জীবন দায়ী অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু মিছিল বেড়ে চলেছে –
বটু কৃষ্ণ হালদার-
অতি মারী করোনা র দ্বিতীয় ঢেউয়ের অবশেষে স্তব্ধ হতে চলেছে ভারতবর্ষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।বিগত এক বছর যাবত এই করোনার প্রভাবে সমগ্র ভারতবর্ষে বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লাশের পাহাড় তৈরি হয়েছে হাসপাতালগুলোত। কর্মচ্যুত হয়েছে মানুষ।পরিযায়ী শ্রমিক দের অবস্থা চরমে পৌঁছে ছিল। স্কুল-কলেজে পঠন-পাঠন বন্ধ। সেই মহামারী থেকে যখন সাধারণ জনগণ ধীরে ধীরে আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছিল, পরিবেশ যখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল, মানুষ ভ্রমণ করতে শুরু করেছিল, কর্মহারা মানুষগুলো পুনরায় কর্ম পেতে শুরু করেছিল ঠিক সেই সময়ে এই সমাজের কিছু কাণ্ডজ্ঞানহীন মানুষগুলোর বিবেকহীন কর্ম নীতিতে ভারতবর্ষের অবস্থান আজ প্রশ্নচিহ্নের মুখে। মহারাষ্ট্র উত্তরপ্রদেশ সহ বহু রাজ্যে যখন ধীরে ধীরে করোনা ঢেউ চুপি সাড়ে বিস্তার লাভ করতে শুরু করেছিল, ঠিক সে সময়ে পশ্চিমবাংলার ক্ষমতা দখলের লড়াই আজ বহু মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল।বাংলা দখল করার উদ্দেশ্যে কার্যত প্রতিটি রাজনৈতিক দল গুলো জনগণের সাথে জীবন নিয়ে লুকোচুরি খেলা খেলা করে গেলো।তবে আমাদের দেশে নির্বাচন প্রক্রিয়া হলো শুধু মাত্র নেতা মন্ত্রী ও সমাজের এক শ্রেণীর উচ্চ শ্রেণীর স্বার্থ বাদীদের ভালো থাকার কৌশল মাত্র এই ভাষাটা বোধ হয় আমরা জেনে ও না জানার ভান করি।স্বাধীনতার আগে যেমন এক শ্রেণীর সুবিধা বাদী রা স্বাধীনতার নামে সাধারণ জনগণ কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।ঠিক তেমনি স্বাধীনতার পর নির্বাচনের নাম করে সুবিধা বাদীরা সাধারণ জনগণ কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে।গত জানুয়ারি থেকে দেশের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে, এসব জেনে শুনেও রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার কোনো প্রস্তুতি নেইনি। এই বাংলার কোন রাজনৈতিক দল একটিবারের জন্যও প্রশ্ন তোলেনি নির্বাচন কমিশনকে,যে বর্তমান ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সময়ে এই বাংলায় কেন নির্বাচন হবে? এর একমাত্র কারণ হল ক্ষমতা দখল। জনগণ মরে মরুক তাতে আমাদের কি? কিন্তু ভোট হয়ে যাওয়ার পর একে অপরকে দোষারোপ করতে শুরু করেছে।
ইতিমধ্যেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যে পশ্চিম বাংলা তথা ভারতবর্ষকে মহাশ্মশানে পরিণত করবে সে বিষয়টা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে। কারণ ইতিমধ্যেই অক্সিজেনের অভাবে বহু মানুষ অসহায় ভাবে ছটফট করতে করতে মারা যাচ্ছে। চারিদিকে মৃত্যুর মিছিল। অসহায় মানুষগুলো প্রিয়জনকে হারিয়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদছে। কিন্তু এসব নিয়ে কারোর ভাবার সময় নেই। কারণ রাজনৈতিক মহলে দরকার শুধু ক্ষমতা ও বাংলার মসনদ। দেশ এত কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আসার