কবিতা ঃ সেরা ধর্ম ও পৃথিবী
[ সৎ মানুষেরা বিপন্নতার কারণ খুঁজে পাবেন, রেহাইয়ের পথ পাবেন, অসৎ কূটিলেরা দুশ্চিন্তিত হবেন। স্বাদে কোথাও নতুনত্ব আনতে, বক্তব্য রীতির ঘুর্ণনে আঙ্গিক বদলেছে, চলতে-চলতে। পাঠক, পাঠিকাকে বুঝতে হবে সেই স্বাদের গতির ধারা। সেই মত পড়তে হবে। সমাজ, সংসার, দেশ, বিশ্ব বিপন্ন সৎ মানুষের বিপনতার জন্য। সেই বিপন্নতা থেকে কিভাবে তাঁরা রেহাই পেতে পারেন, কিভাবে বুঝতে পারেন কিভাবে ও কেন, কখন, কোন-কোন সূত্র হতে বিপন্ন হচ্ছেন ও হতে পারেন কিভাবে। সেইসব গভীর অজানা রহস্যের কিছু দিক নিয়ে এটা লেখা হল। আরো হাজার বিষয় আছে এই নিয়ে, তবে এই কবিতার মধ্যে অনেক রকম সতর্ক চিন্তা খুঁজে পাবেন তাঁরা, চমকে যাবেন তখন, জীবনের ভিতর কত কী রকমের জটিল কূটিলদের চক্রান্ত আছে। ]
[ A Bengali poem like “Sera Dharma-O-Prithibi” i.e. Superior Religion & Mother Earth, discloses actual way for actual religion, and what is it, Written by Ridendick Mitro. It is written for humans unity and entire species peace. A research work. A writing for education to live and let leave without fear.]
———————————-
ঋদেনদিক মিত্রো ( ভারত )
[ ১ ]
সবাই বলে আমার ধর্ম সেরা,
তবে কেন দাঙ্গা রেসারেসি,
নিজের পরিচয়ে আগে ধর্মকে লাগায়,
এটাই করে সব নাগরিক বেশি।
সফলতা পাবে যে পথে হোক,
বিফলতা কেন আসে,
সে কারণ যদি খুঁজে পাচ্ছনা,
কূটিল আড়ালে হাসে।
জীবনের সব ক্ষেত্রে একই,
কারা ফল খায় ছিঁড়ে,
বোকা পরিবার প্রথায় তুমি তো
বোকা হয়ে যাও
গৃহ হতে বাইরে।
ঘরের ভিতরে গুরুজনেরাও
কত রকমের স্নেহে —
কার যে কখন কোন গোপনীয়
স্বার্থ খেলবে যে হে,
পরিবার মানে সবাই মহান,
এটা হলে বাস্তবে —
সন্দেহ নিয়ে খেলে কেন তারা,
কে কিভাবে কী কী পাবে?
পরিবার হতে সমাজ ধর্ম,
কিংবা হিন্দু, ইসলাম,
সব কিছু নিয়ে কবিতাটা লেখা,
সৎ লোকদের নতুন পরিত্রাণ।
দেখুন, এটা কি নতুন জ্ঞানের সন্ধান!
কঠিন সত্য এটাই,
যে আজ শিশু মিষ্টি নরম দেহ,
সকলেই তাকে করে তো আদর, স্নেহ,
শিশু হয়ে সে যা-যা দেখছে,
যা-যা শুনছে আদর নিতে-নিতে,
বড় হয়ে সে সেইগুলিকেই
চাইবে দখল দিতে।
কোথায় বা যায় স্নেহ, শ্রদ্ধা
এবং ভালোবাসা,
হায়রে জীবন, নিভৃতে কার কী আশা!
[ ২ ]
প্রথম যখন মানুষ আসলো
বিবর্তনের দ্বারা,
বলতে পারো কি কোন ধর্মে
ছিলো তখন তারা।
পরে-পরে, দেশ, কাল এবং
পরিস্থিতির চাপে —
নানান রকম রীতিনীতি এলো
পরে-পরে ধাপে-ধাপে।
সেইগুলি তো হিন্দু, আর
ইসলাম, খ্রীষ্টান,
এমনি নানান নামে হল তারা
নানান ভাবের নাম।
ভাবনাটা তো ভাবনা বটে,
বিচিত্র পথ মত,
সমগ্রতায় কেউ না গিয়ে
বাধিয়ে দেবেই জট,
কেউ বা বলে আমি হিন্দু,
কেউ বলে খ্রিষ্টান,
কেউ বলে আমি ইসলাম ভাই,
এমনি বাড়ায় দাম।
কেউ তো বলেনা — আমি তো মানুষ,
এইটাই পরিচয়,
আমার জীবন — মুক্ত চিন্তা,
আর কোনো কিছু নয়।
কেউ তো বলে না — প্রানী হত্যা
করে কেন হয় উৎসব?
