ভারতবর্ষ, ভুলে গেছো তুমি মুর্শিদাবাদ নাম
[ বিরানব্বই লাইন কবিতা ]
————————————————–
ঋদেনদিক মিত্রো (কলকাতা, ভারত )
https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-2139129812952104 (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ভারতবর্ষ, ভুলে গেছ তুমি মুর্শিদাবাদ নাম,
যেখানে রয়েছে গৌরবময় তোমারি তো সম্মান,
ভুলে গেছো তুমি ভারতবর্ষ নবাব সিরাজ এখানে,
প্রাণ দিয়েছেন কী যন্ত্রনায় তোমারই তো সম্মানে,
সেই সতেরশ সাতান্ন সাল তারিখ তেইশে জুন,
পলাশীর প্রান্তরে যে-যুদ্ধ কাহিনী কী সকরুণ,
ক্লাইভ জয় পান হীন কৌশলে নবাবকে হারিয়ে,
সেই কাহিনীটা সারা পৃথিবীকে দিয়েছিলো নাড়িয়ে,
তারপর তুমি ভারতবর্ষ পরপর হলে পরাধীন,
প্রায় দুইশত বছর পরেই হয়েছিলে তুমি স্বাধীন,
সেই মুর্শিদাবাদ, নবাব সিরাজ, আবছা সে ইতিহাস,
সিরাজকে ‘হেলা করে হে ভারত, হারালে তো বিশ্বাস?
মীরজাফরের সঙ্গে তোমার তবে কি একই স্থান,
ভারতবর্ষ, ভুলে গেছো তুমি মুর্শিদাবাদ নাম!
নবাব সিরাজ কী ছিলেন তিনি দেশ ও বিশ্ব জানে,
যখন তুমিও ভাগ হয়নি তো ভারত, পাকিস্তান-এ,
কত বড়ো দেশে কোটি-কোটি ঘরে হয়েছিল আলোচিত,
নবাব সিরাজ নামে আ-সমুদ্র হিমাচল গর্বিত!
পঁচিশ বছর মাত্র বয়স নবাব সিরাজ যখন,
চৌদ্দ মাসের শাসনে দিলেন কত নবজাগরণ,
রাজতন্ত্রের পুরুষানুক্রমি নানা মন্দের মাঝে —
পরপর তিনি ভুলকে শুধরে মনযোগ দেন কাজে,
যাইহোক, তিনি হেরে গেলে পর ব্রিটিশ ধরেছে শাসন,
বিরাট ভারতবর্ষেতে এলো কত কী যে চিন্তন,
তারপর এলো নবজাগরণ মহিষী বিদুষী কত,
কত বীর আর বীরাঙ্গনার কাহিনী, জীবন ব্রত,
তারপর এলো উনিশ শ সাতচল্লিশ সাল যবে,
পনেরো আগস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা পেলে তবে,
তারপরও গেলো কত না বছর সিরাজ পাননি দাম,
ভারতবর্ষ, ভুলে গেছো তূমি , নবাব সিরাজ নাম!
নবাব সিরাজ যে-স্বাধীনতা রক্ষা করতে চেয়ে —
নিজের সকল কিছু খোয়ালেন ইতিহাসে যাই পেয়ে,
সেই স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে তুমি গো ভারতবর্ষ —
প্রায় দুইশত বছর ধরেই হয়েছিলে বিদ্ধস্ত!
তাহলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা কত বড় মাপে দ্রষ্টা,
এই সত্যটা কাকে যে বোঝাই, তিনি কত বড় স্রষ্টা,
উপলব্ধিতে সৃষ্টি করেন স্বাধীনতা কী জিনিস,
যেটা হারালেই জীবন শূন্য, অমৃতও লাগে বিষ,
সেই স্রষ্টার বাসগৃহ টুকু ভাগীরথী-জলে তলিয়ে,
কিছু ইট ভাঙা ডাঙায় রয়েছে প্রসাদের স্মৃতি জড়িয়ে,
সামসেরগঞ্জ, হীরাঝিলেতে ছিল সে প্রাসাদ বিরাট,
কত মানুষের আসা যাওয়া খাওয়া, আলোচনা দিনরাত,
হীরাঝিল মানে ছিল এক ঝিল, ইংরেজি হল লেক,
সেই জলে আহা খেলতো কত যে পাখপাখি অনেক,
হীরের মতন দ্যুতি ছড়াতো সেই ঝিলটার জলে,
জ্যোৎস্না রাত্রে আকাশ নামতো সে-জলের নিচে তলে!
কত কিছু দিয়ে হতো যে সাজানো সেই প্রসাদের রূপ,
রাত্তির বেলা সেই রূপ দেখে মানুষের কত সুখ!
