তৈমুর খান এর দুটি কবিতা
১
কালের ঘরণী
_________________________
হাঁড়ি বাসন মেজে নিচ্ছি
বিবেক মেজে নিচ্ছি
রান্নাবান্না হবে
তারপর চেতনা বসবে এসে
আমার উনুনে কারা যে আগুন দিয়ে গেল
চাল ডাল নাকছাবি সব
দলাদলি ডলাডলি
মৎস্য কচু লাউ
আর জ্ঞানগর্ভ বাক্যসম্ভার
অনেক বেলা হয়ে গেছে
ছায়াটি বসে আছে দোরের কাছে
ভাগ্যবিড়ম্বিত নপুংসক
বাঁচতে চাইল
তার বাঁচার দীর্ঘশ্বাস শুনল বাতাস
মাচার উপর বসে পা দোলাচ্ছে কাল
কালের ঘরণী হতে চাইছে স্বপ্ন তার
খাওয়া-পরা আর অস্ফুট ইচ্ছাগুলির
সে-ই নেবে সমস্ত ভার
আমি হাসতে পারলাম না
ছায়াটি আমারই নীরব স্বীকার
২
জরুরি ব্রিজ
______________________
একটা ব্রিজ তৈরি করছি
ইঁটের বদলে শব্দ, শব্দে শব্দে বাক্যের দেয়াল
বিশেষণ ক্রিয়াপদ সিমেন্ট ও বালি
জরুরি ব্রিজ তাই আমিও ভীষণ পরিশ্রমী
নবজন্ম, পুরোনো জন্ম সবাই পার হবে
এপারে ওপারে কত নিষিদ্ধ আনাগোনা
অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে বলে
সকলেরই তাড়া জেগে ওঠে
মাঝখানে কালপ্রবাহের স্রোত
ভাসিয়ে নিয়ে বয়ে যাচ্ছে যুগ
কত কত পাতক-পাতকীর হৃদয় –
সবই তো হৃদয় তবু!
আহা! উষ্ণ নরম প্রগলভ শীতল…
কামোদ্রেক ফুলের গন্ধে তাদেরও শোভিত পুলক জেগে ওঠে
অথবা বিনিদ্র কষ্টের রাত
জরুরি ব্রিজ তাই আলো-আঁধারের জমাট অনুভূতি
সংকেতে সততায় ঘেরা তার বোধের দেয়াল
দীর্ঘশ্বাস পার হবে, হাসিখুশি অথবা সাহসী
নীলিমার ঘোরে কেউ নীরব বনশ্রী
কেউ ভোর প্রীতির সাম্রাজ্ঞী
কেউ বিনম্র মায়াময়ী
এপার ওপার যদি একাকার হয়
ঈশ্বর ও নিরীশ্বর এসে হাত ধরে
বলো তবে কী চায় আর এই পৃথিবীতে!