কেউ তো বলে না প্রতিবাদ করা
সব চেয়ে গৌরব।
ওষুধে ভেজাল, খাদ্যে ভেজাল,
চারিদিকে ঘুষ, দালালি,
এইসব নিয়ে সবাই নীরব,
মুখে মেখে চুনকালি।
জলে, স্থলে আর আকাশে ছেয়ে
কত কী দুষন জমা,
পৃথিবী কাঁদছে, তার মধ্যেই
ধর্মের রমরমা।
[ ৩ ]
বাজারে দামের আগুন বইছে,
কত যে মানুষ অসহায়,
কত পশুপাখি, কীট, সকলেই
বাঁচতে তো তারা চায়!
এক ধর্মের লোক তাড়াচ্ছে
অন্য ধর্মীদের,
কত দেশে এই নৃসংসতা —
সমস্যা মানুষের।
যুদ্ধ অস্ত্র বানাতে চলছে
রেসারেসি জোরদার,
এরা সকলেই ধর্মে থেকেই
করে চলে ছারখার।
এরা কেউ বা হিন্দু, কেউ বা
ইসলাম, খ্রীষ্টান,
কেউ বা বৌদ্ধ, কেউ বা জৈন,
এমনি অনেক নাম।
ধর্মের পরিচয়টা দিয়েই
এরা সব শয়তান।
সব ধর্মেই আছে রহস্য
বিশেষ গোপন জ্ঞান,
সেইগুলি খুঁজে এসো তো মিলাই,
সেই দিকে দিই ধ্যান।
[ ৪ ]
কত রকমের জটিল জগৎ
ধর্মগ্রন্থে লুকানো,
প্রাকৃতিক কত শক্তিকে নিয়ে
কে কী করছে জানো?
সেই শক্তিকে নিয়ে কেউবা
করে অন্যের ক্ষতি,
কাছে থেকে বা অতিদূর থেকে
করে দেয় দুর্গতি।
আবার কেউবা নিজের ক্ষতির
গোপন কারণ বুঝে —
বুদ্ধির সাথে বিকল্প পথ
যদি নিতে পারে খুঁজে —
তবে বেঁচে গেল অনেক কিছুই
আরো বড় ক্ষতি থেকে,
ধর্মগ্রন্থ নিয়ে বেইমানি
ধর্মের সঙ্গেতে।
[ ৫ ]
মুক্ত চিত্তে সব কিছু জানা
জীবনে আসল ধর্ম,
ভালোমানুষের রূপের ভিতরে
কত হীন মন, কর্ম!
কে যে কখন এইসব করে —
কিংবা করবে কবে,
সেসব বুঝতে নিজের গভীরে
সতর্ক হতে হবে।
প্রতি মুহুর্তে অনুভব করো
কী হল কেন কোনটা,
অনুভব করে দাও ভাসিয়ে
অনেক সুদূরে মনটা।
এইসব কথা সাহিত্যে যদি
প্রকাশ করতে চাই,
অনেকে বলেন, কুসংস্কারে
এযুগেও আছো ভাই।
সেই তো আমায় কথার জালেতে
বানাতে চাইছে বোকা,
যাতে সত্যকে গভীরে বুঝে
কখোনো না হই চোখা।
বিশ্বে এবং মহাবিশ্বের
মাঝে কত কী যে গোপন,
সেইসব না বুঝার জন্য
মুর্খ রয়েছে মন।
স্থির হয়ে থাকো, একা-একা ভাবো,
কিভাবে এসেছ, থাকবে,
কিভাবে কোথায় কী বুঝে নিয়ে
কিভাবে কোনটা মাপবে।
[ ৬ ]
পরিবার হতে প্রতিবেশি আর
অতি দূরে কেউ থাকে,
কে কার জন্য কী উদ্দেশ্যে
কার ক্ষতি করে রাখে।
ধর্ম মানে কি নামের গায়েতে
ধর্মের পরিচয়,
ধর্ম মানে তো বহু কিছু জানা —
কত কিছু বিষ্ময়।
কে বা নাস্তিক, কে বা আস্তিক,
জগৎ রহস্যে —
কত কী রয়েছে সঠিক না বুঝে
তর্ক করেই মরছে।
শিক্ষায়, জ্ঞানে, প্রকাশ্যে যদি
এই সব না জানাই,
এত সাহিত্য, সংস্কৃতি আর
বিজ্ঞান পাঠ ছাই।
আসল সত্য আড়ালেতে রেখে
বাইরে কতকি চর্চা,
ওই সব যেন খেয়ালির হাতে
অঢেল অর্থ খরচা।
দুরন্ত সব কালো খেলোয়াড়
কে কোথায় কী খেলে,
তাদের রুখতে তুমি কী করে
নিজের ক্ষমতা মেলে —
তাদের সামলে কোন পথ নেবে,
অনেক জটিল সত্য,
এসব কিছুই না জেনে শুধু —
বোকা-বোকা আদর্শ।
[ ৭ ]
কিছু মানুষের সীমাবদ্ধ
জ্ঞানকে সেলাম দিতে —
মহাবিশ্বের দেওয়া কত জ্ঞান
পারবো না কেন নিতে?
