প্রকৃতি,কোকিল ও কবি
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ওয়াহিদা খাতুন
প্রকৃতি,,,,🏞️
কেনো রে তুই ডাকিস কোকিল,
কোন আনন্দে মাতিস কোকিল ;
গ্রীষ্মের গরম চাদর ছিঁড়ে
অভিযোগের আওয়াজ তুলে
দোদুল শাখায় বসে নীড়ে;
বসন্তেরি সোহাগ ভুলে ;
কিসের নেশায় অলীক প্রেমে
বাদলা মেঘের আঁচল টেনে;
অসময়ে কানের কাছে,
ডাকিস কেনো গাছেগাছে ;
খেয়েছিস কী চোখের মাথা?
আকাশ ঘিরে মেঘের ছাতা;
নীলিমাতে নেইকো রে নীল!
এখন কেনো ডাকিস কোকিল!!
এটা কী তোর বসন্তকাল?
মেঘ-বৃষ্টি আদুরে সকাল ;
ডাকছে মেঘে গুরুগুরু,
কুহুকুহু করলি শুরু?
আকাশ কেমন খ্যামটা মুখে,
মুখ ভ্যাংচায় দেখনা তোকে!
রোদ্র-ছায়ার লুকোচুরি,
ঝিরঝিরানি বৃষ্টি-গুড়ি ;
মেঘ-বৃষ্টির কানামাছি,
তাতেও তোর নাচানাচি?
মাঝেমাঝে মৌসুম হাওয়া,
বলছে তোকে যা বেহায়া!
আমরা এখন বাদলা সুরে,
নাচছি কেমন ঘুরেঘুরে ;
হিংসায় কি ধুঁকে মরিস?
কুহুতানে উঁকি দিস?
রিমিঝিমি বৃষ্টি-গানে,
লাগছে বাধা কুহুতানে;
খালেবিলে নদীর কুলে,
কাশের ফুলে হেলেদুলে ;
সুর উঠেছে অনাবিল!
এখন কেনো ডাকিস কোকিল?
কোকিল,,,,🦅,,,
আমি হলাম গাইয়ে পাখি
তাইতো করি ডাকাডাকি ;
বনেবনে রঙ লেগেছে
মেঘেরা সব সঙ সেজেছে ;
কচিপাতার করতালি,
পাকাফলে ভরা ডালি;
রকমারি ফলের গন্ধে
পাচ্ছি খুঁজে বসন্তকে ;
নানা ঋতুর নানা সাজে
হারিয়ে যায় তোমার মাঝে ;
প্রশ্ন যদি আমি করি,
বসবে নাতো মাথা ধরি?
আমি হলাম গাইয়ে পাখি
গাইলে বলো দোষ আছে কী?
শিল্পী আমার মনটা যে,
গাইলে তা ওঠে বেজে!
আঙুল তলো নিজের দিকে,
ছয়টি ঋতুর হিসাব রেখে;
খেয়াল খুশি যখন যেমন
সাজছো তুমি তখন তেমন ;
তোমার যতো রূপের খেলা
দেখতে আমার কাটেভ বেলা;
মুগ্ধ হয়ে তোমার টানে
সুর ধরেছি কুহুতানে ;
বসন্তকাল নাইবা হলো
এবার আমার দোষটা বলো?
চলো এখন কবির কাছে,
আমার কিছু নালিশ আছে!!
কবি,,,,🧏🏻♀️🖊️🖊️🖊️
আমার কথা আর বলোনা,
তোমার থেকে ঢেমনাপনা;
তাই দেখোনা নিশিরাতে
চাঁদ ও তারার খুনসুটিতে;
কেমনে আমি আড়িপাতি
খাটে বেঁধে মশারি টি!
জ্যোৎস্নালোকে রাতের বুকে,
চাঁদটি যখন ঘুমাই সুখে;
চুপিসারে জানলা খুলে
চোখ ডুবে দিই সবটা ভুলে;
নালিশ নিয়ে আমার কাছে?
আমি আরো ভীষণ বাজে!
ঝড়ের কানে কান লাগিয়ে
ঘরের আলো দিই নিভিয়ে ;
কিযে মজা লাগে নিতে
আমার কানের কুঠুরিতে;
ভ্রমর যখন গানেগানে,
ছুটে চলে প্রেমের টানে,
সাত-সকালে হেলেদুলে
মধু খেতে ফুলেফুলে;
আমি তখন চুপিসারে
উঁকিমারি অভিসারে!
আমার কাছে আনলে নালিশ
রোষে ফুলে হবে বালিশ!
সকাল থেকে সন্ধ্যাবেলা
প্রকৃতিতে চলছে খেলা;
কিযে মধু নিরব প্রেমে
তুলে রাখি চোখের ফ্রেমে;
অমাবস্যায় মরাকোটাল
পূর্ণিমাতে ভরাকোটাল;
ঐশী সব প্রেমের মাঝে
মনের গিটার উঠে বেজে;
আকাশ তলে মেঘবালিকার,
রিমিঝিমি বাদলা সেতার ;
সুর তুলে যায় দিনেরাতে,
আমার চোখের গিরিখাতে ;
ঝড়-ঝঞ্ঝা কিম্বা দুপুর,
সবখানেতে বইছে সুর;
সুর ছাড়া কি জীবন চলে?
বোকার মতো কথা বলে!
আহ্নিকগতি বার্ষিকগতি
ঢেউয়ের তালে বহে নদী,
পৃথিবীটা সুরের প্রলয়
কাঁটার সুরে চলে সময়;
শোন বলি এক মদ্দা কথা,
যে যার মতো দেবে ব্যথা ;
শুনলে পরে সবার বাঁধা
দেখবি চোখে গোলকধাঁধা ;
গাইলে যদি দুখ চলে যায়
কার কথাতে কি আসে যায়?
পরের বাসা নিজের ভাবিস,
নিজের ছানা পরকে দিস;
নেই তাতে তোর অস্থিরতা
এটাই তো তোর উদারতা!
তাইতো বলি মিষ্টি গানে
সুর ঢেলে দে সকল প্রাণে ;
কন্ঠে আছে প্রেমের দলিল,
প্রাণ খুলে তুই গা রে কোকিল!!
রচনাকাল:-১৫/০৬/২০২১ বিকেল ৩টা ১৩ মিনিট!
****************************
খুব ভালো
ধন্যবাদ কবি ষষ্ঠী কুমার দাস মহাশয়
Dr
Dr
Dr
সুন্দর লিখেছেন