কবিতা : আদম পাহাড়ে আদমের পা, ইভ ও সনাতন
( ৭৬৮ পংক্তি)
ঋদেনদিক মিত্রো ( ভারত )
|| ছোট-ছোট পংক্তি, তাড়াতাড়ি পড়ে ফেলবেন। তাই পংক্তির সংখ্যা দেখে ভয় নেই। তবে, লেখার মাঝে-মাঝে বিজ্ঞাপন আসে একের পর এক, এটা অবস্যই ভালো, কিন্তু সেই বিজ্ঞাপন বা ফাঁকা রঙ্গিন বা সাদা অংশ সরিয়ে নিচে নেমে পুরো তলা পর্যন্ত গিয়ে কবিতাটা আগে দেখে নিন। তারপর পড়ুন প্রিয় পাঠক-পাঠিকা। যে কোনো লেখা পড়বেন সেই লেখার শেষে নেমে, তারপর উপরে উঠে প্রথম থেকে। অনেকে ভুলে মাঝের কোনো বিজ্ঞাপন বা সাদা ফাঁক দেখে ভাবেন, সেখানে বোধ হয় শেষ। কিন্তু তা নয়। এই সতর্কতা বজায় রাখবেন। ||
[ A research Bengali poem like “Adom pahare Adomer pa O Eve O Sanatana, i.e. “A foot print on the Adom Mountain, and Eve including Sanatana”, written by Ridendick Mitro. It is written to make the self construction with logic in the humans as the fact truly known to the poet. Please, believe you are a human, and in this value of eternity be open eyed describing. This poem is not liable for those people who act innocent. But, anybodies can write oppositely if they think this poem is wrong logically.]
——————
আদম পাহাড়ে আদমের পা, ইভ ও সনাতন
—————————–
ঋদেনদিক মিত্রো ( ভারত )
[ (১) তথ্য ও উৎসাহ ও কবিতাটি পরীক্ষিত : শীষ মহাম্মদ, কবি, সম্পাদক, মুদ্রিত ত্রৈমাসিক “নবারুণ”, ও আডমিন : Potrika Nabarun — হোয়াটসাপ গ্রুপ পত্রিকা, একজন মূখ্য উপদেষ্টা “নওদা বইমেলা” ও মুক্ত চিন্তার সমাজ সংস্কারক, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত। উনার মুক্ত চিন্তার কাজের জন্য উনাকে নিয়ে “আনন্দবাজার পত্রিকা”-য় সংবাদ, “চাঁদা আদায় থেকে প্রতিমার বায়না, সব দায়িত্ব শিস মহম্মদের”, শারদীয়া উপলক্ষে মুর্শিদাবাদ জেলা পৃষ্ঠা –২, শুক্রবার ১২ অক্টোবর, ২০১৮।
(২) তথ্যসূত্র : আমাদের হিন্দুস্থান, ওদের হিন্দুস্থান, — দেবাশিস চক্রবর্তী, 15 Jan, 2023, www.ganashakti.com ( গনশক্তি সারাক্ষণ )
(৩) বিবিধ ইউটুব ও দিক নির্দেশে ব্যাক্তিগত আলোচনা। ]
————————–
“Enlightenment is the education in the real structure,
To promote it in the Universe Humans are there,
It is religion to be involved with it,
Cause that man is the thinker with free merit.”
— Ridendick Mitro, India
[ ১ ]
“আদম পাহাড়ে আদমের পা,
ইভ ও সনাতন”,
এই কবিতাটা লিখছি আমি
মানব জাতি যখন —
নানা রকমের বিসৃঙ্খলা
নিয়ে হয় দিশেহারা,
সেখান থেকেই মুক্ত করতে
এই লেখনির ধারা।
মানুষের থেকে ভুল প্রবনতা
পরপর না বেরুলে —
যুগযুগ ধরে মানুষ থাকবে
এক জায়গায় ঝুলে।
আমি ঋদেনদিক মিত্রো,
করবে না কেউ miss,
পেশায় লেখক ইংরেজি ও
বাংলা আর স্প্যানিস।
স্প্যানিসে এসেছি অনেক পরে,
শিখবার পর ধরেছি,
সঠিক জায়গা পাবার জন্য
কত যে যুদ্ধ করেছি।
পুরো কবিতাটা আগে পড়ে দেখ
মানুষের বুদ্ধিতে,
কোনো ধর্মকে বুদ্ধি বেচো না,
আগেই দিলাম লিখে।
[ ২ ]
জ্ঞানী না হয়ে অজ্ঞরা যদি
জয় শ্রীরামটা হাঁকে,
তাহলে তো ভাই হিন্দু ধর্ম
ঢুকে গেল পচা পাঁকে।