ক্ষতি করতেই যারা কাছে ডাকে
বিচিত্র পথ, পন্থায়,
তারা ভালো জানে কিভাবে কোনটা
নেবে কোন কায়দায়।
তাদেরও তো আসে ক্ষতি,
এনিয়ে তাদের নেই তো চিন্তা, মতি।
দুর্জন কি নিজের ক্ষতিকে
স্বীকার করবে নাকি,
দুর্জন মানে যারা নিজেকে
নিজেরাই দেয় ফাঁকি।
বলতে বাধ্য হই,
বলতে বাধ্য হই,
মহাপুরুষের বানীতেই যদি
পৃথিবীটা যেত বদলে,
মহাপুরুষের স্মৃতি ও বানীতে
কেন বা আগুন জ্বলে?
আদর্শেরই বোকা ধারাপাত
মুখস্থ দিয়ে শিক্ষা,
তাই তো নষ্ট হয় এত সৎ
মানুষের কত নিষ্ঠা।
[ ৮ ]
সততা অনেক বড় শক্তি,
সেই সাথে বহু জ্ঞান,
এইসব যদি না থাকে তোমার
ভেঙে যাবে সব ধ্যান।
দান ধ্যানে নাকি অনেক পূণ্য,
তারা শেষে হয় ভিখারি,
কারণ, তারা তো চিনতে পারেনি
কারা বা তাদের শিকারি।
বড় কাজ দেয় শুধু বড় ফল,
নেগেটিভ আছে কোনোদিকে কে,
খেয়াল রাখবে, নইলে চোখের জল।
গুরুজনদের কথা শুনে নাকি
হয় যে অনেক কিছুই,
তবে কেন গুরুজনরা নিজেই
পান না বিপদে থৈ।
তবে এটা ঠিক, শুদ্ধ জনের
স্পর্শ বা কথা, ভাষা,
তা দিয়ে অনেক বিপদ কাটবে
এটা করা যায় আশা।
[ ৯ ]
কিন্তু, সেখানে শেষ নয় তো,
জীবন তো বহুদূর,
তীক্ষ্মতা ও বহু জ্ঞান ছাড়া
তোমায় পাকায় অসুর।
কার দেহে আছে কোন চুম্বক,
কতটা খারাপ, ভালো,
এসব অংক অনেক গভীর,
কে কিসে আঁধার, আলো।
আধারের মাত্রা এবং আলোর মাত্রা,
সুস্থির অনুভবে,
কার মাঝে আছে কখন কতটা
সেটাই ধরতে হবে।
কার সাথে কোন ধরনের চুম্বক,
কতদিন থেকে সরে চলে যায়
কারো বা স্থায়ী রয়ে যায় সব,
কেউ বা এনিয়ে সরব,
কেউ বা এনিয়ে নীরব।
ধান্দাবাজেরা অতি কায়দায়
ভালোর থেকেই নেবে,
অতি দূরে থেকে নানা পন্থায়
তোমাকে গুলিয়ে দেবে।
তারা রকমারি নেগেটিভ কাজ
করতে থাকবে ভেবে।
গল্পের গরু গাছে ওঠা নয়,
বছর-বছর নিজের উপরে
সহ্য করেছি বিপন্ন হয়ে
শত-শত দিনরাত,
পথে হেঁটে আর নির্ঘুম রাত জেগে।
[ ১০ ]
পজিটিভ দেহ মন নিয়ে যারা
চাইবে অগ্রগতি,
তাদের সঙ্গে নেগেটিভ যদি
পাশা খেলে যায় অতি,
তার ফলাফলে নাজেহাল হবে —
নেগেটিভ যে করছে,
পজিটিভ যে, সেও বুঝেশুঝে
যদি চালাকিটা ধরছে।
