Spread the love

কবিতা – মৃত্যুঞ্জয়ী

কলমে কবি : মনালি বসু

কি নামে ডাকি বলো তো তোমায়?
অপু?ফেলুদা?ক্ষিৎ দা?শ্যাম?
না কি ময়ুরবাহন?
একটি জীবন বা অগ্রদানী র সেই চরিত্রাভিনেতা!
পোস্তর দাদু?বা সাঁঝবাতি র বাবা?
না কি পরিণীতা র শেখর?
কালজয়ী গানের নায়ক ‘হয়তো তোমার জন্য!’
বাঙালির একমাত্র নায়কের সেই মনভোলানো নাচ
‘জীবনে কি পাব না’!
তবে জীবনের প্রথম প্রেম ফেলুদার সাথে,
পরে অবশ্য শ্যাম,ক্ষিৎ দা, শেখর
সকলের প্রেমেই পড়েছি।
দীর্ঘ পথচলা তোমার,
সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থা থেকে শুরু করে
পঁচাশি বছর বয়স পর্যন্ত।
হয়তো মারণ ভাইরাস কেড়ে না নিলে
আরও অনেক কিছু ই তুমি দিয়ে যেতে পারতে
ভারতীয় সংস্কৃতি কে।

ছোটোবেলা থেকে এটাই শুনে আসছি যে
কাকে পছন্দ?
মহানায়ক? না কি তুমি?
দুজনের অভিনয় প্রতিভা কে
দাঁড়িপাল্লা য় বসানোর ক্ষমতা
সে বয়সে আমার ছিল না,
আজও নেই।
তবে এটুকুই বুঝেছিলাম
এই তুলনা করতে গিয়ে
যারা তোমায় অপছন্দ করল
তারা নিজের অজান্তেই তোমায়
মহানায়কের আসনেই বসালো।
দীর্ঘদেহী মহান পরিচালকের মানসপুত্র তুমি,
মহানায়কের আখ্যান না পেয়েও
তুমি মহান নায়ক।
বাঙালির গড় উচ্চতা, দৃষ্টি,
সবের থেকে তুমি অনেক উঁচুতে।
প্রতিভাতেও।
অভিনয়ের পাশাপাশি তুমি নিজেকে তৈরি করেছিলে
লেখক, কবি,নাট্যকার,পরিচালক,
সম্পাদক, নাট্যকর্মী,
আবৃত্তিকার, গল্পকথক
প্রভৃতি বিভিন্ন রূপে।
শুধু রূপোলি পর্দাই নয়
তোমার অভিনয়ে ধন্য হয়েছে
মুক্তমঞ্চ ,রঙ্গমঞ্চ, ছোটপর্দা।

সমাজ তথা রাষ্ট্রের প্রয়োজনে
তুমি নেমেছ পথে,
কখনও প্রতিবাদী ভূমিকায়।
অন্যায়ের সাথে আপোষ কর নি কোনোদিন,
এইজন্য তোমায় অনেক পদ ছাড়তে হয়েছে।
তবু দমে যাও নি।
আজ তুমি গডফাদার, আইকন,নমস্য।
তোমার ছায়াছবির সংখ্যা
তুমি নিজেই জানো না।
এক সময় বলেছিলে সাড়ে তিনশোরও
কিছু বেশি।

তবু সব কিছুর ঊর্ধ্বে তুমি মানুষ,
পিতা,স্বামী, দাদু…..
সর্বোপরি প্রেমিক।
মৃত্যু কে জয় করতে না পেরেও
তুমি অকুতোভয়, মৃত্যুঞ্জয়ী,কিংবদন্তি।
তোমাকে হারিয়ে আজ সকলে
অশ্রুধারায় সিক্ত।
মনে হল হৃদয়ের খুব কাছের,
প্রিয় মানুষ কে হারালাম।
কারণ ‘জানি তুমি অনন্য’।।

🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱🌱

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *