কবিতা: মায়ের আগমনে
কলমে–নীতা কবি মুখার্জী
*****************
শরৎ এলো রে দশ দিক আজ আলোয় আলোয় ভরে
মেঘেদের ছুটি হয়ে গেছে তাই
রোদ্দুর খেলা করে।
মাঠ ঘাট সব সবুজে সবুজ শ্যামলিমা দিয়ে ভরা
ঘাসের শিশির মুক্তোবিন্দু রূপো দিয়ে যেন গড়া।
প্রবল উতাল প্রবাহের শেষে তটিনী হয়েছে শান্ত
দুই কূল সাথে করে প্রেমালাপ, প্রেম ছিলো তা সে জানতো।
কাশফুল আর শিউলীর ডালা বলে যেন উমা আসছে
পাখির কূজন বলে যেন তারা প্রকৃতিরে ভালোবাসছে।
দীঘি কালো জল করে টলটল কমল শালুক হাসে
মরাল মরালী করে জলকেলী দুজনের পাশে পাশে।
কচি শীষে ভরা ধানের আগা মাথা নাড়ে আর দোলে
গায় যেন তারা আগমনী গান শারদা আসছে বলে।
ছোটো ছেলেমেয়ে মন্দির পানে ছুটে যায় কলরবে
মাটির প্রতিমা গড়া শেষ হলে পূজা শুরু হবে তবে।
আকাশেতে যতো সাদা তূলোমেঘ দূর হতে দূরে ভাসে
ভ্রমর যেন গো মধু আহরণে ফুল হতে ফুলে আসে।
মাঝি মাল্লার ভাটিয়ালি গান মিশে যায় সাত সুরে
নৌকায় বসে নতূন বধূটি দেখে শুধু ঘুরে ঘুরে।
শরৎ তোমার অপরূপ রূপ,তাই যে গো তুমি রানী
ভুবনমোহন শোভা দেখে তাই আমরা যে হার মানি।
শারদ প্রভাতে পূজো পূজো রব আগমনী গানে ভরা
উমা যে আসছে বাপের বাড়ীতে পড়েছে যে তারই সাড়া
জগজ্জননী মা আমাদের দনুজদলন করে
অশুভ শক্তি হার মেনে আজ শুভকে বরণ করে।
দিকে দিকে আজ পড়েছে যে সাড়া মহা শোরগোল তাতে
শিশির ধোয়াবে রাঙ্গা দুটি পা বোধন রাতের প্রাতে।
মাগো তুমি এসে সুন্দর করো, করো মা ধরণী শুদ্ধ
অনাচারে আজ ভরে গেছে দেশ সমাজটা পাপবিদ্ধ।
দেবতারা যেথা হার মানে সেথা তোমারই তো জয় হয়
সমাজের কীট ধ্বংস করো মা , দাও মাগো বরাভয়।
আনন্দময়ীর আগমনে নাকি আনন্দে ভরে ওঠে
তোমার প্রসাদে দীনের মুখেও হাসিটুকু যেন ফোটে।