এসব না জেনে হচ্ছে শিক্ষা,
প্রচলিত কিছু ধারায়,
সেই সব নিয়ে আনন্দে সব
গর্বের ঝুঁটি নাড়ায়।
কারণ, এসব শিক্ষা দিলেই
নানা বাধা যদি আসে,
কেউ মানবে না, কেউ বিরক্ত,
কেউ বা অট্টহাসে।
বয়স, লিঙ্গ, ধর্ম, এসবে
নেই কোনো ভেদাভেদ,
দুষ্ট বুদ্ধি চিরকাল করে
অন্ধকারিয় জেদ।
তারা এইসব রহস্য জেনে
ভালোদের করে ক্ষতি,
ভালো লোকেরা তো বোকা সৎ হয়ে
পায় শুধু দুর্গতি।
[ ১১ ]
মন্দ লোকেরা ঠকানোর জ্ঞান
নিয়ে তারা ঠকাবে,
ভালো মানুষেরা না ঠকার জ্ঞান
নিয়ে তো নিজেকে বাঁচাবে।
নইলে খারাপ মানুষেরা চিরকাল
সৎদের নাচাবে।
এটাই গোপন কারণ,
এটাই গোপন কারণ,
খারাপ লোকেরা নিজেদেরকেও
করে চলে নাজেহাল,
স্থির হয়ে ভাবো সমাজ চলছে
কিভাবে টালমাটাল।
কাকে কী দিলে তুমি ডুবে যাবে,
কিংবা কারোর থেকে —
কী উপহার নিলে তুমিও যে
পাবেনা লক্ষ্যে যেতে।
এইসব নিয়ে কত রকমের
জ্ঞান, বোধ, সুক্ষ্মতা,
এইসব না শিখে যদি নাই চলো–
ধুলায় মিশবে সততা।
[ ১২ ]
কার থেকে কী নিলে বা কী দিলে
কার কিসে ভালো, মন্দ,
মহাবিশ্বের মাঝে এইসব
কত কী তরঙ্গ।
জীবনে জিজ্ঞাসা অনেক-অনেক বিস্তার,
সেইগুলিকে না জানো যদি
পাবেনা তো নিস্তার।
কূটিল প্যাঁচের চরিত্র কেউ
বদলেছিল কি কবে?
আমি তো জানিনা, যদি তুমি জানো,
প্রমাণ আনো তো তবে।
যদি বদলায়, পরের দৃশ্যে
কবে কী কাহিনী থাকে,
সেই দৃশ্যটা জানার বাইরে,
ভাবলে পাঁজর কাঁপে।
জনপ্রিয়তা পাবার জন্য
নিজে নিয়ে নিজে বাঁশ,
এইটাই নাকি সেরা মহত্ব,
নিজের দীর্ঘশ্বাস।
[ ১৩ ]
যাইহোক, আসি আগের কথায়,
ধর্ম নিয়েই খবরে,
ধর্ম মানেই এত রকমের
রহস্য আগে ও পরে।
ধর্মগ্রন্থ একটি গ্রন্থ,
আর কিছু নয় এটা,
গ্রন্থ মানেই জানার জন্য
অনেক চিন্তা লেখা।
তা থেকে ভালো ও মন্দগুলিকে
এসো তো আলাদা করি,
সেইসব নিয়ে মিলিত করে
নতুন পৃথিবী গড়ি।
শেষ হয়ে গেল সারা পৃথিবীটা
ধর্ম-ধর্ম করে,
কোনোও ধর্ম পারেনি তো ভাই
পৃথিবীকে দিতে গড়ে।
এই অভিযোগ আমি তো করছি
সব ধর্মকে ধরে,
হিংসা এবং আগ্রাসনেই
তারা মারে আর মরে।
পথেঘাটে এত অসহায় জীব
অযত্নে অসহায়।
কোনোও ধর্ম নেই কি কোথাও
তাদের ভালোবাসায়!
