ছেলের চিঠি
শ্যামল মন্ডল
**********
শ্রীচরণেষু মা ,
আমি তো মা ভাল’ই আছি
তোমার খবর বলো ?
তুমি কি সেই আগের মতো
সবার বোঝা তোল ?
আমি যে মা বড় হয়েছি
ভুলে’ই গেছি তোমায় ,
আজকে আমি ডাক্তার বাবু
থাকি কলকাতায় ।
তোমার বৌমা শিক্ষা দীক্ষায়
অতি উচ্চ মানে ,
কলেজে সে চাকরি করে
ব্রতী শিক্ষা দানে ।
তোমার নাতি মাস ছয়েকের
ঝিয়ের কাছে থাকে ,
আধো বোলে বাড়ির ঝি কে
মা-মা বলে ডাকে ।
চেয়ে ছিলে আসতে তুমি
শহর কলকাতায় ,
বুঝবে না মা তুমি এলে
বাড়তো কত দায়।
তোমার স্বভাব কেমন ছিল
সে তো আমি জানি ,
সারাটা বাড়ী মাথায় নিয়ে
টানতে কলের ঘাণি ।
ছোট বেলায় বাবার শাসন
তোমার স্নেহের হাত ,
দৌড়াদৌড়ি আর দুষ্টুমিতে
করতাম বাড়ি মাত ।
সেদিক থেকে তোমার নাতি
শান্ত স্বভাব হবে ,
কাজের মাসি থাকলে বাড়ি
চিন্তা কিসের তবে !
একটু খানি বয়স হলে
দেখিয়ে দেব তাকে ,
তখন’ই তো চিনবে সে তার
আসল মা যে কে !
অনেক বছর হয়ে গেল মা
তোমার কাছে যাইনি ,
বাবার শরীর কেমন আছে
সে খবরও পাইনি ।
মাসকাবারী মাসের খরচ
সময় মতো দেবো ,
আমার ভাবনা ছেড়ে মাগো
নিজের কথা ভেবো ।
আমি যে মা বড় হয়েছি
ছোট্ট শিশু নই ,
আশীষ করো আমি যেন
অনেক বড় হই ।
আসছে পূজায় সময় পেলে
তোমার কাছে যাব ,
তোমার হাতে ক্ষীরের পায়েস
আয়েস করে খাবো।
বাবার দিকে খেয়াল রেখো
নিজের কথা ভুলোনা ,
তুমি যে মা সবার সেরা
নেই যে কোন তুলনা ।
লিখবো কি আর বলো মাগো
লেখার অন্ত নাই ,
চেম্বারে যে যেতে হবে
এখন তবে যাই ।।
প্রণামান্তে -শ্যামল