তা বলে বলিনা, সকলেই তারা
অজ্ঞ, অবোধ, শীর্ণ,
আমি যা বলছি, জ্ঞান না বাড়ালে
হতে হবে নিশ্চিহ্ন।
আলো না পাওয়া দিশাহীনদের
আগে দিতে হবে আলো,
তারাই বুঝুক নিজে-নিজে থেকে
কেন ও কোনটা ভালো।
সেইটাই হবে সনাতন পথ,
সমাজকে হবে গড়া,
নির্বোধ থেকে মানুষের রূপ
কার্যে ঘাটের মড়া।
এসো জেনে নিই অনেক বিষয়,
ধর্মটা নিয়ে বিস্তার,
ধর্মের নানা গোলকধাঁধায়
পৃথিবীর নেই নিস্তার।
পৃথিবীর সব শিশু হল শিশু,
প্রতি নারী হল নারী,
তাদের হয়ে তো পেছাবো না আমি
ধরতে তরবারি।
নারীকেও ঘরে বেঁধে রাখাটা
পুরুষের মনরোগ,
অথবা সেটাই ধর্মের নামে
মহা শয়তানি যোগ।
পৃথিবীর প্রতি পুরুষেরা হল
কর্মে শক্তিমান,
যারা সৎ পথে টাকা আয় করে,
তাদেরকেই প্রণাম।
মহাবিশ্বের সব জীব আর
সকল প্রকৃতি যত,
তাদের প্রতিও ভালোবাসা দিয়ে
মাথাটাকে করি নত।
পৃথিবীর মাঝে যেথা অন্যায়,
ভুল বুঝানোর কর্ম,
সেখানেই আমি প্রতিবাদী হই,
এটাই আমার ধর্ম।
এই ধর্মেই মুগ্ধতা দিয়ে
ধন্য এই জীবন,
জ্ঞান ও সৃজনে মুক্ত বিচারে
পরিচয়ে সনাতন।
[ ৩ ]
প্রতি ধর্মের নানা গল্পে
আছে কিছু জিজ্ঞাসা,
বোধকে ঠকিয়ে কিছু মেনে নেওয়া,
সেটা কিসে ভালবাসা?
যে-ধর্মের নামে হোক তা,
হিন্দুও যদি হয়,
আজব গুজব গল্পগুলিতো
বিশ্বাসেরই তো নয়।
সেই মন নিয়ে প্রশ্নটা আসে
আদম ইভের নামে,
মানব জাতীর এই গল্প
সকলেই তা-ই জানে।
শ্রীলংকায় আদম পাহাড়ে
পায়ের যে-ছাপ আছে তো,
চুয়াত্তর বাই চব্বিশ ফুট
তার দৈর্ঘ ও প্রস্থ।
কেউ বা বলে, এ-ছাপ দৈর্ঘে
পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চি,
প্রস্থটা হল দুই ফুট ছয়,
নানান তথ্য দেখি।
কেউ বলছেন, দৈর্ঘে সে পা
ইঞ্চিতে আটষট্টি,
প্রস্থে আবার একত্রিশ, তাই
যেকোনো একটা সত্যি।
সেইটাই নাকি প্রথম মানুষ
আদমের পদ চিহ্ন,
শ্রীলংকার একটি পাহাড়ে
সেই ছাপ বিস্তৃর্ণ।
স্বর্গ থেকে মহান স্রষ্টা
পাঠিয়েছিলেন তাঁকে,
তিনি নেমেছেন নির্দিষ্ট
কোন্ এক পাহাড়টাতে,
সেই পাহাড়ের নাম হল তাই
পরে আদম পাহাড়,
একটি পায়ের ছাপ আছে কেন,
ছাপ কই আরেক পা-র?
এক পা-ই হোক, দুই পা-ই হোক,
ছাপ আছে সেইখানে,
আদম নামার সময় ছিল কি
সে-পাহাড় সেই স্থানে?
কবে সে পাহাড় জন্মেছিল,
কবে এসেছেন আদম,
হিন্দুস্থান এলাকায় তিনি
নামলেন কেন তখন?
এর মানে তিনি হিন্দু ধর্ম,
দেবো না এ-বুজরুকি,
ইতিহাস, ভূতত্ত্ব-জ্ঞানেই
হবো এর মুখোমুখি।
[ ৪ ]
যখন হয়নি লিপি বা ভাষা,
ভাবনা আসেনি কাজে,
প্রথম মানব বংশধরের
নাম আসে কিভাবে?
তাঁরই বংশধরদের নাম
রয়ে গেল লিপি রূপে,
কোন্ মাধ্যমে সেই সব নাম
ধরেছে তা মুখে-মুখে।
মানব জাতীর জন্ম হয়েছে
কোন্ পথে কে বা জানে,
এককোষি থেকে, নাকি ভিনগ্রহী,
কোন্ কাহিনী কে মানে!
প্রথম মানব এত বড় পা,
মানুষটি বড় কত,
তিনি আমাদের প্রথম পুরুষ,
বহু বিশ্বাস মতো।
তাঁর পা যদি পাহাড়েই নেমে
ছাপ হয় যদিওবা,
বাকি হাঁটাচলা করবার ছাপ
পাই না কোথাও তা।
ধর্ম মানে কি অনুভূতিকে
বিদায় জানিয়ে হাঁটা,
এখানেই করি মানব জাতিকে
ছোট এ-জিজ্ঞাসাটা।
কত বছরের আগে তিনি এসে
দিয়েছেন সন্তান,
তাঁরই বংশধর আমরা তো,
এত ছোট দেহ প্রাণ।
যেটা জানিনা তো, সেটাকে জানবো
অনুভবে ধাপে ধাপ,
জানতে চাইলে কেন হবে সেটা
ধর্মের কাছে পাপ?