একটি কীটেও আঘাত লাগলে
মানুষ যেদিন কাঁদবে,
সেইদিন থেকে নিজের বোধের
ধর্মে মানুষ জাগবে।
রাজনীতি চলে — ধর্ম ও জাত
ভেদাভেদ বানিয়ে,
সেই রাজনীতি মানুষকে রাখে
রাষ্ট্রের হয়ে জাগিয়ে।
সকলের দেহে একই রক্ত,
মানব জাতিতে স্থিত,
ভিন্ন রীতিনীতির কারণে
নানা রূপে প্রকাশিত।
আমি হিন্দু, আমার মধ্যে
আলাদা স্বভাব রকম,
তুমি ইসলাম, তোমার ভিতরে
ভিন্ন জীবন যাপন।
কিন্তু সবার রূপটা মানুষ,
ধর্মটা দিলে বদলে,
রীতিনীতিগুলো যায় উল্টে —
ধর্মের চলাচলে।
যে-পরিচয় সমস্যা দেয়
সেই পরিচয় নিয়ে —
বাঁচা যায় নাকি স্বাচ্ছন্দ্যে—
জীবনকে সাজিয়ে?
[ ১৪ ]
ভীরু, কাপুরুষ, ক্ষুদ্র জ্ঞানী,
এবং সুবিধেবাদী,
এদের ধর্ম অধর্ম কী —
যারা করে কারসাজি।
কারসাজিকে কারসাজি বলা
অধর্ম যদি হয়,
সেই বিচারের বিরুদ্ধে আমি,
নেই কোনো সংশয়।
ভেবে দেখ তুমি, ছোটবেলা হতে
পরিবার থেকে রাষ্ট্র,
নানা রকমের বিভেদ বৃত্তি
নিয়েই শিক্ষা, শাস্ত্র।
তাহলে কিভাবে শান্তি আসবে
হিংস্র হবার ট্রেনিংয়ে?
এবার ভাবো তো কোন পথ নেবে,
সত্য মিথ্যে চিনে।
সৎ নাগরিক বলেন কেবল
অন্য ধর্মে শ্রদ্ধা —
এইটা থাকলে ধর্মে-ধর্মে
হিংসাটা হবে কব্জা।
কিন্তু একটি ধর্মে আমি,
অন্য ধর্মে তুমি,
কিকরে আমায় সমান শ্রদ্ধা
তুমি বা করবে শুনি।
সস্তার কিছু উপদেশ আর
মনোহারি কথাবার্তা,
এইসব নিয়ে চলে মানুষের
চালাকির জয়যাত্রা।
পুস্তক নিয়ে হয় ভাগাভাগ
পুস্তকে দিয়ে ধর্ম,
স্থির হয়ে তুমি ভাবোতো, — কেমন
আজব এসব কর্ম!
সবার বুকের ভিতর জমেছে
চুপিচুপি কত ক্ষোভ,
কিভাবে সেগুলি মুছে দিতে পারি
এসো করি অনুভব।
হিন্দু পীড়িত হিন্দুর দ্বারা,
ইসলাম দ্বারা ইসলাম,
খ্রীষ্টান দ্বারা খ্রীষ্টান কাঁদে,
সব এক পরিনাম।
এ তো গেল হে নিজের ধর্মে
যে যার অভিজ্ঞতা,
পর ধর্মের থেকে আচরন —
সেও তো আরেক কথা।
কেউ বা বলবে সনাতন আদি
ওটাই ধর্ম সেরা,
তাহলে কেন বা সনাতনে আছে
জাত বিভেদের বেড়া।
কেউ বলবে সনাতনে তা নেই,
বাহিরে অজ্ঞতায় —
নানা রকমের ভেদাভেদে মোড়া,
এভাবেই কেটে যায়।
তাহলে সেভাবে গঠন করো
ভাবনার সঠিকতায়।
ভালো ও মন্দ, পার্থক্য —
সেটা ধরে হোক জাত,
সেটা না করে রাষ্ট্রিয় ভুল —
মানুষকে করে ভাগ।
[ ১৫ ]
সনাতন মানে আদি অনন্ত
রুচি, চিন্তার ধারা,
ধর্মে তো আছে, কিন্তু জীবনে
বিপন্ন দিশেহারা।
ইসলামে তাই, খ্রীষ্টানে তাই,
ভেদাভেদ আর শোষন,
চাটুকারিতা ও সুবিধেবাদিতা
নিয়েই চলছে জীবন।
যারা মূর্খ, অল্প শিক্ষা,
কোন অধিকারে তারা–
কোন ধর্মের হয়ে দাবী করে
কোন যুক্তির দ্বারা?