সেকেলে তৈরী ঝাড়বাতি দিয়ে সব কিছু হতো সাজানো,
এই সব কি কাউকে কখনো জোর করে যায় ভাবানো?
প্রাসাদ কোথায় ক্ষয় হয়ে গিয়ে জঙ্গলে হয় ভর্তি,
প্রশ্নটা জাগে এখানে নবাব-প্রাসাদ ছিলো কি সত্যি,
প্রায় ছয় বিঘা ঘিরে কী বিরাট প্রাসাদটা রমরমা,
কত মানুষের কথোপকথন ওখানে রয়েছে জমা,
যদি ভাবা যায় অন্যরকম বিপরীত ভাবাদর্শ,
মুর্শিদাবাদ থেকে ইংরেজি পেয়েছো ভারতবর্ষ,
যে-দিকেই যাও যে-যুক্তিতে, নবজাগরণ ধারা —
কোনোও সূত্র আসতো কি বলো মুর্শিদাবাদ ছাড়া?
ব্রিটিশ-শাসনে পৃথিবীর মাঝে সবচেয়ে দেশ বড়,
তার নাম তুমি ভারতবর্ষ, একটুকু মনে করো,
আমেরিকা ছিল আরো বড় দেশ, আগেই হয়েছে স্বাধীন,
তারপর তুমি ভারতবর্ষ ব্রিটিশের পরাধীন,
সেই অনুযায়ী বিশ্ববিজয়ী ব্রিটিশের ইতিহাসে
তুমি আছো স্মৃতি ভারতবর্ষ, আগেই স্মৃতিতে আসে,
যদিও জনসংখ্যায় তুমি ঔপনিবেশ শ্রেষ্ঠ,
সেই দিক থেকে ব্রিটিশের কাছে তুমি সব-সেরা দেশতো!
বিশ্ব-চালক রাষ্ট্রসংঘে আছে এই ইতিহাস —
নবাব সিরাজকেই হারিয়ে ভারতে ব্রিটিশ-রাজ,
সেই যুদ্ধের মহৎ নায়ক নবাব সিরাজউদ্দৌলা,
যাঁকে-ই হারিয়ে ক্লাইভের শুরু এ মাটিতে পথ চলা,
এসব অনেক রকম ভাবনা ভাবলে অবাক হই,
সেই নবাবের প্রতি অবহেলা আমরা কী ভাবে সই!
কোন যুক্তিতে তুমি মানবে না সিরাজের অবদান,
ভারতবর্ষ, ভুলে গেছো তৃমি, মুর্শিদাবাদ নাম?
খোশবাগেতে নবাব ঘুমিয়ে কবরেতে চিরনিদ্রায়,
সেখানেই নাকি প্রিয়তমা লুৎফুন্নিসা কেঁদে যায়,
বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের মাঝে যে-সত্য ভাসে,
তার মধ্যেই সুগভীর সুখ পাওয়া যায় ইতিহাসে,
জীবন মানেই কত জিজ্ঞাসা, উত্তরগুলি হাওয়া,
সেই হাওয়াতেই পরিব্রাজক হয়ে শুধু হেঁটে যাওয়া!
লুৎফুন্নিসা সত্যি কি এসে নবাবের কবরে —
ছায়া-রূপে এসে কাঁদতেই থাকে রাত্রির প্রহরে?
এসব সত্য সত্যেরও চেয়ে আরো বড় সত্য,
জীবনের আয়ু সীমিত, কিন্তু প্রেম যে অনন্ত!
এইসব নিয়ে কজন বা করে গভীরেতে সন্ধান,
ভারতবর্ষ, ভুলে গেছো তূমি, মুর্শিদাবাদ নাম?
ভারত ছাড়াও নবাবের স্মৃতি রয়েছে বাংলাদেশে,
কতজন কত কৌশল করে অপরাধ চাপিয়েছে,
নবাবের নামে ইতিহাসটাও কৌশল করে লেখা,
তাঁর কত গুণ, সেইগুলি ঠিক করে হয়নি তো দেখা,
ভারতবর্ষ, তুমি নাকি খুব মুক্ত এবং মহান,
নবাব সিরাজ যেখানে পাননি তাঁর টুকু সম্মান!
https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-2139129812952104 (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
——————————————————–
( 17 -19 ডিসেম্বর শীতে কম্বলে ঢুকে 2021, ও 6ই জানুয়ারী 2022 ভোর রাতে 06:09 এর কিছু আগে বারবার পড়ে মাত্র দুটি লাইন জুড়লাম )
———————————————————
❤ || নবাব সিরাজ কবিতা সিরিজ, কবিতা নং -33||
এই সিরিজের নানা কবিতা এপর্যন্ত যে সব মুদ্রিত মাধ্যম ও ইন্টারনেট পত্রিকায় বেরিয়েছে সেগুলি হলো :
রূপুর পত্রছন্দ কবিতা সংকলন –প্রথম খন্ড :– সম্পাদিকা –নার্গিস খাতুন, বারুইপুর, কলকাতা, প্রকাশ 15th অগাস্ট 2021
www.globalnewz.online,
অনেক সময় অনেক wabesite পত্রিকা satellite এর সমস্যায় লিংক আসতে বাধা পায় সাময়িক ভাবে বা অন্য কোনো সমস্যা হলে সেই পত্রিকার সম্পাদককে ফোন করে সমস্যার কারন জেনে নিতে পারেন!
