ছোট্ট গল্প:- আ মরি বাংলা ভাষা
✍🏼লেখক:- মিলন পুরকাইত।
‘আমি বাংলায় গান গাই আমি বাংলার গান গাই ‘এ গানে শিহরিত হয় না এমন বাঙালি বোধহয় নেই ।কিন্তু মাতৃভাষা বলতে যে ‘মোদের গরব মোদের আশা’ ফুটে ওঠে আমাদের চোখে তা কেমন যেন কোণঠাসা আজকের দিনে ।না, ইংলিশ মিডিয়াম হিন্দি ভাষার কোন বিরূপ মনোভাব না রেখেই বলছি নিজস্ব সত্তাকে যেন আমরা ভুলতে বসেছি ।বাঙালি শুধু সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে খাদ্যে অর্থাৎ চিংড়ি ইলিশ কিংবা রোববার দুপুরে মাংস ভাতে বাঙালিয়ানা টিকিয়ে রেখেছি। কেমন যেন স্মরণ সভার মতো করে মাতৃভাষা দিবস পালন করি। একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি অবশ্যই ঐতিহাসিক দিন। বাংলা ভাষা প্রেমীদের আত্মায় মিশে আছে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’। কিন্তু মাকে তো আলাদা করে মনে করতে হয় না । মা ছাড়া যেমন বাড়ি অসম্পূর্ণ থাকে ,তেমনি মাতৃভাষা ছাড়া অসম্পূর্ণ থাকে শিকড়ের সন্ধান। কাজের ভাষা থাক কাজের জায়গায় ।কিন্তু বাড়ি ফিরে যেমন গরম ভাত আর ডাল পোস্তে বাঙালি তৃপ্তি পায় তেমনি মনের তৃপ্তি বাংলা ভাষায় ।ইংরেজি হিন্দি সে অবশ্যই শিখুক তবে বাংলা ভুলে নয় ।কারণ আত্মাকে অস্বীকার করলে দেহের অস্তিত্ব যন্ত্রমানব এ পরিণত হয়ে যায় ।বাঙালির নবপ্রজন্ম কীটসের পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ পড়ুক। শার্লক হোমসকে আপন করুক ফেলুদাকে না ভুলে ।বিসদৃশ উচ্চারণে বাঙালি ছেলে বাংরেজী না বলে আলাদা করে বাংলা ইংরেজি বলুক নিজ নিজ ক্ষেত্রে। ‘দাদা আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না ‘বলতে লজ্জা পাক বাঙালি ।আজকের ছেলেমেয়েরা বাংলা ভাষা নামক আবেগের নাম যেন ভুলে না যাই; আবেগ ছাড়া যে আত্মা বড় বিশুষ্ক ।আসুন আমরা সচেতন হই না হলে অদূর ভবিষ্যতে ঠাকুরমার ঝুলি আবোল তাবোল ঠাঁই পাবে যাদুঘরে। সে যে বড় লজ্জার, বড় যন্ত্রনার। আমাদের আগামী প্রজন্ম যেন হৃদয় থেকে গাইতে পারে ‘ আমি আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই ‘।এই বিশেষ দিনে এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার। আজকের স্মরণে ও প্রতিদিনের মননে থাকুক ভাষা দিবস।