চুক্তি ভিত্তিক কর্মচারী
লিলি সেন
আমি চুক্তি ভিত্তিক কর্মচারী।
সরকার দেখেছে আড় চোখে
স্থায়ী চাকুরী থেকে তাই আড়ি।
জীবন চুক্তিতে করি কাজ
চুক্তি ফুরোলেই জীবনের সর্বনাশ!
সদা ক্ষুদ্র প্রাণ করে আনচান
ত্রাসে দিন কাটে।
শেষ দিনটাতে অন্নটা
জোটে কি না জোটে!
কেউ কেউ তো বলে—
দুকলম তো বিদ্যে,
হয়তো টুকলিতে করেছিলে
এম. এ. পাশটা,
এ কাজই তোমার জন্য যথেষ্ট বটে
নইলে কে মেটাবে
তোমার টাকার তেষ্টা?
আমি চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী।
তাই তর্ক করতে পায় না শোভা
আমি জঞ্জাল এক বস্তির আনাড়ি।
আমি চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী।
আপিস আমার দশটা থেকে সাতটা,
আর স্থায়ী চাকুরেরা—
সিগারেটে সুখটান দিয়ে আসে বেলা ১২ টায়,
হেলে- দুলে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে
বেলা তিনটায় পাট গোটায়।
আমি চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী।
তাই অন্যের কাজও আমার পিঠে চাপানো,
নিজের চুল নিজেই টেনে ছিঁড়তে থাকি–
আমার টেবিলে লম্বা ফাইল সাজানো।
স্থায়ী বাবুদের চলে
হুকুম জারি , নজরদারি।
যদি পায় গাড়ি
কাজের খুব বাহাদুরি।
সাইকেল চালাই আমি
চেন পড়ে বার বার
আমি করি চাকুরী বেহদ্দ আনাড়ি।
যদিওবা টিকে যাই শেষ দিন কটি,
নাই পেনশন,বাড়ে টেনশন
হয়তো বা কালো মেঘে
বেচতে হবে কাঁসা-পিতলের ঘটি-বাটি!
সবাই কি বলে জানো?
নেতাদের তেল দাও
আর বাবুদের মানো,
নইলে থাকবে না কাজ;
হবে না ভাত,
হয় কথা শোন
না হয়; না শোন।