আরো অন্য কোনো পত্রিকায় বা সংকলনে এই সিরিজ বেরুলে জানানো হবে, সাংবাদিক, গবেষকদের উদ্দেশ্যে জানানো হলো, তবে এঁরা খুব আগ্রহী হয়ে এগুলি বের করছেন, অন্য লেখাগুলিও করেন, কিন্ত এই সিরিজের কথাই এখানে মূলত আলোচ্য! বহু পত্রিকায় এই সিরিজ ছড়িয়ে দিলে গবেষক, সাংবাদিকদের খুঁজতে অসুবিধে হবে তাই যথাসম্ভব কম সংখক পত্রিকায় এই সিরিজ বের করা হচ্ছে || ❤
https://pagead2.googlesyndication.com/pagead/js/adsbygoogle.js?client=ca-pub-2139129812952104 (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
———————————————–
বিঃদ্রঃ — ঋদেনদিক মিত্রো (Ridendick Mitro ), কলকাতা, ভারত, পেশায় ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় কবি-ঔপন্যাসিক-কলামনিস্ট-গীতিকার, পৃথক ভাবে দুটি ভাষায়, অনুবাদ নয়, একটি বিশ্বজাতীয় সঙ্গীত ” World anthem — We are the citizen of the Earth “, ” Corona Anthem 2020 official Bengali Song “( আগ্রাসনের নেশার সাথে হিংসা সীমা ছাড়া ), Sristi Brand Song, কাব্যপট পত্রিকা অন্থেম, মুক্ত বলাকা অন্থেম, ” নবাব সিরাজউদ্দৌলা মুক্ত বিদ্যালয় খোসবাগ / আমাদের তুমি গর্ব বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব… ” (Link : নবাব সিরাজউদ্দৌলার হীরাঝিল প্রাসাদে কে এই লুৎফুন্নিসা — “Manas Bangla” Youtube ) প্রভৃতি বিশেষ ধরণের সংগীতের রচয়িতা, নবাব সিরাজউদ্দৌলার ওপর সংগীতটি আজকের লুৎফুন্নিসা সমর্পিতার (সমর্পিতার বিষয় জানতে :link : লুৎফুন্নিসার কি পুনর্জন্ম হয়েছিল / Was Lutfunnisa Reborn – Manas Bangla ইউটুব ) সুরারোপ এবং নবাবের কবরে ও তাঁর নামিত সব বয়সের বহু রকমের বিদ্যা শেখার আন্তর্জাতিক মানের স্কুল ” নবাব সিরাজউদ্দৌলা মুক্ত বিদ্যালয় খোসবাগ ” -এ প্রার্থনা সঙ্গীত হিসেবে গীত হয়, এবং একই সাথে নবাবের প্রাসাদ ছিল যেই স্থানে সেই হীরাঝিলে সৃষ্টি দেশ বিশ্বব্যাপী “হীরাঝিল বাঁচাও ” (এই নামে Facebook দেখুন ) আন্দোলনে ( link : ভাগীরথীর ভাঙনে তলিয়ে যেতে বসেছে নবাব সিরাজউদ্দৌলার হীরাঝিল প্রাসাদ – Manas বাংলা, এই ইউটুবেও আন্দোলনের সংবাদের শেষে সমর্পিতা তাঁর স্কুলের knight মানে ছাত্রছাত্রী ও আরো অন্যজনদের নিয়ে ওই প্রার্থনা সংগীতের মাঝখান থেকে সিকোয়েন্স অনুযায়ী গেয়ে এই অভিযানের প্রথম কাজ শেষ করলেন, এটা দেখা যায় ) কবি হিসেবেও নির্বাচিত! ২০২০ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত গ্রন্থ ২০-২১টি, বিভিন্ন গ্রন্থ বিখ্যাত বিদেশী অতিথির দ্বারা উদ্বোধন করা হয়েছে, বিভিন্ন সংস্থা থেকে বিভিন্ন পুরষ্কার ও সম্মাননায় সম্মানিত৷
করোনার আতঙ্কে বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে নতুন গ্রন্থ প্রকাশে আটকে আছে, আটকে আছে নানা নতুন সংগীতের রেকর্ডিং৷
— সম্পাদক
—————-
[…] […]