পরও এই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোটি কোটি টাকা ব্যয় থেকে আমরা সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারলাম ভারতবর্ষে নির্বাচন একটা উৎসব ছাড়া আর কিছুই নয়। এই উৎসবে একশ্রেণীর মনুষ তাদের প্রিয়জনকে হারায়,আরেক শ্রেণীর মানুষ সাধারণ জনগণের রক্তে হাত লাল করে সারি সারি লাশের মিছিল দেখে উল্লাস করে,। প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে। অথচ দেশের সার্বিক উন্নয়ন বলতে গেলে শূন্য। যে টাকা রাজনৈতিক দলগুলো খরচা করেছে, তাতে কয়েকটা স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, উন্নত সরঞ্জাম, কিংবা কয়েকটা কল-কারখানা গড়া যেত। এই ভয়ঙ্কর সময়ে ডাক্তার-নার্সরা তাদের প্রয়োজনীয় উন্নত যন্ত্রপাতি কে থেকে শুরু করে নিজেদের সুরক্ষার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পায় নি।এর কারণে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বহু ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী। আশার আলো একমাত্র ভ্যাকসিন।দেশে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই। অক্সিজেনের সিলিন্ডারের অভাবে রাস্তায় বাড়িতে এমনকি হাসপাতালের বাইরে রুগী মরে পড়ে আছে। অথচ দেশের বহু রাজ্যে অক্সিজেন প্লান্ট বানানোর জন্য টাকা দেওয়া হলে, তা সময়মতো বানানো হয়নি।সময়মতো অক্সিজেন প্লান্ট বানানোর অভাবে কৃত্তিম অক্সিজেন ভাণ্ডার তলানিতে এসে ঠেকেছে।যে কারণে কেন্দ্রীয় সরকার রুবেলের কম অক্সিজেন ব্যবহার করার কথা বলছেন।জনগণ নিজেদের স্বেচ্ছাধীন মত অক্সিজেন ব্যবহার করার অধিকার টুকুও হারিয়ে ফেলছে। অক্সিজেনের অভাবনীয় সংকটের মধ্যেও দেশে অক্সিজেন রপ্তানি ৭০ শতাংশ বেড়েছে।এটাকি কেন্দ্র সরকারের দায়িত্ব জ্ঞানহীন কাজ নয়?
ভাবতে পারছেন আমরা কোন সময়ের মধ্য দিয়ে চলছি।যে কারণে রতন টাটা,সোনু সুদ অক্ষয় কুমার, অমিতাভ বচ্চন,সুনীল শেট্টির মত মানুষরা মাসীহা হয়ে এগিয়ে এসেছে সাধারণ মানুষের সাহায্য করতে।আবার কেউ কেউ নিজেদের কে বাঁচাতে পরিবার নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে বিদেশে। যে দেশগুলো ভারতের দয়ায় বেঁচে থাকে,সেই সব দেশ আজ ভারতকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসছে,এসব কি আমাদের দেশের চরম লজ্জা নয়? অক্সিজেন এই মুহূর্তে কতটা জরুরি তা বুঝিয়ে দিয়ে গেল অতি মারি করোনা। সুষ্ঠু সামাজিক পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে সবুজ সতেজ বন ময় একমাত্র বিকল্প। এই গাছ পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে আমাদেরকে প্রাণদায়ী অক্সিজেন দেয় এবং দূষিত কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে শোষণ করে। এই ভাষা টুকু সমাজে বাচ্চা থেকে বয়স্ক বোধহয় সবাই জানে। তবুও সভ্যতার শ্রেষ্ঠ মানব সভ্যতার দ্বারা জঙ্গল কেটে চোরাপথে কাঠ বিক্রির ব্যবসা রমরমা হয়ে উঠেছে।