দূরুহ সত্য সহসা আসেনা
চোখের প্রমাণ ধরে,
অনুভূতিতে তো সেটা খাপ খাবে
বিশ্বাসে স্তরে-স্তরে।
সেই পদ ছাপ কাদের দেখায়
দেখা হয়েছিল প্রথম,
কিভাবে যে বুঝেছিলেন তাঁরাই
সেই পা যাঁর, আদম।
ইভের পায়ের চিহ্ন কোথায়,
নারীরই সম্মানে —
ইভের পায়ের ছাপ থাকবে তো
প্রথম নারীর প্রমাণে।
নারী স্বত্তা কি মহাবিশ্বের
কাছে খুব বড় পাপি?
তাই কি ইভের পদ ছাপ নেই,
কলংক নারী জাতি?
আদম হলেন মহান এবং
ইভ যদি পাপি হন,
পাপির সঙ্গে মহান আদম
করেন কেন মিলন?
[ ৫ ]
আমি যদি ঠিক জানিনা ধর্ম,
ধর্মের মানে জানবো,
যিনি জানাবেন, তাঁর জ্ঞান বোধ
দেখে বুঝে তবে মানবো।
কোথায় কী কী লেখা রয়েছে
কী কী ধর্মগ্রন্থে,
সেইগুলি পড়ে মেনে নিতে হবে
লোকশ্রুতির মন্ত্রে।
কোন্ তথ্য কোত্থেকে লেখা,
সত্যতা কোন্ সূত্রের,
সেটা কতখানি কিভাবে হবে
কতটা বিশ্বাসের?
প্রশ্ন ছাড়াই বিশ্বাস করা,
এটা বুঝিয়েছে কারা,
দেশে ও বিশ্বে মানুষ ঠকাতে
ভেবেছিল শুধু যারা।
সেই মতো তারা মানুষের বোধে
দিয়েছিল শুধু ভয়,
ধর্মের পথে যাতে নেমে আসে
চেতনাতে সংশয়।
তাঁরা সকলেই ধর্ম বাহক,
সেটা বলছিনা আমি,
মানুষকে যারা ঠকাতে চেয়ে
করেছিল হানাহানি।
আরো আছে এক জিজ্ঞাসা বটে,
আদম প্রথমে নেমে
এক পায়ে নাকি দাঁড়িয়ে ছিলেন
পাপ হয়েছিল জেনে।
স্বর্গ থেকে কিভাবে এলেন
আদম ও ইভ প্রেম,
সেই গল্প তো মুর্খ ও জ্ঞানী
সকলে ভালো জানেন।
তাই তিনি নাকি ঈশ্বরকে
এভাবেই চান ক্ষমা,
ক্ষমা চাইবার এই পদ্ধতি
হিন্দুদের উপমা।
তীতিক্ষা দিয়ে হিন্দুদের হয়
ক্ষমায় সমর্পণ,
সেই পদ্ধতি নিয়েছিলেন তো
প্রথম মানব আদম।
অনেক বছর দাঁড়ানোর পরে
পাহাড়ে দেবেছে পা,
সেই জন্যই ছাপ হয়ে গেছে
থেবে গিয়ে এতোটা।
[ ৬ ]
অনুভব থেকে জিজ্ঞাসা আসে,
মানব মনের বিভাবে,
যারা মানবে না এই অধিকার,
মানাবো তা কিভাবে?
ইসলামে যদি আদম ছিলেন,
অংকটা দিয়ে মাপেন,
নামাজ না পড়ে এক পায়ে তিনি
কেন বা দাঁড়িয়ে থাকেন।
খ্রিষ্টান যদি ছিলেন আদম,
তখন কোথায় খ্রিষ্ট,
সকলেই দেখি গল্পগুলিকে
নিয়ে করে স্বাদু মিষ্ট।
কেউ যদি বলো, আদম আসলে
এসেই নামাজ পড়েন,
তখন নামাজ বা প্রার্থণা
কিভাবে শিখে তা করেন?
তাহলে আদম যদি ঠিক হন
সত্যি প্রথম নবী,
তবে তিনি কেন নামাজ না করে
নিলেন ভিন্ন ছবি?
কিন্তু এমন কাহিনী শোনায়
ইসলামে যারা আছে,
প্রথম মানব আদমই প্রথম
নবী তো তাদের কাছে।
আছে খ্রিষ্টান, ইহুদি, হিন্দু,
বিশ্বাসে একই দৃশ্যে,
আদমকেই তো মেনেছিল তারা
প্রথম মানব, বিশ্বে।
কিন্তু সেটাকে ধর্মেতে টেনে
কেন বা গল্প হবে,
মানুষ এসেছে মানুষের রূপে,
বুঝি সেটা অনুভবে!