সবাই এগুক উজ্জ্বল জ্ঞানে,
জ্ঞানী হোক খোলা শিক্ষায়,
কিন্তু যারাই জানেনা নিজেকে,
তারা কে কেন কোন ধর্মের —
দাবী করে কোন বিদ্যায়?
যারা শিক্ষিত, উচ্চ শিক্ষা,
মুক্ত চিন্তা করেনা,
যারা অন্যায় দেখলে কখোনো
সাহস দিয়ে তো লড়েনা,
যারা ধর্মকে নিয়েই নিজের
নামের পাশে লাগায়,
তারা নিজে জানে তারা অযোগ্য
নিজের যোগ্যতায়।
কেউবা হয় তো ব্যাক্তি হিসেবে
অনেক বিরাট — প্রানে,
অভ্যেস বসে পরিচয় দেয় —
কোনো ধর্মের নামে।
তাদের কথাটা ছেড়েই দিলাম,
কিন্তু তারাও ভাববে,
মুক্ত দুচোখে নিজেকে দেখার
ইচ্ছেটা আজ জাগবে।
আসলে পারস্পরিক ব্যাপার
করেছে এতোটা সংশয়,
মন নাই চায়, তবুও দেখাই
চলে আসা কোনো ধর্মাভ্যাসে
নিজেরই তো পরিচয়।
[ ১৬ ]
কী বা রাজনীতি, কিবা ধর্ম,
কী বা জাতপাত গণ্ডি,
কাদের দিয়েছি শান্তির কাজ,
চিন্তায় যারা বন্দী!
কেউ বা আমায় সাবধান করে,
এত সোজা কথা বললে —
কত নাম, যশ, লাভ আটকাবে,
এতোটা সাহসে চললে।
এর উত্তরে তবে বলি শোনো,
নিজের বিবেক বুদ্ধি —
যদি মনে করে নিজেকে মানুষ,
নই কারো পোষা মুরগি,
এই অনুভূতি কত তৃপ্তির,
এর চেয়ে বেশি প্রাপ্তি —
আছে নাকি এই সারা দুনিয়ায়,
এর চেয়ে দেবে শান্তি?
জীবনে যেটুকু পারি, যদি করি
নিরপেক্ষতা মেনে –,
তবেই মানব জীবন ধন্য —
নিজেকে মানুষ জেনে।
আমার জ্ঞান ও সৎ সাহসের
বিনিময়ে যত গালি,
সেগুলি আমাকে সেরা সম্মান,
আমি দিই হাততালি।
প্রকৃতি থেকেই জন্ম নিয়ে —
প্রকৃতির ধর্মকে —
পরিচয় দিতে ভয় পেয়ে যাই,
কোনো সংস্কার পথে–
আলাদা রকম পরিচয় নিয়ে
লাগিয়ে নানান ছাপ — ,
সেটাকেই বলি নিজের ধর্ম,
সে দোষ কি হয় মাপ?
ধর্ম এতই শক্তিশালী,
ধর্ম ধরায় অস্ত্র,
কখোনো শান্তি আনতে পারে কি —
লক্ষ খুনির হস্ত।
পৃথিবীতে জন্মেছি,
পৃথিবীর দাবী সরিয়ে —
কার মন রেখে কথা বলে দেবো
কার ইচ্ছেকে ভরিয়ে?
————————————
( ২৮-২৯-৩০ জুন, ১লা জুলাই, ২০২৪, মাথা যন্ত্রণা ও জ্বরের সময় ও হোমিওপ্যাথিতে জ্বর ছেড়ে যাবার পর শরীরে আবার ঠান্ডা লেগে জ্বর ফেরে। আবার হোমিওপ্যাথি খেয়ে সেরে উঠতে-উঠতে সেই শরীরে লেখা।)
———————————–
ঋদেনদিক মিত্রো ( Ridendick Mitro ) পেশায় ইংরেজি ও বাংলাভাষায় কবি-উপন্যাসিক-গীতিকার-কলামিস্ট। স্প্যানিস শিখে, এই ভাষাতেও লেখার প্রস্তুতি চলছে। ভারত।
———————————–