গাছ মারো। দামের লোভে। ঝরুক সবুজ রক্ত। শেষ হয়ে যাক অক্সিজেন। পরোয়া নেই। বহরমপুর শহরে তাই তো হচ্ছে! ইতিহাসের শহর। নবাবিয়ানা, ঐতিহ্য। প্রাচীন, অতি প্রাচীন গাছের আর ঠাঁই নেই সেখানে। খুল্লমখুল্লা চলছে এই খুনোখুনি। কী দোষ? জীবন দেওয়া? প্রাণভরে অক্সিজেনের যোগান যুগিয়ে যাওয়া? সভ্যতার আদালতে এর শাস্তি হবে না, হয় নাকি! ধীরে ধীরে মৃত্যু। স্লো পয়জন। এটাই নাকি এদের ভবিতব্য!ঐতিহ্যময়, সবুজ স্কোয়ার ফিল্ড গ্রাউন্ডেও তাই যেন ধূসর ছায়া।এসবই ঘটনা ঘটছে প্রশাসনের চোখের সামনে। প্রশাসন হাতগুটিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকায়। কারণ চোরাকারবারীদের থেকে একটা অংশ তাদের পকেটে ও তো আসে।তবে সবুজ সতেজ বনময় ধ্বংসের অন্যতম একটি কারণ হলো মানব সভ্যতার আধুনিকীকরণ।বিজ্ঞান কে সঙ্গী করে মানুষ যত উন্নত হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, ততোই সবুজ সতেজ বনময় ধ্বংস করে তার উপর গড়ে তুলছে কংক্রিটের ইমারত। জনগণ তার পরিবেশকে যেমনভাবে সুন্দর করে সাজাচ্ছে, উল্টোদিকে সবুজ সতেজ বনময় গুলো দাঁত খিঁচিয়ে হাসছে। মানব সভ্যতা যতই এগিয়ে চলেছে,সবুজ সতেজ পরিবেশ তাতে উলঙ্গ হচ্ছে। ধীরে ধীরে পরিবেশে অক্সিজেন কমছে, আর কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পাল্লা ভারী হচ্ছে। অগ্রগতির নামে আমরা ধীরে ধীরে ইতিমধ্যেই ধ্বংসের মুখে পৌঁছে গেছি তা বোধহয় বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এর সুদুরপ্রসারি ফলাফল হল মানুষকে প্রাকৃতিক অক্সিজেন ছাড়াই, কৃত্তিম অক্সিজেনের উপর নির্ভর হতে হচ্ছে।এছাড়া সুন্দরবনের জঙ্গল ধস নেমে নদীর গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে।এর কারণ হলো চুরি করে গাছ কাটা,আর নদীর গর্ভ থেকে বালি চুরি করে নদীর মোহনাকে শূন্য করে দেওয়া।তবে সবথেকে ভয়ঙ্কর খবর হলো গতবছর পরিবেশে সবথেকে বেশি অক্সিজেন সরবরাহ দাতা অ্যামাজন ও অস্ট্রেলিয়ার জঙ্গল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।এবার জ্বলছে সুন্দরবন। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মিজোরামের বন জঙ্গল। বিধ্বংসী দাবানল এর লকলকে শিখায় বহু বন্যপ্রাণী মারা গিয়েছে।পাখি পক্ষ থেকে শুরু করে বহু জীবজন্তু বর্তমানে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। এই জঙ্গলের সঙ্গে পতঙ্গদের সঙ্গে নাড়ির সম্পর্ক। একটা সময় ছিল পৃথিবীতে শুধুই গাছ ছিল কিন্তু সেই গাছে কোন ফুল ছিল না। এরপর যখন প্রকৃতির টানে গাছপালার শাখা-প্রশাখায় রং-বেরংয়ের ফুলে ভরে উঠলো, তাদের সঙ্গে পতঙ্গদের খুব ভাব হলো। এই সমস্ত উড়ন্ত কীটপতঙ্গ রা ফুলের রেণু হাতে পায়ে মেখে গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করল। এর বিনিময়ে ওরা পেল মিষ্টি মধু।তাই জঙ্গল পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার ফলে পরিবেশে যে শূন্যতার সৃষ্টি হল, তা পূরণ করব কি করে আমরা? এতে নষ্ট হতে পারে পরিবেশের ভারসাম্য।সব জেনে প্রশাসন গাছ চুরি ঠেকাতে পারেনি।