খ্রিষ্টান ও অন্যে ভাইয়েরা,
জানিনা তাদের বিশ্বাস,
জানিনা তাদের এই পদ ছাপে
কিরকম আছে উচ্ছাস।
এখানে আরো তো গল্প রয়েছে
এখানে আদম কেন যে
এসে নামলেন, যে মাটি পরে
সনাতন হয়ে গেছে।
শোনা গিয়েছে আরো যে কাহিনী
আরবে জেদ্দা দ্বীপেতে,
ইভ নেমেছেন একই সময়ে
আরবের ঐ স্থানেতে।
তারপর নাকি শ্রীলংকা থেকে
আদম করেন ভ্রমন,
মক্কায় হয় ঈভের সঙ্গে
বন্ধুত্ব ও রমন,
তাহলে আদম ঈভের ছেলেরা
সেই তর্কেই সনাতন,
এই সুবিধেতে ঢুকে পড়ে আমি
বলব না সেরকম।
[ ৭ ]
মানুষের ইতিহাস খুঁজতে
আনবো না আর কিছু,
সংকীর্ণতা যেন না ধরে
স্বভাবের পিছু-পিছু।
এই সচেতনতাই সনাতন,
মুক্ত চিন্তা স্বাস,
মাথার উপরে চাপিয়ে দেবো না
অকারণ উচ্ছাস।
স্বর্গ থেকে আদম আবার
কালো পাথরের টুকরো —
হাতে করে নিয়ে এসেই ছিলেন,
এই সংবাদও বড়।
কাবাগৃহেতে আছে সে পাথর
অতি সংরক্ষিত,
যাঁরা হজে যান, সেই পাথরেতে
চুম্বন দেন স্থিত।
এই পাথরের ইতিহাস নিয়ে
আছে আরো নানা মত,
বিশ্বাসে যদি ভিন্নতা থাকে,
কোন্ ধারণাটা সৎ।
বিশ্বাসে নেই কোনো সঠিকতা,
কিভাবে আসছে ভক্তি,
ভক্তি তো আসে সেইটাই থেকে
যেটা জানা গেছে সত্যি।
সনাতনিদের বিশ্বাস হল
এটি হল শিবলিঙ্গ,
সেটাকেই দেন যত্নেতে চুমু
হজের যাত্রী বৃন্দ।
এটাও তো হল মূর্তি পুজার
আরেক রকম দিক,
যা কিছুই দেখি, গ্রহণ করি,
সবই তো পৌত্তলিক।
[ ৮ ]
এটাকেই বলে কাবা শরীফ, আর
তথ্য বেশ গভীর,
এইটাই নাকি ছিল পূর্বের
কাবেশ্বর মন্দির।
কাবা শরীফে মানুষেরা এসে
নেড়া হয়ে করে স্নান,
তারপরে তারা পরিধান করে
কাপড়টা সাদা থান।
এই সব প্রথা সনাতনদের,
ইতিহাস তাই বলে,
তা-ই বলে কি সনাতন হয়ে
নিষ্কর্মার দলে —
নাম লিখালে মহান হলাম,
এ তো বড় বেয়াদুপি,
গুণেতে মানুষ না হলে তখন
পরিচয় বুজরুকি।
ইতিহাস আর বিশ্বাসগুলি
করে খুব নাচানাচি,
বিশ্বাস শুধু করিনা তো যেটা,
আমরা মানবজাতি।
ভুল চিন্তার পথ কি ধর্ম,
যে-ধর্মই হোক,
তাতে তো বাঁধা হয়ে গিয়ে থাকে
মানব জাতির চোখ।
নানা কল্পনা মিশে হয়েছিল
নানান সাহিত্য,
সেইগুলিকে কি সত্য বলে
মানার দায়িত্ব?
ধর্মের বোকা-বোকা গল্পে
বিশ্বাস রাখি বলে,
সংসার আর সমাজ জীবনে
ঠকে যাই জলে স্থলে।
সুক্ষ্ম চিন্তা, সুক্ষ্ম বিচার,
অতি সতর্ক বোধ,
সেই সঙ্গে সৎ সাহসের
উজ্জ্বল অনুভব,
এইগুলি হল প্রাণের ধর্ম,
সেইগুলি ছেড়ে দিয়ে —
আমরা চলেছি আজব রীতিতে
ধর্মকে চালিয়ে।
কাদের তুষ্ট করতে আমরা
ভুলকেও নেব মেনে,
জন্মেছি তো মানুষ হিসেবে
মুক্ত স্বাধীন জেনে।
মুক্ত স্বাধীন হয়ে যদি করি
ভুলেতে দাসত্ব,
তখন কিকরে পাবো খুঁজে আর
জীবনের সার সত্য?
[ ৯ ]
কাবা শরীফের আগের কাহিনী,
হিন্দু ধর্ম ছিল,
শতাধিক দেবদেবীদের নিয়ে
পুজাটা গন্য ছিল।
কিন্তু সেসব বহু চিন্তার
ক্ষুরধার ভাবনাতে —
অনেকের যেতে অসুবিধে হতো
তাদের জ্ঞানের মাপে।
নবী হজরৎ, মানে যিনি হন
পরেতে বিশ্ব নবী,
বহু দেবদেবীদেরকে নিয়ে
এক করে দেন সবই।
বহু ঘরে থাকা বহু জনকে
একটি ঘরেতে আনলেন,
বহুজন তো একটি ঘরেই
মিলে মিশে আছে জানলেন।
উপলব্ধি তো এটাই বলবে,
মানুষের মন জানে,
বহু দেবদেবী এক হয়ে গেল
কাবা শরীফের স্থানে।
অংক কষেই বলছি শোন তো,
দশটি খাবার যদি
একটি থালায় ঢেলে নিয়ে করি
এক খাবারের ছবি,
সেটাও তো সেই থেকে গেল শেষে
দশ খাবারের জমা,
তাহলে একেশ্বর বাদ হল না কি
বহু শক্তির উপমা।
তর্কের খাতিরেই যদি বলি,
সনাতনেরই তো ধারা
একেশ্বর ইসলামে আসে
নতুন আদল দ্বারা।
সেই সাথে হল দেশ অনুযায়ী
পরিবেশ মত ভাষা,
সেই মত হয় খাদ্য, পোশাক,
রীতিনীতি ভালোবাসা।
মূল সত্য তো সেই সনাতন,
একজায়গায় গুছিয়ে,
সেই স্থান, কালে, সেই পরিবেশে
খাপ খাওয়া ভাব মিশিয়ে।
সনাতনি রূপে প্রার্থনা হল
নামাজের রূপ ধরে,
প্রার্থনাকে কি এড়াতে পেরেছে
আদলে নতুন করে?
