চাইলে না কিচ্ছুটি।
শিবেশ মুখোপাধ্যায়
===============
তুমি চাইলে কি কি করতে পারি,
সে-তো জেনেছো অনেককাল আগেই।
সেই যেদিন ঘোর অমাবস্যার রাতে মৃত্যু ভয় তুচ্ছ করে –
তোমার জন্য রক্ষা কবচ এনেছিলাম শ্মশান কালির থান থেকে।
দুর্গম পথও মসৃণ হয় ভালবাসা থাকলে।
তোমার জন্য একশো আটটা নীল পদ্ম,
রক্তগোলাপ অথবা এক ঝলক বুকের রক্ত এমন কিছু নয়, সে-তো তুমি চাইলেই হয় অনায়াসে।
তুমি না চেয়ে মুখ ফিরিয়ে থাকলে
কী হতে পারে,সেটা হয়তো তোমার জানা নেই।
জানতেও চেওনা কখনো।
আমার এই সর্বগ্রাসী ভালবাসার খিদে,
আগুনকেও হার মানায়।
তবু কোনোদিন যদি মুখ ফিরিয়ে নাও,
বন্ধ করে দাও মনের দরজা,
যেখানে অবাধ বিচরণ ছিল এতদিন…
মোবাইল আছড়ে কাঁচে ফাটল ধরাতে দেখছো হয়তো কখনও।
দেখেছো রাগে ছিঁড়ে ফেলতে জামার সব বোতাম গুলো। সে তো ছেলেমানুষী ছিল অবুঝ কালে।
বড্ড অভিমানী।
তুমি না চাইলে, মুখ ফিরিয়ে নিলে কী হতে পারে?
সে বড় নির্মম…
জানতে চেওনা কোনদিন।
বুকের ভেতর যে ভালবাসার পূর্ণিমা দেখেছো এতদিন। মুহূর্তে ঘোর অমাবস্যা নেমে আসবে।
প্রত্যুষে সূর্যস্নাত পৃথিবী,
ভুলে যাবে আলোর ঠিকানা।
তমাসাচ্ছন্ন পৃথিবীতে মেদিনী গ্রাস করবে অর্জুনের রথ। আতঙ্কিত সারথি’র পাণ্ডুর মুখ দেখে জরুরি সভা ডাকবে স্বর্গের সভাপতি।
রণ দুন্দভী বেজে উঠবে।
বাজবে পাঞ্চজন্য… নটরাজের নৃত্যের তালে আন্দোলিত হবে ধরাধাম।
বাষ্পীভূত হয়ে উবে যাবে পৃথিবীর সমস্ত জল।
হাহাকারে ভরে যাবে চতুর্দিক।
দেবতারাও আতঙ্কিত হ’য়ে আর একবার প্রার্থনা করবে
মর্ত্যের এই দশভুজার কাছে।
মহামেপ্রভাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভূজাং
কালিকাং দক্ষিণাং মুন্ডমালা বিভূষিতাং।।