জীবনের সাথে এক না জানা সম্পর্কের অনুভূতি। না দেখে ও তাকে স্পর্শের অনুভূতি মধ্যে দিয়েও আত্মার পরম পাওয়া। মানব জীবনে তার অবদানের ঋণ কখনোই শোধ করার নয়। তার না থাকা র যন্ত্রণা প্রতিটি মুহূর্তে অবদান করে মানব সমাজ। বর্তমান এই অতি মারি র সময়ে তার শূন্যতায় হাহাকার চলছে।হ্যাঁ, বলছি অক্সিজেনের কথা।বাংলায় যাকে অম্লজান বলা হয়। ১৭৭৪ সাল তখন। বিজ্ঞানী পি.বায়েন তার গবেষণাপত্রে ধাতু দাহ করলে তার ভর বৃদ্ধির কারণ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন। তিনি বলেন বাতাস থেকে ভারী এক অদ্ভুত পদার্থ দাহ করার সময় ধাতুর সাথে যুক্ত হয়। পারদ্ঘটিত যৌগের তাপবিযোজনের মাধ্যমে এই গ্যাসটি উৎপন্ন হয়েছিল। বায়েন নিজের অজান্তেই কাজ করলেন অক্সিজেন নিয়ে এবং দুর্ভাগ্যবশত তার কাছে অজানাই থেকে গেল নিজের আবিষ্কার। একই বছর রসায়নবিদ জোসেফ প্রিস্টলি যৌগ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ইতোমধ্যে তিনি কার্বন-ডাই অক্সাইড এর মত গ্যাস আবিষ্কার করে ফেলেছেন। প্রিস্টলি একদিন নিজের ঘরে গবেষণা করতে গিয়ে পাত্রে কিছু সালফিউরিক এসিড নিয়ে উত্তপ্ত করছিলেন। কিছুক্ষণ পর লক্ষ্য করলেন পাত্র থেকে এক ধরনের গ্যাসীয় পদার্থ বের হচ্ছে। প্রিস্টলি গ্যাসটি আলাদা পাত্রে সংরক্ষণ করলেন। পরীক্ষা করে দেখা গেল পাত্রের কাছে জলন্ত মোমবাতি নিয়ে আসলে তা আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। শুধু তাই নয় তিনি পাত্রে একটি ইঁদুর ছানা আটকে পরীক্ষা করলেন। দেখলেন ছানাটির যতক্ষণে মারা যাওয়ার কথা তার চেয়ে বেশিক্ষণ সময় বেঁচে ছিল। জোসেফ প্রিস্টলি শুধু এইটুকু বুঝতে পেরেছিলেন যে এটি বাতাসের উপাদান যা দাহ করতে এবং প্রাণীর নিঃস্বাস নিতে সাহায্য করে। পরবর্তিতে তিনি প্যারিসে গিয়ে বিভিন্ন ফরাসি বিজ্ঞানীদের সাথে এ নিয়ে বিশদ গবেষণা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিয়ে বিষয়টি নিয়ে বেশ আগ্রহ দেখান। তিনিই প্রথম গ্যাসটির অক্সিজেন বা অম্লজান নামকরণ করেন। কেননা তখন ধারণা ছিল এটি একটি জটিল পদার্থ। পরে গ্যাসটি নিয়ে অনেক গবেষণা করে জানা যায় ধারণাটি ভুল ছিল। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় অক্সিজেন বিজ্ঞানের এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। তবে আজকের ব্যস্ত শহরে বিশুদ্ধ অক্সিজেন বিরল বস্তু।
অক্সিজেন আবিষ্কারের পর প্রিস্ট্লে প্যারিসে গিয়ে সহ অন্যান্য ফরাসি বিজ্ঞানীদেরকে বিশদভাবে তার গবেষণার কথা বলেছিলেন। এই অংশটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রিস্ট্লের চেয়ে ল্যাভয়সিয়েই এই আবিষ্কারটির মর্ম বেশি উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। প্রিস্ট্লে একসময় মনে করতেন তার এই আবিষ্কারটি একটি জটিল পদার্থ। কিন্তু ১৭৮৬ সালে ল্যাভয়সিয়ের ধারণা দ্বারা অণুপ্রাণিত হয়ে তিনি একে মৌল হিসেবে দেখতে শুরু করেন। এ হিসেবে অম্লজান আবিষ্কারের পিছনে মূল অবদান প্রিস্ট্লে এবং বায়েনের। এদের সাথে নামক আরও একজন বিজ্ঞানীর নাম সংযোজন করা যেতে পারে। শিলে ১৭৭২ সালে Chemical Treatise About Air and Fire নামক একটি বই লেখার কাজ সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু প্রকাশকের দোষে বইটি ১৭৭৫ সালে প্রকাশিত হয়। এই বইয়ে অক্সিজেনের বর্ণনা প্রিস্ট্লে বা বায়েনের দেয়া বর্ণনার চেয়েও নিখুঁত ছিল। কিন্তু প্রকাশক দেইতে প্রকাশ করাতে তিনি অক্সিজেনের আবিষ্কারক হিসেবে নিজের নাম প্রস্তাব করতে পারেননি। কারণ প্রিস্ট্লের আবিষ্কার প্রকাশিত হয় ১৭৭৪ সালে। শিলে অম্লজান উৎপন্ন করেছিলেন অজৈব যৌগের বিয়োজনের মাধ্যমে।