হিন্দুতে বলে মন্ত্র, যেটাকে
ইসলামে বলে আয়াত,
খ্রীষ্টান বলে chantings,
থাকলো কোথায় ফারাক?
তা বলে বলিনা, “হিন্দু-হিন্দু”
বলে হাঁক দিলে শান্তি,
আমি যা বলছি, এবার ঘুচাও
ধর্মকে নিয়ে ভ্রান্তি।
হিন্দুর দলে ব্রাহ্মধর্ম,
তাঁরা একেশ্বরবাদি,
তা-ই বলে কি তাঁরা ইসলাম,
যদি এমনটা ভাবি,
তাহলেই ইসলামে থাকা প্রতি
মানুষ হবেই ব্রাহ্ম,
পালটা যুক্তি এভাবেও হলে
হবে না কি এটা মান্য?
যদি নাই হয়, তাহলে ভাবতো,
সবার সকল ভাবনা,
আর কিছু নয়, বহু সবজিকে
যে যেমন করে রান্না।
এত যে সবজি — মূল উপাদান,
সেইটাই সনাতন,
তারই মূল কথা বহু ব্যাখ্যায়
বলে হিন্দুর নিয়ম।
[ ১০ ]
হিন্দু সমাজ, মানে সৎ, ঠিক,
এসব বলছি নাকি?
হিন্দুর মাঝে সব সংস্কার
সব কি সঠিক খাঁটি?
আমি সেই কথা বলছি না তো,
আমি যা বলছি এই,
হিন্দু সনাতনের বাইরে
অন্য চিন্তা নেই।
কেউ বলবেন, সনাতনে নেই
মূর্তিপুজার রীতি,
তাহলে সনাতনকে কেন বা
বলে হিন্দুর নীতি?
এখানেই তবে বুঝিয়ে বলি,
যাবে তো বুঝতে পারা,
সনাতন মানে আধুনিকতাকে
গ্রহণ করার ধারা।
যে আধুনিকতায় আসবে
ভাবনার নানা সুখ,
সৃষ্টিশীলতা মুগ্ধ করবে
নিয়ে এক-এক রূপ।
সেটা নিয়ে কারা কোন্ স্বার্থে
লাগাবে নিজের কাজে,
সেই জন্য সনাতন কেন
ছোট হবে সমাজে?
তাই অহিন্দুরাও সনাতন,
মনে-মনে জানো তাই,
তাহলে তো সব সনাতনেতেই
রয়েছ সকলে স্থায়ী।
আরো এক কথা বলবার আছে,
সনাতন মানে প্রগতি,
বহু চিন্তার পথে এসেছিল
যেসব গভীর রীতি —
সেইগুলি করে প্রথমেই যারা,
তারাই হিন্দু হয়,
তাদের ভিতরে বদ লোক ঢুকে
সুনামকে করে ক্ষয়।
[ ১১ ]
ভারতবর্ষ বহু ঋতু আর
পরিবেশ নিয়ে গড়া,
তাই তো এখানে বহু চিন্তায়
হয়েছিল এত ভরা।
বহু চিন্তার বহু রকমের
প্রকাশে উজ্জলতা,
সেটাই তো হয় মানব জাতির
ভাবের বিচিত্রতা।
যে-দেশ থেকে যে-চিন্তায়
হোক না যেকোনো ধর্ম,
সবার ভিতরে সনাতন আছে,
একই চিন্তা মর্ম।
কেউ বলবেন, এই বিশ্বে
একজন শুধু নায়ক,
কোনো দেশে তাই থাকবে না কোনো
আলাদা জাতির জনক।
সেই যুক্তিতে যদি কিছু বলি
ঐ কথা শুনে আমি,
আরো যিনি বড়, তিনি তো আদম,
তাকেই সবাই টানি।
তখন কেন হে রেগে যাবে তুমি,
তোমারই সূত্র ধরে —
আদমকেই তো সব দেশ নিক
জাতীর জনক করে।
তর্ক আসে না তোমাদের মনে,
শিখিয়ে দেওয়া যে বুলি,
সেইগুলি নিয়ে ভর্তি করছ
সারা জীবনের ঝুলি!
কেউ বলবেন, হিন্দুরা যদি
সিন্ধু থেকেই আসে,
তাহলে কিকরে এরা সনাতন
সুপ্রাচীন ইতিহাসে?
