ষ। আর এই গুলো যদি সঠিক ভাবে মেনে চলতে পারি আখেরে লাভ আমাদের, প্রকৃত মানবিকতায় গড়ে উঠবে ভারত বর্ষ। তাই তো কথায় আছে” মারনে সে বাঁচা নে বালা ভগবান হোতা হ্যায়”।
সত্যি আমাদের স্বপ্নের দেশ ভারতবর্ষ। মাগো এই দেশে তে জন্ম আমার এই দেশেতে মরি। জাত ধর্ম নির্বিশেষে এই দেশের গঙ্গা নদীর জল পান করে জীবন জুড়াই। এখন ও এই দেশের কোনো স্টেশন এ আব্দুল চাচা কৃষ্ণ নাম গেয়ে ভিক্ষা করে। মুসলিম ভাই হিন্দু বোনের বাড়িতে ভাই ফোঁটা নিতে যায়। রহিম চাচা দুর্গার মূর্তি বানায়। মুসলিম প্রতিবেশীর দেহ হিন্দু দের কাঁধে করে কবর স্থানে যায়। কেরালায় মুসলিম ভাইরা নোংরা জলে দাঁড়িয়ে মন্দির পরিষ্কার করে। এটাই আমাদের দেশের সংস্কৃতি। সেই সংস্কৃতি আজ বিপন্ন। এই বাংলায় স্বামী বিবেকানন্দ,রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর,রাজা রামমোহন রায়,মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর,ডিরোজিও, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস, জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। সেই বাংলার সংস্কৃতি আজ বিপন্ন। এই দেশ কে স্বাধীন করতে হাজার হাজার সন্তান নিজেদের জীবন দিয়েছেন। কত মা সন্তান হারানোর ব্যাথা নিয়ে ও হাসি মুখে বিদায় দিয়েছেন। কত শিশু জ্ঞান হবার আগেই পিতার পরম স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই এ সময়ে আবার গাইতে ইচ্ছে করে”মুক্তির মন্দির সোপান তলে, কত প্রাণ হলো বলিদান”। হাজার হাজার মানুষ জীবনের বিনিময়ে এই দেশ কে আমাদের হাতে তুলে দিয়ে দিয়ে গেছে তা কি ধ্বংস, ও কলুষিত হওয়ার জন্য। তাই সংকল্প করি দেশ কে বাঁচিয়ে রাখার। কারণ আমাদের দেশ যদি কলুষিত, দূষিত হয়ে পড়ে তাহলে আমরাও কলুষিত ও দূষিত হয়ে যাব। দেশ যদি ধ্বংস হয় আমরাও ধ্বংস হয়ে যাব আর তার জন্য দায়ী থাকব আমরা নিজেরাই। এর কোনোদিন কেউ বলতে পারবে না যে”ভারত আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে”। তাই ভাবনা চিন্তা করে পা ফেলতে হবে, ধ্বংস হওয়ার আগে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ব্যাবস্থা করতে হবে। হচ্ছে হবে, করছি করব নয়, সময়ের আগে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে আমাদের সবার। তবেই বাঁচবে দেশ, বাঁচবে আমাদের ভবিষ্যত।9