“বৃক্ষ নেই, প্রাণের অস্তিত্ব নেই, বৃক্ষহীন পৃথিবী যেন প্রাণহীন মহাশ্মশান।”অফুরন্ত সৌন্দর্যের এক মধুর নিকুঞ্জ আমাদের এ পৃথিবী। এই পৃথিবীকে সবুজে-শ্যামলে ভরে দিয়েছে প্রাণপ্রদায়ী বৃক্ষরাজি। এ বিশ্বকে সুশীতল ও বাসযোগ্য করে রাখার ক্ষেত্রে বৃক্ষের অবদান অনস্বীকার্য। আবার মানুষের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্যে যেসব মৌলিক চাহিদা রয়েছে তার অধিকাংশই পূরণ করে বৃক্ষ। তাই মানবজীবনে বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অপরীসীম।মানুষ ও প্রাণীর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বৃক্ষের ব্যাপক আবশ্যকতা রয়েছে। তাই বৃক্ষকে মানবজীবনের ছায়াস্বরূপ বলা হয়। বৃক্ষ আমাদের নীরব বন্ধু, সে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত কত যে উপকার করছে তা একবার ভেবে দেখলে অনুধাবন করা যায়।এই মুহূর্তে সমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য বান নাগরিক হিসাবে সচেতন হওয়া দরকার।পরিবেশে অক্সিজেন শূন্যতার ঘাটতি মেটানোর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে হবে। স্কুল-কলেজ পঞ্চায়েত স্তর থেকে শুরু করে কর্পোরেশন স্তরে সামাজিক সচেতনতা উদ্দেশ্যে বনসৃজন প্রকল্পের উদ্যোগ নিতে হবে। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে গাছ লাগানোর চেষ্টাকে সফল করে তুলতে হবে। যেখানে যেখানে গাছ কাটার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সেখানেই প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে হবে। তাদেরকে গাছের গুরুত্ব সম্পর্কে বোঝাতে হবে।আর তার সঙ্গে এটা অবশ্যই বোঝাতে হবে গাছ আছে বলেই পরিবেশ বেঁচে আছে। আর পরিবেশ বেঁচে আছে বলেই আমরা বেঁচে আছি। গাছ কাটা নয়, একটি গাছ একটি প্রাণ এই মহৎ উদ্দেশ্যকে সফল করে তুলতে হবে। আসুন জাত,ধর্ম নির্বিশেষে আমরা সবাই গাছ লাগানোর কর্মসূচিতে নিজেদেরকে নিয়োজিত করি। আর তাতেই বাঁচবে, পরিবেশ ও ভবিষ্যৎ। নইলে আগামী দিনে মৃত্যুর হার এমনভাবে বেড়ে চলবে, মৃতদেহ সৎকর করার মানুষ জন থাকবে না।শুধু তাই নয় একদিন হয়তো মানুষকে এই পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন ও পয়সা দিয়ে কিনতে হবে।তার সঙ্গে এটাও প্রমাণিত হয়ে যাবে সবুজ সতেজ পরিবেশ ধ্বংস করার জন্য দায়ী বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানব সভ্যতা। সবুজ সতেজ পরিবেশ ধ্বংসের কর্মকান্ড, আমাদের কাছে গৌরবের নয়, অত্যন্ত লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। শুধু তাই নয় আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমরা নিজেরাই মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে যাচ্ছি। এর সাথে সাথে এটাও প্রমাণ হয়ে যাবে আমরা নিজেরাই আমাদের কফিনের গর্ত খুঁড়ে চলেছি।
বটু কৃষ্ণ হালদার,কবর ডাঙ্গা,কল১০৪,