এর উত্তরে তবে বলি শোনো,
সিন্ধু না দিশারা,
সময় নিয়মে হিন্দু বলেই
গন্য হয়েছে যারা,
ঘটনাক্রমে তারা কোনোভাবে
হয়ে গেছে বহু চিন্তক,
তাদের ভাবনা হয় বহুমুখী,
কর্ম নানান পথ।
হিন্দু মানেই দেব জন্মা,
এসব মানিনা আমি,
হিন্দুর পরিচয়ে যারা আছে,
চিন্তাটা বহুগামি।
কোনো এক অজানায় হয়ে গেছে
তাদের এমন ধারা,
এর বাহিরে পাওয়া যাচ্ছে না,
নতুন আকাশ তারা।
[ ১২ ]
এরপরেও কি আমরা থাকবো
ধর্মের নামে বোকা,
যে যেমন বলে নিজের মতন,
অযুক্তি একরোখা।
হিন্দু মানেই তারা সব ঠিক,
ইসলাম মানে ভুল,
এসব কথাও বলছিনা আমি,
বলি সত্যের মূল,
সনাতন ছিল, সনাতন আছে,
প্রতি পদে দৃষ্টান্ত,
এই সত্যই আমরা জানলে,
হবো না তো উদ্ভ্রান্ত।
তবুও কী এক অন্ধ মোহে
বোধ হয়ে যায় জালি,
তাদের কাছেই নত হই, যারা
বোধে দেয় চুনকালি!
তেরোশো আঠের খ্রিষ্টাব্দে
আমির খসরু কবি —
“নুহ সিফির” কাব্যগ্রন্থে
দেন ভারতের ছবি,
এটা হল তো হিন্দুস্থান,
সুপ্রাচীন যুগ থেকে —
এত পবিত্র, পরিচ্ছন্ন,
সব কিছু তিনি দেখে —
লিখে গিয়েছেন ভারত নিয়ে
অনন্য সব তথ্য,
হিন্দুস্থান সেটাই, যেখানে
জ্ঞান ও শুদ্ধতা সত্য।
তিনি বলেছেন হিন্দুস্থান
এত মধুরতাময়,
স্বর্গে আদম অবাধ্য হতে
যখন তাড়ানো হয় —
তিনি খুঁজে-খুঁজে ভারতে এলেন,
যেটা হিন্দুস্থান,
যদি বা যেতেন আরব বা চিন,
কিংবা খুরাসান,
কয়েক ঘন্টা পরে পালাতেন
ছেড়ে সেইসব স্থান,
হিন্দুস্থান এত উন্নত
সকলের আসে টান।।
[ ১৩ ]
তিনি লিখেছেন আরো ঢের কিছু,
ময়ূর নিয়েও তথ্যে,
স্বর্গ থেকে বের করে দিতে
তখনি সে এলো মর্তে,
মর্তে এসেই বেছে নিল সে
শুধু হিন্দুস্থান,
তাইতো তখন ভারতেই ছিল
ময়ূর জাতের নাম।
কারণ ময়ূর হিন্দুস্থানে
পায় স্বর্গের সৌরভ,
হিন্দুস্থান মাটি এতোটাই
স্বর্গের মতো গৌরব।
কবি খসরু আরো বলেছেন,
সাপও স্বর্গ ধামে–
বহিষ্কৃত হবার পরেই
এলো হিন্দুস্থানে,
হিন্দুস্থানে সাপেরা অনেক
মহৎ এবং শান্ত,
কেউ তাদেরকে না জ্বালালে
তারা কামড়ায় না তো।
মানছি এসব ভাবনাটা ছিল
কবির মতন নিজের,
আসলে কতটা হিন্দুস্থান
জায়গা হিসেবে সুখের —
সেটা বলতেই এ-উদাহরণ
দিয়েছেন তিনি লেখায়,
এটাকে নিয়ে তো ভিন্ন তর্ক
আসবে না জানি এথায়।
কবি খসরু আরো বলেছেন,
আদম কেবল এখানে
খাবার খেয়েছে তৃপ্তির সাথে
প্রিয় হিন্দুস্থানে।
বিশ্বনবী হজরত তো
হিন্দুস্থানকেই —
বলছেন তাঁর প্রিয়তম দেশ,
নানান বিশ্লেষণেই।
এর মানে তো এই নয় বটে,
কোটি বছরের আগে
হিন্দুস্থান ছিল এই দেশ
সুসভ্যতার সাজে।
ভারতকে ঘিরে চারপাশে দেশ,
হিন্দুস্থান এলাকা,
সব দিক থেকে ছিল উন্নত,
সব প্রাণী সুখে থাকা।
সেই হিন্দুস্থান বাসীরা
কী করে হয় কাফের,
যাদের জ্ঞানে ও আচরণ কারো
হয় না মনস্তাপের।
সেই প্রমাণ তো আজো পাওয়া যায়,
নানা দেশি নানা ধর্মে–
এই দেশে এসে কত কী করছে
তাদের স্বার্থ জন্যে,
হিন্দুস্তান বাসীরা তো চুপ,
এইসব নিয়ে উদাসীন,
তাদের রক্তে সনাতণ গুণ
রেখেছে বিনয়ে অধীন।
ধর্ম বদলে হয়েছিল তারা
অনেকে ভিন্ন মুখি,
তবুও তাদের রক্তেই খেলে
সনাতন চুপিচুপি।
তাই হিন্দুস্থান মানে পুরোটাই
পাশাপাশি দেশ ঘিরে
সনাতন ক্রমে আসছে, আসবে,
পরপর ঠিক ফিরে।
পরপর দেখো ছড়িয়ে পড়েছে
সনাতন জাগরণ,
শুধু নিরামিষ আর হরিনাম
সর্বদা সংকীর্তন।
তুলসী, শঙ্খ, বেলপাতা, ধূনো,
শ্রীখোল, মন্দিরায়
চন্দন, ঝাঁই কাঁসরেই সে তো
আনন্দ ভেসে যায়।
কোন্ দ্রব্য কোন্ সময়েতে
লাগে কোন্ উপকারে,
সেটা নিয়ে হয় পূজাপার্বণ,
বহু দিক বিচারে।
কোন্ গন্ধ ও কোন্ খাদ্য,
কী ধরণের পানীয়,
কোন্ সময়েতে হয় উপকারী,
কোন্ পন্থায় জানিও।
[ ১৪ ]
সনাতন হলো সেই সব দিক
মিলিয়েই নানা পার্বন,
ভুল ব্যাবহারে যদি যা তা করো,
ঘা পেলো সনাতন।
সেই জন্যই উৎসব নিয়ে
যদি হয় সীমাছাড়া,
সকল ধর্ম অধর্ম হয়,
এরাও তো বেয়াড়া।
শব্দটা হোক, শব্দ দুষন —
করাটা অধর্ম,
উৎসব মানে হতে তো পারেনা
কেউ বা বিপন্ন।
সকল নেশাকে বর্জন করা,
শ্রেষ্ঠ ধর্মে পড়ে,
তখনি মানুষ নিজেকে মুক্ত
চিন্তায় শুরু গড়ে।
নেশা তো রয়েছে অনেক রকম,
নয় শুধু নেশা দ্রব্য,
পরের ক্ষতিটা চাওয়ার নেশাও
ক্ষমাহীন বেহদ্য।
কেউ বা আবার নেশার দ্রব্য
না খেয়েও নেশা খোর,
ধর্মের নামে অজ্ঞতা দিয়ে
সমাজে খাটায় জোর।
[ ১৫ ]
সঠিক চিন্তা ভাবনা যদি না
শিক্ষা ধারায় থাকে,
মানুষ বোঝে না উচিত, অনুচিত,
বেঁচে থাকে ঘুরপাকে।
কোন্-কোন্ সুর, কোন্ বাদ্য
কোন্ ধর্মের জন্য,
সুর ও বাদ্য বিচার নিয়েও
মানুষ কী বিপন্ন!
নানা দেশেতে, নানা সময়েতে
ছিল কত সুর, বাদ্য,
যেখানে যেমন খাপ খেয়েছিল,
যেখানে যেমন কার্য।
সুর, সঙ্গীত, বাদ্য, এসব
নিয়ে ধর্মকে বাঁধলে,
তুমি তো তাহলে নিজের তৈরি
আঁধারেই ঢুকে থাকলে।
নিজেদের কোনো বোধ থাকবে না,
অনুভবে হলে মুরগী,
ধর্ম মানে কি বন্দি রাখবে
তোমার চিন্তা, বুদ্ধি?
জন্ম থেকেই ধর্ম চলছে,
ধর্ম থেকেই বিভ্রাট,
বিভ্রাট আসে, চিন্তা করার
ক্ষমতাটা হলে কাত।
[ ১৬ ]
সনাতনি বলে পরিচয় দিলে
বলছি না তারা সেরা,
বলতে চাইছি, সেটাই ধর্ম,
ভাঙো তো বন্দি বেড়া।
প্রকৃতির নানা দ্রব্যের সাথে
সনাতন বোধ বিস্তার,
নানা উৎসবে পুজাপার্বনে
সেগুলিই হয় ব্যাবহার।
সনাতন মানে সেইটাই তো,
বরফের দেশে থাকলে —
কম্বল ঢেকে খাটে শুয়ে তুমি
মুক্ত চিন্তা ভাবলে —
সেটাকেও বলা হবে সনাতন,
কঠিন নিয়ম ছাড়া,
পরিবেশ মতো তুমি মেনে চলো
বাঁচার সুস্থ ধারা।
এখানেই তো সনাতন জয়ী,
চিন্তার ভিন রকম,
যদি তুমি বলো তুমি নাস্তিক,
সেটাও তো সনাতন।
[ ১৭ ]
ঈশ্বরে ডাকা সময় পাও না,
পথের নোংরা তুলে —
পথকে রাখো পরিচ্ছন্ন
পুজা প্রার্থণা ভুলে,
সেইটাই হবে সেরা সনাতন,
সনাতন ধর্মেতে,
সনাতন মানে কল্যান করো
সকলই কর্মেতে।
বরফের দেশে বরফ কাটছো,
এইটাই মনোরম,
যে-পরিবেশে যেটা ভালো হয়,
সেইটাই সনাতন।
অবস্যই তা হিংসা হবে না,
কিন্তু নিজেকে বাঁচাতে —
সময়োপযোগী পথ নিতে হয়,
প্রাণের সত্যটাতে।
যতটা পারবে চেষ্টা করবে —
অহিংসা পথ ধরা,
নামগানে ভাসে সকল পৃথিবী,
মধু আকুলতা ভরা।
[ ১৮ ]
এইসব সুখ পৃথিবীটা ছেয়ে
চলছে নানান দেশে,
তুমি এসো, চলো তাদের সঙ্গে
নাম কীর্তনে ভেসে।
পাশাপাশি বলি, বহু জ্ঞানে যদি
শিক্ষা না নিয়ে চলো,
নাম কীর্তনে বিশ্বের সব
কর্ম হবে কি, বলো।
সব দিকে থেকো অতি সতর্ক,
সব জ্ঞানে সচেতন,
তখনি তো নেবে পরিপূর্ণতা
জীবনের সনাতন।
নিজের সকল বিষয়কে বুঝে
পারিপার্শ্বিকতায়
কী করে চলবে, বলবে, করবে
নিজেরই সুক্ষতায় —
সেইটাই হল প্রাণের ধর্ম,
নিজের বুদ্ধি বলে —
সৎ থেকে চলো নিজের মতন,
পড়ো না কারোর ছলে।
প্রাণের ধর্ম হলো সনাতন,
যে যে-রূপেই ভাবো,
সনাতন মানে অন্যায় দেখে
মুক্ত বিচারে জাগো।
[ ১৯ ]
সনাতন মানে দেবে না তো তুমি
কারো কাছে কৈফিয়ৎ,
নিজ পরিচয়ে হও জ্ঞানী, গুণী,
কর্তব্যেই সৎ।
সনাতন মানে অনুভব আর
চোখ খুলে জ্ঞান শেখো,
শত্রু কূটিল তোমার ঘরেও
লুকিয়ে রয়েছে দেখো।
পক্ষপাতের আবেগেতে থেকে
থাকো যদি তুমি মূর্খ,
কোনো সনাতনে যাবে কি তখন
তোমার কষ্ট, দুঃখ?
মন্দকে বুঝে ছেঁটে ফেল আগে,
নাটক বুঝতে শেখো,
এইসব নিয়ে হলো সনাতন,
চোখ খুলে যদি দেখো।
সারা বিশ্বের ভালোগুলিকে
করো তুমি সঞ্চয়,
সকল জিনিস সৃষ্টি লোকের,
কোনো ধর্মের নয়।
যে কাজ করো, বুদ্ধি বিবেকে,
সেটাই বিশ্ব ধর্ম,
এর বাইরে সব পরিচয়
মার দাঙ্গার জন্য।
সনাতন মানে এ-কথা বলিনা,
অন্য ধর্মগুলি —
কোনো কিছু নয়, সবই বুজরুকি,
মিথ্যা কথার বুলি।
সব কথাগুলি মানুষের বলা
সকল ধর্মগ্রন্থে,
নানা চিন্তায় সেগুলি পূর্ণ,
লক্ষ্য অনন্তে।
কিন্তু সেগুলি জ্ঞান থেকে আসা
নানা চিন্তার প্রকরণ,
সেইগুলি সবই অসীমের কথা,
তার নাম সনাতন।
ভূগোল এবং ঐতিহাসিক
নানা কারণ ও ধারায়,
সেই সব জ্ঞান নানা দেশেতে
সমাজ জীবনে দাঁড়ায়।
সেগুলি আবার নানা মিশ্রনে
আরেক আদল হয়ে —
আধুনিক হয়ে মানুষের মাঝে
চলছে একেলা বয়ে।
সনাতন মানে যেটা তুমি ছিলে,
অসীমের মাঝে শূন্য,
এসেছ প্রাণের প্রমাণপত্রে
দেহ নিয়ে পরিপূর্ণ।
সেটা থেকে নাও শ্বাসপ্রশ্বাস,
সেটা থেকে “আমি” বোধ,
সেটার সঙ্গে করে যেও তুমি
বহ জ্ঞানে সংযোগ।
জ্ঞানের কী আর ধর্ম আলাদা?
জ্ঞানের ধর্ম অসীম,
সেই ধর্মেই তুমি ধর্মী,
নও কারো পরাধীন।
সময় ধারায় চলছে এসব
ভাবনার পরিবর্ধন,
এইসব নিয়ে যুগযুগ ধরে
চলমান সনাতন।
দেশ থেকে দেশে সনাতনে ভাসে,
কারা ভাসোনি গো, ভাসো,
বিশ্বশান্তি, আসছে, আসবে,
হে জগৎ, তুমি হাসো।
—————————–
( ২১, ২২, অক্টোবর, ১, ২ নভেম্বর ২০২৪)
—————————-
About the poet :–
ঋদেনদিক মিত্রো ( Ridendick Mitro ) পেশায় ইংরেজি ও বাংলাভাষায় কবি -উপন্যাসিক-গীতিকার-কলামিষ্ট-সমালোচক। স্প্যানিস ভাষা শিখেও শুরু করেছেন এই ভাষায় সাহিত্য করতে। কলকাতা, ভারত।
——————————–